Ajker Patrika

হিলিতে ৩-৪ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে দাম বেড়েছে ২৪-২৫ টাকা

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
হিলিতে ৩-৪ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে দাম বেড়েছে ২৪-২৫ টাকা

হিলিতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ও বাজারের দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ৩-৪ দিন আগেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। ৪ দিনের দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২৪-২৫ টাকা। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের মোকামে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। বেশি দামে কেনার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছ। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হলে সামনের দিনে আরও দাম বাড়তে পারে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। 

বাজারে পেঁয়াজ ব্যবসায় রুবেল হোসেন জানান,৩-৪ দিন আগেও তিনি প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজি। এখন তাকে বিক্রি করতে হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি। কারণ তাকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তাই তাকে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দেশের পেঁয়াজে আরত গুলোতে প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। পেঁয়াজের ব্যবসা এখন চলে গেছে মজুতদারদের কাছে। সাধারণ কৃষক বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হাতে আর ব্যবসা নেই। 

হিলি বাজারে পেঁয়াজ নিয়ে বসে আছন বিক্রেতারাব্যবসায় মামুনুর রশিদ জানান, দুদিন আগে তিনি পাইকারি পেঁয়াজ কিনেছিলেন ৫৫ টাকা কেজি। এখন তাকে সেই পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ৬৮ টাকা কেজি দরে। বিক্রি করছেন ৭৩ থেকে ৭৫ টাকায়। তাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের করার কিছুই নেই। তারা প্রতিদিন পাইকারি পাঁচ বস্তা পেঁয়াজ কেনেন। সেগুলো দুই এক টাকা লাভে সারা দিন বিক্রি করেন। এ সময় ব্যবসা করছে মজুতদাররা। তারা বাজারে অবস্থা দেখে খুব কম পরিমাণ পেঁয়াজ ছাড়ছেন বাজারে, যার কারণে দাম বাড়ছে। 

পেঁয়াজ কিনতে আশা আছিয়া বেগম জানান, তাদের মতন মানুষের এখন হতাশা ছাড়া করার কিছুই নাই। বাজার করতে ৩০০ টাকা নিয়ে এসেছিলেন, পেঁয়াজ ঝাল কিনতে তার টাকা শেষ। কাঁচা বাজার করার মতো তার কাছে টাকা নেই। তার মতন অনেক মানুষ বাজার করতে এসে হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি সরকারের কাছে দাবি জানান, প্রতিদিনই বাজার ব্যবস্থাকে মনিটরিং করা হোক। তাহলে কিছুটা পণ্যর দাম কমবে। 

হিলি বাজারে পেঁয়াজ নিয়ে বসে আছন বিক্রেতারাহিলি স্থলবন্দরে আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, সরকার ইনপুট পারমিট বন্ধ রাখার কারণে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এদিকে দেশি পেঁয়াজের আড়তদাররাও পেঁয়াজ মজুত করে রাখছেন। এতে পেঁয়াজের দাম প্রতিদিন বাড়ছে। সরকার সাধারণ কৃষকের কথা চিন্তা করে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখলেও ইতিমধ্যে সাধারণ কৃষকেরা তাদের পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য পেয়ে গেছেন। 

এখন আড়তদাররা পেঁয়াজ মজুত করে রেখে সিন্ডিকেট করছেন। সাধারণ কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে এই মুহূর্তে সরকারকে ভারত পেঁয়াজ জামদানির অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আমদানি বন্ধ থাকলে আবারও অস্থিতিশীল হবে পেঁয়াজের বাজার। 

এদিকে মাঝেমধ্যে পেঁয়াজ আমদানির গুঞ্জনে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ১২ টাকা কমে গেলেও এক দুদিন পর আবারও সেটি বেড়ে যায়। 

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরে আলম জানান, প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাঝেমধ্যেই তারা বাজারে অভিযান চালাচ্ছেন। আগামী দু-একদিনের মধ্যে প্রশাসন আবারও বাজার তদারকি অভিযান চালাবে। বিগত দিনের অভিযানে দোকানদারদের জরিমানা না করে সতর্ক করা হয়েছিল। অভিযানের সময় কোনো দোকানদার বাড়তি দামে কোনোকিছু বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রত্যেক দোকানদারকে মূল্য তালিকা টানানোর জন্য বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত