Ajker Patrika

সম্পত্তির ভাগ চাওয়ায় নির্যাতন করে নারীর পা ভেঙে দিল স্বজনেরা

বাগেরহাট প্রতিনিধি
সম্পত্তির ভাগ চাওয়ায় নির্যাতন করে নারীর পা ভেঙে দিল স্বজনেরা

তিন বছর আগে স্বামী তালাক দেন। ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকেন মেহেনাজ আক্তার (৩০)। বাড়ির পাশে একটি টেইলার্সের দোকানে কাজ করে চলে তাঁর জীবিকা। অসহায় এই নারী বাবার কাছে সম্পত্তির ভাগ চাওয়ায় স্বজনেরা মারধর করে দুটি পা ভেঙে গেছে। নির্যাতনের শিকার মেহেনাজ এখন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন। 

এই ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের নলবুনিয়া গ্রামে। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ও শরণখোলা থানা-পুলিশের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেছে। মেহেনাজ আক্তার নলবুনিয়া গ্রামের মাও. সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেহেনাজ আক্তার বলেন, ‘বাবা আমার মাকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই থেকে তিনি আমাদের দুই বোনের কোনো খোঁজ রাখেন না। অনেক কষ্ট করে মানুষের বাড়িতে ও ঢাকায় গার্মেন্টসের চাকরি করে বড় হয়েছি। তিন বছর আগে স্বামী আমাকে তালাক দেয়। অসহায় হয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসি। এরপর ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাঁচতে বাবার কাছে আমার সম্পত্তি বুঝিয়ে দিতে বললে, আমার আপন বোন ও সৎ ভাই-বোনরা মিলে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে বেধড়ক মারপিট করে। আমার দুটি পা ভেঙে দিয়েছে। আমি এখন আমার সন্তানদের নিয়ে কি ভাবে বাঁচব?’ 
 
মেহেনাজের সৎ মা কহিনুর বেগম বলেন, ‘মেহেনাজ বাড়িতে আসার পর থেকে সম্পত্তির ভাগ চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে জমি লিখে দেওয়া হয়েছে। সে জমিতে তার ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসবাস করছে। কিন্তু জমি লিখে দেওয়ার পর থেকে মেহেনাজ আরও সম্পত্তি ও টাকা দাবি করে। এরপর থেকে মেহেনাজের ছোট চাচা মাসুম বিল্লাহর ইন্ধনে মেহেনাজ তার ইচ্ছামতো জমি দখলের চেষ্টা চালায়। বিষয়টি নিয়ে তার বাবা বাধা দিলে, সে তার বাবাকে দা দিয়ে কোপাতে আসে। তখন অন্যান্য ছেলে-মেয়েরা মিলে তাকে মারধর করে। এরপর কিন্তু আমারাই মেহেনাজকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। সেই থেকে হাসপাতালে আমি মেহেনাজের পাশে আছি। সেবা করে যাচ্ছি। এক প্রকার অতিষ্ঠ হয়ে ভাই-বোনরা তাকে মেরেছে।’ 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মেহেনাজের পাশে থাকা তার সৎ ভাই ইমরান জোমাদ্দার বলেন, ‘মূলত বাবাকে দা দিয়ে কোপাতে যায় মেহেনাজ আপা। এ সময় আমিসহ অন্যান্য ভাই-বোনরা তাকে ঠেকাতে যাই। কিন্তু মেহেনাজ আপা এতটাই উত্তেজিত ছিল যে, সে আমাদেরও মারতে শুরু করে। তখন অন্যান্য ভাই-বোনরা তাকে মারপিট করে। এতে তার পা ভেঙে গেলে আমরাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।’ 

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন বলেন, ‘ঘটনার পর খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত