সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
একসময় হেমন্তের বাতাসে ভেসে আসত নতুন ধানের মিষ্টি ঘ্রাণ, মাঠভরা সোনালি ধান যেন ছিল উৎসবের প্রতিচ্ছবি। ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামীণ জীবন এই ঐতিহ্যবাহী ধানকে ঘিরেই ছিল প্রাণবন্ত। তবে সেই চিত্র এখন পাল্টে গেছে। জেলার ফসলের মাঠে এখন শুধু হাইব্রিড ধানের একঘেয়ে সারি—ফলন বাড়লেও পাওয়া যায় না সেই আদি ধানের স্বাদ ও ঘ্রাণ।
ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে একসময় প্রায় ২৭ প্রজাতির আদি ধান চাষ হতো। এই জাতগুলোর নাম ছিল কাব্যিক—যেমন: মাল সারা, মাগুরশাল, সাপাহার, রাজভোগ, কালো নেনিয়া, সাদা নেনিয়া, সিন্দুর কটুয়া, ধোরা ভাদুই, কাশিয়া বিন্নি ও কল মিতা। প্রতিটি ধানের ছিল নিজস্ব রং, গন্ধ এবং গুণাগুণ। কোনোটি পিঠাপুলি তৈরির জন্য, আবার কোনোটি নরম বা ঝরঝরে ভাতের জন্য বিশেষ উপযুক্ত ছিল।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, আগে বছরে দুই মৌসুমে এই ধান চাষ হতো। আশ্বিন-কার্তিক মাসে যখন নতুন ধান ঘরে উঠত, তখন শুরু হতো পিঠাপুলি তৈরির ধুম ও উৎসবের আমেজ। কিন্তু হাইব্রিড ধানের আগ্রাসনে দ্রুতই আদি জাতগুলো মাঠ থেকে বিলীন হয়ে গেছে।
হরিপুর উপজেলার কৃষক আমিনুল হক বলেন, "আগের ধানের ভাতে মিষ্টি ঘ্রাণ লেগে থাকত। এখনকার ভাতে সেই স্বাদ নেই।" নারী কৃষক রোকেয়া আক্তার যোগ করেন, "নতুন ধান পেট ভরায়, কিন্তু মন ভরে না। সেই ধানগুলো ছিল আমাদের সংস্কৃতি।" প্রবীণ কৃষক শহিদুল ইসলাম আফসোস করে বলেন, "এসব ধান ছিল আমাদের জীবনের সঙ্গী। এখন কেবল সংরক্ষণাগারের বীজ মনে করিয়ে দেয় অতীত।"
কৃষিবিদরা বলছেন, আদি জাতের ধানগুলো প্রাকৃতিক বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল ছিল। উৎপাদন তুলনামূলকভাবে কম হলেও স্বাদ ও গুণে ছিল অতুলনীয়। অপরদিকে হাইব্রিড ধান কম সময়ে বেশি ফলন দেয়। বছরে তিন মৌসুমে চাষ করা যায়। ফলে বাজারে চাহিদা মেটাতে কৃষকেরা হাইব্রিডের দিকেই ঝুঁকেছেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসিরুল আলমও স্বীকার করেন, "হাইব্রিডের ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকেরা এতে আগ্রহী। তবে আমরা আদি জাতগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছি।"
আদি ধান সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে গিলাবাড়ী আদর্শ স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান ই হাবিব মনে করেন, কৃষকদের নিজস্ব বীজ সংরক্ষণের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে হবে, যা তাদের বাণিজ্যিক বীজ কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে । পাশাপাশি আদি ধানের গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে এর চাহিদা বাড়বে এবং তা চাষাবাদের জন্য একটি নতুন অর্থনৈতিক ক্ষেত্র তৈরি হবে ।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক মনোতোষ কুমার দে এই পরিস্থিতিকে জীববৈচিত্র্য ও স্বনির্ভরতার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, "একটি টেকসই কৃষি ব্যবস্থা তখনই সম্ভব, যখন ফলনের পাশাপাশি মাটির স্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্য এবং কৃষকের স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করা যাবে।"
মানব কল্যাণ পরিষদের প্রকল্প সমন্বয়কারী রাশেদুল আলম জানান, বর্তমানে জেলার কিছু আদি জাতের বীজ সংরক্ষণাগারে রাখা আছে। তিনি বলেন, "সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই বীজগুলো মাঠে ফেরানো সম্ভব নয়। এর জন্য বৃহত্তর উদ্যোগ দরকার।"
একসময় হেমন্তের বাতাসে ভেসে আসত নতুন ধানের মিষ্টি ঘ্রাণ, মাঠভরা সোনালি ধান যেন ছিল উৎসবের প্রতিচ্ছবি। ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামীণ জীবন এই ঐতিহ্যবাহী ধানকে ঘিরেই ছিল প্রাণবন্ত। তবে সেই চিত্র এখন পাল্টে গেছে। জেলার ফসলের মাঠে এখন শুধু হাইব্রিড ধানের একঘেয়ে সারি—ফলন বাড়লেও পাওয়া যায় না সেই আদি ধানের স্বাদ ও ঘ্রাণ।
ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে একসময় প্রায় ২৭ প্রজাতির আদি ধান চাষ হতো। এই জাতগুলোর নাম ছিল কাব্যিক—যেমন: মাল সারা, মাগুরশাল, সাপাহার, রাজভোগ, কালো নেনিয়া, সাদা নেনিয়া, সিন্দুর কটুয়া, ধোরা ভাদুই, কাশিয়া বিন্নি ও কল মিতা। প্রতিটি ধানের ছিল নিজস্ব রং, গন্ধ এবং গুণাগুণ। কোনোটি পিঠাপুলি তৈরির জন্য, আবার কোনোটি নরম বা ঝরঝরে ভাতের জন্য বিশেষ উপযুক্ত ছিল।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, আগে বছরে দুই মৌসুমে এই ধান চাষ হতো। আশ্বিন-কার্তিক মাসে যখন নতুন ধান ঘরে উঠত, তখন শুরু হতো পিঠাপুলি তৈরির ধুম ও উৎসবের আমেজ। কিন্তু হাইব্রিড ধানের আগ্রাসনে দ্রুতই আদি জাতগুলো মাঠ থেকে বিলীন হয়ে গেছে।
হরিপুর উপজেলার কৃষক আমিনুল হক বলেন, "আগের ধানের ভাতে মিষ্টি ঘ্রাণ লেগে থাকত। এখনকার ভাতে সেই স্বাদ নেই।" নারী কৃষক রোকেয়া আক্তার যোগ করেন, "নতুন ধান পেট ভরায়, কিন্তু মন ভরে না। সেই ধানগুলো ছিল আমাদের সংস্কৃতি।" প্রবীণ কৃষক শহিদুল ইসলাম আফসোস করে বলেন, "এসব ধান ছিল আমাদের জীবনের সঙ্গী। এখন কেবল সংরক্ষণাগারের বীজ মনে করিয়ে দেয় অতীত।"
কৃষিবিদরা বলছেন, আদি জাতের ধানগুলো প্রাকৃতিক বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল ছিল। উৎপাদন তুলনামূলকভাবে কম হলেও স্বাদ ও গুণে ছিল অতুলনীয়। অপরদিকে হাইব্রিড ধান কম সময়ে বেশি ফলন দেয়। বছরে তিন মৌসুমে চাষ করা যায়। ফলে বাজারে চাহিদা মেটাতে কৃষকেরা হাইব্রিডের দিকেই ঝুঁকেছেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসিরুল আলমও স্বীকার করেন, "হাইব্রিডের ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকেরা এতে আগ্রহী। তবে আমরা আদি জাতগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছি।"
আদি ধান সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে গিলাবাড়ী আদর্শ স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান ই হাবিব মনে করেন, কৃষকদের নিজস্ব বীজ সংরক্ষণের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে হবে, যা তাদের বাণিজ্যিক বীজ কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমাবে । পাশাপাশি আদি ধানের গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা গেলে এর চাহিদা বাড়বে এবং তা চাষাবাদের জন্য একটি নতুন অর্থনৈতিক ক্ষেত্র তৈরি হবে ।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক মনোতোষ কুমার দে এই পরিস্থিতিকে জীববৈচিত্র্য ও স্বনির্ভরতার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, "একটি টেকসই কৃষি ব্যবস্থা তখনই সম্ভব, যখন ফলনের পাশাপাশি মাটির স্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্য এবং কৃষকের স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করা যাবে।"
মানব কল্যাণ পরিষদের প্রকল্প সমন্বয়কারী রাশেদুল আলম জানান, বর্তমানে জেলার কিছু আদি জাতের বীজ সংরক্ষণাগারে রাখা আছে। তিনি বলেন, "সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এই বীজগুলো মাঠে ফেরানো সম্ভব নয়। এর জন্য বৃহত্তর উদ্যোগ দরকার।"
চাকরি দেওয়ার নাম করে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর জোনের সহকারী প্রকৌশলী (সওকা) শাওন মালাকারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. শরিফুল হক বিএডিসি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করার পর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেপটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কালাইয়া বাণিজ্যিক বন্দরের আলী আকবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে এই দুর্ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী এনায়েত হোসেনের একটি মুদি মনোহরি দোকান সম্পূর্ণরূপে ভস্মীভূত হয়েছে। একই সঙ্গে
২ ঘণ্টা আগেপর্যটন শহর কক্সবাজারের নাজিরারটেক থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার সমুদ্রসৈকতকে ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে সরকার। এ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, সৈকতের জোয়ার-ভাটার স্থান থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত যেকোনো স্থাপনা নির্মাণ ও উন্নয়ন নিষিদ্ধ।
৬ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভিডিও। এতে দেখা যায়, সাধুর মতো দেখতে এক বৃদ্ধকে জোর করে ধরে চুল কেটে দিচ্ছেন তিন ব্যক্তি। সাধু মানুষটি প্রাণপণ চেষ্টা করেও নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হন।
৬ ঘণ্টা আগে