Ajker Patrika

১০ কেজি চালের বিপরীতে সুবিধাভোগীদের ১৬৬ টাকা দেন চেয়ারম্যান 

কুড়িগ্রাম ও ফুলবাড়ী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২২, ১৭: ৫৮
১০ কেজি চালের বিপরীতে সুবিধাভোগীদের ১৬৬ টাকা দেন চেয়ারম্যান 

চাল নেই অজুহাত তুলে ঈদ উপলক্ষে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) প্রকল্পের জন প্রতি ১০ কেজি চালের বিপরীতে সুবিধাভোগীদের ১৬৬ টাকা করে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসেন আলীর বিরুদ্ধে উঠেছে এই অভিযোগ। 

ভুক্তভোগীরা বলছেন, তারা স্লিপ নিয়ে পরিষদ চত্বরে আসার পর প্রতি তিনজনের কাছে স্লিপ নিয়ে এর বিপরীতে ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে প্রতি জনের স্লিপের বিপরীতে ১৬৬ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এরপর তাঁদের স্লিপ ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। 

স্লিপ নিয়ে পরিষদ চত্বরে চাল নিতে আসা নাওডাঙা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ভিজিএফ কার্ড সুবিধাভোগী সংকর কুমার বলেন, ‘তিনটা করি স্লিপ নিয়া ছিড়ি ফেলাইছে। টাকা দিছে ৫০০। তিনখান স্লিপ মিলি ৫০০ টেকা। হামরা গরিব মানুষ হামরা চাউল চাই।’ 

এ সময় উপস্থিত ভুক্তভোগীরা চেয়ারম্যানের দেওয়া ৫০০ টাকার নোট বের করে দেখান। টাকা নয়, তারা প্রাপ্য চাল দেওয়ার দাবি জানান। 

 ১০ কেজি চাল নিতে এসে স্লিপের বিনিময়ে ১৬৬ টাকা পাওয়া সাহের বানু বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ। হামরা এই টেকা দিয়া কী করমো। হামাক চাউল নিয়া দেও। হামরা চাউল চাই।’ 

একই ভুক্তভোগী আমজাদ আলী বলেন, ‘স্লিপ দিছে। স্লিপ নিয়া আসি দেখি চাউল নাই। এগুলা তামসা বের করছে।’ 

ভিজিএফের চাল নিয়ে এমন অনিয়মের খবরে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এসে ভুক্তভোগীদের নিয়ে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় যুবলীগ নেতা সেলিম মিয়া, সুজন মিয়াসহ কয়েকজন সাবেক ছাত্রনেতা। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান হাসেন আলী পরিষদ ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। 

বিক্ষোভের খবরে ইউনিয়ন পরিষদে যান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সবুজ কুমার গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ চাল না পাওয়ায় তারা পরিষদ চত্বরে অপেক্ষা করছিলেন। চেয়ারম্যান বলেছেন যে চাল ঘাটতি হয়েছে। পরে সুবিধাভোগীদের চাল দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ 

চালের বিপরীতে প্রতি তিনটি স্লিপের বিনিময়ে ৫০০ টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নাওডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসেন আলী বলেন, ‘চাল ঘাটতি হওয়ায় কয়েকজনকে টাকা দেওয়া হয়েছিল। পরে পিআইও সাহেব এসে চাল দেওয়ার কথা বললে টাকা ফেরত নিয়ে চাল দেওয়া হয়েছে।’ 

ঘাটতি হয়ে থাকলে পরে কোথা থেকে চাল দেওয়া হলো, এমন প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান বলেন, ‘পরে স্থানীয় পাইকারদের কাছে চাল কিনে নিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ 

চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ হয়ে থাকলেও ঘাটতির কারণ জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, ‘বণ্টন করার সময় হয়তো কেউ একাধিকবার নিয়ে থাকতে পারে। অনেক চাল তো, একটু ভুল হয়ে থাকতে পারে। পরে সবাইকে চাল দেওয়া হয়েছে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস পিআইওর বরাত দিয়ে বলেন, ‘আমি যত দূর জেনেছি ওই ইউনিয়নে বরাদ্দের শতভাগ চাল বিতরণ হয়েছে।’ 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও স্লিপের বর্ণনা দিলে ইউএনও বলেন, ‘এভাবেই স্লিপ দিয়ে চাল বিতরণ করা হয়। তবে চাল না দিয়ে টাকা দেওয়া হয়ে থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল চালুতে বাধা, রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে এবি ব্যাংক

রাশিয়া খুবই বড় শক্তি, চুক্তি ছাড়া ইউক্রেনের কোনো গতি নেই: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত