Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁওয়ে গরুর লাম্পি ভাইরাস, ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
লাম্পি স্কিন রোগ থেকে পশুকে বাঁচাতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়
লাম্পি স্কিন রোগ থেকে পশুকে বাঁচাতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়

ঠাকুরগাঁও জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে গবাদিপশুর ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ (এলএসডি)। জেলার বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে ৩৭টি গরু এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। তবে স্থানীয় খামারিদের দাবি, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।

গরুর শরীরে গুটি ওঠা, জ্বর, ওজন কমে যাওয়া এবং দুধের পরিমাণ কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে ভাইরাসটিতে। ফলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। ইতিমধ্যে কয়েকটি গরুর মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বড় খোঁচাবাড়ি এলাকার খামারি মতিউর রহমান বলেন, ‘আমার দুইটা গরু মারা গেছে। গরিব মানুষ, এগুলোই ছিল একমাত্র অবলম্বন। এখন সব শেষ।’

বেগুনবাড়ী গ্রামের খামারি আবু তালেব জানান, একটা বিদেশি জাতের বাছুর মারা গেছে। পশু হাসপাতালে নিয়েও কোনো লাভ হয়নি। দামি ছিল বাছুরটা।

হাবুসপাড়া, মাঝিপাড়া, নতুনপাড়া ও মালিপাড়ায় তার তত্ত্বাবধানে অন্তত ১৫-১৬টি গরুর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি গরুর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান সদর উপজেলার লাইভস্টক অ্যাসিস্ট্যান্ট মনোরঞ্জন রায়।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রেজওয়ানুর হক বলেন, জেলার ২৪১টি খামারে তদারকি চালানো হয়েছে এবং ৩ হাজার ৮৭৮টি গৃহস্থালি খামারে নজরদারি চলছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে ২০ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গরুর স্বাস্থ্যসেবায় চারটি মেডিকেল ক্যাম্প চালু রয়েছে। সচেতনতা তৈরিতে ২৪টি উঠান বৈঠকেরও আয়োজন করা হয়েছে।

সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান বলেন, ‘খামারিদের বলা হয়েছে আক্রান্ত গরু আলাদা রাখতে, বাসস্থান পরিষ্কার রাখতে এবং নিয়মিত টিকা দিতে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, লাম্পি ভাইরাসে মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে কম হলেও অর্থনৈতিক ক্ষতি বড়। দুধ উৎপাদন ও বাজারমূল্য হ্রাস পাওয়ায় খামারিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন। আগাম প্রতিরোধ, টিকাদান এবং সচেতনতাই হতে পারে এই রোগ মোকাবিলার কার্যকর উপায় বলে মনে করছেন তারা।

প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে তারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত