রোকন উদ্দীন, ঢাকা

রোজাদারদের ইফতারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কম হওয়া নিয়ে এবার যে প্রত্যাশা ছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আশা করা হচ্ছিল, আমদানি খরচ হ্রাস পাওয়া এবং গুটিকয়েক আমদানিকারকের সিন্ডিকেটের অবসান হওয়া–এই দুই কারণে খেজুরের দাম কম থাকবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে, আমদানি বৃদ্ধি এবং সরকারের শুল্ক কমানো—কোনোটারই সুবিধা পাচ্ছে না ভোক্তারা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, এখন বাজারে খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, বর্তমানে গত বছরের তুলনায় গড়ে খেজুরের দাম ১০ শতাংশ বেশি রয়েছে।
আমদানি বেড়েছে, বাজারেও প্রচুর
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের হিসাব অনুয়ায়ী, বছরে দেশে খেজুরের গড় চাহিদা প্রায় ১ লাখ টন। এর মধ্যে রোজার মাসেই চাহিদা থাকে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টনের। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে খেজুর আমদানি করা হয় ৮০ হাজার ৯১০ টন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ আমদানির তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার টন খেজুর বন্দর থেকে খালাস করা হয়েছে। এক বছর আগে এই সময়ে খালাস করা হয় ১১ হাজার ৭১৪ টন। সেই হিসাবে আমদানি বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা, রামপুরা, মানিকনগরসহ কয়েকটি বাজারে গতকাল শনিবার ঘুরে দেখা যায়, খেজুরের সরবরাহ গত সপ্তাহের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এসব বাজারে কিছু মৌসুমি ফলের ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে করেও খেজুর বিক্রি করতে দেখা যায়। বেশি দামের আজওয়া, মরিয়ম, মাবরুমের পাশাপাশি কম দামি জাইদি (খোলা), জাইদি (কার্টন), দাব্বাসসহ কয়েক ধরনের খেজুরও অনেক পাওয়া যাচ্ছে। শহরজুড়ে ফুটপাতেও খেজুর বিক্রি করছেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
আমদানির তুলনায় খুচরা দাম চড়া
আমদানিকারকদের নিজেদের দেওয়া তথ্যমতেই, ভালো মানের আজওয়া, মরিয়মসহ উচ্চমূল্যের খেজুরের আমদানি মূল্য কেজিপ্রতি মাত্র ৩৯০-৪০০ টাকা। এর সঙ্গে প্রতি কেজিতে ২০০ টাকা শুল্ক যোগ করে আমদানি মূল্য দাঁড়ায় কম-বেশি ৬০০ টাকা। আমদানিকারকদের দাবি, এর সঙ্গে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কমিশন, পরিবহন ব্যয়, মজুরের খরচ, মুনাফা ইত্যাদি যোগ করে বাদামতলীসহ পাইকারি বাজারগুলোতে খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি করে। অথচ রাজধানীর বাজারগুলোতে খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৭০০ টাকা কেজি দরে।
ভালো মান ও দামের খেজুরের ক্রেতারাই শুধু নন, ঠকছেন কম দামি সাধারণ খেজুর কেনা নিম্ন আয়ের ভোক্তারাও। রাজধানীর বাজারগুলোতে ইরাকি জাইদিসহ অতি সাধারণ বা সাধারণ মানের খেজুরও বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা কেজি দরে। অথচ এই খেজুরের আমদানি মূল্য ৮০-৯০ টাকা মাত্র। শুল্ক ও অন্যান্য খরচ যোগ করে তার পাইকারি বাজারের দামই ১২০-১৭০ টাকা।
দাব্বাসসহ মাঝারি মানের খেজুরের আমদানি মূল্য, শুল্ক ও অন্যান্যসহ প্রতি কেজির খরচ পড়ছে ৩০০ টাকা। রাজধানীর পাইকারি বাজারে এগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৪০০ টাকা কেজি দরে। বাজারগুলোতে এই খেজুরেরই খুচরা দাম ৫০০-৬০০ টাকা কেজি।

আশাভঙ্গ হওয়ায় হতাশ ক্রেতা
ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ, রোজার বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে খেজুরে অতি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতেই দাম বাড়তি। অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, তাঁরা সামান্য মুনাফাতেই বিক্রি করছেন। খুচরা বিক্রেতাদের অতি মুনাফার কারণেই খেজুরের দাম চড়া।
ক্রেতারা বলছেন, এবার সরকার শুল্কছাড় দিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য খেজুরকে সহজলভ্য করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু যে হারে শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে, সে হারে দাম কমেনি।
কিছুটা ভালো মানের খেজুরের খুচরা দাম পড়ছে প্রতি কেজি হাজার টাকার ওপরে। আর সবচেয়ে ভালো মানের খেজুরের খুচরা মূল্য দেড় হাজার টাকার ওপরে, যা গত বছরের প্রায় সমান। অথচ এবার দাম কমার কথা ছিল। এমন অবস্থা দেখে সচেতন ক্রেতাদের অনেকেই প্রশ্ন করছেন, তাহলে শুল্কছাড়ের সুবিধা কে পাচ্ছে?
রাজধানীর মানিকনগর বাজারে খেজুর কিনতে এসেছিলেন আয়েশা বেগম। এক কেজি কেনার পরিকল্পনা থাকলেও দাম দেখে আধা কেজি কিনেই সন্তুষ্ট হতে হলো তাঁকে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকার প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে আয়েশা বেগম বললেন, ‘গত বছর আজওয়া খেজুর কিনেছিলাম ১৭০০ টাকা কেজি করে। এবার শুনেছিলাম দাম অনেকটা কম থাকবে। সেভাবেই টাকা নিয়ে বের হয়েছিলাম। কিন্তু দাম দেখছি, গত বছরের চেয়ে মাত্র ১০০ টাকা কম।’
তিন বাজার ঘুরেও কম দামে পছন্দের খেজুর না পেয়ে আক্ষেপ করেন রামপুরা বাজারে আসা আলম মিয়া। তিনি বলেন, ‘সরকার শুল্কছাড় দেওয়ার পরও দাম গত বছরের মতোই। আমাদের মতো কম আয়ের মানুষ শুল্কছাড়ের সুবিধা পাচ্ছে না। এসব দেখার কি কেউ নেই!’
পরস্পরকে দোষারোপ
ফল আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আঙুল তুললেন খুচরা বিক্রেতাদের দিকে। আজকের পত্রিকা’কে তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের মরিয়ম ও আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি। খরচ যোগ করে এটি ঠিকই আছে। এ দাম গত বছরের তুলনায় ২৫-৩০ শতাংশ কম। তবে এ দামে কিনে খুচরা বিক্রেতারা যদি কেজিতে ৫০০-৬০০ টাকা লাভে বিক্রি করেন, তবে আমাদের কী করার থাকে? এটা দেখার দায়িত্ব তো সরকারের।’
শুল্কায়নের রকমফের
গত বছর খেজুরের দর রোজার শুরুতেই বেড়েছিল ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত। তখন যুক্তি হিসেবে শুল্কের হার ও শুল্কায়ন পদ্ধতি, এলসিতে শতভাগ মার্জিন আরোপ ইত্যাদি যুক্তি দেখিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এসব কারণে গত রমজানে খেজুর সাধারণের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। সে অভিজ্ঞতা থেকে এবার ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে শুল্কহার কমায় এনবিআর।
গত বছর তিনটি ধাপ বা ক্যাটাগরিতে শুল্ক মূল্য ধরা হয়। এর মধ্যে ভালো মানের খেজুরের ট্যারিফ ভ্যালু ছিল প্রতিটন ৪০০০ ডলার, মাঝারি মানের ২৫০০ ডলার ও নিম্ন মানের ক্ষেত্রে ১০০০ ডলার। এবার কমিয়ে প্রথম ক্যাটাগরিতে ট্যারিফ ভ্যালু রাখা হয়েছে ৩০৭৫ । দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে তা ২৬০০, ২৩০০, ২২০০ ও ১০০০ ডলার। তৃতীয় ক্যাটাগরিতে ট্যারিফ ভ্যালু রাখা হয়েছে ৭০০ ডলার। এর ফলে প্রতি কেজি খেজুরের আমদানি ব্যয় কমেছে ২০০-২৫০ টাকা।
গত ২১ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ১০ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়। সম্পূর্ণ প্রত্যাহার হয় ৫ শতাংশ আগাম কর। মোট করহার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশে দাঁড়ায়।
সরকারের এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিল আমদানি বাড়িয়ে খেজুরের দাম কমানো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খুব একটা কাজে আসেনি এই উদ্যোগ।
‘দায়ী মনিটরিংয়ের অভাব’
খেজুরের বাজারের এ পরিস্থিতির জন্য শক্ত মনিটরিংয়ের অভাবকে দায়ী করলেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, ‘রমজান এলে ব্যবসায়ীরা যত বেশি পারেন মুনাফা করতে চান। এটা মনিটরিংয়ের অভাবে হচ্ছে। যাঁরা মনিটরিং করবেন, তাঁরা এবার ব্যস্ত অন্য কাজে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত ভোজ্যতেলের বাজার সামলাতে আর জেলা প্রশাসকেরা ব্যস্ত রাজনৈতিক প্রটোকল নিয়ে। এই সুযোগে খুচরা ব্যবসায়ীরা যেমন খুশি দাম রাখছেন।
আমদানিকারকদের ‘মিথ্যা ঘোষণাকেও’ দায়ী করলেন এই বাজার বিশ্লেষক। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যখন শুল্ক দেন, তখন কম মূল্য ঘোষণা করেন আর যখন বিক্রি করেন তখন বাড়তি দাম দেখান। এজন্য এনবিআরের উচিত কোন গ্রেডের খেজুরের দাম কত সে তথ্য প্রকাশ করা এবং সে অনুযায়ী বাজারে দাম ঠিক আছে কি না, তার নজরদারি করা।
আরও খবর পড়ুন:

রোজাদারদের ইফতারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কম হওয়া নিয়ে এবার যে প্রত্যাশা ছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আশা করা হচ্ছিল, আমদানি খরচ হ্রাস পাওয়া এবং গুটিকয়েক আমদানিকারকের সিন্ডিকেটের অবসান হওয়া–এই দুই কারণে খেজুরের দাম কম থাকবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে, আমদানি বৃদ্ধি এবং সরকারের শুল্ক কমানো—কোনোটারই সুবিধা পাচ্ছে না ভোক্তারা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, এখন বাজারে খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, বর্তমানে গত বছরের তুলনায় গড়ে খেজুরের দাম ১০ শতাংশ বেশি রয়েছে।
আমদানি বেড়েছে, বাজারেও প্রচুর
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের হিসাব অনুয়ায়ী, বছরে দেশে খেজুরের গড় চাহিদা প্রায় ১ লাখ টন। এর মধ্যে রোজার মাসেই চাহিদা থাকে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টনের। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে খেজুর আমদানি করা হয় ৮০ হাজার ৯১০ টন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ আমদানির তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার টন খেজুর বন্দর থেকে খালাস করা হয়েছে। এক বছর আগে এই সময়ে খালাস করা হয় ১১ হাজার ৭১৪ টন। সেই হিসাবে আমদানি বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা, রামপুরা, মানিকনগরসহ কয়েকটি বাজারে গতকাল শনিবার ঘুরে দেখা যায়, খেজুরের সরবরাহ গত সপ্তাহের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এসব বাজারে কিছু মৌসুমি ফলের ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে করেও খেজুর বিক্রি করতে দেখা যায়। বেশি দামের আজওয়া, মরিয়ম, মাবরুমের পাশাপাশি কম দামি জাইদি (খোলা), জাইদি (কার্টন), দাব্বাসসহ কয়েক ধরনের খেজুরও অনেক পাওয়া যাচ্ছে। শহরজুড়ে ফুটপাতেও খেজুর বিক্রি করছেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
আমদানির তুলনায় খুচরা দাম চড়া
আমদানিকারকদের নিজেদের দেওয়া তথ্যমতেই, ভালো মানের আজওয়া, মরিয়মসহ উচ্চমূল্যের খেজুরের আমদানি মূল্য কেজিপ্রতি মাত্র ৩৯০-৪০০ টাকা। এর সঙ্গে প্রতি কেজিতে ২০০ টাকা শুল্ক যোগ করে আমদানি মূল্য দাঁড়ায় কম-বেশি ৬০০ টাকা। আমদানিকারকদের দাবি, এর সঙ্গে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কমিশন, পরিবহন ব্যয়, মজুরের খরচ, মুনাফা ইত্যাদি যোগ করে বাদামতলীসহ পাইকারি বাজারগুলোতে খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি করে। অথচ রাজধানীর বাজারগুলোতে খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৭০০ টাকা কেজি দরে।
ভালো মান ও দামের খেজুরের ক্রেতারাই শুধু নন, ঠকছেন কম দামি সাধারণ খেজুর কেনা নিম্ন আয়ের ভোক্তারাও। রাজধানীর বাজারগুলোতে ইরাকি জাইদিসহ অতি সাধারণ বা সাধারণ মানের খেজুরও বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা কেজি দরে। অথচ এই খেজুরের আমদানি মূল্য ৮০-৯০ টাকা মাত্র। শুল্ক ও অন্যান্য খরচ যোগ করে তার পাইকারি বাজারের দামই ১২০-১৭০ টাকা।
দাব্বাসসহ মাঝারি মানের খেজুরের আমদানি মূল্য, শুল্ক ও অন্যান্যসহ প্রতি কেজির খরচ পড়ছে ৩০০ টাকা। রাজধানীর পাইকারি বাজারে এগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৪০০ টাকা কেজি দরে। বাজারগুলোতে এই খেজুরেরই খুচরা দাম ৫০০-৬০০ টাকা কেজি।

আশাভঙ্গ হওয়ায় হতাশ ক্রেতা
ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ, রোজার বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে খেজুরে অতি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতেই দাম বাড়তি। অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, তাঁরা সামান্য মুনাফাতেই বিক্রি করছেন। খুচরা বিক্রেতাদের অতি মুনাফার কারণেই খেজুরের দাম চড়া।
ক্রেতারা বলছেন, এবার সরকার শুল্কছাড় দিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য খেজুরকে সহজলভ্য করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু যে হারে শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে, সে হারে দাম কমেনি।
কিছুটা ভালো মানের খেজুরের খুচরা দাম পড়ছে প্রতি কেজি হাজার টাকার ওপরে। আর সবচেয়ে ভালো মানের খেজুরের খুচরা মূল্য দেড় হাজার টাকার ওপরে, যা গত বছরের প্রায় সমান। অথচ এবার দাম কমার কথা ছিল। এমন অবস্থা দেখে সচেতন ক্রেতাদের অনেকেই প্রশ্ন করছেন, তাহলে শুল্কছাড়ের সুবিধা কে পাচ্ছে?
রাজধানীর মানিকনগর বাজারে খেজুর কিনতে এসেছিলেন আয়েশা বেগম। এক কেজি কেনার পরিকল্পনা থাকলেও দাম দেখে আধা কেজি কিনেই সন্তুষ্ট হতে হলো তাঁকে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকার প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে আয়েশা বেগম বললেন, ‘গত বছর আজওয়া খেজুর কিনেছিলাম ১৭০০ টাকা কেজি করে। এবার শুনেছিলাম দাম অনেকটা কম থাকবে। সেভাবেই টাকা নিয়ে বের হয়েছিলাম। কিন্তু দাম দেখছি, গত বছরের চেয়ে মাত্র ১০০ টাকা কম।’
তিন বাজার ঘুরেও কম দামে পছন্দের খেজুর না পেয়ে আক্ষেপ করেন রামপুরা বাজারে আসা আলম মিয়া। তিনি বলেন, ‘সরকার শুল্কছাড় দেওয়ার পরও দাম গত বছরের মতোই। আমাদের মতো কম আয়ের মানুষ শুল্কছাড়ের সুবিধা পাচ্ছে না। এসব দেখার কি কেউ নেই!’
পরস্পরকে দোষারোপ
ফল আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আঙুল তুললেন খুচরা বিক্রেতাদের দিকে। আজকের পত্রিকা’কে তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের মরিয়ম ও আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি। খরচ যোগ করে এটি ঠিকই আছে। এ দাম গত বছরের তুলনায় ২৫-৩০ শতাংশ কম। তবে এ দামে কিনে খুচরা বিক্রেতারা যদি কেজিতে ৫০০-৬০০ টাকা লাভে বিক্রি করেন, তবে আমাদের কী করার থাকে? এটা দেখার দায়িত্ব তো সরকারের।’
শুল্কায়নের রকমফের
গত বছর খেজুরের দর রোজার শুরুতেই বেড়েছিল ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত। তখন যুক্তি হিসেবে শুল্কের হার ও শুল্কায়ন পদ্ধতি, এলসিতে শতভাগ মার্জিন আরোপ ইত্যাদি যুক্তি দেখিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এসব কারণে গত রমজানে খেজুর সাধারণের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। সে অভিজ্ঞতা থেকে এবার ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে শুল্কহার কমায় এনবিআর।
গত বছর তিনটি ধাপ বা ক্যাটাগরিতে শুল্ক মূল্য ধরা হয়। এর মধ্যে ভালো মানের খেজুরের ট্যারিফ ভ্যালু ছিল প্রতিটন ৪০০০ ডলার, মাঝারি মানের ২৫০০ ডলার ও নিম্ন মানের ক্ষেত্রে ১০০০ ডলার। এবার কমিয়ে প্রথম ক্যাটাগরিতে ট্যারিফ ভ্যালু রাখা হয়েছে ৩০৭৫ । দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে তা ২৬০০, ২৩০০, ২২০০ ও ১০০০ ডলার। তৃতীয় ক্যাটাগরিতে ট্যারিফ ভ্যালু রাখা হয়েছে ৭০০ ডলার। এর ফলে প্রতি কেজি খেজুরের আমদানি ব্যয় কমেছে ২০০-২৫০ টাকা।
গত ২১ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ১০ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়। সম্পূর্ণ প্রত্যাহার হয় ৫ শতাংশ আগাম কর। মোট করহার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশে দাঁড়ায়।
সরকারের এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিল আমদানি বাড়িয়ে খেজুরের দাম কমানো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খুব একটা কাজে আসেনি এই উদ্যোগ।
‘দায়ী মনিটরিংয়ের অভাব’
খেজুরের বাজারের এ পরিস্থিতির জন্য শক্ত মনিটরিংয়ের অভাবকে দায়ী করলেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, ‘রমজান এলে ব্যবসায়ীরা যত বেশি পারেন মুনাফা করতে চান। এটা মনিটরিংয়ের অভাবে হচ্ছে। যাঁরা মনিটরিং করবেন, তাঁরা এবার ব্যস্ত অন্য কাজে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত ভোজ্যতেলের বাজার সামলাতে আর জেলা প্রশাসকেরা ব্যস্ত রাজনৈতিক প্রটোকল নিয়ে। এই সুযোগে খুচরা ব্যবসায়ীরা যেমন খুশি দাম রাখছেন।
আমদানিকারকদের ‘মিথ্যা ঘোষণাকেও’ দায়ী করলেন এই বাজার বিশ্লেষক। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যখন শুল্ক দেন, তখন কম মূল্য ঘোষণা করেন আর যখন বিক্রি করেন তখন বাড়তি দাম দেখান। এজন্য এনবিআরের উচিত কোন গ্রেডের খেজুরের দাম কত সে তথ্য প্রকাশ করা এবং সে অনুযায়ী বাজারে দাম ঠিক আছে কি না, তার নজরদারি করা।
আরও খবর পড়ুন:
রোকন উদ্দীন, ঢাকা

রোজাদারদের ইফতারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কম হওয়া নিয়ে এবার যে প্রত্যাশা ছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আশা করা হচ্ছিল, আমদানি খরচ হ্রাস পাওয়া এবং গুটিকয়েক আমদানিকারকের সিন্ডিকেটের অবসান হওয়া–এই দুই কারণে খেজুরের দাম কম থাকবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে, আমদানি বৃদ্ধি এবং সরকারের শুল্ক কমানো—কোনোটারই সুবিধা পাচ্ছে না ভোক্তারা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, এখন বাজারে খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, বর্তমানে গত বছরের তুলনায় গড়ে খেজুরের দাম ১০ শতাংশ বেশি রয়েছে।
আমদানি বেড়েছে, বাজারেও প্রচুর
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের হিসাব অনুয়ায়ী, বছরে দেশে খেজুরের গড় চাহিদা প্রায় ১ লাখ টন। এর মধ্যে রোজার মাসেই চাহিদা থাকে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টনের। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে খেজুর আমদানি করা হয় ৮০ হাজার ৯১০ টন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ আমদানির তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার টন খেজুর বন্দর থেকে খালাস করা হয়েছে। এক বছর আগে এই সময়ে খালাস করা হয় ১১ হাজার ৭১৪ টন। সেই হিসাবে আমদানি বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা, রামপুরা, মানিকনগরসহ কয়েকটি বাজারে গতকাল শনিবার ঘুরে দেখা যায়, খেজুরের সরবরাহ গত সপ্তাহের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এসব বাজারে কিছু মৌসুমি ফলের ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে করেও খেজুর বিক্রি করতে দেখা যায়। বেশি দামের আজওয়া, মরিয়ম, মাবরুমের পাশাপাশি কম দামি জাইদি (খোলা), জাইদি (কার্টন), দাব্বাসসহ কয়েক ধরনের খেজুরও অনেক পাওয়া যাচ্ছে। শহরজুড়ে ফুটপাতেও খেজুর বিক্রি করছেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
আমদানির তুলনায় খুচরা দাম চড়া
আমদানিকারকদের নিজেদের দেওয়া তথ্যমতেই, ভালো মানের আজওয়া, মরিয়মসহ উচ্চমূল্যের খেজুরের আমদানি মূল্য কেজিপ্রতি মাত্র ৩৯০-৪০০ টাকা। এর সঙ্গে প্রতি কেজিতে ২০০ টাকা শুল্ক যোগ করে আমদানি মূল্য দাঁড়ায় কম-বেশি ৬০০ টাকা। আমদানিকারকদের দাবি, এর সঙ্গে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কমিশন, পরিবহন ব্যয়, মজুরের খরচ, মুনাফা ইত্যাদি যোগ করে বাদামতলীসহ পাইকারি বাজারগুলোতে খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি করে। অথচ রাজধানীর বাজারগুলোতে খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৭০০ টাকা কেজি দরে।
ভালো মান ও দামের খেজুরের ক্রেতারাই শুধু নন, ঠকছেন কম দামি সাধারণ খেজুর কেনা নিম্ন আয়ের ভোক্তারাও। রাজধানীর বাজারগুলোতে ইরাকি জাইদিসহ অতি সাধারণ বা সাধারণ মানের খেজুরও বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা কেজি দরে। অথচ এই খেজুরের আমদানি মূল্য ৮০-৯০ টাকা মাত্র। শুল্ক ও অন্যান্য খরচ যোগ করে তার পাইকারি বাজারের দামই ১২০-১৭০ টাকা।
দাব্বাসসহ মাঝারি মানের খেজুরের আমদানি মূল্য, শুল্ক ও অন্যান্যসহ প্রতি কেজির খরচ পড়ছে ৩০০ টাকা। রাজধানীর পাইকারি বাজারে এগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৪০০ টাকা কেজি দরে। বাজারগুলোতে এই খেজুরেরই খুচরা দাম ৫০০-৬০০ টাকা কেজি।

আশাভঙ্গ হওয়ায় হতাশ ক্রেতা
ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ, রোজার বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে খেজুরে অতি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতেই দাম বাড়তি। অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, তাঁরা সামান্য মুনাফাতেই বিক্রি করছেন। খুচরা বিক্রেতাদের অতি মুনাফার কারণেই খেজুরের দাম চড়া।
ক্রেতারা বলছেন, এবার সরকার শুল্কছাড় দিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য খেজুরকে সহজলভ্য করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু যে হারে শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে, সে হারে দাম কমেনি।
কিছুটা ভালো মানের খেজুরের খুচরা দাম পড়ছে প্রতি কেজি হাজার টাকার ওপরে। আর সবচেয়ে ভালো মানের খেজুরের খুচরা মূল্য দেড় হাজার টাকার ওপরে, যা গত বছরের প্রায় সমান। অথচ এবার দাম কমার কথা ছিল। এমন অবস্থা দেখে সচেতন ক্রেতাদের অনেকেই প্রশ্ন করছেন, তাহলে শুল্কছাড়ের সুবিধা কে পাচ্ছে?
রাজধানীর মানিকনগর বাজারে খেজুর কিনতে এসেছিলেন আয়েশা বেগম। এক কেজি কেনার পরিকল্পনা থাকলেও দাম দেখে আধা কেজি কিনেই সন্তুষ্ট হতে হলো তাঁকে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকার প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে আয়েশা বেগম বললেন, ‘গত বছর আজওয়া খেজুর কিনেছিলাম ১৭০০ টাকা কেজি করে। এবার শুনেছিলাম দাম অনেকটা কম থাকবে। সেভাবেই টাকা নিয়ে বের হয়েছিলাম। কিন্তু দাম দেখছি, গত বছরের চেয়ে মাত্র ১০০ টাকা কম।’
তিন বাজার ঘুরেও কম দামে পছন্দের খেজুর না পেয়ে আক্ষেপ করেন রামপুরা বাজারে আসা আলম মিয়া। তিনি বলেন, ‘সরকার শুল্কছাড় দেওয়ার পরও দাম গত বছরের মতোই। আমাদের মতো কম আয়ের মানুষ শুল্কছাড়ের সুবিধা পাচ্ছে না। এসব দেখার কি কেউ নেই!’
পরস্পরকে দোষারোপ
ফল আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আঙুল তুললেন খুচরা বিক্রেতাদের দিকে। আজকের পত্রিকা’কে তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের মরিয়ম ও আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি। খরচ যোগ করে এটি ঠিকই আছে। এ দাম গত বছরের তুলনায় ২৫-৩০ শতাংশ কম। তবে এ দামে কিনে খুচরা বিক্রেতারা যদি কেজিতে ৫০০-৬০০ টাকা লাভে বিক্রি করেন, তবে আমাদের কী করার থাকে? এটা দেখার দায়িত্ব তো সরকারের।’
শুল্কায়নের রকমফের
গত বছর খেজুরের দর রোজার শুরুতেই বেড়েছিল ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত। তখন যুক্তি হিসেবে শুল্কের হার ও শুল্কায়ন পদ্ধতি, এলসিতে শতভাগ মার্জিন আরোপ ইত্যাদি যুক্তি দেখিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এসব কারণে গত রমজানে খেজুর সাধারণের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। সে অভিজ্ঞতা থেকে এবার ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে শুল্কহার কমায় এনবিআর।
গত বছর তিনটি ধাপ বা ক্যাটাগরিতে শুল্ক মূল্য ধরা হয়। এর মধ্যে ভালো মানের খেজুরের ট্যারিফ ভ্যালু ছিল প্রতিটন ৪০০০ ডলার, মাঝারি মানের ২৫০০ ডলার ও নিম্ন মানের ক্ষেত্রে ১০০০ ডলার। এবার কমিয়ে প্রথম ক্যাটাগরিতে ট্যারিফ ভ্যালু রাখা হয়েছে ৩০৭৫ । দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে তা ২৬০০, ২৩০০, ২২০০ ও ১০০০ ডলার। তৃতীয় ক্যাটাগরিতে ট্যারিফ ভ্যালু রাখা হয়েছে ৭০০ ডলার। এর ফলে প্রতি কেজি খেজুরের আমদানি ব্যয় কমেছে ২০০-২৫০ টাকা।
গত ২১ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ১০ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়। সম্পূর্ণ প্রত্যাহার হয় ৫ শতাংশ আগাম কর। মোট করহার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশে দাঁড়ায়।
সরকারের এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিল আমদানি বাড়িয়ে খেজুরের দাম কমানো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খুব একটা কাজে আসেনি এই উদ্যোগ।
‘দায়ী মনিটরিংয়ের অভাব’
খেজুরের বাজারের এ পরিস্থিতির জন্য শক্ত মনিটরিংয়ের অভাবকে দায়ী করলেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, ‘রমজান এলে ব্যবসায়ীরা যত বেশি পারেন মুনাফা করতে চান। এটা মনিটরিংয়ের অভাবে হচ্ছে। যাঁরা মনিটরিং করবেন, তাঁরা এবার ব্যস্ত অন্য কাজে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত ভোজ্যতেলের বাজার সামলাতে আর জেলা প্রশাসকেরা ব্যস্ত রাজনৈতিক প্রটোকল নিয়ে। এই সুযোগে খুচরা ব্যবসায়ীরা যেমন খুশি দাম রাখছেন।
আমদানিকারকদের ‘মিথ্যা ঘোষণাকেও’ দায়ী করলেন এই বাজার বিশ্লেষক। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যখন শুল্ক দেন, তখন কম মূল্য ঘোষণা করেন আর যখন বিক্রি করেন তখন বাড়তি দাম দেখান। এজন্য এনবিআরের উচিত কোন গ্রেডের খেজুরের দাম কত সে তথ্য প্রকাশ করা এবং সে অনুযায়ী বাজারে দাম ঠিক আছে কি না, তার নজরদারি করা।
আরও খবর পড়ুন:

রোজাদারদের ইফতারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কম হওয়া নিয়ে এবার যে প্রত্যাশা ছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আশা করা হচ্ছিল, আমদানি খরচ হ্রাস পাওয়া এবং গুটিকয়েক আমদানিকারকের সিন্ডিকেটের অবসান হওয়া–এই দুই কারণে খেজুরের দাম কম থাকবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে, আমদানি বৃদ্ধি এবং সরকারের শুল্ক কমানো—কোনোটারই সুবিধা পাচ্ছে না ভোক্তারা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, এখন বাজারে খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় বেশি। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, বর্তমানে গত বছরের তুলনায় গড়ে খেজুরের দাম ১০ শতাংশ বেশি রয়েছে।
আমদানি বেড়েছে, বাজারেও প্রচুর
বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের হিসাব অনুয়ায়ী, বছরে দেশে খেজুরের গড় চাহিদা প্রায় ১ লাখ টন। এর মধ্যে রোজার মাসেই চাহিদা থাকে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টনের। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে খেজুর আমদানি করা হয় ৮০ হাজার ৯১০ টন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ আমদানির তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার টন খেজুর বন্দর থেকে খালাস করা হয়েছে। এক বছর আগে এই সময়ে খালাস করা হয় ১১ হাজার ৭১৪ টন। সেই হিসাবে আমদানি বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা, রামপুরা, মানিকনগরসহ কয়েকটি বাজারে গতকাল শনিবার ঘুরে দেখা যায়, খেজুরের সরবরাহ গত সপ্তাহের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এসব বাজারে কিছু মৌসুমি ফলের ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে করেও খেজুর বিক্রি করতে দেখা যায়। বেশি দামের আজওয়া, মরিয়ম, মাবরুমের পাশাপাশি কম দামি জাইদি (খোলা), জাইদি (কার্টন), দাব্বাসসহ কয়েক ধরনের খেজুরও অনেক পাওয়া যাচ্ছে। শহরজুড়ে ফুটপাতেও খেজুর বিক্রি করছেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
আমদানির তুলনায় খুচরা দাম চড়া
আমদানিকারকদের নিজেদের দেওয়া তথ্যমতেই, ভালো মানের আজওয়া, মরিয়মসহ উচ্চমূল্যের খেজুরের আমদানি মূল্য কেজিপ্রতি মাত্র ৩৯০-৪০০ টাকা। এর সঙ্গে প্রতি কেজিতে ২০০ টাকা শুল্ক যোগ করে আমদানি মূল্য দাঁড়ায় কম-বেশি ৬০০ টাকা। আমদানিকারকদের দাবি, এর সঙ্গে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কমিশন, পরিবহন ব্যয়, মজুরের খরচ, মুনাফা ইত্যাদি যোগ করে বাদামতলীসহ পাইকারি বাজারগুলোতে খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি করে। অথচ রাজধানীর বাজারগুলোতে খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৭০০ টাকা কেজি দরে।
ভালো মান ও দামের খেজুরের ক্রেতারাই শুধু নন, ঠকছেন কম দামি সাধারণ খেজুর কেনা নিম্ন আয়ের ভোক্তারাও। রাজধানীর বাজারগুলোতে ইরাকি জাইদিসহ অতি সাধারণ বা সাধারণ মানের খেজুরও বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা কেজি দরে। অথচ এই খেজুরের আমদানি মূল্য ৮০-৯০ টাকা মাত্র। শুল্ক ও অন্যান্য খরচ যোগ করে তার পাইকারি বাজারের দামই ১২০-১৭০ টাকা।
দাব্বাসসহ মাঝারি মানের খেজুরের আমদানি মূল্য, শুল্ক ও অন্যান্যসহ প্রতি কেজির খরচ পড়ছে ৩০০ টাকা। রাজধানীর পাইকারি বাজারে এগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৪০০ টাকা কেজি দরে। বাজারগুলোতে এই খেজুরেরই খুচরা দাম ৫০০-৬০০ টাকা কেজি।

আশাভঙ্গ হওয়ায় হতাশ ক্রেতা
ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ, রোজার বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে খেজুরে অতি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতেই দাম বাড়তি। অন্যদিকে পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, তাঁরা সামান্য মুনাফাতেই বিক্রি করছেন। খুচরা বিক্রেতাদের অতি মুনাফার কারণেই খেজুরের দাম চড়া।
ক্রেতারা বলছেন, এবার সরকার শুল্কছাড় দিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য খেজুরকে সহজলভ্য করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু যে হারে শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে, সে হারে দাম কমেনি।
কিছুটা ভালো মানের খেজুরের খুচরা দাম পড়ছে প্রতি কেজি হাজার টাকার ওপরে। আর সবচেয়ে ভালো মানের খেজুরের খুচরা মূল্য দেড় হাজার টাকার ওপরে, যা গত বছরের প্রায় সমান। অথচ এবার দাম কমার কথা ছিল। এমন অবস্থা দেখে সচেতন ক্রেতাদের অনেকেই প্রশ্ন করছেন, তাহলে শুল্কছাড়ের সুবিধা কে পাচ্ছে?
রাজধানীর মানিকনগর বাজারে খেজুর কিনতে এসেছিলেন আয়েশা বেগম। এক কেজি কেনার পরিকল্পনা থাকলেও দাম দেখে আধা কেজি কিনেই সন্তুষ্ট হতে হলো তাঁকে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকার প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে আয়েশা বেগম বললেন, ‘গত বছর আজওয়া খেজুর কিনেছিলাম ১৭০০ টাকা কেজি করে। এবার শুনেছিলাম দাম অনেকটা কম থাকবে। সেভাবেই টাকা নিয়ে বের হয়েছিলাম। কিন্তু দাম দেখছি, গত বছরের চেয়ে মাত্র ১০০ টাকা কম।’
তিন বাজার ঘুরেও কম দামে পছন্দের খেজুর না পেয়ে আক্ষেপ করেন রামপুরা বাজারে আসা আলম মিয়া। তিনি বলেন, ‘সরকার শুল্কছাড় দেওয়ার পরও দাম গত বছরের মতোই। আমাদের মতো কম আয়ের মানুষ শুল্কছাড়ের সুবিধা পাচ্ছে না। এসব দেখার কি কেউ নেই!’
পরস্পরকে দোষারোপ
ফল আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আঙুল তুললেন খুচরা বিক্রেতাদের দিকে। আজকের পত্রিকা’কে তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের মরিয়ম ও আজওয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকা কেজি। খরচ যোগ করে এটি ঠিকই আছে। এ দাম গত বছরের তুলনায় ২৫-৩০ শতাংশ কম। তবে এ দামে কিনে খুচরা বিক্রেতারা যদি কেজিতে ৫০০-৬০০ টাকা লাভে বিক্রি করেন, তবে আমাদের কী করার থাকে? এটা দেখার দায়িত্ব তো সরকারের।’
শুল্কায়নের রকমফের
গত বছর খেজুরের দর রোজার শুরুতেই বেড়েছিল ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত। তখন যুক্তি হিসেবে শুল্কের হার ও শুল্কায়ন পদ্ধতি, এলসিতে শতভাগ মার্জিন আরোপ ইত্যাদি যুক্তি দেখিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এসব কারণে গত রমজানে খেজুর সাধারণের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। সে অভিজ্ঞতা থেকে এবার ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে শুল্কহার কমায় এনবিআর।
গত বছর তিনটি ধাপ বা ক্যাটাগরিতে শুল্ক মূল্য ধরা হয়। এর মধ্যে ভালো মানের খেজুরের ট্যারিফ ভ্যালু ছিল প্রতিটন ৪০০০ ডলার, মাঝারি মানের ২৫০০ ডলার ও নিম্ন মানের ক্ষেত্রে ১০০০ ডলার। এবার কমিয়ে প্রথম ক্যাটাগরিতে ট্যারিফ ভ্যালু রাখা হয়েছে ৩০৭৫ । দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে তা ২৬০০, ২৩০০, ২২০০ ও ১০০০ ডলার। তৃতীয় ক্যাটাগরিতে ট্যারিফ ভ্যালু রাখা হয়েছে ৭০০ ডলার। এর ফলে প্রতি কেজি খেজুরের আমদানি ব্যয় কমেছে ২০০-২৫০ টাকা।
গত ২১ নভেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে বিদ্যমান কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ, অগ্রিম আয়কর ১০ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়। সম্পূর্ণ প্রত্যাহার হয় ৫ শতাংশ আগাম কর। মোট করহার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশে দাঁড়ায়।
সরকারের এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিল আমদানি বাড়িয়ে খেজুরের দাম কমানো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খুব একটা কাজে আসেনি এই উদ্যোগ।
‘দায়ী মনিটরিংয়ের অভাব’
খেজুরের বাজারের এ পরিস্থিতির জন্য শক্ত মনিটরিংয়ের অভাবকে দায়ী করলেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, ‘রমজান এলে ব্যবসায়ীরা যত বেশি পারেন মুনাফা করতে চান। এটা মনিটরিংয়ের অভাবে হচ্ছে। যাঁরা মনিটরিং করবেন, তাঁরা এবার ব্যস্ত অন্য কাজে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত ভোজ্যতেলের বাজার সামলাতে আর জেলা প্রশাসকেরা ব্যস্ত রাজনৈতিক প্রটোকল নিয়ে। এই সুযোগে খুচরা ব্যবসায়ীরা যেমন খুশি দাম রাখছেন।
আমদানিকারকদের ‘মিথ্যা ঘোষণাকেও’ দায়ী করলেন এই বাজার বিশ্লেষক। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যখন শুল্ক দেন, তখন কম মূল্য ঘোষণা করেন আর যখন বিক্রি করেন তখন বাড়তি দাম দেখান। এজন্য এনবিআরের উচিত কোন গ্রেডের খেজুরের দাম কত সে তথ্য প্রকাশ করা এবং সে অনুযায়ী বাজারে দাম ঠিক আছে কি না, তার নজরদারি করা।
আরও খবর পড়ুন:

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৩ ঘণ্টা আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এ কারণে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়ে ব্যয় করছে বাংলাদেশি রোগীরা। অথচ দেশের স্বাস্থ্যসেবার বাজার বর্তমানে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী আট বছরে আরও ৯ বিলিয়ন ডলার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০৩৩ সালে ২৩ বিলিয়নে উন্নীত হতে পারে।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান প্রধান অতিথি ছিলেন।
আলোচকেরা বলেন, অবকাঠামোর ঘাটতি, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে পশ্চাৎপদতা, দক্ষ মানবসম্পদের সংকট, সেবার উচ্চ ব্যয়, কার্যকর তদারকির অভাব—এসব মিলিয়েই কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন অর্জিত হয়নি। অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অর্জন থাকলেও সামগ্রিকভাবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। উন্নত দেশ তো দূরের কথা, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। তাঁর মতে, ইউনিভার্সেল হেলথকেয়ার বাস্তবায়ন বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়, তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জোর দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তিনি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। তিনি জানান, সীমিত বাজেট, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, মানের ঘাটতি, শহর-গ্রামের বৈষম্য, বাড়তি ব্যয়, দুর্বল নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা—এসব কারণেই স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। যার ফলে তুলনামূলক উন্নত চিকিৎসার জন্য বিপুলসংখ্যক রোগী বিদেশমুখী হওয়ায় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, মানসম্মত ও রোগীবান্ধব সেবা নিশ্চিতে কাঠামোগত ঘাটতি, দক্ষ জনবলস্বল্পতা, অনুমোদনহীন ক্লিনিক-ফার্মেসির বিস্তার, ভুল রোগনির্ণয়, ভুয়া ওষুধ এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা জনস্বাস্থ্য আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্বাস্থ্যবিমা কার্যকর না হওয়ায় ৭৪ শতাংশ ব্যয় রোগীকেই বহন করতে হয়, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য বড় ঝুঁকি।
নির্ধারিত আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক সরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ জরুরি বলে মনে করেন। ইউনিভার্সেল মেডিকেলের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী স্বাস্থ্য খাতে আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় ও পিপিপি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এ কারণে প্রতিবছর প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার চিকিৎসার জন্য বিদেশে গিয়ে ব্যয় করছে বাংলাদেশি রোগীরা। অথচ দেশের স্বাস্থ্যসেবার বাজার বর্তমানে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার এবং আগামী আট বছরে আরও ৯ বিলিয়ন ডলার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ২০৩৩ সালে ২৩ বিলিয়নে উন্নীত হতে পারে।
গতকাল শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে আস্থা বৃদ্ধি; মান নিয়ন্ত্রণে কৌশলগত কাঠামো নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান প্রধান অতিথি ছিলেন।
আলোচকেরা বলেন, অবকাঠামোর ঘাটতি, নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে পশ্চাৎপদতা, দক্ষ মানবসম্পদের সংকট, সেবার উচ্চ ব্যয়, কার্যকর তদারকির অভাব—এসব মিলিয়েই কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন অর্জিত হয়নি। অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, কিছু ক্ষেত্রে অর্জন থাকলেও সামগ্রিকভাবে দেশের স্বাস্থ্যসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। উন্নত দেশ তো দূরের কথা, পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায়ও বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে। তাঁর মতে, ইউনিভার্সেল হেলথকেয়ার বাস্তবায়ন বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়, তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় জোর দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তিনি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন ও বিকেন্দ্রীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। তিনি জানান, সীমিত বাজেট, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, মানের ঘাটতি, শহর-গ্রামের বৈষম্য, বাড়তি ব্যয়, দুর্বল নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা—এসব কারণেই স্বাস্থ্য খাতের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। যার ফলে তুলনামূলক উন্নত চিকিৎসার জন্য বিপুলসংখ্যক রোগী বিদেশমুখী হওয়ায় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, মানসম্মত ও রোগীবান্ধব সেবা নিশ্চিতে কাঠামোগত ঘাটতি, দক্ষ জনবলস্বল্পতা, অনুমোদনহীন ক্লিনিক-ফার্মেসির বিস্তার, ভুল রোগনির্ণয়, ভুয়া ওষুধ এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতা জনস্বাস্থ্য আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। স্বাস্থ্যবিমা কার্যকর না হওয়ায় ৭৪ শতাংশ ব্যয় রোগীকেই বহন করতে হয়, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জন্য বড় ঝুঁকি।
নির্ধারিত আলোচনায় অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক সরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়নকে সর্বোচ্চ জরুরি বলে মনে করেন। ইউনিভার্সেল মেডিকেলের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী স্বাস্থ্য খাতে আস্থা পুনরুদ্ধারে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় ও পিপিপি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

রোজাদারদের ইফতারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কম হওয়া নিয়ে এবার যে প্রত্যাশা ছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আশা করা হচ্ছিল, আমদানি খরচ হ্রাস পাওয়া এবং গুটিকয়েক আমদানিকারকের সিন্ডিকেটের অবসান হওয়া–এই দুই কারণে খেজুরের দাম কম থাকবে।
০২ মার্চ ২০২৫
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
৯ ঘণ্টা আগেযশোর প্রতিনিধি

অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা। বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে গতকাল শনিবার জমে ওঠে বছরের বড় হাট।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বসা এই বাজারে এদিন প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। চাহিদা বাড়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ফুলের সরবরাহ ও কেনাবেচা হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন ফুলচাষিরা।
গতকাল বাজারে সবচেয়ে বেশি এসেছে গাঁদা ফুল। মানভেদে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়। তবে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম তুলনামূলক কম। বিপরীতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য ফুল।
চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হয় ২, জারবেরা ১৬-১৮, গ্লাডিওলাস ১৬-২০, রজনীগন্ধা ১০-১৪, গোলাপ ৮-১০ এবং ভুট্টা ফুল প্রতিটি সর্বোচ্চ ১৫ টাকা দরে।
ফুলচাষি খালেদুর রহমান টিটু বলেন, ‘বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবসের বাজার ধরার জন্য কয়েক মাস ধরে গাঁদা ফুলের পরিচর্যা করেছি। গাঁদার কাঙ্ক্ষিত দাম পাইনি, তবে অন্য ফুলের দাম ভালো থাকায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’
রজনীগন্ধার চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমিতে চাষ করা ফুল এবার ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আজ ৯০০টি রজনীগন্ধা ১৪ টাকা পিস দরে বিক্রি করেছি। গতকাল ছিল ৯ টাকা। সামনে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, যশোর জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ—এই চার মাসই ফুলের প্রধান মৌসুম। এ সময় অন্তত ৭-৮টি গুরুত্বপূর্ণ দিবসকে ঘিরে ১৫০-২০০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার লক্ষ্য থাকে স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের।
গদখালী ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মঞ্জুর আলম বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে চাষিরা ফুল উৎপাদন করেন। এবার গাঁদা ফুলের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় এর দাম কম। তবে গাঁদা ছাড়া প্রায় সব ফুলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গতকালের হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে।

অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা। বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের রাজধানী খ্যাত গদখালীতে গতকাল শনিবার জমে ওঠে বছরের বড় হাট।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বসা এই বাজারে এদিন প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। চাহিদা বাড়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ফুলের সরবরাহ ও কেনাবেচা হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন ফুলচাষিরা।
গতকাল বাজারে সবচেয়ে বেশি এসেছে গাঁদা ফুল। মানভেদে প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়। তবে সরবরাহ বেশি থাকায় দাম তুলনামূলক কম। বিপরীতে চড়া দামে বিক্রি হয়েছে অন্যান্য ফুল।
চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হয় ২, জারবেরা ১৬-১৮, গ্লাডিওলাস ১৬-২০, রজনীগন্ধা ১০-১৪, গোলাপ ৮-১০ এবং ভুট্টা ফুল প্রতিটি সর্বোচ্চ ১৫ টাকা দরে।
ফুলচাষি খালেদুর রহমান টিটু বলেন, ‘বিজয় দিবস ও বুদ্ধিজীবী দিবসের বাজার ধরার জন্য কয়েক মাস ধরে গাঁদা ফুলের পরিচর্যা করেছি। গাঁদার কাঙ্ক্ষিত দাম পাইনি, তবে অন্য ফুলের দাম ভালো থাকায় ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’
রজনীগন্ধার চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমিতে চাষ করা ফুল এবার ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আজ ৯০০টি রজনীগন্ধা ১৪ টাকা পিস দরে বিক্রি করেছি। গতকাল ছিল ৯ টাকা। সামনে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, যশোর জেলায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে ১১ ধরনের ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হয়। ডিসেম্বর থেকে মার্চ—এই চার মাসই ফুলের প্রধান মৌসুম। এ সময় অন্তত ৭-৮টি গুরুত্বপূর্ণ দিবসকে ঘিরে ১৫০-২০০ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার লক্ষ্য থাকে স্থানীয় চাষি ও ব্যবসায়ীদের।
গদখালী ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মঞ্জুর আলম বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে চাষিরা ফুল উৎপাদন করেন। এবার গাঁদা ফুলের উৎপাদন চাহিদার চেয়ে বেশি হওয়ায় এর দাম কম। তবে গাঁদা ছাড়া প্রায় সব ফুলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। গতকালের হাটে প্রায় ২ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনা হয়েছে।

রোজাদারদের ইফতারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কম হওয়া নিয়ে এবার যে প্রত্যাশা ছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আশা করা হচ্ছিল, আমদানি খরচ হ্রাস পাওয়া এবং গুটিকয়েক আমদানিকারকের সিন্ডিকেটের অবসান হওয়া–এই দুই কারণে খেজুরের দাম কম থাকবে।
০২ মার্চ ২০২৫
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৪ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
৯ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে। তবে বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে এই লেনদেনের প্রবণতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। মূলত নগদ বহনের ঝুঁকি, বিদেশি মুদ্রা ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্টের সুবিধা—এ সব মিলিয়েই সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যনতুন রেকর্ড হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যয়ের পরিমাণ বেড়েছে ৫১ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশিরা বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে খরচ করেছিলেন ৪৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। মাত্র এক মাস পর সেপ্টেম্বরে সেই ব্যয় দাঁড়ায় ৪৯৪ কোটি ২ লাখ টাকায়। অর্থাৎ বিদেশে কার্ড খরচ এক মাসে বেড়েছে ৫১ কোটি ১ লাখ টাকা।
তথ্য বলছে, বিদেশে বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে—৭০ কোটি ৯ লাখ টাকা। থাইল্যান্ডে খরচ হয়েছে ৫৯ কোটি ৯ লাখ এবং যুক্তরাজ্যে ৫৪ কোটি ১ লাখ টাকা। সিঙ্গাপুরে ব্যয় ৪০ কোটি ৪ লাখ, মালয়েশিয়ায় ৩৪ কোটি, ভারতে ৩২ কোটি ৩ লাখ, নেদারল্যান্ডসে ২৫ কোটি, সৌদি আরবে ২৪ কোটি, কানাডায় ২১ কোটি, অস্ট্রেলিয়ায় ১৭ কোটি এবং আয়ারল্যান্ডে ১৬ কোটি টাকা। চীনে ব্যয় হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। অন্যান্য দেশে মোট খরচ ৯২ কোটি টাকার বেশি।
অন্যদিকে, বিদেশিরাও বাংলাদেশে এসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কত খরচ করে থাকেন। আগস্টে বিদেশিদের ব্যয় ছিল ১৮৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা সেপ্টেম্বরে সামান্য কমে দাঁড়ায় ১৭৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে তাঁদের কার্ডব্যয় কমেছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিদেশিদের মধ্যেও বাংলাদেশে এসে সর্বোচ্চ খরচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা—৩৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। যুক্তরাজ্য ও ভারতের নাগরিকদের ব্যয় ছিল ১৭ কোটি টাকা করে।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, নগদ বহনের চেয়ে মানুষ কার্ডে লেনদেনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বিদেশ ভ্রমণে এটি সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন পদ্ধতি। সাম্প্রতিক সময়ে চীনে যাত্রীপ্রবাহ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে—তাই সে দেশে কার্ড ব্যয়েও রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দৈনন্দিন খরচ, বেতন-ভাতা গ্রহণ এবং নগদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ডেবিট কার্ড। তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা কম হলেও এর ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে এবং তা মূলত শহরকেন্দ্রিক। শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ক্রেডিট কার্ড এখন একটি স্বাভাবিক ব্যয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। একইভাবে প্রি-পেইড কার্ডের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে—গত পাঁচ বছরে যার প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ গুণ।
বর্তমানে দেশের ৫৬টি ব্যাংক ও ১টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফসি) কার্ড সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮টি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড, দ্বৈত মুদ্রার ডেবিট কার্ড এবং প্রি-পেইড কার্ড—এই তিন ধরনের সেবা পরিচালনা করে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, সামগ্রিকভাবে মানুষ নগদের চেয়ে কার্ডে লেনদেনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তাঁর ভাষায়, আঞ্চলিক কূটনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতিও ক্রস-বর্ডার কার্ড ব্যবহারে প্রভাব ফেলছে।
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে। তবে বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে এই লেনদেনের প্রবণতা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। মূলত নগদ বহনের ঝুঁকি, বিদেশি মুদ্রা ব্যবস্থাপনা এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্টের সুবিধা—এ সব মিলিয়েই সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যনতুন রেকর্ড হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যয়ের পরিমাণ বেড়েছে ৫১ কোটি টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশিরা বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে খরচ করেছিলেন ৪৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। মাত্র এক মাস পর সেপ্টেম্বরে সেই ব্যয় দাঁড়ায় ৪৯৪ কোটি ২ লাখ টাকায়। অর্থাৎ বিদেশে কার্ড খরচ এক মাসে বেড়েছে ৫১ কোটি ১ লাখ টাকা।
তথ্য বলছে, বিদেশে বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে—৭০ কোটি ৯ লাখ টাকা। থাইল্যান্ডে খরচ হয়েছে ৫৯ কোটি ৯ লাখ এবং যুক্তরাজ্যে ৫৪ কোটি ১ লাখ টাকা। সিঙ্গাপুরে ব্যয় ৪০ কোটি ৪ লাখ, মালয়েশিয়ায় ৩৪ কোটি, ভারতে ৩২ কোটি ৩ লাখ, নেদারল্যান্ডসে ২৫ কোটি, সৌদি আরবে ২৪ কোটি, কানাডায় ২১ কোটি, অস্ট্রেলিয়ায় ১৭ কোটি এবং আয়ারল্যান্ডে ১৬ কোটি টাকা। চীনে ব্যয় হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। অন্যান্য দেশে মোট খরচ ৯২ কোটি টাকার বেশি।
অন্যদিকে, বিদেশিরাও বাংলাদেশে এসে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কত খরচ করে থাকেন। আগস্টে বিদেশিদের ব্যয় ছিল ১৮৩ কোটি ৫ লাখ টাকা, যা সেপ্টেম্বরে সামান্য কমে দাঁড়ায় ১৭৫ কোটি ৯ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে তাঁদের কার্ডব্যয় কমেছে প্রায় ৮ কোটি টাকা। বিদেশিদের মধ্যেও বাংলাদেশে এসে সর্বোচ্চ খরচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা—৩৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। যুক্তরাজ্য ও ভারতের নাগরিকদের ব্যয় ছিল ১৭ কোটি টাকা করে।
এ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, নগদ বহনের চেয়ে মানুষ কার্ডে লেনদেনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বিদেশ ভ্রমণে এটি সবচেয়ে সহজ, নিরাপদ ও ঝুঁকিহীন পদ্ধতি। সাম্প্রতিক সময়ে চীনে যাত্রীপ্রবাহ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে—তাই সে দেশে কার্ড ব্যয়েও রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দৈনন্দিন খরচ, বেতন-ভাতা গ্রহণ এবং নগদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে এখনো সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ডেবিট কার্ড। তুলনামূলকভাবে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা কম হলেও এর ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে এবং তা মূলত শহরকেন্দ্রিক। শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ক্রেডিট কার্ড এখন একটি স্বাভাবিক ব্যয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। একইভাবে প্রি-পেইড কার্ডের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে—গত পাঁচ বছরে যার প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৬ গুণ।
বর্তমানে দেশের ৫৬টি ব্যাংক ও ১টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফসি) কার্ড সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮টি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড, দ্বৈত মুদ্রার ডেবিট কার্ড এবং প্রি-পেইড কার্ড—এই তিন ধরনের সেবা পরিচালনা করে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, সামগ্রিকভাবে মানুষ নগদের চেয়ে কার্ডে লেনদেনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। তাঁর ভাষায়, আঞ্চলিক কূটনীতি ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতিও ক্রস-বর্ডার কার্ড ব্যবহারে প্রভাব ফেলছে।

রোজাদারদের ইফতারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কম হওয়া নিয়ে এবার যে প্রত্যাশা ছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আশা করা হচ্ছিল, আমদানি খরচ হ্রাস পাওয়া এবং গুটিকয়েক আমদানিকারকের সিন্ডিকেটের অবসান হওয়া–এই দুই কারণে খেজুরের দাম কম থাকবে।
০২ মার্চ ২০২৫
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৩ ঘণ্টা আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৩ ঘণ্টা আগে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
৯ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে তামার দাম ইতিমধ্যে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির পথে। গত শুক্রবার প্রতি টন তামার দাম ১১ হাজার ৯৫২ ডলার উঠে যায়।
উচ্চ বিদ্যুৎ পরিবাহিতার কারণে তামা ডেটা সেন্টার, বৈদ্যুতিক যান, বিদ্যুৎ গ্রিড এবং জ্বালানি রূপান্তর অবকাঠামোর জন্য অপরিহার্য কাঁচামাল। বিশ্বজুড়ে ডেটা সেন্টার সম্প্রসারণ ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে বিপুল বিনিয়োগ তামার চাহিদাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।
বেঞ্চমার্ক মিনারেল ইনটেলিজেন্সের বিশ্লেষক দান ডে ইয়ং বলেন, এআই খাতকে কেন্দ্র করে যাঁরা বিনিয়োগ করছেন, তাঁরা এমন পণ্য বেছে নিচ্ছেন, যেখানে ডেটা সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল অন্তর্ভুক্ত। ফলে তামাভিত্তিক ইটিএফসহ সংশ্লিষ্ট সম্পদে বিনিয়োগ বাড়ছে।
এ প্রবণতার অংশ হিসেবে কানাডার স্প্রট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ২০২৪ সালের মাঝামাঝি বিশ্বের প্রথম বাস্তব তামাসমর্থিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) চালু করে। প্রায় ১০ হাজার টন তামা সংরক্ষিত এই তহবিলের ইউনিট মূল্য চলতি বছরে ৪৬ শতাংশ বেড়ে প্রায় ১৪ কানাডিয়ান ডলারে পৌঁছেছে।
রয়টার্সের এক জরিপে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছরে বৈশ্বিক তামার বাজারে ১ লাখ ২৪ হাজার টন এবং আগামী বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ম্যাকোয়ারির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্বে তামার চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা দেশ চীনে চাহিদা বাড়বে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, আর চীনের বাইরে আগামী বছর চাহিদা বাড়তে পারে ৩ শতাংশ।
ম্যাকোয়ারির বিশ্লেষক অ্যালিস ফক্স বলেন, কঠোর সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে বাজারে যে আলোচনা চলছে, সেটিই তামার দামে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করছে।
সরবরাহ সংকটের পেছনে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় ফ্রিপোর্ট ম্যাকমোরানের গ্রাসবার্গ খনিতে দুর্ঘটনা, গ্লেনকোরসহ বড় খনি কোম্পানির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত।
লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কমেক্স ও সাংহাই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে মোট তামার মজুত চলতি বছরে ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৬ লাখ ৬১ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। তবে এর বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাচ্ছে।
কমেক্সে তামার মজুত রেকর্ড ৪ লাখ ৫ হাজার ৭৮২ টনে পৌঁছেছে, যা মোট বৈশ্বিক এক্সচেঞ্জ মজুতের ৬১ শতাংশ। বছরের শুরুতে যা ছিল মাত্র ২০ শতাংশ।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত ডেটা সেন্টারগুলোর ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম দ্রুত বেড়ে প্রতি টন প্রায় ১২ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তামার ঘাটতি পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করেছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরে তামার দাম ইতিমধ্যে ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, যা ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির পথে। গত শুক্রবার প্রতি টন তামার দাম ১১ হাজার ৯৫২ ডলার উঠে যায়।
উচ্চ বিদ্যুৎ পরিবাহিতার কারণে তামা ডেটা সেন্টার, বৈদ্যুতিক যান, বিদ্যুৎ গ্রিড এবং জ্বালানি রূপান্তর অবকাঠামোর জন্য অপরিহার্য কাঁচামাল। বিশ্বজুড়ে ডেটা সেন্টার সম্প্রসারণ ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে বিপুল বিনিয়োগ তামার চাহিদাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে।
বেঞ্চমার্ক মিনারেল ইনটেলিজেন্সের বিশ্লেষক দান ডে ইয়ং বলেন, এআই খাতকে কেন্দ্র করে যাঁরা বিনিয়োগ করছেন, তাঁরা এমন পণ্য বেছে নিচ্ছেন, যেখানে ডেটা সেন্টারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল অন্তর্ভুক্ত। ফলে তামাভিত্তিক ইটিএফসহ সংশ্লিষ্ট সম্পদে বিনিয়োগ বাড়ছে।
এ প্রবণতার অংশ হিসেবে কানাডার স্প্রট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ২০২৪ সালের মাঝামাঝি বিশ্বের প্রথম বাস্তব তামাসমর্থিত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) চালু করে। প্রায় ১০ হাজার টন তামা সংরক্ষিত এই তহবিলের ইউনিট মূল্য চলতি বছরে ৪৬ শতাংশ বেড়ে প্রায় ১৪ কানাডিয়ান ডলারে পৌঁছেছে।
রয়টার্সের এক জরিপে বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, চলতি বছরে বৈশ্বিক তামার বাজারে ১ লাখ ২৪ হাজার টন এবং আগামী বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ম্যাকোয়ারির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্বে তামার চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা দেশ চীনে চাহিদা বাড়বে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ, আর চীনের বাইরে আগামী বছর চাহিদা বাড়তে পারে ৩ শতাংশ।
ম্যাকোয়ারির বিশ্লেষক অ্যালিস ফক্স বলেন, কঠোর সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে বাজারে যে আলোচনা চলছে, সেটিই তামার দামে ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করছে।
সরবরাহ সংকটের পেছনে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় ফ্রিপোর্ট ম্যাকমোরানের গ্রাসবার্গ খনিতে দুর্ঘটনা, গ্লেনকোরসহ বড় খনি কোম্পানির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত।
লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কমেক্স ও সাংহাই ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে মোট তামার মজুত চলতি বছরে ৫৪ শতাংশ বেড়ে ৬ লাখ ৬১ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। তবে এর বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাচ্ছে।
কমেক্সে তামার মজুত রেকর্ড ৪ লাখ ৫ হাজার ৭৮২ টনে পৌঁছেছে, যা মোট বৈশ্বিক এক্সচেঞ্জ মজুতের ৬১ শতাংশ। বছরের শুরুতে যা ছিল মাত্র ২০ শতাংশ।

রোজাদারদের ইফতারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ খেজুরের দাম কম হওয়া নিয়ে এবার যে প্রত্যাশা ছিল, তা মুখ থুবড়ে পড়েছে। আশা করা হচ্ছিল, আমদানি খরচ হ্রাস পাওয়া এবং গুটিকয়েক আমদানিকারকের সিন্ডিকেটের অবসান হওয়া–এই দুই কারণে খেজুরের দাম কম থাকবে।
০২ মার্চ ২০২৫
স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ১ শতাংশ এবং মাথাপিছু সরকারি ব্যয় মাত্র ১,০৭০ টাকা। দেশের প্রায় ৪৯ শতাংশ মানুষ এখনো মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত।
৩ ঘণ্টা আগে
অগ্রহায়ণের শীতের সকাল। সাইকেল ও ভ্যানের ওপরে থরে থরে সাজানো রঙিন ফুলে ভরে উঠেছে যশোরের গদখালীর বাজার। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা—ফুলের ঘ্রাণ আর দরদামের হাঁকডাকে মুখর পুরো এলাকা।
৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই আর্থিক খাতে নগদ লেনদেন ক্রমেই কমে আসছে; তার জায়গা দখল করছে প্লাস্টিক মানি। অভ্যন্তরীণ পেমেন্ট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক সফর, অনলাইন কেনাকাটা, ব্যবসায়িক খরচ কিংবা জীবনযাত্রার প্রয়োজন—সব ক্ষেত্রেই এখন ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে লেনদেন বাড়ছে।
৪ ঘণ্টা আগে