Ajker Patrika

নালার অজুহাতে ৪০০ টাকার পানি ১৭০০

মাসুদ পারভেজ রুবেল,  ডিমলা (নীলফামারী)
আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ০৮: ২৫
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি এলাকার তিস্তা সেচ প্রকল্পের নালা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি এলাকার তিস্তা সেচ প্রকল্পের নালা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানি ব্যবহারের জন্য কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, সেচনালা সংস্কারের অজুহাত ও সরকার নির্ধারিত সেচমূল্য না জানার অজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় সেচ সমিতি এই বাড়তি টাকা আদায় করছে। এ ছাড়া পানি না পাওয়া ও অসময়ে অতিরিক্ত পানি পাওয়ার অভিযোগ করেছেন প্রকল্প এলাকার অনেক কৃষক।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষের দাবি, কৃষকদের কাছ থেকে কোনো বাড়তি টাকা নেওয়া হয় না। স্থানীয় সমিতির মাধ্যমে কৃষকেরা সেচের পানির টাকা পরিশোধ করেন।

পাউবো সূত্র জানায়, সারা বছর সেচের পানি নিতে প্রতি একর জমির জন্য সরকারি দর ৪০০ টাকা (ভ্যাটসহ ৪৮০) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর সেচ প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ও ভুট্টা চাষ হয়েছে। তিস্তা সেচ প্রকল্প থেকে ৭৬৬ কিলোমিটার দীর্ঘ নালা দিয়ে সেচের পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিস্তা ব্যারাজ থেকে শুরু হয়ে সেচ প্রকল্পের খাল নীলফামারী, রংপুর, বগুড়া ও দিনাজপুর জেলার ১২ উপজেলায় বিস্তৃত। এর দৈর্ঘ্য ৭৬৬ কিলোমিটার।

চাষিদের অভিযোগ, পাউবোর পক্ষ থেকে কোনো প্রচার চালানো হয় না। ফলে সাধারণ কৃষক জানতেই পারেন না সেচের ন্যায্য মূল্য কত। এ সুযোগে সেচ সমিতির নেতারা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে তিন গুণ বেশি টাকা আদায় করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই সেচ প্রকল্পে এমন দুই শতাধিক সমিতি রয়েছে।

প্রকল্পের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সেচ সমিতিগুলো প্রতি একরে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০০০ থেকে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন। বাড়তি টাকা সমিতির নেতা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের মধ্যে ভাগাভাগি হয়। সেচ প্রকল্পের নালা থেকে পানি সরাসরি যাচ্ছে জমিতে। অথচ নালার অজুহাতে তাঁরা এই বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে কৃষকেরা অভিযোগ করেছেন।

ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি এলাকার আব্দুস সালাম, আলাকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, তাঁদের এলাকার সেচ সমিতির দায়িত্বে থাকা লোকজন একরপ্রতি সেচমূল্য নেন ১ হাজার ৭০০ টাকা।

সাতজান গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, এক একর জমিতে পানি নিতে খরচ হচ্ছে ১৬০০ টাকা।

সাতজান এলাকার সেচ সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সমিতির মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগ করে সেচ এলাকার খাল পরিষ্কার ও নজরদারি করা হয়। এ কারণে কৃষকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়া হয়।

তিস্তা সেচ প্রকল্প অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, সেচের টাকা আদায় ও দেখভালের জন্য যাঁরা মাঠপার্যায়ে আদায়কারী হিসেবে কাজ করেন, তাঁরাই অতিরিক্ত টাকাটা নেন। সমিতি শুধু সরকারনির্ধারিত টাকা পায়।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসম্প্রসারণ কর্মকর্তা অমলেশ চন্দ্র রায় বলেন, সেচ দেওয়ার জন্য প্রকল্প এলাকায় অনেকগুলো সমিতি গঠন করা হয়। সমিতির নেতাকে পানি সেচের টাকা পরিশোধ করতে হয়। তাঁরা খাল সংস্কারের জন্য কৃষকদের সঙ্গে পরামর্শ করেই বেশি টাকা নেয়।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ‘কৃষকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়ার তথ্য আমার জানা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত