তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থান উলিপুরের। বহু শতাব্দীপ্রাচীন শতবিঘা আয়তনের একটি দিঘির চারপাশে গড়ে ওঠা গ্রামজুড়ে মানুষের ঘরবসতি। দিঘির পশ্চিম পাড়ে সাপ্তাহিক হাটের জায়গা এবং হজরত একদিল শাহ (রহ.)-এর মাজার। এই দিঘিপাড়ে প্রবীণ বটগাছসহ বিভিন্ন গাছে নিরাপদ রাজ্য গড়েছে শত শত এশীয় শামুকখোল পাখি। দিনভর পাখির কলতানে মুখর থাকে দিঘির পাড়সহ পুরো গ্রাম।
পাশের অবারিত চলনবিল থেকে পাখিরা খাদ্য সংগ্রহ করে ফিরে আসে দিঘির পাড়ে বটগাছসহ বিভিন্ন গাছে। মেতে ওঠে নানা খুনসুটিতে। শামুকখোল পাখির আবাসস্থল দেখতে উলিপুর গ্রামে প্রতিদিনই পর্যটকেরা ভিড় করেন। তবে গ্রামবাসী এই পাখিদের রক্ষায় ভীষণ তৎপর। পাখি শিকারি বা পর্যটকেরা যাতে শামুকখোলকে বিরক্ত না করে, তার জন্য তারা রীতিমতো পাহারা বসানোসহ নিয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাছজুড়ে শামুকখোল পাখির ঝাঁক। কিছু পাখি বটগাছের কচি পাতায় ঠোকর দিচ্ছে, আবার কিছু পাখি বাচ্চাদের আগলে রেখেছে। কোনো পাখি এক ডাল থেকে আরেক ডালে চলাচল করছে নিরাপদে, আবার কোনো পাখি করছে খুনসুটি। অনেক পাখিকে গাছের আগায় চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়, যেন ক্ষণিক সময়ে জগৎসংসারের ভাবনায় ডুবে গেছে এরা। মানুষের সাড়া পেলে ঝাঁক বেঁধে উড়াল দিয়ে অন্য ডালে গিয়ে বসছে।
উলিপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক পুলিশ সদস্য ও হযরত একদিল শাহ্ (রহ.)-এর মাজারের খাদেম মো. শমশের আলী বলেন, ‘প্রায় এক যুগ আগে শামুকখোল পাখিরা এখানে এসে বটগাছসহ অন্যান্য গাছে বাসা বাঁধে। এরপর প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে বাচ্চা তোলায় সংখ্যাও বাড়তে থাকে। স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকায় গ্রামবাসীও সিদ্ধান্ত নেয়, কেউ যেন পাখিদের বিরক্ত না করে। এ কারণে দর্শনার্থীরা এলে তাদের দেখে পাখিরা ভয় পায় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়।’ গ্রামের আরেক বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন, ‘গাছপালা ঘেরা দিঘির পাড়ে শামুকখোল পাখির আগমনে দিঘির সৌন্দর্য আরও ফুটে উঠেছে। দিঘিজুড়ে হাজার হাজার পাখির এ যেন এক মিলনমেলা।’
প্রতিদিন ভোররাতে ঝাঁক বেঁধে পাখিগুলো দিঘিতে নামে, আবার সন্ধ্যা নামলে নান্দনিক কসরতে ডানা মেলে আকাশে ওড়াউড়ি করে। পাখির কিচিরমিচির শব্দে ও জলকেলিতে পুরো এলাকা এখন মুখর হয়ে থাকে। পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে গ্রামের মানুষের। স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে সবাই মিলে পাখিদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন। পাখিদের বিশ্রামের জন্য বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে গড়ে তুলেছেন অভয়াশ্রম। মাঝেমধ্যে দেওয়া হচ্ছে খাবারও।
পাখিদের এই নয়নাভিরাম মিলনমেলা দেখতে প্রতিদিনই লোকজন এই গ্রামে আসে। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোও শামুকখোল পাখিদের এই নিরাপদ আবাসস্থলকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
পরিবেশবাদী সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’-এর পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক নাসিম বলেন, ‘শামুকখোলের দুটি প্রজাতির মধ্যে একটি এশীয়, আরেকটি আফ্রিকান। উলিপুর গ্রামে শামুকখোল পাখিগুলো মূলত এশীয় প্রজাতির। বন্য প্রাণী আইনে এশীয় শামুকখোল সংরক্ষিত তালিকায় রয়েছে।’
এশীয় শামুকখোল পাখির গায়ের রং ধূসরসাদা। লম্বা ঠোঁট ও ঠ্যাঙের কারণে অনেক দূর থেকে এরা মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়। এরা সাধারণত ঝাঁক বেঁধে চলাচল করে। মাছ, কাঁকড়া, ব্যাঙ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী পাখিটির প্রধান খাদ্য। অনেকেই একে অতিথি পাখি হিসেবে ভুল করে থাকেন। এটি মূলত বাংলাদেশের নিজস্ব আবাসিক পাখি। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও ভুটানেও এদের দেখা যায়। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। তবে এখনো আশঙ্কাজনক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায়নি। এশীয় শামুকখোল এক প্রজাতির, অর্থাৎ এর কোনো উপপ্রজাতি নেই। উপযুক্ত আবহাওয়া, পরিমিত খাবারের জোগান আর নিরাপত্তা থাকলে এরা সাধারণত কোনো এক জায়গা থেকে নড়ে না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, উলিপুর দিঘিসহ একাধিক স্থানে পাখির অভয়াশ্রমের খবর শুনেছেন। পাখিদের নিরাপত্তাসহ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থান উলিপুরের। বহু শতাব্দীপ্রাচীন শতবিঘা আয়তনের একটি দিঘির চারপাশে গড়ে ওঠা গ্রামজুড়ে মানুষের ঘরবসতি। দিঘির পশ্চিম পাড়ে সাপ্তাহিক হাটের জায়গা এবং হজরত একদিল শাহ (রহ.)-এর মাজার। এই দিঘিপাড়ে প্রবীণ বটগাছসহ বিভিন্ন গাছে নিরাপদ রাজ্য গড়েছে শত শত এশীয় শামুকখোল পাখি। দিনভর পাখির কলতানে মুখর থাকে দিঘির পাড়সহ পুরো গ্রাম।
পাশের অবারিত চলনবিল থেকে পাখিরা খাদ্য সংগ্রহ করে ফিরে আসে দিঘির পাড়ে বটগাছসহ বিভিন্ন গাছে। মেতে ওঠে নানা খুনসুটিতে। শামুকখোল পাখির আবাসস্থল দেখতে উলিপুর গ্রামে প্রতিদিনই পর্যটকেরা ভিড় করেন। তবে গ্রামবাসী এই পাখিদের রক্ষায় ভীষণ তৎপর। পাখি শিকারি বা পর্যটকেরা যাতে শামুকখোলকে বিরক্ত না করে, তার জন্য তারা রীতিমতো পাহারা বসানোসহ নিয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাছজুড়ে শামুকখোল পাখির ঝাঁক। কিছু পাখি বটগাছের কচি পাতায় ঠোকর দিচ্ছে, আবার কিছু পাখি বাচ্চাদের আগলে রেখেছে। কোনো পাখি এক ডাল থেকে আরেক ডালে চলাচল করছে নিরাপদে, আবার কোনো পাখি করছে খুনসুটি। অনেক পাখিকে গাছের আগায় চুপচাপ বসে থাকতে দেখা যায়, যেন ক্ষণিক সময়ে জগৎসংসারের ভাবনায় ডুবে গেছে এরা। মানুষের সাড়া পেলে ঝাঁক বেঁধে উড়াল দিয়ে অন্য ডালে গিয়ে বসছে।
উলিপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক পুলিশ সদস্য ও হযরত একদিল শাহ্ (রহ.)-এর মাজারের খাদেম মো. শমশের আলী বলেন, ‘প্রায় এক যুগ আগে শামুকখোল পাখিরা এখানে এসে বটগাছসহ অন্যান্য গাছে বাসা বাঁধে। এরপর প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে বাচ্চা তোলায় সংখ্যাও বাড়তে থাকে। স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকায় গ্রামবাসীও সিদ্ধান্ত নেয়, কেউ যেন পাখিদের বিরক্ত না করে। এ কারণে দর্শনার্থীরা এলে তাদের দেখে পাখিরা ভয় পায় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হয়।’ গ্রামের আরেক বাসিন্দা আব্দুল খালেক বলেন, ‘গাছপালা ঘেরা দিঘির পাড়ে শামুকখোল পাখির আগমনে দিঘির সৌন্দর্য আরও ফুটে উঠেছে। দিঘিজুড়ে হাজার হাজার পাখির এ যেন এক মিলনমেলা।’
প্রতিদিন ভোররাতে ঝাঁক বেঁধে পাখিগুলো দিঘিতে নামে, আবার সন্ধ্যা নামলে নান্দনিক কসরতে ডানা মেলে আকাশে ওড়াউড়ি করে। পাখির কিচিরমিচির শব্দে ও জলকেলিতে পুরো এলাকা এখন মুখর হয়ে থাকে। পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে গ্রামের মানুষের। স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে সবাই মিলে পাখিদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন। পাখিদের বিশ্রামের জন্য বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে গড়ে তুলেছেন অভয়াশ্রম। মাঝেমধ্যে দেওয়া হচ্ছে খাবারও।
পাখিদের এই নয়নাভিরাম মিলনমেলা দেখতে প্রতিদিনই লোকজন এই গ্রামে আসে। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোও শামুকখোল পাখিদের এই নিরাপদ আবাসস্থলকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
পরিবেশবাদী সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’-এর পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক নাসিম বলেন, ‘শামুকখোলের দুটি প্রজাতির মধ্যে একটি এশীয়, আরেকটি আফ্রিকান। উলিপুর গ্রামে শামুকখোল পাখিগুলো মূলত এশীয় প্রজাতির। বন্য প্রাণী আইনে এশীয় শামুকখোল সংরক্ষিত তালিকায় রয়েছে।’
এশীয় শামুকখোল পাখির গায়ের রং ধূসরসাদা। লম্বা ঠোঁট ও ঠ্যাঙের কারণে অনেক দূর থেকে এরা মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়। এরা সাধারণত ঝাঁক বেঁধে চলাচল করে। মাছ, কাঁকড়া, ব্যাঙ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী পাখিটির প্রধান খাদ্য। অনেকেই একে অতিথি পাখি হিসেবে ভুল করে থাকেন। এটি মূলত বাংলাদেশের নিজস্ব আবাসিক পাখি। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও ভুটানেও এদের দেখা যায়। বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। তবে এখনো আশঙ্কাজনক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায়নি। এশীয় শামুকখোল এক প্রজাতির, অর্থাৎ এর কোনো উপপ্রজাতি নেই। উপযুক্ত আবহাওয়া, পরিমিত খাবারের জোগান আর নিরাপত্তা থাকলে এরা সাধারণত কোনো এক জায়গা থেকে নড়ে না।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, উলিপুর দিঘিসহ একাধিক স্থানে পাখির অভয়াশ্রমের খবর শুনেছেন। পাখিদের নিরাপত্তাসহ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।
যশোরের মনিরামপুরে শংকর মন্ডল (৫৫) নামে হত্যা মামলার এক আসামি হারপিক পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। খবর পেয়ে মনিরামপুর থানা পুলিশ আজ শনিবার ভোরে নিজ বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
১ মিনিট আগেবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ শাখার আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে রাফিউল ইসলাম সাকিবকে সভাপতি এবং মোক্তাদির আল বিরুনীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
৩৪ মিনিট আগেখাগড়াছড়িতে চলমান অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে জুম্ম ছাত্র জনতা। আজ শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে সংগঠনটির মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক প্রেস বিবৃতিতে একথা জানানো হয়। এছাড়া আজ সকালে অবরোধ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন খাগড়াছড়ি সদর থানার...
১ ঘণ্টা আগেনোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় আরমান হোসেন বিজয় (১৯) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার রাতে একলাশপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইসমাইল মেম্বারের বাড়িসংলগ্ন নতুন ব্রিজের পাশে এই ঘটনা ঘটে...
২ ঘণ্টা আগে