Ajker Patrika

খাদ্য বিভাগের ১৪০ বস্তা চাল গায়েব, ‘ধামাচাপায়’ ইউএনও

 রিমন রহমান, রাজশাহী
সরকারি খাদ্যগুদামের চাল নেওয়া হয় গুদামের এক নৈশপ্রহরীর বাড়িতে। ছবি: সংগৃহীত
সরকারি খাদ্যগুদামের চাল নেওয়া হয় গুদামের এক নৈশপ্রহরীর বাড়িতে। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর দুর্গাপুরে খাদ্য বিভাগের ১৪০ বস্তা চাল গায়েব হয়ে গেছে। সাত টন এই চালের বাজারমূল্য আড়াই লাখ টাকা। ঘটনা জানাজানি হলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন তা ধামাচাপা দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি চাল লোপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় এক যুবদল নেতাকে বলেছেন, ‘আপনি জিজ্ঞাসা করার কে?’ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করারও হুমকি দেখিয়েছেন তিনি।

এ নিয়ে ফেসবুকে এসে লাইভ করেছেন রেজাউল করিম নামের ওই যুবদল নেতা। চাল লোপাটের ওই ঘটনা ঘটে গত ২৮ আগস্ট। সেদিন খাদ্যগুদাম থেকে চালগুলো গুদামের নৈশপ্রহরী শাজাহান আলীর বাড়িতে ঢোকানো হচ্ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় দ্রুতই সেখান থেকে আবার চাল সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে পরে ওই চাল কোথায় গেছে, এর হদিস মেলেনি। যদিও শাজাহানের বাড়িতে চাল ঢোকানো ও বের করার ভিডিও রয়েছে।

ফেসবুক লাইভে দুর্গাপুর পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য রেজাউল করিম বলেন, ‘যে কাজ সাংবাদিকদের করার কথা, সে কাজ আজ সাধারণ মানুষকে করতে হচ্ছে। গরিব মানুষের ১৪০ বস্তা চাল খাদ্যগুদাম থেকে চুরি করে খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম ও ইয়াসিন আলী নৈশপ্রহরী শাজাহানের সহযোগিতায় তার বাসায় রাখে। এর যথাযথ প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি ইউএনও স্যারের নাম বলেন। তাঁর নির্দেশেই নাকি এই চাল শাজাহানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।’

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও ভিডিওতে দেখা গেছে, গত ২৮ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় একটি চালের বস্তাভর্তি ট্রলি শাজাহানের বাড়ির সামনের রাস্তায় গিয়ে থামে। এ সময় ২০ জন শ্রমিকও আসেন। তাঁরা সরু রাস্তা দিয়ে প্রায় দেড় শ গজ দূরে চালের বস্তাগুলো শাজাহানের বাড়িতে নেওয়া শুরু করেন। এ সময় শাজাহানের আপন বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম সরকারি চাল বাড়িতে ঢুকতে দেখে বিস্মিত হন। জাহাঙ্গীর এ বিষয়ে শাজাহানকে প্রশ্ন করেন।

তবে শাজাহান বিষয়টি এড়িয়ে যান। এরপর বিপদ আঁচ করতে পেরে নিজে বাঁচতে জাহাঙ্গীর ফোনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান। পরে তিনি দুর্গাপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর হায়দার আলীকেও জানান। এর মধ্যে ঘটনা জানাজানি হয়ে পড়লে স্থানীয় জনগণ ও যুবদলের পৌর শাখার আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য রেজাউল করিমসহ নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা এ সময় ঘটনাটির ভিডিও করেন। সেখানে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, ট্রলিতে ৫০ কেজি ওজনের ১৪০টি চালের বস্তা ছিল।

এ ব্যাপারে নৈশপ্রহরী শাজাহানকে ফোন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তাঁর ভাই জাহাঙ্গীর বলেন, ‘চাল ঢুকতে ও বের হতে দেখেছি। চাল ঢোকানোর কিছুক্ষণ পরই বের করা হয়েছে। তবে বের হওয়ার পর চাল কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা বলতে পারব না।’

সেখানে উপস্থিত যুবদল নেতা মো. সজিব বলেন, ‘শাজাহানের বাড়িতে চাল ঢোকার শেষ পর্যায়ে আমরা যুবদলের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ জানানোর জন্য ইউএনওর কাছে যাই। তবে তিনি এ সময় অফিসে ছিলেন না। আমরা শাজাহানের বাড়ি থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ট্রলিতে করে চাল সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে সেখানে উপস্থিত লোকজন এর ভিডিও করে রাখেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএনওকে না পেয়ে গুদামে যাই। সেখানে খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তবে তিনি সদুত্তর না দিয়ে চাল ব্যবসায়ী বীরেনকে ফোনে ডাকেন। এ সময় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বীরেন আমাদের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। তবে তাঁর প্রস্তাব আমরা প্রত্যাখ্যান করি। এরপরেই ইউএনও অফিস থেকে সুমন নামের এক কর্মচারী ফোন দেন। ইউএনও তাঁর অফিসে আমাদের ডাকছেন বলে জানান।’

ফেসবুকে ঘটনার বিষয়ে লাইভ করা যুবদল নেতা রেজাউল করিম বলেন, ‘ইউএনও সাবরিনা শারমিন অফিসে ডাকলে আমরা যাই। জিজ্ঞাসা করি, সরকারি চাল নৈশপ্রহরী শাজাহানের বাড়িতে কীভাবে গেল? এ সময় ইউএনও উত্তেজিত হয়ে বলেন, “আপনি জিজ্ঞাসা করার কে?” আমি বলি, আমি বাংলাদেশের নাগরিক। এটা জানার অধিকার আছে। ইউএনও তখন বলেন, “বেশি কথা বললে আপনার বিরুদ্ধে মামলা করব।” এ সময় ইউএনও এক আনসার সদস্যকে দিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এই ভেবে যে, ফোনে ভিডিও আছে।’

রেজাউল করিম বলেন, ‘শাজাহানের বাড়ির চাল শেষ পর্যন্ত গুদামে ঢুকেছে কি না, এটা আমি জানতে চাই। ১৪০ বস্তা চাল কোথায় গেছে, কী অবস্থায় আছে, তার সঠিক তদন্ত চাই। এ চালের আনুমানিক বাজারমূল্য আড়াই লাখ টাকা। আমি মনে করি, এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে ইউএনও জড়িত আছেন। আর তা না হলে তিনি কেন খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে বাঁচাতে চাইছেন? ঘটনার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

জানতে চাইলে ইউএনও সাবরিনা শারমিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রেজাউলের সঙ্গে এ ধরনের কোনো কথা হয়নি। কী কথা হয়েছে, তা সিসি ক্যামেরা দেখলেই বোঝা যাবে। আমি গুদাম থেকে কিছু নষ্ট চাল জব্দ করেছিলাম। শাজাহানের বাড়িতে কোন চাল গিয়েছিল, সেগুলো বের করে আবার কোথায় নেওয়া হয়েছে, তা খাদ্য বিভাগ বলতে পারবে। এ ঘটনার সঙ্গে আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানো হচ্ছে। এটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরং, আমি শুনেছি যে যুবদল নেতা রেজাউল এক লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে এসব ছড়াচ্ছেন।’

দুর্গাপুর পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম আজম বলেন, ‘নৈশপ্রহরী শাজাহানের বাড়ি থেকে আমার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ১০০ গজ। খাদ্য অধিদপ্তরের সিলমোহরযুক্ত চালের বস্তা শাজাহানের বাড়িতে ঢুকেছে এবং বের হয়েছে, এটা আমি জানি। খাদ্যগুদামের সিসি ক্যামেরা চেক করলেই বোঝা যাবে চালের বস্তা সেখান থেকেই বের হয়েছে। দুর্গাপুর গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ চাল পাচারের সঙ্গে জড়িত। আর এ কর্মকর্তাকে ইউএনও কেন রক্ষা করতে চাচ্ছেন—সেটি আমার বোধগম্য নয়। এ ঘটনার তদন্ত প্রয়োজন।’

সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য গতকাল রোববার দুপুরে দুর্গাপুর খাদ্যগুদামে যাওয়া হয়। এ সময় প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম কৌশলে গুদাম থেকে চলে যান। এরপর তাঁর ফোন বন্ধ করে দেন। আজ দুপুরে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এই চালের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। কার চাল শাজাহানের বাড়ি গেছে, বস্তায় চাল ছিল নাকি ভুসি ছিল, কিছুই বলতে পারব না।’ এরপর ফোন কেটে দেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজশাহীর ১২টি সরকারি খাদ্যগুদামে শতকরা ৮০ শতাংশ নিম্নমানের পচা লাল চাল মজুত করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আজকের পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ নিয়ে খাদ্য বিভাগে তোলপাড় চলছে। ইতিমধ্যে দুর্গাপুর ও পার্শ্ববর্তী বাগমারা উপজেলার পাঁচটি গুদাম থেকে ৯৫৪ বস্তা পচা চাল অপসারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক পচা চাল সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেট ও অসাধু খাদ্য কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিও গঠন করেছেন। বাগমারার ভবানীগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়াকে ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে।

পচা চাল দুর্গাপুর খাদ্যগুদামেও পাওয়া যায়। তবে সেখানকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আর তাঁর গুদাম থেকে নৈশপ্রহরী শাজাহানের বাড়িতে চাল নেওয়া এবং জানাজানি হওয়ায় বের করে অজ্ঞাতনামা স্থানে নেওয়ার বিষয়টি জানা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। আমাকে এ রকম ঘটনা কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে বেঁচে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি

গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে জালাল উদ্দীন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তে জালাল উদ্দীন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

গাজীপুরের শ্রীপুরে দৌড়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে যান কৃষক জালাল উদ্দীন। পুরো ট্রেন তাঁর ওপর দিয়ে গেলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তিনি। গতকাল রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। নিহত জালাল উদ্দীন (৪৫) ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআগলী ইউনিয়নের নিধিরচর গ্রামের মো. তৈয়ব উদ্দিনের ছেলে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যুর আগে জালাল উদ্দীনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, শ্রীপুর রেলস্টেশনে দাঁড়ানো মোহনগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন। এ সময় তিনি ট্রেনে উঠতে দৌড় দেন। একই সময়ে স্টেশনের এক নম্বর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনটিও ছেড়ে দেয়। এ সময় পা পিছলে ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে চলে যান তিনি। এর পরের ঘটনা বলতে পারেননি গুরুতর আহত জালাল উদ্দীন।

স্থানীয় দোকানি মনির হোসেন জানান, স্টেশনে দুটি ভিন্ন লাইনে দুটি ট্রেন দাঁড়ানো ছিল এবং একই সঙ্গে ট্রেন দুটি ছাড়া শুরু করে। হঠাৎ জালাল উদ্দীন এক নম্বর লাইনে দৌড়ালে পা পিছলে চোখের পলকে ট্রেনের নিচে পড়ে যান। জামালপুর কমিউটার ট্রেনটি তাঁর ওপর দিয়ে চলে যায়। ট্রেনটি চলে যাওয়ার পরপরই স্টেশনের লোকজনের সহযোগিতায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তিনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলছিলেন এবং নিজের নাম-ঠিকানা বলতে পারছিলেন। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে চরআগলী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শহিদুল ইসলাম দুলু বলেন, রাতেই তিনি মারা গেছে। আজ সোমবার বেলা ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘গতকাল রোববার রাত ৯টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় কয়েকজন মানুষ জালাল উদ্দীন নামে একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।’

শ্রীপুর রেলস্টেশন মাস্টার মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মৃত্যুর বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তা ছাড়া বিষয়টি রেলওয়ে পুলিশ দেখবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে এনসিপি নেতা পাটওয়ারীর কুশপুতুল পোড়াল জিয়া সাইবার ফোর্স

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৩২
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপির পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের করণীয় এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) নোয়াখালী জেলা শাখার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার রাতে নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল এবং তাঁর ছবিসংবলিত কুশপুত্তলিকা দাহ করে সভায় অংশগ্রহণকারীরা।

নোয়াখালী জিয়া সাইবার ফোর্সের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হারুনুর অর রশিদ আজাদ, নোয়াখালী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম পলাশসহ আরও অনেকে।

এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সভায় বক্তারা বলেন, অদৃশ্য শক্তি ক্রমশ দৃশ্যমান হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার করে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছে। এ অপপ্রচার রুখে দিতে হলে বিএনপির জিয়া সাইবার ফোর্স ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের সঠিক তথ্য ছবি ও প্রমাণ দিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে এবং দল থেকে যাকে ধানের শীষ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাঁর পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে।

সভা শেষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার কারণে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল এবং তাঁর ছবিসংবলিত কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে তরুণকে গুলি করে হত্যা, বিএনপির দুই গ্রুপে উত্তেজনা

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মুন্সিগঞ্জের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি গ্রামে প্রতিপক্ষের গুলিতে তুহিন দেওয়ান (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। রোববার রাত ১০টার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত তুহিন দেওয়ান মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ বেহেরকান্দি এলাকার ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি সেলিম দেওয়ানের ছেলে।মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি ও মুন্সিকান্দি গ্রামের বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এতে স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত তুহিন মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদ মোল্লা ও বিএনপি নেতা আতিক মল্লিকের অনুসারী।

নিহতের চাচাতো ভাই আকাশ দেওয়ান জানান, রোববার রাতে তুহিন হাঁটার জন্য বাসা থেকে বের হয়। এ সময় মুন্সিকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ওজির আলী ও আওলাদ গ্রুপের অনুসারী লিটন ব্যাপারীর নেতৃত্বে পেছন থেকে তুহিনকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও গুলি করে। এ সময় তুহিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে তাদের মধ্যে পূর্বের বিরোধ ছিল বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রান্ত সর্দার জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর পিঠে ও ঘাড়ে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির জানান, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে মৌসুমের প্রথম কুয়াশা: তাপমাত্রা কমে ২০-এর নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে নেমে এসেছে এ বছরের প্রথম কুয়াশা। সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোর থেকেই রাজশাহী শহর ও আশপাশের উপজেলার গ্রামগুলোর চারপাশ মোড়ানো ছিল ঘন কুয়াশার চাদরে। এই কুয়াশাময় সকাল যেন জানিয়ে দিয়েছে, আসছে শীত, আসছে স্নিগ্ধতার মৌসুম।

শীতের এমন আগমনী ছোঁয়ায় বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ। কুয়াশাঢাকা সকাল জানিয়ে দিচ্ছে, শীত আর বেশি দূরে নয়। এদিন ভোরের আলো ফুটলেও মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে চলতে দেখা যায় হেডলাইট জ্বালিয়ে। কুয়াশা ভেদ করে গন্তব্যের পথে ছুটে যায় মানুষ।

এদিকে গ্রামের মাঠে শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা যেন প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠে। মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো মিলেমিশে সৃষ্টি করে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা

শহরের রেলগেট এলাকায় কাজের সন্ধানে আসা শ্রমিক আবদুল জব্বার বলেন, ‘আজকের সকালেই এবার প্রথমবার শীত টের পেলাম। এখন থেকে হয়তো শীত বাড়বে।’

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, সোমবার ভোরে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন রোববার ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ২৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এখন থেকে তাপমাত্রা কমবে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত