Ajker Patrika

গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল রংপুর

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুর টাউন হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুর টাউন হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা ও বর্বরতার প্রতিবাদে রংপুরে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি আওতায় ক্লাস, পরীক্ষা বর্জন করে রাজপথে নেমে বিক্ষোভ করছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। বিক্ষোভে ইসরায়েলি পণ্য বয়কট ও গাজায় দ্রুত গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। এ সময় সারা বিশ্বের মুসলিমদের এক হওয়ার আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।

আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রংপুর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী রংপুর টাউন হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা ১টায় রংপুর পায়রা চত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফিলিস্তিন স্বাধীন ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন’, ‘ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘নেতানিয়াহুর দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘ইসরায়েলের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, যেসব দেশ এমন গণহত্যা দেখে নিশ্চুপ, তাদেরও বয়কট করতে হবে। পাশাপাশি মুসলিম দেশগুলো কাপুরুষতার পরিচয় দিচ্ছে, যার জন্যই সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। মুসলিম দেশগুলোকে এক কাতারে এসে এই গণহত্যার প্রতিবাদ করতে হবে। এ সময় বাংলাদেশ সরকারকে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।

এদিকে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিশ্বব্যাপী ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা ‘নো ওয়ার্ক’ কর্মসূচি এবং শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছেন। সকাল সাড়ে ১০টায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাসে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্বাধীনতা চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘স্টপ কিলিং ইন গাজা’সহ নানা স্লোগান দেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সকলেই অংশগ্রহণ করেন।

বক্তারা বলেন, দ্রুত ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করা হোক। আর যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তাঁরা। এরপর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকত আলী বলেন, ‘গাজায় যে মানবতাবিরোধী বর্বর হত্যাকাণ্ড হচ্ছে, সারা বিশ্বের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর বিরুদ্ধে। ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বানে বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমরাও মানবতাবিরোধী অপরাধের ইসরায়েলিদের শাস্তির জন্য দাঁড়িয়েছি। গাজা একা না আমরাও তাদের সঙ্গে আছি।’

জাতিসংঘকে উদ্দেশ্য করে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘকে একটি বার্তা দিতে চাই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে, গাজার মানুষ যেন মুক্তি পায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তাদের যেন দৃষ্টান্ত শাস্তি দেওয়া হয়। গাজা যে অবস্থায় ছিল, সে অবস্থায় যেন ফিরে আসে। সেই ব্যবস্থা করার জন্য ছাত্র-শিক্ষক কর্মচারী-কর্মকর্তারা সবাই একত্রিত হয়ে গণহত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেলা ২টা ৩০ মিনিটে নগরীর কেরামতিয়া মসজিদে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও বিকেল সাড়ে ৪টায় রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা লালবাগ এলাকা থেকে একই কর্মসূচিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করবেন। এ ছাড়া জেলার প্রত্যেকটি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় দিনব্যাপী ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত