Ajker Patrika

হঠাৎ সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, ফ্রিজে নষ্ট হওয়ার ভয়ে কোরবানির দেড় মণ মাংস রান্না করলেন রমজান

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২১ জুন ২০২৪, ১৯: ৫০
হঠাৎ সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, ফ্রিজে নষ্ট হওয়ার ভয়ে কোরবানির দেড় মণ মাংস রান্না করলেন রমজান

রমজান আলীর বাড়িতে ফ্রিজভর্তি কোরবানির মাংস। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল। আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ এলই না। রমজান আলী খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন, এলাকায় যে সৌরবিদ্যুতের প্ল্যান্ট ছিল, তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ আর আসবেই না। তাই দুপুরের পর থেকে বাড়ির নারীরা ফ্রিজ থেকে প্রায় দেড় মণ মাংস বের করে রান্না শুরু করেন। 

রমজান আলীর বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চর কানাপাড়া গ্রামে। পদ্মা নদীর ডান তীরে ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া এই ইউনিয়ন সৌরবিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছিল প্রায় ৯ বছর আগে। সরকারের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) কারিগরি সহযোগিতায় চর আষাড়িয়াদহে সৌরবিদ্যুতের প্ল্যান্ট স্থাপন করেছিল বেসরকারি সংস্থা আভা। প্ল্যান্টটির নাম দেওয়া হয়েছিল আভা মিনি-গ্রীড প্রজেক্ট। কোনো ঘোষণা ছাড়াই গতকাল এই গ্রিডটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

চর কানাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, ‘প্রথম দিকে ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। বছর দু-এক থেকে শুধু দুপুরে জোহরের নামাজের সময় ১ ঘণ্টা, আসরের নামাজের সময় ৩০ মিনিট, মাগরিবের নামাজের সময় থেকে রাত ১০টা, রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ দেওয়া হতো। এতে কোনো রকমে ফ্রিজটা চলত। কাল থেকে একেবারেই বন্ধ। ফ্রিজের ভেতর প্রায় ৬০ কেজি মাংস ছিল। এগুলো বের করে রান্না করা হচ্ছে। খাওয়া যাবে কি না জানি না।’ 

আভার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্গম চরাঞ্চলের ঘরে ঘরে সৌরবিদ্যুৎ দিতে ২০১৫ সালের ৬ নভেম্বর এই প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়। এরপর চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের আষাড়িয়াদহসহ পানিপার, ভুবনপাড়া, কানপাড়া, হনুমন্তনগর ও নওশেরা গ্রামের প্রায় ১ হাজার ৩০০ পরিবারকে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। প্রিপেইড মিটারে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য গ্রাহককে দিতে হতো ৩০ টাকা। এরপরও লোকসান হচ্ছিল বলে আভার দাবি। 

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) এই প্ল্যান্ট স্থাপনে প্রণোদনাও দেয়। আর কারিগরি সহায়তা করে সরকারের আরেক সংস্থা ইডকল। এই সংস্থাটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে সমীক্ষাও করেছিল। প্রতিষ্ঠানটি বলেছিল, প্ল্যান্টটি চালালে প্রতি মাসে ১৫ লাখ টাকা করে লাভ করতে পারবে আভা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত লাভের মুখ দেখা যায়নি। 

এই প্ল্যান্টে মোট ৫৯৪টি সৌরবিদ্যুতের প্যানেল স্থাপন করা আছে। এগুলোর বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা বলা হয়েছিল ১৪৮ দশমিক ৫০ কিলোওয়াট। প্যানেলের কার্যক্ষমতা কমে বর্তমানে মাত্র ৬০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছিল। এই বিদ্যুতে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মিটারে সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ কারণে গতকাল এই গ্রিডটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিদ্দিকুর রহমানের গ্রামেই এই গ্রিডটি স্থাপন করা হয়।গতকাল দুপুরে এই ইউপি সদস্যকে কল করা হলে তিনি ধরেননি। পরে সিদ্দিকুর রহমান নিজেই ফোন করে বলেন, ‘বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই বলে প্রতিবেশীর নিজস্ব সৌরবিদ্যুতে মোবাইল চার্জ দিয়েছিলাম। হঠাৎ করে ঈদের পর এভাবে বিদ্যুতের প্ল্যান্ট বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হয়নি। ফ্রিজের কোরবানির মাংস বের করে রান্না করতে হচ্ছে। চরের বেশির ভাগ মোবাইল চার্জের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ফ্রিজ-টিভিগুলোর এখন কী হবে কেউ জানে না। প্রায় পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বাড়িতে বাড়িতে মিটার নিতে হয়েছে। সেটাও এখন লস।’ 

জানা গেছে, আভা মিনি-গ্রীড প্রজেক্টের প্ল্যান্ট ব্যবস্থাপক হিসেবে শুরু থেকেই কর্মরত ছিলেন মিল্লাত হোসেন। এ ছাড়া আরও দুজন কর্মচারী সেখানে থাকতেন। গতকাল মিল্লাত হোসেন এই চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে প্ল্যান্ট বন্ধ করে চলে আসেন। যোগাযোগ করা হলে মিল্লাত হোসেন বলেন, ‘চাহিদা ১২০ কিলোওয়াটের। আর আমরা সরবরাহ করতে পারছিলাম মাত্র ৬০ কিলোওয়াট। সে কারণে প্ল্যান্ট বন্ধ করে চলে এসেছি।’ 

আভা মিনি-গ্রীড প্রজেক্টআভার মহাব্যবস্থাপক শালেউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘চাকরি ছাড়তে হলে অন্তত এক মাস আগে জানাতে হবে। তাহলে কর্তৃপক্ষ সেখানে নতুন লোক দেবে এবং কার্যক্রম চালু রাখবে। কিন্তু মিল্লাত চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েই প্ল্যান্ট বন্ধ করে চলে এসেছেন।’ 

তিনি বলেন, ‘চাহিদামতো বিদ্যুৎ দিতে না পারার কারণে লোকজন মন্দ কথা বলতেন। তাই হয়তো মিল্লাত চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন।’ 

শালেউদ্দীন আহমেদ আরও বলেন, ‘এই প্ল্যান্টটি আসলে চালানো সম্ভব না। ২৪ ঘণ্টার ভেতরে ছয়-সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ দিয়েও প্রতি মাসে প্রায় এক লাখ টাকা লোকসান হচ্ছিল। অথচ কার্যক্রম শুরুর আগে ইডকল যাদের দিয়ে সমীক্ষা করিয়েছিল, তারা বলেছিল মাসে ১৫ লাখ টাকা লাভ হবে। লাভ তো দূরের কথা, পরিবেশবান্ধব এই প্ল্যান্টে সৌরবিদ্যুৎ ছাড়াও ডিজেল দিয়ে জেনারেটর চালিয়েও চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়নি। বিষয়টি স্রেডা এবং ইডকলও জানে।’ 

তিনি বলেন, ‘সবকিছু পর্যালোচনা করে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রায় দুই বছর আগে নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) সঙ্গে আভার চুক্তি হয়েছে। কথা ছিল, সাবমেরিন কেব্‌লের মাধ্যমে নেসকো পদ্মার ওপারের চরে বিদ্যুৎ নিয়ে যাবে। তারপর তারাই চরবাসীকে চাহিদামতো বিদ্যুৎ দেবে। আর সৌর প্ল্যান্টে যেটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে সেটা আভা নেসকোর কাছে বিক্রি করবে। কথা ছিল, এই চুক্তির ছয় মাসের মধ্যে নেসকো তাদের কার্যক্রম শুরু করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নেসকো কার্যক্রম শুরু করেনি।’ 

গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল বলেন, ‘কালকেই আমি শুনেছি যে আভা তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছে। এতে চরের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। দ্রুত যেন এই প্ল্যান্ট চালু করা হয় তার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। সাবমেরিন কেব্‌লের মাধ্যমে যদি বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে সেটাও যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে করা হয়। তা না হলে চরের জীবন-জীবিকা আবার থমকে যাবে।’ 

নেসকোর নির্বাহী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, ‘সৌরবিদ্যুৎ স্থায়ী সমাধান নয়। এটি যুগ যুগ চলবেও না। দুর্গম অঞ্চলে বিদ্যুৎ দিতে সরকারের অগ্রাধিকার ছিল বলে নেসকো বিনা মূল্যেই আভাকে নানা সহযোগিতা করেছে। কিন্তু নদী পার করে সাব-মেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া সহজ কাজ নয়। আভার সঙ্গে এ রকম কোন চুক্তিও ছিল না। আভা সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিলে আমাকে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তারপর দেখি কী করা যায়!’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন হত্যার ঘটনায় ২ শুটার শনাক্ত, গ্রেপ্তার যেকোনো সময়

শটগান–চায়না রাইফেল বাদ, ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে এসএমজি— সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে সিএমপি কমিশনার

৪৯তম বিশেষ বিসিএস: ৬৬৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ

দিল্লি বিস্ফোরণে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ উড়িয়ে দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কে পাবেন মেক্সিকো প্রেসিডেন্টের বিশ্বকাপ টিকিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিমানবন্দর রোডে গাড়িতে আগুন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আগুন নেভাতে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুন নেভাতে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর বিমানবন্দর রোডে একটি গাড়িতে আগুন লেগে সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আজ বুধবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটের দিকে বিমানবন্দর সড়কের জিনজিয়াং রেস্টুরেন্টের কাছাকাছি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)–এর ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুস সামাদ বাপ্পি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পারটেক্স গ্রুপের ঢাকা মেট্রো চ–৫৩–২৯৪২ নম্বরের ওই গাড়িটি থেকে হঠাৎ ধোঁয়া উঠতে দেখে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। খবর পেয়ে নিকটস্থ থানার টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়।

ট্রাফিক বিভাগ আরও জানায়, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে ততক্ষণে গাড়িটি সম্পূর্ণরূপে পুড়ে যায়।

আগুন লাগার পর কিছু সময়ের জন্য আউটগোয়িং লেনে যান চলাচল সীমিত রাখা হয়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন হত্যার ঘটনায় ২ শুটার শনাক্ত, গ্রেপ্তার যেকোনো সময়

শটগান–চায়না রাইফেল বাদ, ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে এসএমজি— সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে সিএমপি কমিশনার

৪৯তম বিশেষ বিসিএস: ৬৬৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ

দিল্লি বিস্ফোরণে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ উড়িয়ে দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কে পাবেন মেক্সিকো প্রেসিডেন্টের বিশ্বকাপ টিকিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন, সতর্ক অবস্থানে পুলিশ-র‍্যাব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৬
সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার সামনে বিজিবি সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। ছবি: বিজিবির সৌজন্যে
সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার সামনে বিজিবি সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। ছবি: বিজিবির সৌজন্যে

ঢাকা ও আশপাশের জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে আজ বুধবার সকাল থেকে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আজ সকালে বিজিবি সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজিবি জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীতে ১২ প্লাটুন এবং ঢাকার বাইরে আরও ২ প্লাটুনসহ মোট ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

পরবর্তী নির্দেশনার আগপর্যন্ত বিজিবি মোতায়েন থাকবে বলে জানান তিনি।

এর অংশ হিসেবে আজ সকাল থেকে হাইকোর্ট, বাংলা একাডেমি ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়সহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার সামনে বিজিবি সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

একইভাবে আজ ভোর থেকে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কের বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আগামীকাল ১৩ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ জানাবেন। এ কারণে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ওই দিন ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য নাশকতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

তবে নাশকতাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, আসন্ন ১৩ নভেম্বরকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘শক্ত অবস্থানে’ রয়েছে এবং কোনো ধরনের সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তার পাশে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘রাস্তার পাশে তেল বিক্রি কিছুদিনের জন্য বন্ধ থাকবে। এই তেল দিয়ে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের অঘটন ঘটিয়ে ফেলে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইঙ্গিত দেন, এই তেল ব্যবহার করেই নাশকতামূলক অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।

সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার সামনে বিজিবি সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। ছবি: বিজিবির সৌজন্যে
সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার সামনে বিজিবি সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। ছবি: বিজিবির সৌজন্যে

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, সাম্প্রতিক অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গোয়েন্দাদের কোনো ব্যর্থতা নেই। তাঁর মন্তব্য, ‘বড় ধরনের কোনো মিছিল হচ্ছে না। বাসে আগুন ও কয়েকটা জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। এগুলো যাতে আর ঘটাতে না পারে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

এ সময় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও জনবহুল স্থানগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার কথা উল্লেখ করেন তিনি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, মেট্রোরেল ও রেলওয়ে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের কথা জানান উপদেষ্টা।

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘১৩ নভেম্বরের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত অবস্থান নিয়েছে। তারা শক্ত অবস্থানে থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। কোনো আশঙ্কা এখানে নেই।’

তিনি জনগণের প্রতি সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর অনুরোধ করেন। উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।’

এদিকে ১৩ নভেম্বর ‘ঢাকা লকডাউন’ ঘিরে নাগরিকদের আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী। মঙ্গলবার বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ঢাকা মহানগরীর চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, কোনো আশঙ্কা নেই এবং চিন্তার কোনো কারণ নেই। ঢাকাবাসী আওয়ামী লীগের তৎপরতা রুখে দেবে। ওই দিন বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঢাকায় মোতায়েন থাকবেন। ঢাকাবাসী যাতে আতঙ্কিত না হয়, সে জন্য সবাইকে এই বার্তা দিতে চান বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন হত্যার ঘটনায় ২ শুটার শনাক্ত, গ্রেপ্তার যেকোনো সময়

শটগান–চায়না রাইফেল বাদ, ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে এসএমজি— সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে সিএমপি কমিশনার

৪৯তম বিশেষ বিসিএস: ৬৬৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ

দিল্লি বিস্ফোরণে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ উড়িয়ে দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কে পাবেন মেক্সিকো প্রেসিডেন্টের বিশ্বকাপ টিকিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুবদলের দুই নেতার নিয়ন্ত্রণে মেঘনায় চলছে মাছের পোনা ধ্বংসযজ্ঞ

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ০০
বিশেষ কায়দায় জোয়ার-ভাটার গতিপথে অবৈধ ’খচ্ছি জাল’ পেতে নির্বিচারে মৎস্য সম্পদ নিধন করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিশেষ কায়দায় জোয়ার-ভাটার গতিপথে অবৈধ ’খচ্ছি জাল’ পেতে নির্বিচারে মৎস্য সম্পদ নিধন করা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীতে স্থানীয় যুবদল নেতা হেলাল উদ্দিন ও মো. কবির হোসেনের নিয়ন্ত্রণে নির্বিচারে মৎস্য নিধন চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের মদদে অবৈধ ‘খচ্ছি জাল’ ব্যবহার করে প্রতিদিন মণকে মণ জাটকাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা মারা পড়ছে। এর ফলে নদীর জীববৈচিত্র্য ও ইলিশের অভয়াশ্রম মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে।

অভিযোগ রয়েছে, যুবদল নেতা হেলাল সাহেবের হাট ও মাতাব্বর হাট এলাকায় একটি জেলে বাহিনীকে মদদ দেন। অভিযুক্ত হেলাল সাহেবের হাট ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য। এই বাহিনী বিশেষ কায়দায় জোয়ার-ভাটার গতিপথে অবৈধ ‘খচ্ছি জাল’ পেতে নির্বিচারে মৎস্য সম্পদ নিধন করছে।

মতিরহাট এলাকায় যুবদল নেতা মো. কবির হোসেন এই অবৈধ কাজের নিয়ন্ত্রণ করেন। তিনি উপজেলা যুবদলের সদস্য। কালকিনি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আব্দুল খালেক নিশ্চিত করেন যে আক্কাস মাঝির নেতৃত্বে যে পাঁচটি নৌকায় মাছ ধরা হয়, তার পুরো নিয়ন্ত্রণ কবিরের হাতে। তিনি বলেন, তাদেরকে দিয়ে চুক্তিতে মাছ ধরানো হয় এবং প্রশাসনিক সকল ‘টেবিল ম্যানেজ’ করেন কবির।

মেঘনা নদীতে গিয়ে দেখা যায় এক ভয়াবহ চিত্র। মাতাব্বর হাটসহ আশেপাশে জেগে ওঠা চরে পাতা হয়েছে অবৈধ খচ্ছি জালের ফাঁদ। যত দূর চোখ যায়, খুঁটি আর জালে ঘেরা সেই দৃশ্য। বিস্তীর্ণ চরের চারপাশে মাটিতে পোঁতা হয়েছে শত শত খুঁটি, যার সঙ্গে বাঁধা রয়েছে মশারি জালের মতো বিশেষ জাল।

জোয়ারের সময় এই ফাঁদ পাতা জাল ডুবে যায়। কিন্তু ভাটা শুরু হতেই যখন চরের পানি নেমে যেতে থাকে, তখন জালগুলোতে আটকা পড়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এ সময় মণকে মণ মাছের পোনা ও জলজ উদ্ভিদ নির্বিচারে ধ্বংস হয়।

কমলনগরের মেঘনা নদী ইলিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অভয়াশ্রম। এখানেই মা ইলিশ ডিম ছাড়ে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বেড়ে ওঠার আগেই খচ্ছি জালের ফাঁদে আটকে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ইলিশের সেই পোনাগুলো। এই ধ্বংসযজ্ঞ চলতে থাকলে সরকারের ‘মা ইলিশ রক্ষা’ এবং ‘জাটকা রক্ষা অভিযান’ কোনোভাবেই সফল হবে না। দিনি দিন ইলিশসহ মাছের উৎপাদন কমতে থাকবে।

জালে আটকা পড়া জাটকা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জালে আটকা পড়া জাটকা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মেঘনার বুকে জেগে ওঠা প্রায় দুই-তিন কিলোমিটার চরজুড়ে এই অবৈধ জালের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। এই ফাঁদে আটকা পড়া বড় মাছ জেলেরা সংগ্রহ করলেও বাকি মাছের পোনাগুলো চরের কাদামাটিতে আটকা পড়ে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

মাছঘাট দখল ও চাঁদাবাজির কারণে হেলালকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও পরে তিনি ‘রহস্যজনকভাবে’ নিজ পদে ফিরে আসেন এবং এর পর থেকে আরও বেপরোয়াভাবে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে, এই যুবদল নেতারা মোটা অঙ্কের টাকায় বিভিন্ন টেবিল ম্যানেজ করে এসব করছেন। সাধারণ জেলেরা জানিয়েছেন, ‘নেতারা দল ও গায়ের জোরে নদীতে অবৈধ জাল দিয়ে মাছ মারছেন। আমরা ভয়ে মুখ খুলতে পারছি না। প্রতিবাদ করলে বিপদ।’

অবৈধ জালে মাছ ধ্বংসের বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা হেলাল মেম্বার সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে পরে একজন কথা বলবে।’ যুবদল নেতা কবির হোসেন তাঁর সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোনো মাছের ব্যবসা করি না, আমি কিছুই জানি না।’

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তূর্য সাহা বলেন, ‘আমি ছুটিতে ছিলাম। এসেই বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়েছি। এরই মধ্যে জালের বেশ কিছু খুঁটি অপসারণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও অভিযান দিয়ে পুরোটা অপসারণ করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামান বলেন, ‘যুবদল নেতার বিষয়ে অভিযোগ শুনেছি। মৎস্য কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

সচেতন মহল অবিলম্বে এই অবৈধ খচ্ছি জাল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, এই ধ্বংসযজ্ঞ চলতে থাকলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যাবে এবং সরকারের মা ইলিশ রক্ষা ও জাটকা রক্ষা অভিযান সফল হবে না। মৎস্য খাতকে রক্ষায় এই চক্রের মূল হোতাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন হত্যার ঘটনায় ২ শুটার শনাক্ত, গ্রেপ্তার যেকোনো সময়

শটগান–চায়না রাইফেল বাদ, ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে এসএমজি— সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে সিএমপি কমিশনার

৪৯তম বিশেষ বিসিএস: ৬৬৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ

দিল্লি বিস্ফোরণে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ উড়িয়ে দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কে পাবেন মেক্সিকো প্রেসিডেন্টের বিশ্বকাপ টিকিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৮
গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর মহানগরীর বাসন ও কাশিমপুর থানা এবং জেলার শ্রীপুর থানা এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে ও আজ বুধবার ভোর পর্যন্ত সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বাস তিনটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। তবে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মহানগরীর বাসন থানাধীন ভোগড়া বাইপাস সংলগ্ন পেয়ারা বাগান এলাকায় ভিআইপি পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভিআইপি পরিবহনের বাসটিতে কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় দুর্বৃত্ত পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, ঘটনাস্থলের কাছেই ফায়ার সার্ভিসের একটি স্টেশন থাকলেও আগুন লাগার পর সদস্যরা সময়মতো আগুন নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসেননি।

তবে মডার্ন ফায়ার স্টেশন, ভোগড়ার স্টেশন অফিসার ইকবাল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে প্রথমে পুলিশকে জানাই। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস একসঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।’

তিনি আরও জানান, আগুন দেওয়ার সময় বাসে কোনো লোক ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, রাতে বাসটি সড়কের পাশে পার্ক করা ছিল।

এ ছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন বেড়াইদের চালা এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে বাসটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরে ভোরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুন জানান, আগুনে বাসটির ইঞ্জিন ও সিট পুড়ে গেছে।

অন্যদিকে একই রাতে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর থানাধীন কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জ্যোতি ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় একজন মিস্ত্রি বাসের নিচে শুয়ে মেরামতের কাজ করছিলেন। ঠিক তখনই একটি মোটরসাইকেলে করে দুই যুবক এসে বাসের পাশে থামে এবং মুহূর্তের মধ্যে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত এগিয়ে এসে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। ফলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে আগুনে বাসটির আসন ও কিছু যন্ত্রাংশ পুড়ে যায়। খবর পেয়ে কাশিমপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার রাতে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল নিয়ে এসে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে কোনো প্রাণহানি হয়নি, তবে বাসের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনাটির তদন্ত চলছে এবং অগ্নিসংযোগকারীদের শনাক্তে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুরান ঢাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন হত্যার ঘটনায় ২ শুটার শনাক্ত, গ্রেপ্তার যেকোনো সময়

শটগান–চায়না রাইফেল বাদ, ব্রাশফায়ার মুডে থাকবে এসএমজি— সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে সিএমপি কমিশনার

৪৯তম বিশেষ বিসিএস: ৬৬৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ

দিল্লি বিস্ফোরণে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ উড়িয়ে দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কে পাবেন মেক্সিকো প্রেসিডেন্টের বিশ্বকাপ টিকিট

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত