Ajker Patrika

অবরোধের দোহাই দিয়ে বাড়ল চালের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ১০: ০৬
অবরোধের দোহাই দিয়ে বাড়ল চালের দাম

ভোক্তার নাভিশ্বাস উঠলেও নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা কমছে না; বরং তা দিনে দিনে বাড়ছে। পেঁয়াজ, আলু, ডিম, চিনির পর এবার বেড়েছে চালের দাম। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর জন্য মৌসুম শেষ হওয়ায় সরবরাহ কমে যাওয়া, হরতাল-অবরোধে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফার প্রবণতাকে দুষছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে আমন ধান কাটা শুরু হলে দাম কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গতকাল রোববার সুনামগঞ্জে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশে দ্রব্যমূল্য এখন বেশি। মানুষের কষ্ট হচ্ছে। সেটা আমরা অস্বীকার করছি না। আমরা দরিদ্র মানুষের জন্য নানা ব্যবস্থা করছি। ট্রাকে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করছি। এক কোটি পরিবারকে রেশন দিচ্ছি। দাম কমানোর চেষ্টা করছি। আশা করছি, অগ্রহায়ণ মাসের আমন ধান আছে। সেগুলো কাটা হয়ে গেলে দাম কিছুটা কমবে।’

দেশের বিভিন্ন মোকাম, আড়ত, পাইকারি ও খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি পর্যায়েই চালের দাম বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ছিল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা, এখন তা ৭০-৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ৬৫ টাকার নাজিরশাইল ৭০ টাকা, ৫৫ টাকার বিআর-২৮ চাল ৬০ টাকা এবং ৫৫ টাকার বিআর-২৯ চাল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল প্রতি কেজি সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৭২-৭৫ টাকায় এবং মাঝারি চাল ৫৬-৬০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সরু চালে ১ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং মাঝারি চালে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ দাম বেড়েছে। তবে মোটা চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত সরকারি গুদামে চালের মজুত ছিল ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫০ টন। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৪৫-৪৭ টাকায় এবং খুচরা পর্যায়ে ৪৮-৫২ টাকায়। 

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মেসার্স মায়ের দোয়া রাইস এজেন্সির ব্যবসায়ী সুজন মাহমুদ বলেন, ‘মোকামে চালের দাম বস্তাপ্রতি ১০০-১৫০ টাকা বাড়তি। তাই আমরাও দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছি।’ অবশ্য একই বাজারের মেসার্স মদিনা রাইস এজেন্সির মালিক নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাই, আমরা জাঁতায় আছি। মোকামে দাম বাড়তি। কিন্তু ক্রেতা মানতে চায় না।’ 

মদিনা রাইস এজেন্সি থেকে গতকাল বিকেলে ৯ কেজি চাল কেনেন একটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির বাবুর্চি আবু সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘আগে চালের বস্তা কিনতাম। দোকানদার দাম বাড়াইয়া চায়। এ জন্য কম কইর‍্যা নিচ্ছি।’

রাজধানীর বাবুবাজারের চালের আড়তদারেরা জানিয়েছেন, মোকামে দাম তো বেড়েছেই, সঙ্গে হরতাল-অবরোধে গাড়ি ভাড়া আগের চেয়ে ৫-৭ হাজার টাকা বেশি। এ ছাড়া মৌসুম শেষ হওয়ায় কিছু চালের মজুতও শেষ পর্যায়ে।

নওগাঁ ধান-চাউল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা বলেন, মোকামে ৫৬ টাকার নাজিরশাইল ৬২-৬৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চালের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বাড়বে। সাধারণ মানুষের আয়ের ৫০ শতাংশের বেশি ব্যয় হয় চাল কেনায়। সরকারের গুদামে পর্যাপ্ত চালের মজুত আছে। এ জন্য সরকারের উচিত দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত