Ajker Patrika

ভারতের শেয়ারবাজার থেকে এক মাসে ২৭০ কোটি ডলার তুলে নিল বিদেশিরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) ভবনের সামনে এক বৃদ্ধ হাঁটছেন। ছবি: সংগৃহীত
বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই) ভবনের সামনে এক বৃদ্ধ হাঁটছেন। ছবি: সংগৃহীত

বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা (এফপিআই) সেপ্টেম্বরে ভারতীয় শেয়ার থেকে ২৭০ কোটি ডলার সরিয়ে নিয়েছে। টানা তিন মাসের মতো এই ধারা অব্যাহত থাকায় ২০২৫ সাল বিদেশি মূলধন প্রত্যাহারের রেকর্ড বছরে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে।

ভারতের জাতীয় সিকিউরিটিজ ডিপোজিটরি থেকে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মোট ১ হাজার ৭৬০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করেছে। এ সময়কালে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বহিঃপ্রবাহ। এর আগে ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্বব্যাপী সুদের হার বৃদ্ধি ও ডলারের অস্বাভাবিক শক্তিশালী অবস্থানের কারণে নয় মাসে রেকর্ড ২ হাজার ২৩০ কোটি ডলার সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তবে বছর শেষ হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা তৈরি হওয়ায় প্রবাহ আবার বাড়তে শুরু করে, ফলে পুরো বছরের বহিঃপ্রবাহ দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৫০ কোটি ডলারে।

তবু এ বছর এখন পর্যন্ত যেটুকু বহিঃপ্রবাহ ঘটেছে, তা এরই মধ্যে ওই অঙ্ককে ছাড়িয়ে গেছে। ফলে ২০২৫ সাল ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ বছর হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে।

শ্রীরাম লাইফ ইনস্যুরেন্সের প্রেসিডেন্ট ও চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নিফটির এক বছরের রিটার্ন এরই মধ্যে মাইনাস ৪ শতাংশ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক-আঘাত, এইচ-১বি ভিসার ফি বৃদ্ধি আর দুর্বল করপোরেট আয়। এই অবস্থায় এফপিআইদের পুঁজি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া একেবারেই যৌক্তিক।

যুক্তরাষ্ট্র ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে, যা দেশটির ৮৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির অর্ধেকের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ব্রোকারেজ হাউসগুলোর মতে, এ পরিস্থিতি এক বছরের বেশি স্থায়ী হলে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬০-৮০ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

একই সঙ্গে এইচ-১বি ভিসার ফি হঠাৎ বাড়ায় দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও টানাপোড়েনে পড়েছে এবং ভারতের আইটি খাত চাপের মুখে পড়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে এফপিআইদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাত হওয়া সত্ত্বেও এ বছর আইটি খাত থেকে সর্বাধিক ৭২০ কোটি ডলার বিক্রি হয়েছে। এর পরে রয়েছে বিদ্যুৎ, ভোক্তা পণ্য ও আর্থিক খাত।

অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এফপিআইয়ের কৌশলগত চক্রপ্রবাহ এখন চীনসহ অন্যান্য এশীয় অর্থনীতির দিকে ঝুঁকছে, যেখানে আয় তুলনামূলক শক্তিশালী, মূল্যায়ন সস্তা এবং শুল্কও কম।

এদিকে নিরবচ্ছিন্ন বিক্রি ভারতের মানদণ্ড সূচক নিফটি ৫০ ও বিএসই সেনসেক্সকে পিছিয়ে দিয়েছে। চলতি বছর নিফটি বেড়েছে মাত্র ৪ দশমিক ১ শতাংশ এবং সেনসেক্স ২ দশমিক ৭ শতাংশ, অথচ সমগ্র এশিয়ার বাজারে বেড়েছে ২২ শতাংশ এবং উদীয়মান বাজারে ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

তবে বিশ্লেষকেরা আশাবাদের জায়গা দেখছেন। তাঁদের মতে, ভারতীয় শেয়ারবাজারে এখন তুলনামূলক যুক্তিসংগত মূল্যে লেনদেন হচ্ছে। ভোক্তা কর হ্রাস এবং প্রবৃদ্ধিসহায়ক আর্থিক নীতির ফলে ২০২৬ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে করপোরেট আয় বাড়তে পারে। এতে আবারও এফপিআইরা দেশীয় বাজারে ফিরতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ফোন বন্ধ পেলে ধরে নিবা মারা গেছি’, স্ত্রীকে বলেছিলেন ইউক্রেনে নিহত রাজবাড়ীর নজরুল

শাহবাগে গত রাতে ফুটপাত থেকে নারীসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার

নার্সিং হোমে বয়স্ক পুরুষদের ওষুধ খেতে উৎসাহিত করতে মিনি স্কার্ট পরে তরুণীর নাচ

ফিলিস্তিনিদের বের করে দেওয়া হবে না, বরং উল্টোটা ঘটবে: ট্রাম্প

যে কারণে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন ইসরায়েলের দুজন প্রধানমন্ত্রী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত