Ajker Patrika

অস্ট্রেলিয়ার ফ্যাশন ব্র্যান্ড দেউলিয়া, বাংলাদেশে বিপন্ন হাজারো শ্রমিকের জীবন

আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ২১
বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে কর্মরত আছে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক। ছবি: এএফপি
বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে কর্মরত আছে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক। ছবি: এএফপি

গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন ২৬ বছর বয়সী ইয়াসমিন লাবণী। সেখানে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। পদ্মা শাতিল আরব ফ্যাশনস লিমিটেড নামে এই কারখানায় তৈরি পোশাক অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ফ্যাশন রিটেইলার কোম্পানি মোজাইকে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এই মোজাইকের দোষে এখন পথে বসার অবস্থা লাবণীর।

সম্প্রতি এই রিটেইলার নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। অথচ প্রতিষ্ঠানটির কাছে ২৫ লাখ ডলার পাওনা আছে পদ্মা শাতিল আরব ফ্যাশন্স লিমিটেডের। শুধু এই কারখানা নয়, আরও ২২টি কারখানার কাছে মোট ৩ কোটি ডলারের বকেয়া আছে মোজাইকের। এত বিশাল বকেয়ার কারণে লাবণীর মতো হাজার হাজার শ্রমিকের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে তাঁদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরেছে।

পোশাকশ্রমিক লাবণী বলেন, ‘দুই সন্তানের মুখে ঠিকমতো খাবার তুলে দিতে পারব কি না—এই চিন্তায় আছি। চিকিৎসার খরচ, দরকারি জিনিস কেনাও কঠিন হয়ে পড়ছে। আমাদের যা বেতন, শুধু তা ই চাই আমরা। না হলে আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।’

লাবণী আরও বলেন, ‘মালিক তো আর নিজের পকেট থেকে সবার বেতন দিতে পারবে না, তিনি সর্বোচ্চ কয়েকজনকে দিতে পারেন।’

গত মাসে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোম্পানি পরিচালনার ভার একাধিক প্রতিষ্ঠানের যৌথ দায়িত্বে ছেড়ে দেয়। কোম্পানিটির এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের পোশাক খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। মোজাইকের কাছে পাওনা প্রায় ৩ কোটি ডলার নিয়ে পরিশোধ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

পদ্মা স্যাটেল আরব ফ্যাশনসের পরিচালক জাবেদ আহমেদ বলেন, ‘জুন মাস থেকে আমরা বারবার তাঁদের কাছে পাওনা পরিশোধের আহ্বান জানিয়েছি, কিন্তু তাঁরা বিক্রি কমে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়েছে। শিগগিরই পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাকি শিপমেন্ট পাঠিয়ে দিতে বলেছে।’

ফ্যাক্টরি ম্যানেজার মোহাম্মদ আলম মিয়া বলেন, ‘মোজাইক যদি টাকা পরিশোধ না করে, তাহলে অনেকের চাকরি যাবে। তাঁরা সময়মতো পাওনা পরিশোধ করুক— শুধু এটাই চাই।’

হাইড্রোক্সাইড নিটওয়্যারের মালিক ওহমার চৌধুরী বলেন, মোজাইকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য যোগান দিতে তিনি উৎপাদন বাড়িয়েছিলেন। এমনকি বেশি বেতনে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু তারা দামে বড় ছাড় দিতে বলছে, এটাতো সম্ভব নয়। এটা সম্পূর্ণ প্রতারণা! মোজাইক অবিশ্বাস্য ভণ্ডামি করেছে!

মোজাইকের জন্য পোশাক সরবরাহকারী কারখানা সুলতানা সোয়েটার্সের ম্যানেজার সারওয়ার হোসেন বলেন, মোজাইকের কাছে আমার ১০ লাখ ডলার পাওনা। মাসের পর মাস কর্মীদের বেতন আটকে আছে। ব্যাংকগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোকে ঋণ দিতে চাচ্ছে না। এই পরিস্থিতি সহ্য করার মতো না। মজুরি ছাড়াও কাঁচামাল, বিদ্যুৎ, পরিবহন ও অন্যান্য খরচের বিষয়েও চিন্তায় পড়ে গেছেন তারা।

গত বছর থেকে মোজাইকের পাওনা আটকে থাকা শুরু হয়। তবুও অর্ডার পূরণে পোশাক পাঠিয়েছেন তারা। সেটি বেশ বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে মনে করেন সারওয়ার হোসেন। তিনি বলেন, মোজাইকের সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখতে এবং বড় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাতি ধরে রাখতে এবং দায়িত্ব ঠিকমতো চালিয়ে যেতে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। পাওনা পরিশোধের বিষয়ে আবারও চাপ তৈরির প্রয়োজনে পণ্য পাঠাতে হয়েছিল।

মোজাইক কোম্পানির অধীনে ৯টি ফ্যাশন ব্র্যান্ড আছে। এগুলোর মধ্যে গত সেপ্টেম্বরে রকম্যানস, অটোগ্রাফ, ডব্লিউ. লেন, ক্রসরোডস ও বেমের কার্যক্রম বন্ধ ও পুনর্গঠনের ঘোষণা দেয় মোজাইক। বাকি ব্র্যান্ডগুলোতে বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে বলে জানায় তারা।

মোজাইকের নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এরিকা বার্চটোল্ড বলেন, ‘এখন আমাদের পূর্ণ মনোযোগ থাকবে প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর দিকে। গ্রাহক সেবা ও নতুন গ্রাহক আকর্ষণই হবে মূল লক্ষ্য। দেউলিয়া অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ঋণদাতাদের সঙ্গে বৈঠক চলছে। কোম্পানি কার্যক্রম পুনর্গঠন করতে এবং কোম্পানির টেকসই পরিস্থিতি মূল্যায়নের কাজও অব্যাহত আছে।’

পোশাক সরবরাহকারীরা এবিসি নিউজকে জানান, মোজাইকের আগ্রাসী বাণিজ্য কৌশল কোম্পানিটির ব্যর্থতা ও সমস্যাগুলোকে আরও প্রকট করে তুলেছে। এ বিষয়ে মোজাইকের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা এফটিআই কনসালটিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া মেলেনি।

মোজাইক দেউলিয়া ঘোষণার পর তাদের মুখপাত্র হিসেবে কেপিএমজি এবিসি নিউজকে একটি ইমেইলে জানায়, মোজাইক তাদের কার্যক্রম স্থিতিশীল করতে সব সরবরাহকারীদের সঙ্গে কাজ করছেন। এক্ষেত্রে বাণিজ্যিক শর্ত পুনঃস্থাপনের সুযোগ থাকতে পারে।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, কোভিড মহামারি ও সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বিপর্যস্ত পোশাক শিল্পের জন্য এটি বড় ধাক্কা। মোজাইকের বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া হাই কমিশন বিজিএমইএকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, অস্ট্রেলিয়ার ভাবমূর্তি ঝুঁকির মুখে। দেশটির হাইকমিশনে একাধিকবার বিষয়টি উত্থাপন করা হলেও অস্ট্রেলিয়ান ব্র্যান্ড পাওনা পরিশোধ করেনি। এভাবে দায় এড়িয়ে যাওয়ায় দেশটির মান কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়? মোজাইক দাবি করে তারা শ্রমিকদের কল্যাণ নিয়ে ভাবে কিন্তু তারা পণ্য নিয়ে পাওনা পরিশোধ করছে না এবং এ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া যাচ্ছে না। তারা দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাচ্ছে।

তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকে প্রতি বছর ৩৪ বিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলাদেশ, যা দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৫ শতাংশ। এশিল্পে কর্মরত আছে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক।

বৈশ্বিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফাম অস্ট্রেলিয়া বলছে, মোজাইকের বকেয়া পরিশোধ না করার এই ঘটনা আমাদের সামনে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে চলমান শোষণের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে।

(এবিসি নিউজের প্রতিবেদন অনুবাদ করেছেন ফারহানা জিয়াসমিন)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাস্টমস কর্মকর্তা শহিদুজ্জামান সাময়িক বরখাস্ত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজস্ব ভবন। ছবি: আজকে পত্রিকা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজস্ব ভবন। ছবি: আজকে পত্রিকা

কাস্টমস ও আবগারি বিভাগের উপকমিশনার মো. শহিদুজ্জামান সরকারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল রোববার (২ নভেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) শুল্ক-১ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এতে সই করেন আইআরডি সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মো. শহিদুজ্জামান সরকারের বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’-এর অভিযোগে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩ (খ) ও ৩ (গ) অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। তাঁকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ১২ (১) অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাজুসের নেতৃত্বে ফের এনামুল হক ও রণজিৎ ঘোষ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাজুস এনামুল রণজিৎ
বাজুস এনামুল রণজিৎ

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) আবারও সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভাসের এনামুল হক খান। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংগঠনটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সানন্দা জুয়েলার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রণজিৎ ঘোষ।

আজ সোমবার বাজুসের নতুন পরিচালনা কমিটি ঘোষণা করে বাজুস নির্বাচন বোর্ড। এর পর রাজধানীর মগবাজারে বাজুসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। বাজুস নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল ফলাফল ঘোষণা করেন।

এনামুল হক এর আগে গত ২০১৯ সালে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০২৩ সালে (১১ এপ্রিল) তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সভাপতি ও একজন সিনিয়র সহসভাপতি ছাড়াও তিনজন সহসভাপতি, একজন কোষাধ্যক্ষ এবং ২৯ জন পরিচালকসহ ৩৫ জনের এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। এঁদের সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গঠনতন্ত্র থেকে বাদ দেওয়ায় এখন থেকে এই পদে আর কেউ থাকবেন না। ফলে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সিনিয়র সহসভাপতিই পালন করবেন। বাজুস প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম সাধারণ সম্পাদক পদ বিলুপ্ত করা হলো।

সহসভাপতি পদে আপন ডায়মন্ড হাউজের আজাদ আহমেদ, জড়োয়া হাউজ (প্রা.) লিমিটেডের অভি রায় এবং জেসিএক্স গোল্ড এন্ড ডায়মন্ডের ইকবাল হোসেন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন। কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত হয়েছেন নিউ ফেন্সী জুয়েলার্সের অমিত ঘোষ।

পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন—মো. মিলন মিয়া, পবন কুমার আগরওয়ালা, তানভীর রহমান, মো. লিটন হাওলাদার, বাবুল দত্ত, গণেশ দেবনাথ, আশিস কুমার মণ্ডল, মিনাজুর রহমান, বিকাশ ঘোষ, সুমন চন্দ্র দে, মোস্তাফা কামাল, ধনঞ্জয় সাহা (বিপুল), শ্রীবাস রায়, মো. আলী হোসেন, মো. রুবেল, মো. নয়ন চৌধুরী, মো. ছালাম, ফাহাদ কামাল লিংকন, গৌতম ঘোষ, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম, সৌমেন সাহা, আককাছ আলী, মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, শাওন আহাম্মদ চৌধুরী, মো. নাজমুল হুদা লতিফ এবং পলাশ কুমার সাহা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈধ প্রার্থীদের মধ্য থেকে কোনো প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করায় বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালা-২০২৫ এর ২৪ (১) ধারা মোতাবেক বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচনযোগ্য পদের সমান হওয়ায় ৩৫ জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

বাজুসের নতুন নির্বাচিত সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, “আমাদের সোনা আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। সোনা আমদানির ব্যবস্থা আছে, কিন্তু এত কঠিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সোনা আমদানি করতে গেলে যেই দাম দাঁড়ায়, সেই দাম দিয়ে কেউ সোনা কিনতে আগ্রহী না। ”

তিনি বলেন, “মানুষকে বোঝাতে হবে ব্যবসায়ীরা কিন্তু চোরাকারবারি না। যারা চোরাকারবার করে তারা কোনো দিন সোনা ব্যবসায় আসবে না। আর যারা সোনা ব্যবসা করে তারা কোনো দিন চোরাকারবারে জড়াবে না। যত দিন সোনা আমদানি সহজ না হয়, তত দিন পর্যন্ত ব্যাগেজ রুলের মাধ্যমে সোনা যে সহজে আসত, সেটা চালু করার জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করব। ”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অর্থ পাচার: অনিল আম্বানির ৩,০৮৪ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪০
অনিল আম্বানি। ফাইল ছবি
অনিল আম্বানি। ফাইল ছবি

অনিল আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং তদন্তের অংশ হিসেবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) প্রায় ৩ হাজার ৮৪ কোটি মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-এর অধীনে গত ৩১ অক্টোবর এই বাজেয়াপ্তের নির্দেশ জারি করা হয়।

বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে মুম্বাইয়ের পালি হিলের বিলাসবহুল পারিবারিক আবাসন, দিল্লির রিলায়েন্স সেন্টার এবং দেশের অন্তত আটটি শহরের রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি। দিল্লি, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, মুম্বাই, পুণে, থানে, হায়দরাবাদ, চেন্নাই এবং অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জুড়ে এই সম্পত্তিগুলো বিস্তৃত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অফিস, আবাসিক ইউনিট এবং জমির প্লট।

কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডির অভিযোগ, রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্স লিমিটেড (আরএইচএফএল) এবং রিলায়েন্স কমার্শিয়াল ফাইন্যান্স লিমিটেড (আরসিএফএল)-এর সংগৃহীত জনগণের টাকা বেআইনিভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা এবং পাচার করার অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ইডি জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইয়েস ব্যাংক আরএইচএফএল-এ ২ হাজর ৯৬৫ কোটি এবং আরসিএফএল-এ ২ হাজার ৪৫ কোটি বিনিয়োগ করেছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই বিনিয়োগগুলো খেলাপি সম্পত্তিতে পরিণত হয়।

তদন্তে আরও উঠে আসে, সেবি (এসইবিআই)-এর বিধিনিষেধ এড়ানোর জন্য এই তহবিলগুলো ঘুরপথে ব্যবহার করা হয়েছিল। সংঘাতের স্বার্থ সংক্রান্ত নিয়মের কারণে রিলায়েন্স নিপ্পন মিউচুয়াল ফান্ডের পক্ষে সরাসরি অনিল আম্বানির আর্থিক সংস্থাগুলোতে বিনিয়োগ করা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু অভিযোগ, সাধারণ মানুষের মিউচুয়াল ফান্ড থেকে সংগৃহীত অর্থ ইয়েস ব্যাংকের মাধ্যমে ঘুরপথে আরএইচএফএল এবং আরসিএফএল-এ নেওয়া হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত অনিল আম্বানির কোম্পানিগুলোর কাছে যায়।

ইডি আরও দাবি করেছে, অর্থপাচারের তদন্তে তারা দেখতে পেয়েছে, এই ঋণ দেওয়া ও লেনদেনের ক্ষেত্রে অনিয়ম ছিল। কোনো রকম যাচাই ছাড়াই ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল, বহু ক্ষেত্রে আবেদন জমা দেওয়ার আগেই অথবা একই দিনে মঞ্জুরি ও বিতরণ করা হয়। কিছু ঋণের নথিতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নথি ফাঁকা বা তারিখবিহীন ছিল বলেও অভিযোগ।

এ ছাড়া, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড (আরকম)-এর সঙ্গে যুক্ত ঋণ জালিয়াতি মামলাতেও তদন্ত জোরদার করেছে ইডি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় ১৩ হাজার ৬০০ কোটি রুপির বেশি অর্থ ‘লোন এভারগ্রিনিং’ (মূল পরিশোধের বাধ্যবাধকতা মওকুফ) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।

কেন্দ্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত এই সম্পত্তিগুলোর সন্ধান ও বাজেয়াপ্তের কাজ তারা চালিয়ে যাবে। তাদের দাবি, এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণের স্বার্থ এবং বিনিয়োগকারীদের অর্থ সুরক্ষিত করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৬১ হাজার টন গম নিয়ে মার্কিন জাহাজ ভিড়ল চট্টগ্রাম বন্দরে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৭
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস (MV SPAR ARIES) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস (MV SPAR ARIES) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৬১ হাজার টন গম একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আলোকে নগদ ক্রয় চুক্তির আওতায় ৬০ হাজার ৮০২ মেট্রিক টন গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস (MV SPAR ARIES) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সরকার—টু—সরকার (জি টু জি) ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি কার্যক্রম শুরু করছে। এই চুক্তির আওতায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে, যার প্রথম চালান হিসেবে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম গত ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে দেশে পৌঁছেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত