আজকের পত্রিকা ডেস্ক
লন্ডনভিত্তিক বাণিজ্যিক আইন পরামর্শক সংস্থা এইচএফডব্লিউতে যুক্ত রয়েছেন আইনজীবী হেনরি ক্ল্যাক। সাগরপথে বিশ্বজুড়ে সাইবার হামলার শিকার শিপিং কোম্পানিগুলোর পক্ষে কাজ করেন তিনি। ক্লায়েন্টদের হয়ে কীভাবে তিনি অপরাধী চক্রকে মোকাবিলা করেন, তা নিয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
ক্ল্যাক জানান, এইচএফডব্লিউকে এখন পর্যন্ত যেসব মামলা লড়তে হয়েছে, তার বেশির ভাগই নাইজেরিয়ার গ্যাং বা সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে। গত কয়েক বছরের বেশ কয়েকটি বড় অঙ্কের প্রতারণার পেছনে তারাই দায়ী।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, ই-মেইল থেকে বা আড়ি পেতে জাহাজপথ ব্যবহারের জন্য দুই পক্ষের যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহ করে হ্যাকাররা। এমনকি কোনো কোম্পানির কম্পিউটার সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লগইন ডেটা বা আর্থিক লেনদেনের তথ্য চুরি করে সেই কোম্পানির ছদ্মবেশে প্রতারণা করে তারা। আবার চুরি করা তথ্য বা কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে এই চক্র।
আইন সংস্থা এইচএফডব্লিউ জানায়, সাইবার হামলা জাহাজ, সমুদ্রপথ ও বন্দর সবক্ষেত্রেই ক্রমবর্ধমান একটি সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এ হামলা বাড়তে থাকায় ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এসব মোকাবিলায় খরচ দ্বিগুণ হয়ে ৫ লাখ ৫০ হাজার ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর যেসব ক্ষেত্রে সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞরা হ্যাকারদের হাত থেকে সিস্টেম ফিরিয়ে নিতে পারেন না, সেখানে মুক্তিপণে গড় খরচ করতে হয় ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার।
বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ বাণিজ্য সমুদ্রপথে বহন করা হয়। এই অবস্থায় এ ধরনের ব্যাঘাত শিপিং কোম্পানিগুলোর খরচ অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে আর সক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিংয়ের (আইসিএস) মেরিন বিভাগের পরিবেশ ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপক জন স্টাপার্ট বলেন, সমুদ্রপথের এই পরিস্থিতির কারণে সমুদ্র-বাণিজ্য এখন অপরাধী চক্রের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। এমনকি যেসব দেশের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক রয়েছে, তারাও এ পন্থা অবলম্বনে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
স্টাপার্ট আরও বলেন, সমুদ্র-বাণিজ্যের জন্য সাইবার সিকিউরিটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং উদ্বেগের বিষয়। কারণ, এই মাধ্যমে বিশ্ব অনেক বেশি আন্তসংযুক্ত।
আইসিএসের এ কর্মকর্তা জানান, বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধীরা শিপিং খাতকে শীর্ষ ১০টি লক্ষ্যের মধ্যে অন্যতম হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। যদি সাইবার অপরাধীরা আপনার কার্যক্রম ব্যাহত করতে সক্ষম হয় বা ধরুন কোনো র্যানসমওয়্যার হামলা চালায়, এর প্রভাব যথেষ্ট ক্ষতিকর হতে পারে।
সমুদ্রপথে হামলার হার দ্রুতগতিতে বাড়ছে। নেদারল্যান্ডসের এনএইচএল স্টেনডেন ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেসের একটি গবেষণা দল গত কয়েক বছরে জাহাজ চলাচল-সংক্রান্ত সাইবার হামলাগুলোর তথ্য যাচাই করে দেখেছে, ২০২১ সালে ১০টি হামলা হয়েছিল আর তা বেড়ে গত বছর ৬৪টিতে দাঁড়িয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিটাইম আইটি সিকিউরিটি গবেষণা দলের জেরোন পিপকার জানান, এসব সাইবার হামলার ঘটনার মধ্যে অনেকগুলোর সঙ্গে চারটি দেশের সরকার—রাশিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়া ও ইরান জড়িত।
পিপকার বলেন, ‘আমরা একবার দেখলাম, ইউক্রেনে কিছু সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছিল, তখন একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ নিয়ে তথ্য দেওয়া হচ্ছিল, যাতে ডেলিভারির লজিস্টিক চেইনে কিছু ব্যাঘাত সৃষ্টি করা যায়।
‘আর অন্য হামলাগুলো আর্থিক চাপ বা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য হয়। সাম্প্রতিক সাইবার হামলা দ্রুত বাড়ার একটি কারণ হলো, হ্যাকারদের কাজের সুযোগ দিনকে দিন আরও সহজ হয়ে যাচ্ছে। কারণ, গত কয়েক বছরে জাহাজশিল্প আরও বেশি ডিজিটাল হয়েছে, আবার নতুন যোগাযোগ প্রযুক্তি, যেমন ইলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটেলাইট পরিষেবা, জাহাজগুলোকে বাইরের বিশ্বের সঙ্গে আরও সংযুক্ত করেছে। আর তাই এগুলো আরও বেশি হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছে।
গত বছরের একটি ঘটনায় মার্কিন নৌবাহিনীর এক প্রধানকে তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। কারণ, তিনি তাঁর যুদ্ধজাহাজে একটি অননুমোদিত স্যাটেলাইট ডিশ স্থাপন করেছিলেন, যাতে তিনি ও অন্য কর্মকর্তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন।
জাহাজ চলাচল শিল্পে বেশির ভাগ দাপ্তরিক অংশ ভাগে ভাগে ডিজিটালাইজেশন হয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িত প্রযুক্তিও দ্রুত পুরোনো হয়ে যেতে পারে। পিপকার বলেন, একটি কার্গো জাহাজের গড় বয়স প্রায় ২২ বছর। জাহাজ কোম্পানিগুলোর পক্ষে প্রায়শই সেগুলোকে হালনাগাদ করার জন্য ডাঙ্গায় তুলে রাখা সম্ভব হয় না।
ডিজিটালাইজেশনের আরও কিছু ঝুঁকি রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জিপিএস জ্যামিং ও ‘স্পুফিং’।
সিকিউরিটি ফার্ম ক্লারোটির আরিক ডায়ামান্ট বলেন, জিপিএস স্পুফিং মানে হলো—নেভিগেশন সিস্টেমকে ভুয়া অবস্থান পাঠানো এবং এর ফলে জাহাজটি ভিন্ন পথে চলে যায়। এরপর অগভীর জলে গেলে জাহাজটির গায়ে আঘাত লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
গত মে মাসে এমএসসি অ্যান্টোনিয়া নামের একটি কনটেইনার জাহাজ লোহিত সাগরে আটকে পড়ে। ধারণা করা হয়, জিপিএস স্পুফিংয়ের কারণে এ ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় কোনো সন্দেহভাজনকে অভিযুক্ত করা না হলেও এই এলাকার অন্যান্য কার্গো জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা হামলা করায় তাদের দিকে সন্দেহের নজর গেছে। আর বাল্টিক সাগরে জিপিএস লক্ষ্য করে চালানো অন্যান্য হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা হয়েছে।
জিপিএস জ্যামিং ও স্পুফিং থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন এবং ব্যয়বহুল, তবে ‘অ্যান্টি-জ্যাম’ প্রযুক্তি সহজলভ্য।
এদিকে কার্গো জাহাজগুলোর আরও একটি দুর্বলতা হলো—তাদের নির্গমন পর্যবেক্ষণের জন্য সেন্সরের ব্যবহার বাড়ানো। এসব সেন্সর প্রায়শই ডেটা পাঠায়, যা হ্যাকারদের অনুপ্রবেশ ও হামলার সুযোগ সৃষ্টি করে।
তবে এসবের মধ্যে ভালো খবর হলো, সমুদ্র-বাণিজ্যে নিরাপত্তা কড়াকড়ি বাড়ছে। ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও) নিয়ন্ত্রক বাণিজ্যিক শিপিংয়ের জন্য এর গ্লোবাল সেফটি ম্যানেজমেন্ট কোডে নতুন সাইবার নিরাপত্তা বিধান যুক্ত করেছে।
এইচএফডব্লিউর শিপিং বিশেষজ্ঞ টম ওয়াল্টার্স বলেন, এই বিধানগুলো জাহাজের সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে আরও নির্দিষ্টভাবে সাইবার ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা অন্তর্ভুক্ত করা যায়। বিশেষ করে, যাতে ইচ্ছাকৃত সাইবার হামলা মোকাবিলা করা যায় এবং নিয়ম মেনে চলা বাণিজ্যিক জাহাজ পরিচালনার জন্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার অনুশীলনগুলো নির্দিষ্ট করে দেওয়া যায়।
জাহাজ ব্যবস্থাপনা সিস্টেমগুলোতে এখন ক্রমবর্ধমান কঠোর সাইবার নিরাপত্তাব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে—মৌলিক নিরাপত্তা পদ্ধতি থেকে শুরু করে আরও কারিগরি এবং প্রযুক্তিগত কর্মপদ্ধতি ও আইটি ব্যবস্থা।
আইসিএসের মেরিন বিভাগের পরিবেশ ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপক জন স্টাপার্ট বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, শিল্পটি হুমকি মোকাবিলায় অন্তত গত ছয় বা সাত বছর আগের তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে।’
স্টাপার্ট আরও যোগ করেন, সাইবার হামলা ও সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সমুদ্রশিল্পে সচেতনতা অনেক বেড়েছে এবং আগামী বছরগুলোতে তা আরও বাড়বে।
সাইবার হামলার পর অপরাধী গ্যাংগুলোর সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করা হয়—জানতে চাইলে আইন সংস্থা এইচএফডব্লিউর আইনজীবী হেনরি ক্ল্যাক বলেন, খুদেবার্তার মাধ্যমে এটি করা হয় এবং যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত রাখা হয়।
ক্ল্যাক আরও বলেন, যখন এমনটা হয়, বেশির ভাগ সময়ই র্যানসমওয়্যারের মুক্তিপণ আলোচনার প্রসঙ্গে হয়। যোগাযোগ হয় অনলাইন মেসেজিং সার্ভিসের মাধ্যমে, হয়তো দিনে একটি বার্তা পাঠানো হয় বা দু-একটি বাক্য।
লন্ডনভিত্তিক বাণিজ্যিক আইন পরামর্শক সংস্থা এইচএফডব্লিউতে যুক্ত রয়েছেন আইনজীবী হেনরি ক্ল্যাক। সাগরপথে বিশ্বজুড়ে সাইবার হামলার শিকার শিপিং কোম্পানিগুলোর পক্ষে কাজ করেন তিনি। ক্লায়েন্টদের হয়ে কীভাবে তিনি অপরাধী চক্রকে মোকাবিলা করেন, তা নিয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
ক্ল্যাক জানান, এইচএফডব্লিউকে এখন পর্যন্ত যেসব মামলা লড়তে হয়েছে, তার বেশির ভাগই নাইজেরিয়ার গ্যাং বা সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে। গত কয়েক বছরের বেশ কয়েকটি বড় অঙ্কের প্রতারণার পেছনে তারাই দায়ী।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, ই-মেইল থেকে বা আড়ি পেতে জাহাজপথ ব্যবহারের জন্য দুই পক্ষের যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহ করে হ্যাকাররা। এমনকি কোনো কোম্পানির কম্পিউটার সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লগইন ডেটা বা আর্থিক লেনদেনের তথ্য চুরি করে সেই কোম্পানির ছদ্মবেশে প্রতারণা করে তারা। আবার চুরি করা তথ্য বা কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে এই চক্র।
আইন সংস্থা এইচএফডব্লিউ জানায়, সাইবার হামলা জাহাজ, সমুদ্রপথ ও বন্দর সবক্ষেত্রেই ক্রমবর্ধমান একটি সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এ হামলা বাড়তে থাকায় ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এসব মোকাবিলায় খরচ দ্বিগুণ হয়ে ৫ লাখ ৫০ হাজার ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর যেসব ক্ষেত্রে সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞরা হ্যাকারদের হাত থেকে সিস্টেম ফিরিয়ে নিতে পারেন না, সেখানে মুক্তিপণে গড় খরচ করতে হয় ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার।
বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ বাণিজ্য সমুদ্রপথে বহন করা হয়। এই অবস্থায় এ ধরনের ব্যাঘাত শিপিং কোম্পানিগুলোর খরচ অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে আর সক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব শিপিংয়ের (আইসিএস) মেরিন বিভাগের পরিবেশ ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপক জন স্টাপার্ট বলেন, সমুদ্রপথের এই পরিস্থিতির কারণে সমুদ্র-বাণিজ্য এখন অপরাধী চক্রের প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। এমনকি যেসব দেশের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক রয়েছে, তারাও এ পন্থা অবলম্বনে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
স্টাপার্ট আরও বলেন, সমুদ্র-বাণিজ্যের জন্য সাইবার সিকিউরিটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং উদ্বেগের বিষয়। কারণ, এই মাধ্যমে বিশ্ব অনেক বেশি আন্তসংযুক্ত।
আইসিএসের এ কর্মকর্তা জানান, বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধীরা শিপিং খাতকে শীর্ষ ১০টি লক্ষ্যের মধ্যে অন্যতম হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। যদি সাইবার অপরাধীরা আপনার কার্যক্রম ব্যাহত করতে সক্ষম হয় বা ধরুন কোনো র্যানসমওয়্যার হামলা চালায়, এর প্রভাব যথেষ্ট ক্ষতিকর হতে পারে।
সমুদ্রপথে হামলার হার দ্রুতগতিতে বাড়ছে। নেদারল্যান্ডসের এনএইচএল স্টেনডেন ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেসের একটি গবেষণা দল গত কয়েক বছরে জাহাজ চলাচল-সংক্রান্ত সাইবার হামলাগুলোর তথ্য যাচাই করে দেখেছে, ২০২১ সালে ১০টি হামলা হয়েছিল আর তা বেড়ে গত বছর ৬৪টিতে দাঁড়িয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিটাইম আইটি সিকিউরিটি গবেষণা দলের জেরোন পিপকার জানান, এসব সাইবার হামলার ঘটনার মধ্যে অনেকগুলোর সঙ্গে চারটি দেশের সরকার—রাশিয়া, চীন, উত্তর কোরিয়া ও ইরান জড়িত।
পিপকার বলেন, ‘আমরা একবার দেখলাম, ইউক্রেনে কিছু সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছিল, তখন একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ নিয়ে তথ্য দেওয়া হচ্ছিল, যাতে ডেলিভারির লজিস্টিক চেইনে কিছু ব্যাঘাত সৃষ্টি করা যায়।
‘আর অন্য হামলাগুলো আর্থিক চাপ বা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য হয়। সাম্প্রতিক সাইবার হামলা দ্রুত বাড়ার একটি কারণ হলো, হ্যাকারদের কাজের সুযোগ দিনকে দিন আরও সহজ হয়ে যাচ্ছে। কারণ, গত কয়েক বছরে জাহাজশিল্প আরও বেশি ডিজিটাল হয়েছে, আবার নতুন যোগাযোগ প্রযুক্তি, যেমন ইলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটেলাইট পরিষেবা, জাহাজগুলোকে বাইরের বিশ্বের সঙ্গে আরও সংযুক্ত করেছে। আর তাই এগুলো আরও বেশি হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছে।
গত বছরের একটি ঘটনায় মার্কিন নৌবাহিনীর এক প্রধানকে তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। কারণ, তিনি তাঁর যুদ্ধজাহাজে একটি অননুমোদিত স্যাটেলাইট ডিশ স্থাপন করেছিলেন, যাতে তিনি ও অন্য কর্মকর্তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন।
জাহাজ চলাচল শিল্পে বেশির ভাগ দাপ্তরিক অংশ ভাগে ভাগে ডিজিটালাইজেশন হয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িত প্রযুক্তিও দ্রুত পুরোনো হয়ে যেতে পারে। পিপকার বলেন, একটি কার্গো জাহাজের গড় বয়স প্রায় ২২ বছর। জাহাজ কোম্পানিগুলোর পক্ষে প্রায়শই সেগুলোকে হালনাগাদ করার জন্য ডাঙ্গায় তুলে রাখা সম্ভব হয় না।
ডিজিটালাইজেশনের আরও কিছু ঝুঁকি রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জিপিএস জ্যামিং ও ‘স্পুফিং’।
সিকিউরিটি ফার্ম ক্লারোটির আরিক ডায়ামান্ট বলেন, জিপিএস স্পুফিং মানে হলো—নেভিগেশন সিস্টেমকে ভুয়া অবস্থান পাঠানো এবং এর ফলে জাহাজটি ভিন্ন পথে চলে যায়। এরপর অগভীর জলে গেলে জাহাজটির গায়ে আঘাত লেগে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
গত মে মাসে এমএসসি অ্যান্টোনিয়া নামের একটি কনটেইনার জাহাজ লোহিত সাগরে আটকে পড়ে। ধারণা করা হয়, জিপিএস স্পুফিংয়ের কারণে এ ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় কোনো সন্দেহভাজনকে অভিযুক্ত করা না হলেও এই এলাকার অন্যান্য কার্গো জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা হামলা করায় তাদের দিকে সন্দেহের নজর গেছে। আর বাল্টিক সাগরে জিপিএস লক্ষ্য করে চালানো অন্যান্য হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করা হয়েছে।
জিপিএস জ্যামিং ও স্পুফিং থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন এবং ব্যয়বহুল, তবে ‘অ্যান্টি-জ্যাম’ প্রযুক্তি সহজলভ্য।
এদিকে কার্গো জাহাজগুলোর আরও একটি দুর্বলতা হলো—তাদের নির্গমন পর্যবেক্ষণের জন্য সেন্সরের ব্যবহার বাড়ানো। এসব সেন্সর প্রায়শই ডেটা পাঠায়, যা হ্যাকারদের অনুপ্রবেশ ও হামলার সুযোগ সৃষ্টি করে।
তবে এসবের মধ্যে ভালো খবর হলো, সমুদ্র-বাণিজ্যে নিরাপত্তা কড়াকড়ি বাড়ছে। ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও) নিয়ন্ত্রক বাণিজ্যিক শিপিংয়ের জন্য এর গ্লোবাল সেফটি ম্যানেজমেন্ট কোডে নতুন সাইবার নিরাপত্তা বিধান যুক্ত করেছে।
এইচএফডব্লিউর শিপিং বিশেষজ্ঞ টম ওয়াল্টার্স বলেন, এই বিধানগুলো জাহাজের সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে আরও নির্দিষ্টভাবে সাইবার ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা অন্তর্ভুক্ত করা যায়। বিশেষ করে, যাতে ইচ্ছাকৃত সাইবার হামলা মোকাবিলা করা যায় এবং নিয়ম মেনে চলা বাণিজ্যিক জাহাজ পরিচালনার জন্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার অনুশীলনগুলো নির্দিষ্ট করে দেওয়া যায়।
জাহাজ ব্যবস্থাপনা সিস্টেমগুলোতে এখন ক্রমবর্ধমান কঠোর সাইবার নিরাপত্তাব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে—মৌলিক নিরাপত্তা পদ্ধতি থেকে শুরু করে আরও কারিগরি এবং প্রযুক্তিগত কর্মপদ্ধতি ও আইটি ব্যবস্থা।
আইসিএসের মেরিন বিভাগের পরিবেশ ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপক জন স্টাপার্ট বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, শিল্পটি হুমকি মোকাবিলায় অন্তত গত ছয় বা সাত বছর আগের তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে।’
স্টাপার্ট আরও যোগ করেন, সাইবার হামলা ও সাইবার অপরাধ সম্পর্কে সমুদ্রশিল্পে সচেতনতা অনেক বেড়েছে এবং আগামী বছরগুলোতে তা আরও বাড়বে।
সাইবার হামলার পর অপরাধী গ্যাংগুলোর সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করা হয়—জানতে চাইলে আইন সংস্থা এইচএফডব্লিউর আইনজীবী হেনরি ক্ল্যাক বলেন, খুদেবার্তার মাধ্যমে এটি করা হয় এবং যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত রাখা হয়।
ক্ল্যাক আরও বলেন, যখন এমনটা হয়, বেশির ভাগ সময়ই র্যানসমওয়্যারের মুক্তিপণ আলোচনার প্রসঙ্গে হয়। যোগাযোগ হয় অনলাইন মেসেজিং সার্ভিসের মাধ্যমে, হয়তো দিনে একটি বার্তা পাঠানো হয় বা দু-একটি বাক্য।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চীনের শিপইয়ার্ডে তৈরি দুটি নতুন জাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। গতকাল বুধবার এক সভায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয়।
৬ ঘণ্টা আগেদেশের ৩৫টি টেলিভিশন চ্যানেলের স্ক্রলে বিনা খরচে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বাড়ানোর বার্তা প্রচারের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের টিভি-২ শাখা থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে সই করেছেন উপসচিব মো. ইব্রাহিম ভূঞা।
৭ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশের সহযোগিতায় মেলাটির আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।
৭ ঘণ্টা আগেআজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিচেল লি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কান্ট্রি অফিসার টি এ এল দায়ে আর্ন, এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুরের ডেভেলপমেন্ট পার্টনার বেনজামিন চু এবং বিজিএমইএ পরিচালক রুমানা রশীদ।
৭ ঘণ্টা আগে