Ajker Patrika

জেলা কমিটির বিরুদ্ধে বালিয়াডাঙ্গী বিএনপির হরতাল, আধা বেলা পর প্রত্যাহার

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
বালিয়াডাঙ্গীতে বিএনপির হরতাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
বালিয়াডাঙ্গীতে বিএনপির হরতাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন স্থগিতকে কেন্দ্র করে ডাকা হরতাল আধা বেলা পালনের পর দুপুরে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার ভোর থেকে চলা হরতাল দুপুর ১২টায় প্রত্যাহার করা হয়। উপজেলার দুওসুও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী আবু বকর সিদ্দিক সবার পক্ষ থেকে দুপুরে হরতাল প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

আজ সকাল থেকে জেলা বিএনপির সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে ডাকা হরতালে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। ভোরে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তার চারটি রাস্তায় বাঁশ-বেঞ্চ দিয়ে বন্ধ করে ঠাকুরগাঁও শহর থেকে উপজেলার প্রবেশপথ কালমেঘ বাজারে গাছ ফেলে হরতাল কর্মসূচি পালন করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তাতে সড়কে চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ভোগান্তিতে পড়ে পথচারীরা।

নিজেদের মধ্যে কোন্দলকে কেন্দ্র করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির ডাকা হরতালে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলায় আন্তপরিবহন মিনিবাস, থ্রি-হুইলার (পাগলু), ইজিবাইক চলাচল বন্ধ ছিল।

ছেলেকে নিয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন আমজানখোর ইউনিয়নের সাইফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী। রাস্তা বন্ধ থাকায় অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে ফেরত গেছেন বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালে। ফিরে যাওয়ার সময় সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে কোন্দল, হরতাল ডেকে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে। আমরা হরতাল-অবরোধ করে সাধারণ মানুষকে হয়রানিতে ফেলবে এমন রাজনীতি চাই না।’

ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ভানোর ইউনিয়নের রকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, কালমেঘ বাজার থেকে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তা প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে আসতে হলো। হরতালের যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ফিরে গেছে নৈশকোচ।

স্টার মডেল স্কুলের পরিচালক রেজাউল ইসলাম বলেন, সকালে স্কুলবাসে শিক্ষার্থীরা আসতে পারেনি। বাইপাস সড়ক দিয়ে কোনোমতে নিয়ে আসতে হয়েছে। শিক্ষার্থীরা অনেকেই ভয় পেয়েছে। হঠাৎ হরতালের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাঁকে।

হরতালের কারণ হিসেবে উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, আজ শনিবার সকালে কালমেঘ আর আলী অ্যান্ড কলেজে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দুওসুও ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনের জন্য ভোটগ্রহণের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের কথা ছিল। গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ইউনিয়ন সম্মেলন স্থগিত করে জেলা বিএনপি। জেলা যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি উপজেলায় পৌঁছালে ওই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে রাতেই বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় প্রতিবাদ মিছিল করেন দলের নেতা-কর্মীরা। রাতের মিছিলে আজ ভোর থেকে ২৪ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেয় ইউনিয়ন বিএনপির সংক্ষুব্ধ প্রার্থীরা।

বালিয়াডাঙ্গীতে বিএনপির হরতাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
বালিয়াডাঙ্গীতে বিএনপির হরতাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ড. টি এম মাহবুবর রহমান বলেন, ‘সম্মেলন স্থগিত করার ঘোষণা আসার পর প্রার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। গতকাল শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ মিছিলের পর হরতালের ডাক দেওয়া হয়। আমরা চেষ্টা করেছি আটকানোর। কিন্তু বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরা মানেননি। একাধিকবার সম্মেলন স্থগিত হওয়ায় এমনটা হয়েছে।’

দুওসুও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে প্রায় এক মাস ধরে প্রচারণা, পোস্টার ছাপানো, ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাওয়া শেষ করেছে প্রার্থীরা। আজ ভোটগ্রহণ হলেই জাঁকজমকভাবে সম্মেলনের আয়োজন হতো। সকালবেলা ভোটগ্রহণ, আগের রাতে স্থগিত এটা কেউ মানতে পারেনি। তা ছাড়া উপজেলা বিএনপির সঙ্গেও সমন্বয় করেননি জেলা বিএনপির নেতারা।

গত ২২ জানুয়ারি দুওসুওসহ চারটি ইউনিয়নে সম্মেলনের তফসিল ঘোষণা করেছিলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মকবুল হোসেন। তিনি শনিবার দুপুরে বলেন, হরতালের বিষয়টি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নজরে এসেছে। তিনি হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করার নির্দেশনা দিয়েছেন। মহাসচিবের নির্দেশনা শোনার পর সবাই হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাগরে বিকল ট্রলার নিয়ে ভাসছিলেন ১৩ জেলে, উদ্ধার করল নৌবাহিনী

কক্সবাজার প্রতিনিধি
উদ্ধার করা ১৩ জেলে। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার করা ১৩ জেলে। ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলে বিকল হয়ে ভাসতে থাকা একটি ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী। আজ রোববার সকালে নৌবাহিনীর এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল শনিবার বিকেলে বঙ্গোপসাগরে টহলের সময় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা শহীদ মহিবুল্লাহ’ একটি মাছ ধরার ট্রলার ভাসতে দেখে উদ্ধারে নামে। কুতুবদিয়া দ্বীপের লাইট হাউস থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরে গভীর সমুদ্রে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়। ট্রলারে থাকা জেলেরা নৌবাহিনীর জাহাজ দেখতে পেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আলো ও হাত দিয়ে সংকেত প্রদর্শন করেন। এ সময় নৌবাহিনীর জাহাজটি সংকেত দেখে বিপদগ্রস্ত জেলে ও ট্রলারের কাছে ছুটে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে নৌবাহিনীর সদস্যরা ট্রলারসহ জেলেদের উদ্ধার করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উদ্ধারের পরপরই জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি দেওয়া হয়। পরে জেলেদের ও ট্রলারটি নিরাপদে তীরে এনে পরিবার ও মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জেলেরা জানিয়েছেন, ৬ নভেম্বর থেকে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে মাঝসমুদ্রে ভাসতে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাটোরে পদ্মার চরে বিশেষ অভিযানে আটক ২০, বিপুল দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

নাটোর প্রতিনিধি 
আটক ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চল—চর জাজিরা, চর লালপুর এবং চর দিয়ার বাহাদুরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

শনিবার দিবাগত রাত থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ, র‍্যাব, ডিবি এবং এপিবিএনের চার শতাধিক সদস্য যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেন।

আটক ২০ জনের মধ্যে দুজন হ্যাকার, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং ছয়টি ওয়ারেন্টের আসামি রয়েছেন। এ ছাড়াও আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হত্যা মামলার আসামি এবং দুজন চিহ্নিত মাদক কারবারি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানান, চর দিয়ার বাহাদুরপুরের বালুমহালের ছাউনি থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র (দেশীয় তৈরি ওয়ান-শুটারগান ও একটি রিভলবার) উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়াও উদ্ধার হওয়া দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ছয়টি বড় ড্যাগার, ২২টি হাঁসুয়া, চারটি চাকু ও ছোরা, দুটি চাপাতি।

উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

অভিযানস্থল থেকে একটি টিউবওয়েল এবং অনেকগুলো বালু বিক্রির রসিদ জব্দ করা হয়।

নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, লালপুর উপজেলার চরাঞ্চলে এবং পদ্মা নদীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশের এই বিশেষ অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎বিআরটি প্রকল্পের সেতুর নিচে যুবকের মরদেহ

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের টঙ্গীতে উড়ালসেতুর নিচে অজ্ঞাতনামা (৩০) এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ‎রোববার সকাল ৯টার দিকে বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালসেতুর টঙ্গী স্টেশন রোড অংশের নিচে মরদেহটির সন্ধান মেলে।

‎থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন।

‎স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রোববার সকালে স্থানীয় লোকজন বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসেতুর ৬৮ নম্বর পিলারের পাশে ওই যুবকের মরদেহটি দেখতে পায়। পুলিশকে খবর পাঠালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এই যুবককে দুর্বৃত্তরা অন্য কোথাও হত্যা করে মরদেহটি সেতুর নিচে ফেলে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

‎টঙ্গী পশ্চিম থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদের ভাষ্য, যুবকের পরিচয় শনাক্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যদের খবর পাঠানো হয়েছে। আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ভিডিও দেখিয়ে ‘ঘর পোড়ানোর’ মামলা; প্রতিবাদে মানববন্ধন

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
মিথ্যা মামলা থেকে আসামিকে অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিথ্যা মামলা থেকে আসামিকে অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে আগুন লাগার কোনো চিহ্ন না থাকা সত্ত্বেও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ‘ঘর পোড়ানোর’ মিথ্যা মামলা দায়ের করার অভিযোগ উঠেছে। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে অন্য স্থানের আগুনের চিত্র দেখিয়ে এই মামলা করা হয় বলে দাবি করছেন এলাকাবাসী। মিথ্যা মামলায় আসামি হওয়ায় বিপাকে পড়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিনের পরিবার। এই মিথ্যা মামলা থেকে প্রতিবেশীকে বাঁচাতে শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জানা যায়, গত ১১ আগস্ট নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে ঘর পোড়ানোর অভিযোগ এনে একটি মামলা করা হয় হাতিয়া ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মজিবুল হকের স্ত্রী শিরীন আকতার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিনসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা কাজী ইমরান হোসেন ঘটনাস্থলে না গিয়ে শুধু বাদীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাটি সত্য বলে প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। শনিবার বিকেলে দুই শতাধিক লোক নিঝুম দ্বীপ হরিণ বাজারে মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে বাজারের ব্যবসায়ী, মসজিদের ইমাম, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন।

বক্তারা দৃঢ়ভাবে বলেন, বাজারের পাশে বাদীর বাড়ি এবং এই ঘরটি বাজার থেকে দেখা যায়। এই ঘরে আগুন দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। ব্যবসায়ী বেলালের সঙ্গে বাদীর জমি নিয়ে পুরোনো বিরোধ রয়েছে। সে কারণে অন্য জায়গার ছবি দেখিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।

তাঁরা মামলার পূর্ণ তদন্ত এবং ব্যবসায়ী বেলালসহ সব আসামির অব্যাহতি দাবি করেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী শিরীন আক্তার জানান, ছয় মাস আগে রাতে তাঁদের ঘরের দক্ষিণ পাশের রান্নাঘরের বেড়ায় আগুন লেগেছিল। প্রতিবেশীরা এসে তা নিভিয়ে ফেলায় তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে কে আগুন লাগিয়েছে তা তিনি দেখেননি। পরে কেন তিনি আগুনে ঘর পোড়ানোর মামলা দিলেন, সেই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লাকী আকতার নিশ্চিত করেছেন, ঘর পোড়ানোর মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়ে করা হয়েছে এবং এখানে আগুন লাগার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

লাকী আকতার আরও জানান, ব্যবসায়ী বেলাল উদ্দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে নুরবানু থেকে জমিটি ১৪ লাখ টাকায় ক্রয় করেন। এরপর নুরবানুর ছেলে আরও ৮ লাখ টাকা নিয়েও ব্যবসায়ীকে হয়রানি করে আসছেন এবং এ পর্যন্ত চারটি মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। এই বিরোধ নিয়ে একাধিকবার সালিস বৈঠক হলেও নুরবানুর ছেলে উপস্থিত হননি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কাজী ইমরান হোসেন বলেন, ‘মামলার বাদী ঘরে আগুন দেওয়ার ভিডিও ও ছবি এনে দিয়েছেন। তাতে আমার কাছে ঘটনাটি সত্য বলে মনে হয়েছে। সে মোতাবেক আমি প্রতিবেদন দিয়েছি। আমার সঙ্গে আসামিরা দেখা করেছে। তারা ঘটনাটি সত্য নয় বলে জানিয়েছে। আমি তাদেরকে পুনঃ তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করতে বলেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত