Ajker Patrika

রংপুরে কিশোর হত্যার পর মামলার বাদী হয়ে ফেঁসে গেলেন খালু

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ জুন ২০২৪, ১৬: ১৬
রংপুরে কিশোর হত্যার পর মামলার বাদী হয়ে ফেঁসে গেলেন খালু

মোক্তার হোসেনের ইজিবাইক দৈনিক জমায় চালাতেন তাঁর ভায়রার ছেলে মোহাম্মাদ আলী (১৭)। সেই সুবাদে তাঁর মেয়ের সঙ্গে (খালাতো বোন) মোহাম্মাদ আলীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মোক্তার হোসেন বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। পরিকল্পনা করে তাকে সরিয়ে দিয়ে মোহাম্মাদ আলী নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেন। কাছের স্বজনদের রেখে তিনি মামলার বাদী হওয়ায় সন্দেহ হয় পুলিশের। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করলে বেরিয়ে আসে ঘটনার আড়ালের গল্প।

গত রোববার পুলিশ মোহাম্মাদ আলীর লাশ উদ্ধার করলে মোক্তার হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাবও তদন্ত শুরু করে। তাতে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এরপর অভিযান চালিয়ে মোক্তার হোসেনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। গ্রেপ্তারের পর আসামিরা পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মোক্তার হোসেন (৩৯), রেদোয়ান মিয়া (২১) ও ইসলাম মিয়া (২৪)। মোক্তার হোসেন সম্পর্কে মোহাম্মাদ আলীর খালু।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে রংপুরের হাজীরহাট উত্তম বারোঘরিয়া র‍্যাব-১৩ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের উপ-অধিনায়ক মেজর এ এইচ এম ওমর ফারুক।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব জানায়, মিঠাপুকুরের কাফ্রিখাল ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের মোহাম্মাদ আলী ২১ জুন মোক্তার হোসেনের ইজিবাইক নিয়ে বের হন। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিকেল ৪টার দিকে মোহাম্মাদ আলীকে রিজার্ভ ভাড়ার কথা বলে আরেক ইজিবাইকচালক রেদোয়ান মিয়া রংপুর সদরের সদ্যপুষ্করণী ইউনিয়নের কাটাবাড়ি জমিদারপাড়া মাঠে আকমল হোসেনের মরিচ খেতে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে ওত পেতে থাকা মোক্তার হোসেন রড দিয়ে মোহাম্মাদ আলীর মাথায় আঘাত করেন। তাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মোহাম্মাদ আলী। পরে রেদোয়ান তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গোপনাঙ্গ, মুখসহ সারা শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেন। এরপর লাশ সেখানে ফেলে রেখে ইজবাইকের চারটি ব্যাটারি খুলে নিয়ে চলে যান তাঁরা।

র‍্যাব জানায়, গত রোববার মোহাম্মাদ আলীর লাশ উদ্ধার হলে তাঁর খালু হত্যাকারী মোক্তার হোসেন নিজে বাদী হয়ে হত্যা হত্যাসহ ঘটনার আলামত গোপন করায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-১৩ রংপুরের একটি চৌকস অভিযানিক দল গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইজিবাইকচালক রেদোয়ান মিয়াকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁর দেওয়া তথ্যে মামলার বাদী ভিকটিমের খালু মোক্তার হোসেন ও সহযোগী ইসলাম মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ বিষয়ে র‍্যাবের উপ-অধিনায়ক মেজর এ এইচ এম ওমর ফারুক আজক বলেন, রোববার ভিকটিম মোহাম্মাদ আলীর লাশ উদ্ধার হলে তাঁর খালু মোক্তার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ভাই থাকা সত্ত্বেও খালু বাদী হয়ে মামলা করাতে আমাদের খটকা লাগে। এ ঘটনায় র‍্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে মামলার বাদী মোক্তার হোসেনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মোক্তার হোসেন জানান, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটান।

ওমর ফারুক আরও বলেন, হত্যার মূল কারণ হিসেবে আপাতত মোক্তার হোসেনের মেয়ের সঙ্গে ভিকটিমের প্রেমের সম্পর্কে মেনে না নেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। অধিকতর তদন্তে আরও জানা যাবে। গ্রেপ্তারকৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

পুলিশ হত্যাকারী ফোর্স হতে পারে না: আইজিপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত