Ajker Patrika

যাবজ্জীবনের প্রথম রায় দিলেন বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব‍্যুনাল

বান্দরবান প্রতিনিধি
যাবজ্জীবনের প্রথম রায় দিলেন বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব‍্যুনাল

বান্দরবানে দুই বছরের শিশুকে ধর্ষণের মামলায় শফিউল আলম নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিকে এক লাখ এক টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব‍্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক আজ রোববার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। 

বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল প্রতিষ্ঠার পর এটিই প্রথম যাবজ্জীবন রায়ের ঘটনা। মামলাটি প্রায় দেড় বছর আগের। বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট বাসিং থোয়াই মারমা এ তথ‍্য নিশ্চিত করেন। 

কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম শফিউল আলম। তিনি কক্সবাজার জেলার ভারুয়াখালীর আবদুল হাকিমের ছেলে। তবে তিনি দীর্ঘদিন বান্দরবান পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বালাঘাটা বাজার মসজিদ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন এবং শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টার দিকে শফিউল আলমের প্রতিবেশী দুই বছরের মেয়েকে নিয়ে বাজারে যান। পরে বাজার থেকে কাজে যাওয়ার সময় শিশুটিকে প্রতিবেশি শফিউলের কোলে দেন বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন‍্য। কিন্তু শফিউল তাঁর মেয়েকে পৌঁছে না নিয়ে নিজের বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে শিশুটি বাসায় গেলে মা বিষয়টি বুঝতে পেরে স্বামীকে খবর দেন। পরে রক্তপাত অবস্থায় তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। 

এ ঘটনায় শিশুর বাবা বাদী হয়ে বান্দরবান সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। মামলার পর সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রিয়েল পালিত ও এসআই মিঠুন সিংহকে তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

তদন্ত কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে ঘটনার সত‍্যতা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়ে ২০২১ সালের ১৬ জুলাই বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দন ট্রাইব‍্যুনালে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। 

স্পেশাল পিপি বাসিং থোয়াই মারমা বলেন, অভিযোগ দাখিলের পর এটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলাটি বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব‍্যুনালে চলে আসে। বান্দরবানের মামলার ১৩ সাক্ষীর মধ‍্যে ট্রাইব‍্যুনালে মোট ১১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। আদালত সাক্ষ্য শুনানি শেষে ধর্ষণের ঘটনাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ার রোববার মামলার এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। 

আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন মো. শাহনেওয়াজ চৌধুরী। 

এদিকে রায় ঘোষণার পর বাদী ও ভুক্তভোগীর বাবা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আসামির যাবজ্জীবন সাজা যেন বহাল থাকে। তাহলেই আমি শান্তি পাব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত