‘চাঁদা নয়, বউ উদ্ধারের বিনিময়ে আড়াই লাখ টাকা চেয়েছিলাম’, দাবি জবি ছাত্রলীগকর্মীর

আড়াই লাখ টাকা না দেওয়ায় এফআর হিমাচল পরিবহনের একটি এসি বাস গত নয় দিন ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আটকে রেখেছিলেন শাখা ছাত্রলীগকর্মী মেহেদী। গত ৬ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাসটি পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার এলাকা থেকে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আটকে রাখা হয়। 

এ বিষয়ে এফআর পরিবহনের এমডি নোমানের অভিযোগ, তাঁতিবাজার মোড় থেকে কোনো কারণ ছাড়াই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী গাড়িটি বিশ্ববিদ্যালয় গেটে নিয়ে যায়। পরে মেহেদী নামের একজন তাঁর কাছে আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত গাড়ি ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। 

নোমান বলেন, ‘আমি তাঁকে বলি, আপনি আমার কাছে টাকা পান এমন কোনো প্রমাণ যদি দেখাতে পারেন তাহলে আমি আপনাকে ডাবল টাকা দিব। তখন সে আমাকে বলে, আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সেক্রেটারি আকতার হোসেনের সবচেয়ে কাছের লোক। আমাকে কারও কিছু করার ক্ষমতা নেই। টাকা না দিয়ে যদি এই নিয়ে বাড়াবাড়ি বা থানায় অভিযোগ করি তাহলে আমাকে দেখে নিবে বলে হুমকি দেয়।’

তবে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। মেহেদি বলেন, ‘বাস মালিক নোমানের বউ আমার এলাকার এক ছেলের সঙ্গে চলে গিয়েছিল। পরে সে আমাকে বলেছিল, তার বউকে তার কাছে এনে দিতে পারলে আমাকে বাইক, কক্সবাজারের এয়ার টিকিট, আমার গার্লফ্রেন্ডকে স্বর্ণের চেইন ও ৪ দিন থাকা খাওয়ার খরচসহ আরও টাকা দিবে।’

‘পরে আমি নোমানের বউকে কৌশলে তার কাছে এনে দিছিলাম। ২০ দিন নতুন করে ঘর সংসার করে তারপর নোমানের বউ আবার পালিয়ে গেছে। এখন আমার কাজের পাওনা আমাকে দিতে হবে। নোমান টাকা না দিয়ে পালিয়ে চলে যাওয়াতে তাকে আর খুঁজে পাইনি। তারপর তাকে না পাওয়াতে তার গাড়ি আটকায় রেখেছি। নোমান টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাক।’

জানা যায়, গত ৬ মার্চ শাখা ছাত্রলীগ কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ বর্ষের দর্শন বিভাগের ছাত্র মেহেদী ও তাঁর সহপাঠীরা মিলে তাঁতীবাজার থেকে বাসটি আটক করে আনে। নয় দিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বাসটি আটক করে রাখার পর আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে প্রক্টরিয়াল টিমের মধ্যস্থতায় থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। 

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন বলেন, ‘এ ব্যাপারে গতকাল আমাদের ফাঁড়ির ইনচার্জ আমাকে অবগত করলে আমি বলে দিয়েছি, এর সঙ্গে আমি এবং আমার সভাপতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরাও কিছুদিন যাবৎ বাসটি গেটের সামনে দেখতে পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আমি কোতোয়ালি থানার ওসি ও ক্যাম্পাস ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছি, যেন বাসটিকে এখান থেকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়।’