Ajker Patrika

শেরপুরে নদীতে বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য নিষ্কাশনের প্রতিবাদে মানববন্ধন 

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৩, ০০: ৫৯
শেরপুরে নদীতে বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য নিষ্কাশনের প্রতিবাদে মানববন্ধন 

বগুড়ার শেরপুরে ফুলজোড় নদীতে বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য নিষ্কাশনের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সীমাবাড়ি ইউনিয়নের বেটখৈর সকাল বাজার এলাকার ফুলজোড় নদীর তীরে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে স্থানীয় শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। স্থানীয় ফুলজোড় নদী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সীমাবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান। বক্তব্য দেন মৎস্যচাষি তৌহিদুল ইসলাম বাবু, আবুল কালাম আজাদ, জয়নাল আবেদীন, আহসান হাবীব, হাসান উল বান্না সেতু, সতীশ হাওয়ালদার, হাসিনুর ইসলাম প্রমুখ।

এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা আহসান হাবীব বলেন, ‘কোনো প্রকার আইনের তোয়াক্কা না করে শেরপুরে এসআর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড নামের দুটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ৫ বছর ধরে মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরাসরি কারখানার বর্জ্য বাঙালি নদীতে ফেলা শুরু করে। এর পরে এসআর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড রাতের আঁধারে ট্যাংক লরিতে করে হাইড্রক্লোরিক অ্যাসিড মিশ্রিত বিষাক্ত বর্জ্য বাঙালি ও ফুলজোর নদীতে ফেলে। সম্প্রতি তারাও সরাসরি পাইপ লাইনের মাধ্যমে বর্জ্য নদীতে ফেলছেন। এর ফলে দুই নদীর উজান ও ভাটিতে কমপক্ষে ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে।’

মৎস্যজীবী সতীশ হাওয়ালদার বলেন, ‘এলাকার প্রায় ৫০০ মৎস্যজীবী পরিবার এই ফুলজোড় বা বাঙালি নদীর ওপর নির্ভরশীল। এখন নদী মাছ শূন্য হয়ে গেছে। তাই আমরা বেকার হয়েছি। এমনকি খাবার মাছ পর্যন্ত কিনে খেতে হচ্ছে।’

বেটখৈর গ্রামের মুদি দোকানি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আমার এক প্রতিবেশী নদীর বিষাক্ত পানি দিয়ে ধানের জমিতে সেচ দিয়েছে। এর ফলে তাঁর ধানের গাছ পুড়ে গেছে। সেই পানি আমার পুকুরে প্রবেশ করায় সব মাছ মারা গেছে। এতে আমার লক্ষাধিক টাকার মাছ মারা গেছে।’

এলাকার তরুণ মৎস্যচাষি তৌহিদুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আমি ফুলজোর নদীতে খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ চাষ করি। ৩০টি খাঁচায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার মাছ ছিল। ৪ দিন আগে এসআর কেমিক্যালের বিষাক্ত বর্জ্যে সব মাছ মারা গেছে। এর আগেও প্রায় ৫ লাখ টাকার মাছ মারা গিয়েছিল। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা হয়নি।’

তবে নদীতে বিষাক্ত বর্জ্য নিষ্কাশনের কথা অস্বীকার করেছেন এসআর কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এর মহাব্যবস্থাপক সামসুজ্জামান সেন্টু। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই কারখানায় পরীক্ষামূলকভাবে ক্লোরিন উৎপন্ন করা হয়। আমাদের বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা আছে। তাই বর্জ্য নদীতে ফেলার প্রশ্নই আসে না। এছাড়া এটা কারখানার মালিক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের নির্বাচনী এলাকা। তাই এলাকার মানুষের ক্ষতি হবে এমন কাজ না করার জন্য কড়া নির্দেশনা রয়েছে।’

এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত