Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁও-১, ২ ও ৩: এলোমেলো বিএনপি গোছানো জামায়াত

  • আগে থেকে প্রচারে থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে জামায়াত।
  • মির্জা ফখরুলের আসনে কোনো বিরোধ নেই।
  • ফাঁকা রাখা আসনে বিএনপির পাশাপাশি জোটসঙ্গীরা প্রচারে।
সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও 
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ০৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁওয়ে বছরখানেক আগে প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে প্রচার চালাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। সম্প্রতি বিএনপিও প্রার্থী ঘোষণা করায় প্রচার জমে উঠেছে। তবে আগে থেকে প্রচারে থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে জামায়াত। ফলে খানিকটা চ্যালেঞ্জের মুখে বিএনপি।

তিনটি আসনের মধ্যে দুটিতে প্রার্থী ঘোষণা করলেও একটি আসন নিয়ে বিএনপি এখনো দোদুল্যমান। অন্যদিকে জামায়াত তিনটি আসনেই প্রার্থী দিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে তৎপর। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বললেও তাদের তেমন দৃশ্যমান কার্যক্রম নেই। বাম দল ও জাতীয় পার্টির (জাপা) তৎপরতাও নেই।

ঠাকুরগাঁও-১ : সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১০টি সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই আসনে আওয়ামী লীগ সাতবার, বিএনপি দুবার ও জাতীয় পার্টি একবার জয়ী হয়েছে। আসনটিতে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী বলেন, ‘আমাদের মহাসচিব গেল দুই মাসে ৮ দিন ঠাকুরগাঁওয়ে ছিলেন এবং এই সময়ে তিনি ২২টি ইউনিয়নের ১৯টিতে প্রচার চালিয়েছেন। আমাদের হাজার হাজার কর্মী মাঠে রয়েছেন।’

আসনটিতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ মহানগরীর সহ-সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি এখন এলাকার নানা সামাজিক ও ধর্মীয় আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন। তবে জামায়াতের প্রচার কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি নেতা পয়গাম আলী অভিযোগ করেন, ‘জামায়াত মসজিদভিত্তিক গুপ্ত রাজনীতি করছে। তাদের প্রচার মূলত ফেসবুক আর টিকটকে। বাস্তবে তাদের দৃশ্যমান উপস্থিতি নেই।’

এ প্রসঙ্গে জেলা জামায়াতের আমির বেলাল উদ্দিন প্রধান বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে যেসব কথা বলা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। আমরা তিনটি আসনেই বিজয় অর্জন করব। আমরা উঠোন বৈঠক করছি এবং নারীরাও প্রচার চালাচ্ছেন।’

এই আসনে প্রার্থী হতে পারেন জেলা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি ইয়াকুব আলী। আর জামায়াতের সঙ্গে জোট না হলে প্রার্থী হতে পারেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সভাপতি হাফিজ উদ্দিন। তাঁরাও রয়েছেন প্রচারে।

ঠাকুরগাঁও-২ : বালিয়াডাঙ্গী, হরিপুর ও রানীশংকৈলের একাংশ নিয়ে গঠিত এই আসন গত ৩৭ বছর আওয়ামী লীগের দবিরুল ইসলাম ও তাঁর পরিবারের দখলে ছিল। গেল ১০টি সংসদ নির্বাচনের মধ্যে আটটিতে জয়ী হয়েছিল আওয়ামী লীগ বা জোটের শরিকেরা। আওয়ামী লীগের দবিরুল ইসলাম পরিবারের অনুপস্থিতিতে আসনটিতে নতুন করে শক্তি সঞ্চারের চেষ্টা করছে জামায়াত ও বিএনপি। তবে গত জুলাইয়ে বিএনপি মহাসচিবের ভাইয়ের গাড়ি ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করায় দলীয় কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। নির্বাচনের মাত্র তিন মাস বাকি থাকলেও বর্তমানে এই উপজেলায় বিএনপির কোনো কমিটি নেই, সম্ভাব্য প্রার্থীর নামও ঘোষণা করেনি দলটি। জোটের জন্য ফাঁকা রেখেছে বিএনপি। এর সুযোগ নিচ্ছে জামায়াত। তাদের প্রার্থী জেলা জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম। ১৯৯১ সাল থেকে তিনি এ আসনে দলের প্রার্থী হয়ে আসছেন।

বিএনপি জোটের শরিক হয়ে আসনটিতে প্রার্থী হতে চান গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান। সে কারণে তিনি গত সেপ্টেম্বর থেকে এলাকায় উঠান-বৈঠক ও প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে এই আসন নিয়ে বিএনপিতে দুটি পক্ষ সক্রিয়। একপক্ষ মহাসচিব মির্জা ফখরুল বা তাঁর পরিবারের সদস্যকে চায়, অন্যপক্ষ ড্যাবের সাবেক মহাসচিব ডা. আব্দুল সালামের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছে। ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত সাবেক এমপি জেড মর্তূজা চৌধুরীও নিজের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী বলছেন, ‘এই আসনটি বারবার শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এবার এই আসনে বিএনপির প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।’

ঠাকুরগাঁও-৩: রানীশংকৈল ও পীরগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটি বহুপাক্ষিক লড়াইয়ের সাক্ষী। গত ১০টি সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি চারবার, আওয়ামী লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও বিএনপির প্রার্থী দুবার করে জয়ী হয়েছে। এ আসনে পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমানকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে রানীশংকৈল উপজেলা পরিষদের দুইবারের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও রানীশংকৈল উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মিজানুর রহমান।

এ ছাড়া গণঅধিকার পরিষদ মনোনীত কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সহসভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন নতুন প্রার্থী হিসেবে বেশ জোরেশোরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে মাঝে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক গোলাম মুর্তুজা সেলিম এবং জাকের পার্টি থেকে ছাত্রনেতা বেলায়েত হোসেন লিটনও প্রচার চালাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সূর্যের দেখা নেই, কনকনে ঠান্ডায় কাবু জনজীবন

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও 
সকালে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যাচ্ছে একটি বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকালে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যাচ্ছে একটি বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

আকাশে সূর্যের কোনো দেখা নেই। ঘন কুয়াশায় মোড়া ঠাকুরগাঁও শহর। সড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে। কনকনে ঠান্ডা থেকে রেহাই পেতে সড়কের পাশে আগুন জ্বালিয়ে উষ্ণতা খুঁজছে শীতার্ত লোকজন। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ড চৌরাস্তা ঘুরে এই দৃশ্য চোখে পড়ে।

গত কয়েক দিনের তুলনায় আজ জেলায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। যদিও ঠাকুরগাঁওয়ে কোনো আবহাওয়া অফিস নেই, তবে জেলার ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, সকাল ৭টার দিকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ১০টায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে বাতাসের কারণে অনুভূত তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১০ ডিগ্রির মতো।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঠাকুরগাঁও বাসস্ট্যান্ড চৌরাস্তা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানপাট তখন বন্ধ। পশ্চিম দিক থেকে আসা হিমেল বাতাস শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্য দিনের তুলনায় সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও কম। জীবিকার তাগিদে শ্রমজীবী মানুষ বাধ্য হয়ে ঘর থেকে বের হলেও পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় ফুটপাতে আশ্রয় নেওয়া দরিদ্র লোকজন আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।

হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র মানুষ। তাদের অনেকেরই গরম কাপড় নেই। তাই ঠান্ডা থেকে বাঁচতে কাগজ, পলিথিন ও ছেঁড়া কাপড় জ্বালিয়ে রাত ও সকাল পার করছে তারা।

সকালে সদর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক হাসান রাব্বির সঙ্গে। সড়কের পাশে কাগজ ও পলিথিন জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে পোহাতে তিনি বলেন, ‘আগে সকাল ৭টায় রিকশা নিয়ে বের হতাম। কিন্তু এখন ঠান্ডা এত বেড়েছে যে আজ ১০টার আগে বের হতে পারিনি। কুয়াশা একটু কমার অপেক্ষা করছি।’ শীতের কারণে ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেও কষ্ট হচ্ছে বলে জানান শহরের কালীবাড়ি এলাকার কলা বিক্রেতা ভূষণ রায়। তিনি বলেন, ‘সোয়েটার, টুপি, মাফলার পরেও শরীর বাঁচে না। শীত কিছুতেই মানছে না।’

এদিকে শীত মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৬ লাখ টাকা করে মোট ৩০ লাখ টাকায় ৮ হাজার ৫০০ কম্বল কেনা হয়েছে।’

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, এ বছর ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়ে কম্বল কেনা হয়েছে। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে সাড়ে ৭ হাজার কম্বল এবং বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান থেকে আরও দেড় হাজার কম্বল পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

জাবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪০
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

‘আগামীকাল বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে’ এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোক ও প্রতিবাদ মিছিল করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাকসু, শাখা ছাত্রশিবির, শাখা ছাত্রশক্তি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে ‘আগামীকালকে (শুক্রবার) বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে’ বলে মন্তব্য করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

সমাবেশে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক লড়াই করে বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। আমাদের লড়াই শুরু হবে শহীদ ওসমান হাদির ইনকিলাব মঞ্চের সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে। আগামীকালকে বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এই খুনি হাসিনার দল হাজার হাজার নিষ্পাপ বাংলাদেশের দামাল ছেলেদেরকে হত্যা করেও ওর রক্ত পিপাসা মেটেনি। বিদেশে বসে এখনো বিপ্লবীদের হত্যা করার ছক করছে। আমরা আজ এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে স্পষ্ট করে বলতে চাই শহীদ ওসমান হাদির রক্তের ওপর দিয়ে, শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক থাকবে না। যে সমস্ত ভারতীয়রা বাংলাদেশে বৈধভাবে অবৈধভাবে বাংলাদেশে চাকরি করছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের ভারতে পুশব্যাক করতে হবে। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না হাসিনাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না ওরা ওসমান হাদির খুনিকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।’

মোস্তাফিজুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।

এরপর আজ শুক্রবার দুপুরেও মোস্তাফিজুর রহমান তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে একই ধরনের বক্তব্য লিখে পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, শুধু রাজনৈতিক লড়াইয়ে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয় না। শহীদ ওসমান হাদি ভাই ইনকিলাব মঞ্চের মাধ্যমে ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী প্রক্সি উদীচী, ছায়ানটের কালচারাল হেজেমনির বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছিল, সেই লড়াই জারি রাখতে হবে। তাদের সকল আধিপত্যবাদী বয়ানকে তছনছ করে দিতে হবে। ইট, পাথরের দেয়াল ভেঙে আধিপত্যবাদকে মোকাবিলা করা যায় না, সেটা হাদি আমাদের শিখিয়েছে।’

অন্য আরেকটি ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গতকাল শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ভাইয়ের মৃত্যু-পরবর্তী প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশে প্রদত্ত আমার বক্তব্যের কিছু শব্দ নিয়ে এই স্পষ্টীকরণ প্রদান করছি। বক্তব্যে ব্যবহৃত “তছনছ” শব্দটির মাধ্যমে ভাঙচুরকে বোঝানো হয়নি। বরং এর অর্থ ছিল শহীদ হাদির যে স্বপ্ন নিয়মতান্ত্রিক ও প্রাতিষ্ঠানিক উপায়ে বিকল্প কাঠামো গড়ে তুলে, সর্বদা সচেতন থেকে ফ্যাসিবাদী বয়ানকে মোকাবিলা করা।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এ প্রসঙ্গে আরও যুক্ত করা প্রয়োজন যে, উদীচীসহ উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের তল্পিবাহক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকা রেখে আসছে। তারা বাংলাদেশের শত্রু, জনগণের শত্রু। তবে ফ্যাসিবাদের আদর্শিক ভিত্তিকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবেই মোকাবিলা করব, ইনশা আল্লাহ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে আগুন, পুড়েছে নথিপত্র

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২২
জানালা দিয়ে অফিসের ভেতর আগুন লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
জানালা দিয়ে অফিসের ভেতর আগুন লাগানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের স্টোররুমে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে নিচতলার স্টোররুমে সংরক্ষিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে গেছে।

আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সকালে ধোঁয়া দেখে আগুন লাগার বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসে। পরে নির্বাচন অফিসের প্রহরী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভান।

সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ও সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু দাউদ জানান, আগুনে কিছু নথি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। স্টোররুমের পেছনের জানালার পাশ থেকে আগুন লাগানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

খবর পেয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ইকবাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকনুজ জামানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২১
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে সরকারি নামমাত্র ফি থাকলেও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে বিচার চাইতে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে তাঁদের। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদটির হিসাবরক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নান্টু আলী নামের এক ব্যক্তি। অভিযোগের সপক্ষে ভিডিও প্রমাণও দাখিল করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাম আদালতে দেওয়ানি মামলার ফি ২০ টাকা এবং ফৌজদারি মামলার ফি ১০ টাকা। অথচ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, এখানে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে হাজিরা পর্যন্ত ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, স্বল্প সময়ে ও কম খরচে বিচার পাওয়ার আশায় তাঁরা গ্রাম আদালতে আসেন। কিন্তু এখানে এসেও তাঁদের অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।

আল্লাহর দরগা বাজার এলাকার এক ঝালমুড়ি ও ফুচকা বিক্রেতা জানান, পারিবারিক কলহ-সংক্রান্ত মামলায় তাঁর কাছ থেকে ধাপে ধাপে ১ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। মুন্না নামের অন্য এক ভুক্তভোগী জানান, একটি সাধারণ অভিযোগ দায়ের করতে তাঁকে ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে।

অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করে হিসাবরক্ষক আবু সুফিয়ান জানান, যোগদানের পর থেকেই তিনি এমনভাবে টাকা নিয়ে আসছেন।

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান উভয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যাপারে অবগত নন বলে দাবি করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিন্দ্য গুহ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত