Ajker Patrika

বান্দরবানে ৩ ব‍্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড

বান্দরবান প্রতিনিধি
বান্দরবানে ৩ ব‍্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড

বান্দরবানে সাড়ে ছয় বছর আগে তিন ব‍্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড  দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের বান্দরবান কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁরা আগেই কারাগারে ছিলেন। 

আজ সোমবার দুপুরে বান্দরবানের জেলা ও দায়রা জজ মো. ফজলে এলাহী ভূইঁয়া এ রায় দেন। বান্দরবানের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড মো. ইকবাল করিম আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

রায়ে মৃত‍্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, যোহন ত্রিপুরা, জনব্যাক প্র. ক্যহিন ত্রিপুরা, জসিন ত্রিপুরা, জয় বাহাদুর প্র. জীবন ত্রিপুরা, জর্জ ত্রিপুরা, শানি ত্রিপুরা, আকাশ প্র. সালাউ ত্রিপুরা, সেনেন্দ্র ত্রিপুরা, যোসেফ ত্রিপুরা ও শিগরাম ত্রিপুরা। তাঁরা সবাই বান্দরবানের থানচি উপজেলার বাসিন্দা। গরু ব‍্যবসার নাম করে তিনজনকে ডেকে নিয়ে খুন করেন তাঁরা। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৪ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে বান্দরবানের থানচি থানা এলাকা থেকে গরু ক্রয় করার জন্য ভুক্তভোগী মো. আবু বক্করকে (২৮) আসামিরা মোবাইলে কল করে নগদ তিন লাখ টাকা নিয়ে আলীকদম-থানচি সড়কের ২৮ কিলোমিটার নামক স্থানে ডাকেন। আবু বক্কর তাঁর দুই সহযোগী নুরুল আফসার ও সাহাবুদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এরপর থেকে তাঁদের আর কোনো খোঁজ মেলেনি এবং তিনজনের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। পরে আবু বক্করের ছোট ভাই আবু নাইম থানচি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। 

ভুক্তভোগীদের গরু দেখানোর কথা বলে নিয়ে গিয়ে অপহরণ করে তাঁদের টাকা-পয়সা, মোবাইল, মোটরসাইকেল কেড়ে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটক করে রাখে। পরে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান না পাওয়ায় আবুবক্করের ভাই মো. আবুল হাশেম বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল থানচি থানায় ১০ জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে সেটি মামলা হয়। 

এরপর পুলিশ ও বিজিবি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। আসামিদের স্বীকারোক্তির ওপর ভিত্তি করে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

পিপি ইকবিল করিম বলেন, আসামিদের মধ্যে কয়েকজন আদালতে ১৬৪ ধারার দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক অভিযোগপত্র দাখিল করার পর মামলাটি বিচার নিষ্পত্তির জন্য দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তরিত করা হয়। অভিযোগ গঠন করার পর রাষ্ট্র পক্ষে মোট ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। 

এদিকে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আজ সোমবার দায়রা জজ মো. ফজলে এলাহী ভূইঁয়া মোট ১০ জন আসামির সবাইকে মৃত‍্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ড ও জরিমানার আদেশ দেন। 

পিপি ইকবাল করিম জানান, আসামিরা রায় ঘোষণার দিন থেকে সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করতে পারবেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হবে না। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পিপি অ্যাড মো. ইকবাল করিম এবং আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত অ্যাড আবু হেনা মোস্তফা কামাল। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত