Ajker Patrika

হোয়াটসঅ্যাপ–টেলিগ্রামে দ্বিগুণ মুনাফার ফাঁদ, ৮০ হাজার টাকা খোয়ালেন নারী—ডিএসইর সতর্কবার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৫, ২১: ২১
হোয়াটসঅ্যাপ–টেলিগ্রামে দ্বিগুণ মুনাফার ফাঁদ, ৮০ হাজার টাকা খোয়ালেন নারী—ডিএসইর সতর্কবার্তা

‘এক-দুই দিনে মুনাফা দ্বিগুণ’—এমন প্রলোভনে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র। হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় এসব চক্র ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নাম, লোগো ও ঠিকানা ব্যবহার করে মানুষকে ফাঁদে ফেলছে। ইতিমধ্যে একটি গোয়েন্দা সংস্থা নারায়ণগঞ্জভিত্তিক একটি চক্রকে শনাক্ত করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আসাদুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) শফিকুর ইসলাম ভূঁইয়া ও উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান।

আসাদুর রহমান বলেন, ডিএসই, সিএসই বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা সরাসরি কোনো বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে না। বিনিয়োগের একমাত্র বৈধ পথ হলো ডিএসই (ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) ও সিএসইর (চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ) অনুমোদিত স্টক ব্রোকার। এর বাইরে অন্য কোনো মাধ্যমে বিনিয়োগ করলে তা অবৈধ প্রতারণার ঝুঁকি তৈরি করে। প্রতারকেরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে লোভনীয় বার্তা পাঠায়। প্রথমে সামান্য মুনাফা দেখিয়ে আস্থা অর্জন করে, পরে আরও কিছু মুনাফা দেখিয়ে বড় অঙ্কের বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করে। একসময় জানানো হয়; অ্যাপে সমস্যা হয়েছে, আরও অর্থ দিতে হবে। অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার পর ভুক্তভোগীকে ব্লক করে দেয় প্রতারক চক্র।

একটি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আসাদুর রহমান বলেন, প্রথম ৪ হাজার টাকা দিলে ২ হাজার টাকা মুনাফা দেয়। এরপর ৪০ হাজার টাকা নিয়ে বলে, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে মুনাফা করা যাচ্ছে না। সমস্যা সমাধানের জন্য আরও ৪০ হাজার টাকা দিতে বলে। পরে আরও ৪০ হাজার টাকা পাঠালে, তারপর সেই মোবাইল বন্ধ করে দেয়। এভাবেই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণা করা হচ্ছে।

ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি বলেন, চক্রটি দ্রুত মুনাফা করিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে করে অনেকে প্রতারিত হচ্ছেন। এ প্রতারণারোধে খিলক্ষেত থানায় ৩ আগস্ট একটি অভিযোগ করা হয়। এ ছাড়া সচেতন করার জন্য সব স্টেকহোল্ডার এবং ডিএসই ভবনে থাকা সব অফিসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ব্যবহার করার অনুরোধ জানিয়ে বিএসইসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ডিএসইর পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রতারণার ফাঁদ থেকে বাঁচতে বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে। শুধু অনুমোদিত স্টক ব্রোকারের মাধ্যমে লেনদেন করতে হবে। ডিএসই ও সিএসই ওয়েবসাইটে অনুমোদিত ব্রোকারদের তালিকা রয়েছে। এসব প্রতারণা শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতির কারণ নয়, বরং পুঁজিবাজারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাকেও নষ্ট করে। তাই গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত