Ajker Patrika

চতুর্থ দিনের মতো কারমাইকেল কলেজ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

রংপুর প্রতিনিধি
চার দিন ধরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রি
চার দিন ধরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রি

রংপুরের ঐতিহ্যবাহী কারমাইকেল কলেজে টানা চার দিন ধরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। ৩৭ দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কলেজগেটে তালা দিয়ে আজ বুধবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।

আন্দোলনের চতুর্থ দিনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে কারমাইকেল কলেজ গেটে উপস্থিত হন রংপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ কমিশনার ও সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা। তাঁরা টানা এক ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে দেখছেন।

আজ বুধবার সকাল ৯টায় কলেজের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষা চাই, নিরাপত্তা চাই’, ‘শিক্ষকের অভাব দূর করো, ’ ‘ছাত্রাবাস চাই’, ‘বাস বাড়াও, ক্লাস চালাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বেলা ১১টার দিকে রংপুরের জেলা প্রশাসক মোম্মাদ রবিউল ফয়সাল, রংপুর মেট্রোপলিন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ও সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা দাবি-দাওয়া মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে টানা এক ঘণ্টার আলোচনায় শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, আশ্বাস নয়, তাঁরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এবং লিখিত প্রতিশ্রুতি চান। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা শেষে কলেজের সংকট, সমস্যা ও অব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো ঘুরে দেখার জন্য অনুরোধ করেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (১২টা ২৭) কর্মকর্তারা পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখছেন।

জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বলেন, ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে কথা হয়েছে। সময় ঠিক করে মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা উপদেষ্টা এই কলেজে আসবেন। যে দাবিগুলো শিক্ষার্থীরা তুলেছেন, তা পর্যাক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।

শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই। কিন্তু তার আগে চাই সমস্যার স্থায়ী সমাধান। আজ ডিসি স্যার, কমিশনার স্যার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল স্যারেরা এসেছেন, এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু আমরা শিক্ষা উপদেষ্টার সরাসরি আগমন এবং লিখিত আশ্বাস ছাড়া আন্দোলন স্থগিত করব না।’

শিক্ষার্থীদের ৩৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—শিক্ষক নিয়োগ, আবাসনসংকট নিরসন, পর্যাপ্ত শিক্ষাসামগ্রী, নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার, শিক্ষার্থীদের জন্য আরও বাস সরবরাহ, কলেজ মাঠে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, জমি বেদখলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, নতুন একাডেমিক ভবন ও মিলনায়তন নির্মাণ ইত্যাদি।

কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা স্বীকার করি। ইতিমধ্যে ১৪টি দাবি বাস্তবায়নে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেহেতু শিক্ষা উপদেষ্টার উপস্থিতি চাইছে, সেহেতু তাঁর একান্ত সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’

১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কারমাইকেল কলেজে বর্তমানে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন। তবে ছাত্রাবাসে জায়গা মাত্র ৮০০ শিক্ষার্থীর। জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষ, নেই ফ্যান কিংবা পর্যাপ্ত আলো। এমন বাস্তবতায় দীর্ঘদিন ধরেই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনের সংকট ও সমস্যার সমধান না হওয়ায় গত রোববার থেকে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা প্রথম দিন কলেজ কমপ্লিট শাটডাউন করে লালবাগ এলাকায় রেল ও সড়কপথ সাড়ে ৩ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এরপর থেকে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত