রিমন রহমান, রাজশাহী
রাজশাহীর দুর্গাপুরে খাদ্য বিভাগের ১৪০ বস্তা চাল গায়েব হয়ে গেছে। সাত টন এই চালের বাজারমূল্য আড়াই লাখ টাকা। ঘটনা জানাজানি হলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন তা ধামাচাপা দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি চাল লোপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় এক যুবদল নেতাকে বলেছেন, ‘আপনি জিজ্ঞাসা করার কে?’ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করারও হুমকি দেখিয়েছেন তিনি।
এ নিয়ে ফেসবুকে এসে লাইভ করেছেন রেজাউল করিম নামের ওই যুবদল নেতা। চাল লোপাটের ওই ঘটনা ঘটে গত ২৮ আগস্ট। সেদিন খাদ্যগুদাম থেকে চালগুলো গুদামের নৈশপ্রহরী শাজাহান আলীর বাড়িতে ঢোকানো হচ্ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় দ্রুতই সেখান থেকে আবার চাল সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে পরে ওই চাল কোথায় গেছে, এর হদিস মেলেনি। যদিও শাজাহানের বাড়িতে চাল ঢোকানো ও বের করার ভিডিও রয়েছে।
ফেসবুক লাইভে দুর্গাপুর পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য রেজাউল করিম বলেন, ‘যে কাজ সাংবাদিকদের করার কথা, সে কাজ আজ সাধারণ মানুষকে করতে হচ্ছে। গরিব মানুষের ১৪০ বস্তা চাল খাদ্যগুদাম থেকে চুরি করে খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও ইয়াসিন আলী নৈশপ্রহরী শাজাহানের সহযোগিতায় তার বাসায় রাখে। এর যথাযথ প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ইউএনও স্যারের নাম বলেন। তাঁর নির্দেশেই নাকি এই চাল শাজাহানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও ভিডিওতে দেখা গেছে, গত ২৮ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় একটি চালের বস্তাভর্তি ট্রলি শাজাহানের বাড়ির সামনের রাস্তায় গিয়ে থামে। এ সময় ২০ জন শ্রমিকও আসেন। তাঁরা সরু রাস্তা দিয়ে প্রায় দেড় শ গজ দূরে চালের বস্তাগুলো শাজাহানের বাড়িতে নেওয়া শুরু করেন। এ সময় শাজাহানের আপন বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম সরকারি চাল বাড়িতে ঢুকতে দেখে বিস্মিত হন। জাহাঙ্গীর এ বিষয়ে শাজাহানকে প্রশ্ন করেন।
তবে শাজাহান বিষয়টি এড়িয়ে যান। এরপর বিপদ আঁচ করতে পেরে নিজে বাঁচতে জাহাঙ্গীর ফোনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান। পরে তিনি দুর্গাপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর হায়দার আলীকেও জানান। এর মধ্যে ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়লে স্থানীয় জনগণ ও যুবদলের পৌর শাখার আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য রেজাউল করিমসহ নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা এ সময় ঘটনাটির ভিডিও করেন। সেখানে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, ট্রলিতে ৫০ কেজি ওজনের ১৪০টি চালের বস্তা ছিল।
এ ব্যাপারে নৈশপ্রহরী শাজাহানকে ফোন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তাঁর ভাই জাহাঙ্গীর বলেন, ‘চাল ঢুকতে ও বের হতে দেখেছি। চাল ঢোকানোর কিছুক্ষণ পরই বের করা হয়েছে। তবে বের হওয়ার পর চাল কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা বলতে পারব না।’
সেখানে উপস্থিত যুবদল নেতা মো. সজিব বলেন, ‘শাজাহানের বাড়িতে চাল ঢোকার শেষ পর্যায়ে আমরা যুবদলের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ জানানোর জন্য ইউএনওর কাছে যাই। তবে তিনি এ সময় অফিসে ছিলেন না। আমরা শাজাহানের বাড়ি থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ট্রলিতে করে চাল সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে সেখানে উপস্থিত লোকজন এর ভিডিও করে রাখেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএনওকে না পেয়ে গুদামে যাই। সেখানে খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তবে তিনি সদুত্তর না দিয়ে চাল ব্যবসায়ী বীরেনকে ফোনে ডাকেন। এ সময় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বীরেন আমাদের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তবে তাঁর প্রস্তাব আমরা প্রত্যাখ্যান করি। এরপরেই ইউএনও অফিস থেকে সুমন নামের এক কর্মচারী ফোন দেন। ইউএনও তাঁর অফিসে আমাদের ডাকছেন বলে জানান।’
ফেসবুকে ঘটনার বিষয়ে লাইভ করা যুবদল নেতা রেজাউল করিম বলেন, ‘ইউএনও সাবরিনা শারমিন অফিসে ডাকলে আমরা যাই। জিজ্ঞাসা করি, সরকারি চাল নৈশপ্রহরী শাজাহানের বাড়িতে কীভাবে গেল? এ সময় ইউএনও উত্তেজিত হয়ে বলেন, “আপনি জিজ্ঞাসা করার কে?” আমি বলি, আমি বাংলাদেশের নাগরিক। এটা জানার অধিকার আছে। ইউএনও তখন বলেন, “বেশি কথা বললে আপনার বিরুদ্ধে মামলা করব।” এ সময় ইউএনও এক আনসার সদস্যকে দিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এই ভেবে যে, ফোনে ভিডিও আছে।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘শাজাহানের বাড়ির চাল শেষ পর্যন্ত গুদামে ঢুকেছে কি না, এটা আমি জানতে চাই। ১৪০ বস্তা চাল কোথায় গেছে, কী অবস্থায় আছে, তার সঠিক তদন্ত চাই। এ চালের আনুমানিক বাজারমূল্য আড়াই লাখ টাকা। আমি মনে করি, এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে ইউএনও জড়িত আছেন। আর তা না হলে তিনি কেন খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে বাঁচাতে চাইছেন? ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
জানতে চাইলে ইউএনও সাবরিনা শারমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রেজাউলের সঙ্গে এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। কী কথা হয়েছে, তা সিসি ক্যামেরা দেখলেই বোঝা যাবে। আমি গুদাম থেকে কিছু নষ্ট চাল জব্দ করেছিলাম। শাজাহানের বাড়িতে কোন চাল গিয়েছিল, সেগুলো বের করে আবার কোথায় নেওয়া হয়েছে, তা খাদ্য বিভাগ বলতে পারবে। এ ঘটনার সঙ্গে আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানো হচ্ছে। এটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরং, আমি শুনেছি যে যুবদল নেতা রেজাউল এক লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে এসব ছড়াচ্ছেন।’
দুর্গাপুর পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম আজম বলেন, ‘নৈশপ্রহরী শাজাহানের বাড়ি থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ১০০ গজ। খাদ্য অধিদপ্তরের সিলমোহরযুক্ত চালের বস্তা শাজাহানের বাড়িতে ঢুকেছে এবং বের হয়েছে, এটা আমি জানি। খাদ্যগুদামের সিসি ক্যামেরা চেক করলেই বোঝা যাবে চালের বস্তা সেখান থেকেই বের হয়েছে। দুর্গাপুর গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ চাল পাচারের সঙ্গে জড়িত। আর এ কর্মকর্তাকে ইউএনও কেন রক্ষা করতে চাচ্ছেন—সেটি আমার বোধগম্য নয়। এ ঘটনার তদন্ত প্রয়োজন।’
সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য গতকাল রোববার দুপুরে দুর্গাপুর খাদ্যগুদামে যাওয়া হয়। এ সময় প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম কৌশলে গুদাম থেকে চলে যান। এরপর তাঁর ফোন বন্ধ করে দেন। আজ দুপুরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এই চালের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। কার চাল শাজাহানের বাড়ি গেছে, বস্তায় চাল ছিল নাকি ভুসি ছিল, কিছুই বলতে পারব না।’ এরপর ফোন কেটে দেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজশাহীর ১২টি সরকারি খাদ্যগুদামে শতকরা ৮০ শতাংশ নিম্নমানের পচা লাল চাল মজুত করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আজকের পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ নিয়ে খাদ্য বিভাগে তোলপাড় চলছে। ইতিমধ্যে দুর্গাপুর ও পার্শ্ববর্তী বাগমারা উপজেলার পাঁচটি গুদাম থেকে ৯৫৪ বস্তা পচা চাল অপসারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক পচা চাল সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট ও অসাধু খাদ্য কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছেন। বাগমারার ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়াকে ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পচা চাল দুর্গাপুর খাদ্যগুদামেও পাওয়া যায়। তবে সেখানকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আর তাঁর গুদাম থেকে নৈশপ্রহরী শাজাহানের বাড়িতে চাল নেওয়া এবং জানাজানি হওয়ায় বের করে অজ্ঞাতনামা স্থানে নেওয়ার বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। আমাকে এ রকম ঘটনা কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’
রাজশাহীর দুর্গাপুরে খাদ্য বিভাগের ১৪০ বস্তা চাল গায়েব হয়ে গেছে। সাত টন এই চালের বাজারমূল্য আড়াই লাখ টাকা। ঘটনা জানাজানি হলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন তা ধামাচাপা দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি চাল লোপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় এক যুবদল নেতাকে বলেছেন, ‘আপনি জিজ্ঞাসা করার কে?’ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করারও হুমকি দেখিয়েছেন তিনি।
এ নিয়ে ফেসবুকে এসে লাইভ করেছেন রেজাউল করিম নামের ওই যুবদল নেতা। চাল লোপাটের ওই ঘটনা ঘটে গত ২৮ আগস্ট। সেদিন খাদ্যগুদাম থেকে চালগুলো গুদামের নৈশপ্রহরী শাজাহান আলীর বাড়িতে ঢোকানো হচ্ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় দ্রুতই সেখান থেকে আবার চাল সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে পরে ওই চাল কোথায় গেছে, এর হদিস মেলেনি। যদিও শাজাহানের বাড়িতে চাল ঢোকানো ও বের করার ভিডিও রয়েছে।
ফেসবুক লাইভে দুর্গাপুর পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য রেজাউল করিম বলেন, ‘যে কাজ সাংবাদিকদের করার কথা, সে কাজ আজ সাধারণ মানুষকে করতে হচ্ছে। গরিব মানুষের ১৪০ বস্তা চাল খাদ্যগুদাম থেকে চুরি করে খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও ইয়াসিন আলী নৈশপ্রহরী শাজাহানের সহযোগিতায় তার বাসায় রাখে। এর যথাযথ প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ইউএনও স্যারের নাম বলেন। তাঁর নির্দেশেই নাকি এই চাল শাজাহানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও ভিডিওতে দেখা গেছে, গত ২৮ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় একটি চালের বস্তাভর্তি ট্রলি শাজাহানের বাড়ির সামনের রাস্তায় গিয়ে থামে। এ সময় ২০ জন শ্রমিকও আসেন। তাঁরা সরু রাস্তা দিয়ে প্রায় দেড় শ গজ দূরে চালের বস্তাগুলো শাজাহানের বাড়িতে নেওয়া শুরু করেন। এ সময় শাজাহানের আপন বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম সরকারি চাল বাড়িতে ঢুকতে দেখে বিস্মিত হন। জাহাঙ্গীর এ বিষয়ে শাজাহানকে প্রশ্ন করেন।
তবে শাজাহান বিষয়টি এড়িয়ে যান। এরপর বিপদ আঁচ করতে পেরে নিজে বাঁচতে জাহাঙ্গীর ফোনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান। পরে তিনি দুর্গাপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর হায়দার আলীকেও জানান। এর মধ্যে ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়লে স্থানীয় জনগণ ও যুবদলের পৌর শাখার আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য রেজাউল করিমসহ নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা এ সময় ঘটনাটির ভিডিও করেন। সেখানে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, ট্রলিতে ৫০ কেজি ওজনের ১৪০টি চালের বস্তা ছিল।
এ ব্যাপারে নৈশপ্রহরী শাজাহানকে ফোন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তাঁর ভাই জাহাঙ্গীর বলেন, ‘চাল ঢুকতে ও বের হতে দেখেছি। চাল ঢোকানোর কিছুক্ষণ পরই বের করা হয়েছে। তবে বের হওয়ার পর চাল কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা বলতে পারব না।’
সেখানে উপস্থিত যুবদল নেতা মো. সজিব বলেন, ‘শাজাহানের বাড়িতে চাল ঢোকার শেষ পর্যায়ে আমরা যুবদলের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ জানানোর জন্য ইউএনওর কাছে যাই। তবে তিনি এ সময় অফিসে ছিলেন না। আমরা শাজাহানের বাড়ি থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ট্রলিতে করে চাল সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে সেখানে উপস্থিত লোকজন এর ভিডিও করে রাখেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএনওকে না পেয়ে গুদামে যাই। সেখানে খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তবে তিনি সদুত্তর না দিয়ে চাল ব্যবসায়ী বীরেনকে ফোনে ডাকেন। এ সময় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বীরেন আমাদের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তবে তাঁর প্রস্তাব আমরা প্রত্যাখ্যান করি। এরপরেই ইউএনও অফিস থেকে সুমন নামের এক কর্মচারী ফোন দেন। ইউএনও তাঁর অফিসে আমাদের ডাকছেন বলে জানান।’
ফেসবুকে ঘটনার বিষয়ে লাইভ করা যুবদল নেতা রেজাউল করিম বলেন, ‘ইউএনও সাবরিনা শারমিন অফিসে ডাকলে আমরা যাই। জিজ্ঞাসা করি, সরকারি চাল নৈশপ্রহরী শাজাহানের বাড়িতে কীভাবে গেল? এ সময় ইউএনও উত্তেজিত হয়ে বলেন, “আপনি জিজ্ঞাসা করার কে?” আমি বলি, আমি বাংলাদেশের নাগরিক। এটা জানার অধিকার আছে। ইউএনও তখন বলেন, “বেশি কথা বললে আপনার বিরুদ্ধে মামলা করব।” এ সময় ইউএনও এক আনসার সদস্যকে দিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এই ভেবে যে, ফোনে ভিডিও আছে।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘শাজাহানের বাড়ির চাল শেষ পর্যন্ত গুদামে ঢুকেছে কি না, এটা আমি জানতে চাই। ১৪০ বস্তা চাল কোথায় গেছে, কী অবস্থায় আছে, তার সঠিক তদন্ত চাই। এ চালের আনুমানিক বাজারমূল্য আড়াই লাখ টাকা। আমি মনে করি, এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে ইউএনও জড়িত আছেন। আর তা না হলে তিনি কেন খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে বাঁচাতে চাইছেন? ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
জানতে চাইলে ইউএনও সাবরিনা শারমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রেজাউলের সঙ্গে এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। কী কথা হয়েছে, তা সিসি ক্যামেরা দেখলেই বোঝা যাবে। আমি গুদাম থেকে কিছু নষ্ট চাল জব্দ করেছিলাম। শাজাহানের বাড়িতে কোন চাল গিয়েছিল, সেগুলো বের করে আবার কোথায় নেওয়া হয়েছে, তা খাদ্য বিভাগ বলতে পারবে। এ ঘটনার সঙ্গে আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানো হচ্ছে। এটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরং, আমি শুনেছি যে যুবদল নেতা রেজাউল এক লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে এসব ছড়াচ্ছেন।’
দুর্গাপুর পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম আজম বলেন, ‘নৈশপ্রহরী শাজাহানের বাড়ি থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ১০০ গজ। খাদ্য অধিদপ্তরের সিলমোহরযুক্ত চালের বস্তা শাজাহানের বাড়িতে ঢুকেছে এবং বের হয়েছে, এটা আমি জানি। খাদ্যগুদামের সিসি ক্যামেরা চেক করলেই বোঝা যাবে চালের বস্তা সেখান থেকেই বের হয়েছে। দুর্গাপুর গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ চাল পাচারের সঙ্গে জড়িত। আর এ কর্মকর্তাকে ইউএনও কেন রক্ষা করতে চাচ্ছেন—সেটি আমার বোধগম্য নয়। এ ঘটনার তদন্ত প্রয়োজন।’
সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য গতকাল রোববার দুপুরে দুর্গাপুর খাদ্যগুদামে যাওয়া হয়। এ সময় প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম কৌশলে গুদাম থেকে চলে যান। এরপর তাঁর ফোন বন্ধ করে দেন। আজ দুপুরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এই চালের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। কার চাল শাজাহানের বাড়ি গেছে, বস্তায় চাল ছিল নাকি ভুসি ছিল, কিছুই বলতে পারব না।’ এরপর ফোন কেটে দেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজশাহীর ১২টি সরকারি খাদ্যগুদামে শতকরা ৮০ শতাংশ নিম্নমানের পচা লাল চাল মজুত করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আজকের পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ নিয়ে খাদ্য বিভাগে তোলপাড় চলছে। ইতিমধ্যে দুর্গাপুর ও পার্শ্ববর্তী বাগমারা উপজেলার পাঁচটি গুদাম থেকে ৯৫৪ বস্তা পচা চাল অপসারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক পচা চাল সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট ও অসাধু খাদ্য কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছেন। বাগমারার ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়াকে ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে।
পচা চাল দুর্গাপুর খাদ্যগুদামেও পাওয়া যায়। তবে সেখানকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আর তাঁর গুদাম থেকে নৈশপ্রহরী শাজাহানের বাড়িতে চাল নেওয়া এবং জানাজানি হওয়ায় বের করে অজ্ঞাতনামা স্থানে নেওয়ার বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। আমাকে এ রকম ঘটনা কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’
নোয়াখালী হাতিয়ায় বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের ধাওয়ায় ডুবে যাওয়া ট্রলারের কিছু অংশ ধরে ২৪ ঘণ্টা সাগরে ভেসে ছিলেন ১৮ জেলে। পরে অন্য ট্রলারের জেলেদের সহায়তায় বেঁচে ফিরেছেন তাঁরা। আজ সোমবার বিকেলে উপজেলার চরঈশ্বর বাংলাবাজার ঘাটে উদ্ধার হওয়া জেলেদের নিয়ে আসা হয়।
৭ মিনিট আগেহবিগঞ্জে অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে একজন নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার বিসিক শিল্পনগরী-সংলগ্ন সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১৪ মিনিট আগেশেরপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে দুটি গরুর ঢুকে পড়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাত থেকে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন নেটিজেনরা।
১৬ মিনিট আগেপ্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে মোটরসাইকেলে চড়ে স্বামীর সঙ্গে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন নাসিমা। এ সময় অক্সিজেনের পাবলিক স্কুলগেট এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অটোরিকশা মোটরসাইকেলটিতে ধাক্কা দেয়। এতে নাসিমা নিচে পড়ে গেলে পেছন থেকে আসা একটি ট্রাক তাঁকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে উপস্থিত...
২৫ মিনিট আগে