Ajker Patrika

নীলফামারীর সৈয়দপুর

৩ মেয়াদেও শেষ হয়নি কাজ, ঠিকাদার পলাতক

  • ৩৫ শতাংশ কাজ বাকি রেখেই ঠিকাদার ৬২ শতাংশ বিল তুলে নিয়েছেন
  • গত বছরের আগস্ট থেকে পলাতক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক
রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী) 
আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, ০২: ৩৫
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার পোড়াহাট এলাকায় রাস্তার বর্তমান অবস্থা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার পোড়াহাট এলাকায় রাস্তার বর্তমান অবস্থা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর সৈয়দপুরের পোড়াহাট থেকে রংপুরের তারাগঞ্জ পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও পাকাকরণের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে। শেষ হওয়ার কথা ছিল পরের বছর। তবে যথাসময়ে কাজ শেষ হয়নি। দুই দফায় বাড়ানো হয়েছে মেয়াদ। এরপরও ৩৫ শতাংশ কাজ বাকি রেখেই ঠিকাদার ৬২ শতাংশ বিল তুলে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ গত বছরের এপ্রিল মাসে কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আর খোঁজ মিলছে না ঠিকাদারের। তিনি গা ঢাকা দেওয়ায় নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। এদিকে সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছেন ১০ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।

সৈয়দপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ওই জিসি সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটিতে যান চলাচলের সুবিধা বাড়াতে সংস্কারের জন্য ২০২২ জানুয়ারিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র অনুযায়ী সৈয়দপুরের পোড়াহাট থেকে রংপুরের তারাগঞ্জ পর্যন্ত সংস্কারের জন্য বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ২১ কোটি ৩৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পায় নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হাজী মিজানুর রহমানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স। কাজ শুরু হয় একই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালের ৬ আগস্ট কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে গত বছরের এপ্রিলে শেষ করার কথা থাকলেও বর্তমানে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ১৭ কিলোমিটারের মধ্যে কাজ হয়েছে ১০ কিলোমিটার। এখনো ৩৫ শতাংশ কাজ বাকি। তবে এরই মধ্যে ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির ১০ কিলোমিটার অংশের কাজ শেষ হয়েছে। এখনো ৭ কিলোমিটারের কাজ পড়ে রয়েছে। অনেক স্থানে শুধু ইট বিছিয়ে রাখা হয়েছে। আবার কোথাও খোয়া বিছানো হলেও কার্পেটিং করা হয়নি। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ফেলে রাখার ফলে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ধসে ও ভেঙে গেছে। অনেক জায়গায় ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা বলেন, বৃষ্টি হলে সড়কটিতে এখন পানি জমে এবং শুকনো মৌসুমে ওড়ে ধুলা। অনেক জায়গায় বালু ও খোয়া ফেলে

ভরাট করা হলেও রোলার করা হয়নি। ফলে খোয়ার ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। স্থানীয়রা বলেন, সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ার রাস্তার পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ হয়ে গেছে।

সৈয়দপুর উপজেলার হাজারিহাট গ্রামের বাসিন্দা সুলতান হোসেন বলেন, ‘সাড়ে তিন বছর থাকি ধুলো-কাদা খায়া হামার দিন যায়ছে।

রাস্তার কাম আর শেষ হয়ছে না। রাস্তা খারাপ আছিল; কিন্তু এত খারাপ তো আছিল না।’

একই উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়িনের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হাসান আলী বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই রাস্তার এ অবস্থা। কিন্তু এ সমস্যার কোনো সুরাহা হচ্ছে না। যানবাহনে এ রাস্তায় শিশুদের স্কুলে যেতে কষ্ট হচ্ছে।

সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এম এম আলী রেজা রাজু বলেন, এ পর্যন্ত সড়কটির ৬৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় ওই ঠিকাদারকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরপর দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের এপ্রিলে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যে হঠাৎ করেই কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। যোগাযোগের চেষ্টা করেও খোঁজ মিলছে না ঠিকাদারের।

প্রকৌশলী আরও বলেন, ‘মোবাইল ফোনেও যোগাযোগের চেষ্টা করে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। চুক্তি বাতিল করে আবার দরপত্র দিয়ে কাজটি শেষ করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সেনানিবাস ঘিরে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’, বরখাস্ত সৈনিকসহ গ্রেপ্তার ৩

বাংলাদেশ এড়িয়ে সমুদ্রপথে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্ত করতে নতুন প্রকল্প ভারতের

থাইল্যান্ডে পর্যটন ভিসা পেতে আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে

দক্ষিণপন্থীদের কবজায় বাংলাদেশের রাজনীতি: বদরুদ্দীন উমর

বন্দর-করিডর আপনার এখতিয়ারে নেই, বিদেশি উপদেষ্টাকে বিদায় করুন: ইউনূসকে সালাহউদ্দিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত