Ajker Patrika

আদালত চত্বরে বাদীকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
আদালত চত্বরে বাদীকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন

সুনামগঞ্জ আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড ও চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খায়রুল কবির রোমেন। তিনি বলেন, ‘মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি।’ 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফয়েজ আহমেদ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার গলাখাল গ্রামের মৃত মহিবুর রহমানের ছেলে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন—একই গ্রামের সাজিদ মিয়া, সেবুল মিয়া, এহসানুল করিম, ইসরাইল আলী মারজান। 

রায় ঘোষণার সময় ফয়েজ আহমেদ ও সেবুল মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজিদ মিয়া জামিন পেয়ে পলাতক রয়েছেন এবং এহসানুল করিম, ইসরাইল আলী মারজান হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। 

মামলা ও ঘটনা সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলি ইউনিয়নের গলাখাল গ্রামের মিজানুর রহমান খোকন মিয়াকে হত্যা করা হয়। ২০২২ সালের ২১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) নিহত খোকনের একটি ননজিআর মামলার হাজিরা দিতে যান ফয়েজ আহমেদসহ দণ্ডপ্রাপ্তরা। মামলায় জামিন পেয়ে আইনজীবী সমিতির সামনে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ফয়েজের নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একটি সশস্ত্র দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে খোকনের ওপর হামলা করেন তারা। 

এ সময় ফয়েজ আহমেদ তাঁর হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে খোকনের পেটের ডান পাশে উপর্যুপরি আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে খোকন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় তাঁর স্বজনসহ আদালত প্রাঙ্গণে থাকা লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান খোকন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কিশোরকে বাসা থেকে নিয়ে নির্যাতনের পর ফেলে যায় রাস্তায়, হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু

ঢামেক প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীরহাজীরবাগে চোর সন্দেহে নির্যাতনের শিকার কিশোর বাপ্পি (১৫) মারা গেছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে তার মারধর করা হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে গেলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠিয়েছে।

বাপ্পি বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার কদমতলা গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে। তার বাবা রিকশাচালক এবং মা পারুল বেগম একটি কারখানায় কাজ করেন। বাপ্পিও মায়ের সঙ্গে একই কারখানায় কাজ করত। সে ধোলাইপাড় এলাকার প্রেমগলিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত।

বাপ্পির বড় ভাই মো. পারভেজ জানান, গত মঙ্গলবার আনুমানিক দিবাগত রাত ২টার দিকে একই এলাকার কাপশি রাসেল, মোল্লা শুভ এবং শাকিব তাঁদের বাসায় আসে। তারা অভিযোগ করে, বাপ্পি মীরহাজীরবাগের একটি বাসা থেকে জানালা দিয়ে টাকা ও বিদ্যুতের প্রিপেইড কার্ড চুরি করেছে। এরপর তাকে জোর করে ধরে নিয়ে মীরহাজীরবাগের আবু হাজী মসজিদ গলির একটি বাসার নিচতলার ‘ক্লাব ঘরে’ আটকে রাখা হয়।

পারভেজ আরও বলেন, সেখানে বাপ্পিকে রাতভর পেটানো হয়। বুধবার সকাল ৬টার দিকে চুরির টাকা ও মালামাল বের করে দেওয়ার কথা বলে বাপ্পিকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কিছু না পেয়ে তারা আবার বাপ্পিকে নিয়ে যায়। বাপ্পিকে ছাড়াতে তার মা পিছু পিছু গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। সারা দিন নির্যাতনের পর বাপ্পি যখন নিস্তেজ হয়ে পড়ে, তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে তাকে মীরহাজীরবাগের বড়বাড়ি প্রথম গেটের সামনের রাস্তায় ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথেই বাপ্পি মারা যায়।

ঢামেক মর্গে বাপ্পির বাবা মো. শাহজাহান আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘আমার ছেলে যদি কোনো অপরাধ করেও থাকে, তাহলে মারধর করার পর পুলিশের কাছে তুলে দিত। এইভাবে নির্যাতন করে মেরে ফেলল কেন? আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান জুয়েল প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে জানান, চোর সন্দেহে বাপ্পি নামে ওই কিশোরকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এসআই জুয়েল নিশ্চিত করেন, বাপ্পির মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে যার বাসায় চুরির সন্দেহে বাপ্পিকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল, সেই ফৌজিয়া রওশন আক্তার প্রীতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ৫-৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুন্দরগঞ্জে নাশকতার মামলায় প্রধান শিক্ষকসহ গ্রেপ্তার ২

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি 
সুন্দরগঞ্জ থানা। ছবি : সংগৃহীত
সুন্দরগঞ্জ থানা। ছবি : সংগৃহীত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নাশকতার মামলায় স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ (ভারপ্রাপ্ত) দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে থানা-পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হাকিম আজাদ।

গ্রেপ্তার করা প্রধান শিক্ষক হলেন মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন দোলন। তিনি সীচা উচ্চবিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সীচা গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে। গ্রেপ্তার আরেকজন হলেন হরিপুর ইউনিয়নের চরিতাবাড়ী গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে মো. বাদশা মিয়া (৫৫)। তিনি হরিপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

ওসি আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, গতকাল বুধবার রাতে বিভিন্ন এলাকায় আলাদা আলাদা অভিযান চালিয়ে পুলিশ এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাশকতা ঠেকাতে এই অভিযান অব্যাহত আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে পেট্রলবোমা হামলা

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের বাউন্ডারিতে পেট্রলবোমা হামলার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের বাউন্ডারিতে পেট্রলবোমা হামলার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সেরেস্তায় পেট্রলবোমা হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এই নাশকতার ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকটি চেয়ার-টেবিল পুড়ে গেছে। ঘটনার পরপরই টুটপাড়া ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ঘটনস্থল পরিদর্শন করেছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের নিরাপত্তাপ্রহরী ওয়াহিদুর রহমান নান্নু জানান, দলিল লেখকদের সেরেস্তায় আগুন লেগে চেয়ার-টেবিল পুড়ে গেছে। দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন না নেভালে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিল।

এ সময় তিনি হামলায় ব্যবহৃত দুটি বোতল দেখিয়ে বলেন, হামলাকারীরা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের পেছনের গ্রিল দিয়ে ভেতরে পেট্রলবোমা দুটি নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।

খুলনা সদর থানার ওসি তদন্ত আব্দুল হাই জানান, নাশকতার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে সড়কে ছাত্রলীগের আগুন, আটক ১২

নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ডাকা কর্মসূচিকে ঘিরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পরিকল্পনার অভিযোগে নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে পুলিশ। এ সময় আওয়ামী লীগের ৪ নেতাসহ ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে সেনবাগের ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য ইব্রাহিম খলিল (৩৮), কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য শহীদুল ইসলাম (৪৫), আওয়ামী লীগ কর্মী রফিকুজ্জামান মাসুদ রানা (৪৩) ও শোয়েব হোসেন সোহরাবসহ (৩৪) ১২ জন। আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. ইব্রাহিম।

এদিকে কর্মসূচি বাস্তবায়নে বুধবার গভীর রাতে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী টাউন হল মোড়ে সড়কের ওপর আগুন দেন পৌরসভা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান তাঁরা।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের আজকের কর্মসূচির প্রতিবাদে রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সভা ও মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করেছেন বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, জামায়াত, শিবির ও এনসিপির নেতা-কর্মীরা। আওয়ামী লীগের অনলাইনে ডাকা কর্মসূচি প্রতিহত করতে সকলকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান বক্তারা।

এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে যানবাহন ও সন্দেহজনক গতিবিধির লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত