Ajker Patrika

‘জিনে ধরা’ প্রবাসীর স্ত্রীকে ঝাড়ফুঁকের নামে অনৈতিক কাজ করার অভিযোগ

পরশুরাম (ফেনী) প্রতিনিধি
‘জিনে ধরা’ প্রবাসীর স্ত্রীকে ঝাড়ফুঁকের নামে অনৈতিক কাজ করার অভিযোগ

ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় এক কবিরাজের বিরুদ্ধে ঝাড়ফুঁকের নামে প্রবাসীর স্ত্রীর (২২) সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া এবং টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী ওই কবিরাজকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। কিন্তু থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় মুচলেকা নিয়ে ওই কবিরাজকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

ওই গৃহবধূর স্বামী ও বাবা দুবাই থাকেন। শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থাকেন ওই গৃহবধূ। 

এলাকায় জিনের বাদশা হিসেবে পরিচিত ওই কবিরাজ। রাসেদ, আশ্রাফসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত ওই কবিরাজ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে পরিচিত বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। 

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এলাকাবাসী ও গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জিনে ধরেছে ভেবে পরিবার গৃহবধূকে কবিরাজ রাসেদের কাছে নিয়ে যায়। জিন তাড়ানোর জন্য ৬৫ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। চুক্তি অনুযায়ী এক বছর ধরে ওই কবিরাজ প্রবাসীর স্ত্রীকে ঝাড়ফুঁক দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু রোগী ভালো হচ্ছে না বলে জানান ওই গৃহবধূর মা। 

সম্প্রতি ওই গৃহবধূর অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছিল। গত বুধবার (২ নভেম্বর) হঠাৎ বাবার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে কবিরাজের শরণাপন্ন হন তাঁরা। কবিরাজ তাঁকে উদ্ধার করে দিয়ে ৩৫ হাজার টাকা আদায় করেন। 

পরদিন বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাত ৩টায় ঝাড়ফুঁক করে ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে উদ্ধার করে দেন বলে জানান এলাকাবাসী। বলা হয়, কবিরাজের দেখানো মতো গৃহবধূর পরিবারের লোকজন তাঁকে বাড়ির পেছনে একটি ছোট গাছ থেকে উদ্ধার করেন। 

এ ঘটনার পর গত শুক্রবার (৪ নভেম্বর) অসুস্থ হয়ে পড়লে আবারও ডাকা হয় কবিরাজকে। কবিরাজ রাতে এসে ঘরের আলো নিভিয়ে সবাইকে সরে যেতে বলে ঝাড়ফুঁক শুরু করেন। এ সময় কবিরাজকে টাকা দেওয়া নিয়ে গৃহবধূর পরিবার ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। গৃহবধূর পরিবার স্থানীয় গ্রামবাসীকে খবর দিলে সবাই হাজির হয়। 

একপর্যায়ে এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে কবিরাজকে আটক করে মারধর করা হয়। রাত ২টার দিকে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে কবিরাজকে পরশুরাম থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এ সময় তাঁর দুই সহযোগীকেও আটক করা হয়। 

এদিকে ওই গৃহবধূর প্রবাসী বাবা পরশুরাম থানার পুলিশ ও এই প্রতিবেদককে দুবাই থেকে টেলিফোনে জানান, ঝাড়ফুঁক করার নামে ওই কবিরাজ তাঁর কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ওই কবিরাজ তাঁর মেয়েকে জিনে নিয়েছে বলে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান। আবার টাকা দিলে দু-এক দিন পর দিয়ে যান। কবিরাজ শুধু টাকা নেননি তাঁর মেয়ের সঙ্গে অনৈতিক কার্যকলাপও করে যাচ্ছেন বলে গৃহবধূর বাবা অভিযোগ করেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৃহবধূর শ্বশুর জানান, কবিরাজ রাসেদ তাঁর কাছ থেকে শুধু সিগারেট কিনতেই ৩ লাখ টাকা নিয়েছেন। দিন তারিখসহ তাঁর কাছে লেখা রয়েছে সেসব। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় আরও ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কবিরাজ। তাঁর কাছে সবকিছুর প্রমাণ আছে বলে দাবি করেন তিনি। 

দুই সহকর্মীসহ কবিরাজ রাসেদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসীশ্বশুর জানান, এক বছর ধরে ঝাড়ফুঁক করলেও রোগীর কোনো উন্নতি হয়নি। দুই তিন-দিন পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে কবিরাজ গিয়ে ঝাড়ফুঁক করলে আবার সুস্থ হয়ে যান। কবিরাজ চলে গেলে দুই দিন পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁর পুত্রবধূ। 

চিথলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন জানান, ওই কবিরাজের আসল ঠিকানা চিথলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালধর গ্রামে। তবে বর্তমানে রামপুর শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করেন। ওই কবিরাজ একেক সময় একেক নামে পরিচয় দেন। তিনি একজন প্রতারক। চারটি বিয়ে করেছেন। বর্তমানে তিনি রামপুর শ্বশুরবাড়িতে এক স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইয়াছিন জানান, ওই প্রবাসীর ছেলের বাবা কবিরাজ রাসেদকে নিয়মিত ওই বাড়িতে নিয়ে যান এবং দীর্ঘক্ষণ ধরে ঝাড়ফুঁক করাচ্ছেন। রাসেদের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত বলে জানান তাঁরা। 

অভিযোগের বিষয়ে ‘জিনের বাদশা’ রাসেদ বলেন, ‘আমি একজন কবিরাজ। নারীদের জিনে আছর করলে আমি ঝাড়ফুঁক দিয়ে ঠিক করে দিতে পারি। ওই প্রবাসীর স্ত্রীকে ১২টি জিন আছর করেছে। তাঁর শরীরে বর্তমানে ১২টি জিন রয়েছে। সবচেয়ে খারাপ জিন হচ্ছে ওয়াশিম। সে নিয়মিত তাকে (গৃহবধূ) তুলে নিয়ে তাদের রাজ্যে নিয়ে যায়। সেখানে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। আমি জিন হাজিরার মাধ্যমে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে দিয়েছি।’ 

৬৫ হাজার টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে রাসেদ জানান, এক বছরের চুক্তি শেষ হওয়ার পর তাঁদের কাছ থেকে আরও কিছু টাকা বাড়তি নিয়েছেন। তবে ২০ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। 

এদিকে কবিরাজের প্রশংসা করে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, ‘আমাকে জিন উড়াই অন্যত্র নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে দুই-তিন দিন আটক রাখে এবং জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করে। জিনের বাদশা আবার ঝাড়ফুঁক দিয়ে আমাকে উদ্ধার করে দেন। জিনের বাদশা রাসেদ খুবই ভালো মানুষ। সে না থাকলে জিনেরা আমাকে মেরেই ফেলত।’

পরশুরাম থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনির আহাম্মদ বলেন, ‘এটা কোনো জিনের আছরের ঘটনা নয়। এটা একটা প্রতারণা। কৌশলে টাকা নেওয়ার একটা কৌশল মাত্র। জিনের বাদশা নামে পরিচিত রাসেদ ঝাড়ফুঁকের নামে শুধু টাকা হাতিয়ে নেননি, ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে জিনের কথা বলে নিজেই অনৈতিক কাজ করে যাচ্ছেন। তবে দুই পরিবারের কেউ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতেও রাজি না হওয়া মুচলেকা দিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, প্রবাসীর স্ত্রী দুই পরিবারের কেউ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে রাজি না হওয়ায় মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

কবিরাজের বিরুদ্ধে থানায় কেন লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলো না—এমন প্রশ্নের উত্তরে গৃহবধূর শ্বশুর বলেন, ‘ওই কবিরাজ অনেক কিছু জানে। যেকোনো সময় পরিবারের ক্ষতি করতে পারে। এই ভয়ে কবিরাজের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান ৩ দিনের রিমান্ডে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত
সেলিম প্রধান। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ক্যাসিনো-কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হারুনুর রশিদ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ওই মামলায় সেলিম প্রধানকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হক মামুন ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বারিধারার একটি রেস্তোরাঁ থেকে সেলিম প্রধানসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ দশমিক ৭ কেজি ওজনের সিসা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া সাতটি সিসা স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মাদক আইনে মামলা করা হয়। পরে সেলিম প্রধানকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জেনেভা ক্যাম্পে জাহিদ হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।

জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিদেশ থেকে আসা পার্সেলের নামে প্রতারণা, ব্যবসায়ীর ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল তরুণ

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।

এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।

পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।

ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জুয়া, প্রতারণায় জড়িত ৫০ হাজার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব স্থগিত

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।

সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।

১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’

অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।

সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত