Ajker Patrika

ক্লিনিকে জন্মের পর ৫ দিন ধরে উধাও নবজাতক

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
ক্লিনিকে জন্মের পর ৫ দিন ধরে উধাও নবজাতক

জন্মের পরপরই এক নবজাতক ছেলে সন্তান ৫ দিন ধরে গায়েব। কেউ বলছেন চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করা হয়েছে। এভাবে ৫ দিন ধরে সন্তানকে ছাড়াই ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই সন্তানের মা। জেলার বোদা উপজেলার নিরাময় নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানান, মনোয়ারা নামের এক নারীর মাধ্যমে গত ১৩ এপ্রিল (বুধবার) সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। ক্লিনিকে ভর্তির এক ঘণ্টা পর ওই স্কুলছাত্রীর সিজার করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. আনোয়ার আলী ও ডা. উত্তম কুমার পান্ডে সিজার অপারেশন পরিচালনা করেন। সিজারের পর পরই ওই শিশুটিকে চিকিৎসার কথা বলে ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়ে যান মনোয়ারা নামের ওই নারী। এরপর থেকে ওই নবজাতক নিখোঁজ রয়েছে। পরে জানা গেছে ওই শিশুটিকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নীলফামারীর এক নারীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ওই স্কুলছাত্রী তার স্বামীর নাম স্মরন বলে জানালেও ক্লিনিকের কাগজপত্রে তার স্বামীর নাম মো. আমিরুল ইসলাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া বাবা মা জামালপুরে মাদারগঞ্জ এলাকায় থাকলেও তাঁর বাড়ির ঠিকানা লেখা রয়েছে তিতো পাড়া। ক্লিনিকের কাগজপত্রে সাক্ষী হয়েছেন মনোয়ারা নামে এক নারী। ৫ দিন ধরে নবজাতক সন্তান উধাও অথচ এ বিষয়ে কারও কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই বলে জানা গেছে।

নবজাতক উধাও হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে বোদা থানা-পুলিশের একটি দল গতকাল রোববার মধ্যরাতে ক্লিনিকে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ওই স্কুলছাত্রীর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে কি তথ্য পেলেন তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন বোদা থানার উপপরিদর্শক আব্দুল কুদ্দুস। 

ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ওই স্কুলছাত্রী সাংবাদিকদের জানায়, তার অজান্তেই ক্লিনিকে ভর্তির সময় স্বামী ও ঠিকানা ভুল লিখে দেওয়া হয়েছিল। কান্না জড়িত কণ্ঠে ওই স্কুলছাত্রী জানায়, ক্লিনিকে তাঁর পাশে কেউ নেই। চার দিন ধরে সন্তানকে দেখতে পায়নি। দূরসম্পর্কের মনোয়ারা খালা তার সন্তানকে নিয়ে যেতে পারেন বলে জানান তিনি। নবজাতক ছেলে শিশুকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সে। 

এ বিষয়ে ওই ক্লিনিকের মালিক উজ্জল সরকার বলেন, ‘নবজাতকটিকে চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়ে যান ওই কিশোরীর খালা। পরে শুনেছি- যে নবজাতকটিকে বিক্রি করা হয়েছে। আমরা শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি। নবজাতক শিশুটি নীলফামারী জেলায় রয়েছে। ক্লিনিকের এক কর্মচারী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে নীলফামারী গেছেন। শিশুটিকে দ্রুত খুঁজে পাওয়া যাবে এমন আশা করি।’ 

এ নিয়ে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘ক্লিনিক থেকে শিশু উধাও হওয়ার খবর পেয়েছি। সাংবাদিকরাও বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। ক্লিনিকে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ক্লিনিক মালিক ও কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নবজাতক উদ্ধারসহ প্রকৃত কারণ না জানিয়ে কিশোরীকে ছাড়পত্র না দিতে ক্লিনিক মালিককে বলে দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত