Ajker Patrika

মামলা করায় সেই যুবলীগ নেতার বাবার হুমকি, মানবাধিকার সংগঠনের উদ্বেগ

রাজশাহী প্রতিনিধি
মামলা করায় সেই যুবলীগ নেতার বাবার হুমকি, মানবাধিকার সংগঠনের উদ্বেগ

রাজশাহীর পুঠিয়ার যুবলীগ নেতার সঙ্গে অশ্লীল ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় মামলা করায় ভুক্তভোগী নারীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সংখ্যালঘু পরিবারের ওই নারীর অভিযোগ, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আর মামলা না তুললে ‘ভালো হবে না’ বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। 

সম্প্রতি পুঠিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সুমনুজ্জামান সুমনের সঙ্গে ওই নারীর আপত্তিকর ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়ে। তিন দিন থানায় ঘোরার পর গত বুধবার পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ওই নারী। 

ভুক্তভোগী জানান, শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় ফোন করে মামলা তুলে নিতে চাপ দিয়েছেন আসামি সুমনের বাবা বদিউজ্জামান বদি। তিনি পুঠিয়ার বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তবে চেয়ারম্যান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

ভুক্তভোগী নারী জানান, তাঁর স্বামী মাদকাসক্ত। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি বাবার বাড়ি চলে আসেন। এরই মধ্যে দুবছর আগে সুমনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়। তাঁকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন সুমন। আর সেই দৃশ্য ধারণ করে রাখেন মোবাইলের ক্যামেরায়। সুমন বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েক দফায় ৭ লাখ টাকাও নিয়েছেন। সম্প্রতি আরও টাকা না দিলে ছবি ও ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে দেন তিনি। কিছুদিন থেকে মোবাইলে মোবাইলে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব। 

এ দিকে বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেওয়ার ব্যাপারে শনিবার উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে রাজশাহীতে কর্মরত কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। যৌথ বিবৃতিতে মহিলা পরিষদের জেলার সভাপতি কল্পনা রায়, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির বিভাগীয় প্রধান অ্যাডভোকেট দিল সেতারা চুনি এবং পরিবর্তনের পরিচালক রাশেদ রিপন বলেছেন, মামলার আসামিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। বাদীর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নইলে তাঁদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেওয়া হবে। 

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহরোয়ারর্দী হোসেন বলেন, মামলা রেকর্ডের পরে আসামি গ্রেপ্তারের তৎপরতা চলছে। অচিরেই তিনি ধরা পড়বেন। যাঁরা হুমকি দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুঠিয়ার ওসিকে বলেছেন। 

যুবলীগ নেতার এমন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া-দুর্গাপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। 

জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ বলেন, অপরাধীর কোনো ছাড় নেই। যুবলীগ করলেই কেউ পার পেয়ে যাবেন, এমনটি নয়। 

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত