আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
টানা ৯ বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। রাজস্ব আদায়ে প্রতিবছর কিছুটা প্রবৃদ্ধি থাকলেও তা পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে থাকছে। প্রস্তাবিত ও সংশোধিত, উভয় লক্ষ্যেই তৈরি হচ্ছে বড় ফারাক। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের পর থেকে কোনো বছরই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি এনবিআর।
সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, অথচ এনবিআর আদায় করতে পেরেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯০ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ ঘাটতির মাত্রা বাড়ছে।
এনবিআর সর্বশেষ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছিল ২০১৫-১৬ অর্থবছরে, যেখানে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা এবং আদায় হয়েছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬২৬ কোটি। অর্থাৎ অর্জনের হার ছিল ১০২ দশমিক ৪২ শতাংশ। পরের বছর থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। ২০১৬-১৭ সালে ঘাটতি হয় ১৪ হাজার কোটি, ২০১৭-১৮ সালে ঘাটতি ২২ হাজার ৬৮৮ কোটি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা দাঁড়ায় ৫৯ হাজার ২৯২ কোটি টাকায়। এরপর ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৫০০ কোটি, কিন্তু আদায় হয় মাত্র ২ লাখ ১৬ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা, ঘাটতির হার প্রায় ৩০ শতাংশ।
কর আদায়ে ক্রমাগত এই ব্যর্থতার পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা, দুর্বল বাস্তবায়ন, করব্যবস্থায় জটিলতা, প্রশাসনিক অদক্ষতা ও করদাতাদের আস্থার সংকট। এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০১৫-১৬ সালের আগপর্যন্ত এনবিআর নিজেরাই আয়-ব্যয়ের উৎস নির্ধারণ করত। ফলে তখন বাস্তবতা অনুযায়ী পরিকল্পনা হতো এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনও সম্ভব ছিল।’
অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, শুধু লক্ষ্যমাত্রা বেশি নয়, কর আদায়ে নানা কাঠামোগত ব্যর্থতাও বিদ্যমান। তিনি বলেন, ‘যে রাজস্ব জনগণ দেয়, তার পুরোটা কোষাগারে জমা হয় না; এটা সবাই জানে। সুশাসন না হলে, দুর্নীতি না কমলে এবং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না হলে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় সম্ভব নয়।’
রাজস্ব ফাঁকি ও কর পরিহারও বড় চ্যালেঞ্জ। সিপিডি জানায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ কর ফাঁকির কারণে রাজস্ব হারিয়েছে প্রায় ২ লাখ ২৬ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা, যার অর্ধেক করপোরেট কর ফাঁকি। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) এক গবেষণায় বলা হয়, বহু মানুষ আয়করযোগ্য হলেও নিয়মিত কর দেন না। তাই আয়করে জোর দিয়ে নতুন করদাতা শনাক্ত করতে হবে।
গত অর্থবছরের ঘাটতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বড় প্রভাব ফেলেছে। জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে আন্দোলনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির ছিল। ফলে রাজস্ব আহরণের প্রক্রিয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বছরের শেষ ভাগে সংস্কার-সংক্রান্ত অসন্তোষও রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর ফলে রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত কমেছে, যা উন্নয়ন ব্যয়ের জন্য ঋণনির্ভরতা বাড়িয়েছে।
এমন বাস্তবতায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এনবিআরের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছরের অর্জনের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি এবং আগের বছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪% বেশি। অথচ পাঁচ বছর ধরে রাজস্ব আদায়ের গড় প্রবৃদ্ধি মাত্র ১১ শতাংশ।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান নিজেও স্বীকার করেন, প্রতিবছর উচ্চ লক্ষ্যমাত্রার মুখোমুখি হতে হয়, যা দেশের বাস্তবতায় অনেক সময় অর্জন করা সম্ভব হয় না।
টানা ৯ বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। রাজস্ব আদায়ে প্রতিবছর কিছুটা প্রবৃদ্ধি থাকলেও তা পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য থেকে পিছিয়ে থাকছে। প্রস্তাবিত ও সংশোধিত, উভয় লক্ষ্যেই তৈরি হচ্ছে বড় ফারাক। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের পর থেকে কোনো বছরই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি এনবিআর।
সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, অথচ এনবিআর আদায় করতে পেরেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯০ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৬ দশমিক ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ ঘাটতির মাত্রা বাড়ছে।
এনবিআর সর্বশেষ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছিল ২০১৫-১৬ অর্থবছরে, যেখানে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা এবং আদায় হয়েছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬২৬ কোটি। অর্থাৎ অর্জনের হার ছিল ১০২ দশমিক ৪২ শতাংশ। পরের বছর থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। ২০১৬-১৭ সালে ঘাটতি হয় ১৪ হাজার কোটি, ২০১৭-১৮ সালে ঘাটতি ২২ হাজার ৬৮৮ কোটি, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা দাঁড়ায় ৫৯ হাজার ২৯২ কোটি টাকায়। এরপর ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৫০০ কোটি, কিন্তু আদায় হয় মাত্র ২ লাখ ১৬ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা, ঘাটতির হার প্রায় ৩০ শতাংশ।
কর আদায়ে ক্রমাগত এই ব্যর্থতার পেছনে মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা, দুর্বল বাস্তবায়ন, করব্যবস্থায় জটিলতা, প্রশাসনিক অদক্ষতা ও করদাতাদের আস্থার সংকট। এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০১৫-১৬ সালের আগপর্যন্ত এনবিআর নিজেরাই আয়-ব্যয়ের উৎস নির্ধারণ করত। ফলে তখন বাস্তবতা অনুযায়ী পরিকল্পনা হতো এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনও সম্ভব ছিল।’
অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, শুধু লক্ষ্যমাত্রা বেশি নয়, কর আদায়ে নানা কাঠামোগত ব্যর্থতাও বিদ্যমান। তিনি বলেন, ‘যে রাজস্ব জনগণ দেয়, তার পুরোটা কোষাগারে জমা হয় না; এটা সবাই জানে। সুশাসন না হলে, দুর্নীতি না কমলে এবং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার না হলে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায় সম্ভব নয়।’
রাজস্ব ফাঁকি ও কর পরিহারও বড় চ্যালেঞ্জ। সিপিডি জানায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ কর ফাঁকির কারণে রাজস্ব হারিয়েছে প্রায় ২ লাখ ২৬ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা, যার অর্ধেক করপোরেট কর ফাঁকি। পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) এক গবেষণায় বলা হয়, বহু মানুষ আয়করযোগ্য হলেও নিয়মিত কর দেন না। তাই আয়করে জোর দিয়ে নতুন করদাতা শনাক্ত করতে হবে।
গত অর্থবছরের ঘাটতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বড় প্রভাব ফেলেছে। জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে আন্দোলনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির ছিল। ফলে রাজস্ব আহরণের প্রক্রিয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বছরের শেষ ভাগে সংস্কার-সংক্রান্ত অসন্তোষও রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এর ফলে রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত কমেছে, যা উন্নয়ন ব্যয়ের জন্য ঋণনির্ভরতা বাড়িয়েছে।
এমন বাস্তবতায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এনবিআরের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছরের অর্জনের তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি এবং আগের বছরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪% বেশি। অথচ পাঁচ বছর ধরে রাজস্ব আদায়ের গড় প্রবৃদ্ধি মাত্র ১১ শতাংশ।
এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান নিজেও স্বীকার করেন, প্রতিবছর উচ্চ লক্ষ্যমাত্রার মুখোমুখি হতে হয়, যা দেশের বাস্তবতায় অনেক সময় অর্জন করা সম্ভব হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি বাংলাদেশকে এমন এক বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছিল, যা ছিল অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ এক সতর্কসংকেত। শেষ পর্যন্ত যদি এই শুল্কহার ১৫ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশে নির্ধারণ না করা হতো, বরং তা প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় আরও বেশি হতো। তবে এর অভিঘাত হতো বহুমাত্রিক ও ব্যাপক।
৬ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনায় দেশের পুঁজিবাজারে নতুন করে প্রাণ ফিরে এসেছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পাশাপাশি লেনদেনেও বড় উত্থান হয়েছে। লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে প্রায় এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়
৬ ঘণ্টা আগেবিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে চলমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন (২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলা
৬ ঘণ্টা আগেব্যাংকিং খাতকে ঝুঁকিনির্ভর তদারকির আওতায় আনতে এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ‘সুপারভাইজরি পলিসি অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন ডিপার্টমেন্ট’ (এসপিসিডি) নামে একটি নতুন বিভাগ চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
৯ ঘণ্টা আগে