Ajker Patrika

চুরি করে পুকুরে মাছ ধরার অভিযোগে যুবককে পাশবিক নির্যাতন 

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
চুরি করে পুকুরে মাছ ধরার অভিযোগে যুবককে পাশবিক নির্যাতন 

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে পুকুরে মাছ ধরার অভিযোগে ফয়জুল ইসলাম (২৪) নামে এক যুবককে আটকে পাশবিক নির্যাতন করেছে বাবা–ছেলের। একই এলাকার আব্দুর রাজ্জাক ও আলিম উদ্দীন ওরফে বৈশাখুর বিরুদ্ধে এ নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার ভোরে আহত যুবককে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার ফয়জুল ইসলাম উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের মফিজ উদ্দীনের ছেলে।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায়, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ফয়জুল ইসলাম। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ২২টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। ফয়জুল কথা বলতে পারছেন না। তাঁর স্বজনেরা চারপাশে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আগামী ১২ ঘণ্টা ফয়জুলকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। অবস্থার উন্নতি না হলে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। 

ভুক্তভোগী ফয়জুলের বাবা মফিজ উদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ছেলে লুকিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিল। তাকে ধরে পুলিশে দেবে, নয়তো আমাকে জানাবে। আমি এর বিচার করতাম। তা না করে বাড়ি থেকে ছেলেটাকে তুলে নিয়ে ধারালো ছুড়ি দিয়ে হাতে, পায়ে, সারা শরীরে কুপিয়েছে। ছেলেটা আমার প্রাণে বেঁচে গেলেও পরবর্তীতে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবে না। আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি বাপ-ছেলের বিচার চাই।’

এ ঘটনার বিষয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চুরির অভিযোগে ফয়জুলের ওপর নির্যাতন করেছে রাজ্জাক ও তাঁর বাবা। আমি খবর পেয়ে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছিল, সময়মতো চিকিৎসা না হলে মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুকুর মালিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবৎ মাছ চুরি হচ্ছে পুকুরে। আজ ভোররাতে ফয়জুলসহ তিনজনে জাল দিয়ে মাছ তুলতে আসলে ফয়জুলকে ধরে ফেলি। অপর দুজন পালিয়ে যায়। আমাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে মারধর দেওয়া হয়েছে। থানায় নিয়ে গেলে ইউপি চেয়ারম্যানকে জমা দিতে বলেছে। পরে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তাঁর যাবতীয় খরচ আমি বহন করব বলে বলেছি।’

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার মাহবুব আলম জানান, ‘ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একটি কান বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে বেশ কিছু সেলাই দেওয়া হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। প্রয়োজনে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হবে।’

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম জানান, হাসপাতালে পুলিশ গিয়ে ঘটনার খোঁজ খবর নিয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত