Ajker Patrika

 ‘বর্ষায় পানির জন্য এমন হাহাকার জীবনে দেখিনি’

আব্দুল আওয়াল, বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
 ‘বর্ষায় পানির জন্য এমন হাহাকার জীবনে দেখিনি’

‘বর্ষাকালে সাধারণ নলকূপ ও শ্যালো মেশিনে পানি উঠছেনা। আমনের চাষাবাদ, পাট জাগ দেওয়ার মৌসুম চলছে। এ ছাড়া মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম তো আছেই। বর্ষায় পানির জন্য মানুষের এমন হাহাকার আমার জীবনে দেখিনি, এমনকি কোনো দিন কারও কাছ থেকে কাছে শুনিওনি।’ 

এই কথাগুলো নাটোর বাগাতিপাড়ার বিলগোপালহাটি গ্রামের ৭০ বছর বয়সী সাবেক শিক্ষক আজাহার আলীর। 

উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের জরিপ অনুযায়ী, উপজেলায় প্রায় ২৬ হাজার সাধারণ নলকূপ ও সেচযন্ত্র রয়েছে। চলতি বছরে পানির স্তর ১০ থেকে ১৫ ফুট নিচে নেমে গেছে। স্থানভেদে ২৫ থেকে ৩৫ ফুট নিচে পানির স্তর রয়েছে। সাধারণ নলকূপ ও ডিজেল চালিত শ্যালোমেশিন সর্বোচ্চ ২৮ থেকে ৩০ ফুট গভীর থেকে পানি উত্তোলন করতে পারে। ফলে নলকূপ ও ডিজেল চালিত শ্যালোমেশিনে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। 

পাট জাগ দেওয়ার জন্য পানিও শুকিয়ে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকাস্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বর্ষাকাল শেষ হতে চললেও মাঠ-ঘাট, খাল-বিল শুকনো। পানির অভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একমাত্র জল মোটর (সাবমারসিবল পাম্প) ছাড়া ৮০ ভাগ নলকূপ ও ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিনে পানি উঠছে না। এমনকি মাটি গর্ত করে নিচে বসালেও পানি মিলছে না। এতে গ্রামের সাধারণ মানুষ সুপেয় পানি ও গৃহস্থালির কাজ-কর্মে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। পাট কাটা, পাট পানিতে ডোবানো, আঁশ ছাড়ানো এবং ধানের চারা রোপণ নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। 

এ দিকে কৃষকের প্রতি বিঘায় আবাদ করা পাট জাগ দিতে পুকুর ভাড়া বাবদ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে পুকুর মালিককে। আবার অনেকেই এক বিঘা জমিতে জলমোটর দিয়ে পানি সেচে ২ হাজার টাকা, জমি তৈরি ১ হাজার ৫০০ টাকা, চারা রোপণ ২ হাজার ২০০ টাকা, সার ১ হাজার ৭০০ টাকা এবং বিবিধ ৭০০ টাকা খরচ করে ধান রোপণ করেছেন। এখন সেই জমিগুলোতে পানির অভাবে সেই ধান নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। 

দেবনগর গ্রামের মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, জলমোটরের পানিতে সেচ দিয়ে সাড়ে তিন বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছেন তিনি। পানির অভাবে আরও তিন বিঘা জমিতে এখনো ধান রোপণ করতে পারেননি। এর মধ্যে রোপণ করা ধান নিয়ে এখন চরম বিপাকে পড়েছেন। সেগুলোতে নিয়মিত পানি সেচ দিতে হচ্ছে। আর কিছুদিন এভাবে চলতে থাকলে তাও সম্ভব হবে না। ফলে সেগুলোও নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তাঁর। 

বিলগোপালহাটি গ্রামের রাকাত আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বাড়িতে চারটা গুরু আছে। বাড়ির টিউবওয়েলে পানি উঠছেনা। জলমোটর বসানোর মতো টাকাও নাই। নিজেদের খাবার পানিসহ গরুগুলার জন্য প্রতিদিন মসজিদের জলমোটর থেকে পানি টেনে আনা দুরূহ হয়ে পড়ছে।’ 

ক্ষিদ্রমালঞ্চি গ্রামের দিনমজুর লালন হোসেন বলেন, ‘আমন ধান চাষের জন্য দুই বিঘা জমি লিজ নিছিলাম। পাঁচ ফুট মাটি গর্ত করে সেখানে ডিজেল চালিত শ্যালোমেশিন বসিয়েও পানি তুলতে পারিনি। ধান লাগাতে না পারলে আমার অনেক লোকসান হবে।’ 

জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন বলছেন, তাঁদের গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষের বাড়িতে পানি নেই। যাদের বাড়িতে জলমোটর রয়েছে, তাদের থেকে পানি নিয়ে কোনো রকমে চলছে গৃহস্থালির কাজ। 

পানির জন্য গর্ত খুঁড়ে বসানো হচ্ছে ডিজেলে চালিত শ্যালোমেশিন। ছবি: আজকের পত্রিকামুন্সিপাড়া গ্রামের আসলাম আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও বিকেলে আমার জলমোটর থেকে গ্রামের অনেক মানুষ পানি নিয়ে যায়।’ 

উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় স্তর দিন-দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পানি অপচয় না করার জন্য উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।’ 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ভবসিন্ধু রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলায় চলতি মৌসুমে পাট চাষ হয়েছে ৩ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে। আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে। চলতি বছরে উপজেলায় পাট জাগ দেওয়ার জন্য পানি সংকট থাকায় কৃষকদের রিবন রেটিং বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর আমন ধানের মৌসুম মূলত বৃষ্টি নির্ভর। সেই ক্ষেত্রে ধান রোপণের আরও কিছুদিন সময় রয়েছে।’ বাকি সময়ে বৃষ্টির ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নীলুফা সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠিত

পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেছেন, পিএইচপি কোরআনের আলো বিশ্বজুড়ে আলো ছড়াচ্ছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে দিনব্যাপী পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি প্রতিযোগীদের হাতে ইয়েস কার্ড, ক্রেস্ট ও উপহার তুলে দেন। এ সময় মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘পিএইচপির আয়োজনে ‘‘পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিভার সন্ধানে’’ প্রতিযোগিতা। বিশ্বজুড়ে কোরআনের আলো ছড়াতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রমজান মাস ধরে আমাদের আয়োজকেরা হাফেজে কোরআনদের নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। গত ১৭ বছর ধরে চলে আসা এই অনুষ্ঠান দেশে ধারাবাহিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।’

কোরআনের আলো অনুষ্ঠানকে চলমান রাখার ঘোষণা দিয়ে মোহাম্মদ মহসিন বলেন, পিএইচপি কেয়ামত পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে থাকবে। তিনি বলেন, যারা কুফরি করে এবং মানুষকে সত্যের পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে, আল্লাহ তাদের দুনিয়ায় শাস্তি দেবেন এবং আখিরাতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন—এটিই হচ্ছে মহান আল্লাহর ঘোষণা। প্রত্যেকের জীবনকে পবিত্র কোরআনের আলোয় জীবন গঠন করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির অনুষ্ঠান পরিচালক সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘সারা দেশের হাজার হাজার প্রতিযোগীর মধ্য থেকে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাই করে টিভি অনুষ্ঠানের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। সেখান থেকে মাত্র চারজনকে বাছাই করা অনেক কঠিন কাজ। এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা পৌঁছাই।’ অডিশনে উপস্থিত ছিলেন কোরআনের আলো ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মুফতি মোহম্মদ মহিউদ্দিন, অর্থ সচিব হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া, ক্বারী মাওলানা জহিরুল ইসলাম, হাফেজ আবদুল্লাহ আল জায়েদ, পিএইচপি পরিবারের মিডিয়া অ্যাডভাইজার দিলশাদ আহমেদসহ পিএইচপি পরিবার ও আয়োজকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদারীপুরে আড়াই ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক

মাদারীপুর প্রতিনিধি
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা।

লাভলু জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর গোলচত্বরে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরোধের কারণে এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকীর সমর্থকেরা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর অংশে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় পর সড়ক অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, দীর্ঘ যানজট

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লার আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লা থেকে হাজারো নেতা-কর্মী কান্দিরপাড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্দিরপাড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা দলীয় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান এবং প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন।

ময়নামতি হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার মজুমদার রাত পৌনে ১২টার দিকে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হাজী ইয়াছিনের সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলছি। যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা বলে তাঁদের মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় মনোনয়নবঞ্চিত সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকদের সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুষ্টিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর গেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নেন সোহরাব সমর্থকেরা। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও প্রতিবাদ মিছিল করেন।

এ ছাড়াও সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষ্মীপুর এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন।

এ সময় তাঁরা বলেন, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে আবার মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।

এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।

জানতে চাইলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও সদ্য সদর আসনের মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত