Ajker Patrika

লালপুরে অটোরিকশা থেকে কেউ চাঁদা নিচ্ছেন না, স্বস্তিতে চালকেরা

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১৫: ১৯
লালপুরে অটোরিকশা থেকে কেউ চাঁদা নিচ্ছেন না, স্বস্তিতে চালকেরা

নাটোরের লালপুরে সড়কে চলাচল করা সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদা তোলা বন্ধ হয়েছে। গত ৫ থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন সিএনজি স্ট্যান্ডে চালকদের কাছ থেকে কেউ চাঁদা আদায় করতে আসেননি। এতে স্বস্তি প্রকাশ করছেন চালকেরা। 

আজ বুধবার সরেজমিনে লালপুর ত্রিমোহনী চত্বর ঘুরে জানা গেছে, লালপুর থেকে প্রতিদিন জেলার বনপাড়া, রাজশাহীর বাঘা, পাবনার ঈশ্বরদীসহ বিভিন্ন স্থানে চার শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। এসব স্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন নামে দৈনিক চাঁদা তোলা হতো। বিভিন্ন সময়ে শাসক দলের নেতাদের ইন্ধনে অটোরিকশা সমিতির প্রভাবশালী নেতারা এসব চাঁদাবাজির নেতৃত্বে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বিগত সরকারের মদদপুষ্ট নেতারা পলাতক রয়েছেন। এরপর শিক্ষার্থীরা সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করাসহ তদারকি শুরু করলে কাউকে চাঁদা তুলতে দেখা যায়নি। 

অটোচালকেরা জানান, অটোরিকশা রেজিস্ট্রেশনবিহীন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সমিতিতে নতুন গাড়ি অন্তর্ভুক্ত করানোর জন্য ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হতো চালকদের। তবে এসব বিষয়ে নিরাপত্তার অভাবে কেউ মুখ খোলেন না। প্রশাসন ও গণমাধ্যমের তৎপরতায় সড়কে মাঝেমধ্যে চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও স্ট্যান্ডগুলোতে চেইন মাস্টারের নামে চাঁদা উত্তোলন করা হতো। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অটোচালক জানান, তাঁরা বিভিন্নভাবে জমানো টাকা দিয়ে বা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অটোরিকশা কিনেছেন। কিন্তু তা সড়কে নামাতে গিয়ে সমিতিতে ভর্তি, মাসে অনন্ত ৩০০ টাকা চেইন মাস্টারের চাঁদা, এক উপজেলা থেকে আরেক উপজেলায় গেলে বাড়তি চাঁদা দিতে হতো। সড়কে চলাচলকারী ৪০০ যানবাহন থেকে মাসে চাঁদা আদায় করা হতো লাখ লাখ টাকা। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় কোনো চালক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো টাকা ব্যয় করতে দেখা যায়নি। এখন স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি না হওয়ায় চালকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। 

নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের লালপুর উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুল মোত্তালেব রায়হান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লালপুর উপজেলার সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ বাকি বলেন, ‘আমরা চাই সড়কে চাঁদাবাজি চিরদিনের জন্য বন্ধ হোক। যারাই এর সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের আইনের আওতায় আনা দরকার। আর ভবিষ্যতে যদি কেউ আবারও চাঁদাবাজিতে জড়িত হয়, তাঁদের অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। নইলে তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ হবে।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘সড়কে কেউ কোনো ধরনের চাঁদাবাজি করার চেষ্টা করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: মির্জা আব্বাসকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের অভিযোগে ‘দৈনিক আজকের কণ্ঠ’ নামের একটি নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জোষিতা ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান ভূঁইয়া।

আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে অভিযোগটি তদন্তের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দিয়েছেন। অনলাইন নিউজ পোর্টালটির ফেসবুক পেজের অ্যাডমিনসহ অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের আসামি করে মামলা করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে ও সেই সঙ্গে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনাময় প্রার্থীদের কাছ থেকে অন্য প্রকার অবৈধ সুবিধা আদায়ের চেষ্টার অংশ হিসেবে আজকের কণ্ঠ জেনেশুনে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে এবং সম্ভাবনাময় প্রার্থীদের ব্যক্তিগত চরিত্র সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি দিয়ে আসছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর ঢাকার বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়।

মামলার বাদী বলেছেন, আজকের কণ্ঠ ও এর সহযোগীরা ১২ ডিসেম্বর বেলা ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে ‘মির্জা আব্বাসের ক্যাডারদের গুলিতে বিদ্ধ ওসমান হাদি’ শীর্ষক বিবৃতি প্রদান ও প্রকাশ করে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

বাদী আরও বলেছেন, শুধু বিএনপি ঘোষিত ঢাকা-৮ আসনের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার সমূহ সম্ভাবনাময় প্রার্থী মির্জা আব্বাসের ব্যক্তিগত চরিত্র ও আচরণ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে এই সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে, দলের নেতা-কর্মীদের সম্মানহানি হয়েছে এবং দলীয় কর্মী হিসেবে তাঁরও মানহানি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘিওরে সারবোঝাই ট্রাক উল্টে পড়ল নদীতে, ৬ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি 
ইছামতী নদীতে সারের বস্তাবোঝাই ট্রাকটি উল্টে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইছামতী নদীতে সারের বস্তাবোঝাই ট্রাকটি উল্টে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মানিকগঞ্জের ঘিওরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সারবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে ইছামতী নদীতে পড়ে গেছে। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার ঘিওর বাজার-সংলগ্ন কুস্তা বন্দর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকার সার নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। দুর্ঘটনায় ট্রাকের চালক ও হেলপার সামান্য আহত হয়েছেন।

ট্রাকটিতে বিভিন্ন প্রকারের সারের প্রায় ৫৫০টি বস্তা ছিল। ঘিওরের ক্ষতিগ্রস্ত সার ব্যবসায়ী ওয়াজেদ আলী জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঘিওর ফুলহারা বাজারের ডিলারদের জন্য সার নিয়ে ট্রাকটি ঘিওর বাজারের উদ্দেশে আসছিল। তবে চালক মূল সড়ক ব্যবহার না করে ভুলবশত একটি ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা দিয়ে বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করলে ট্রাকটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে যায়। তিনি চালকের ‘খামখেয়ালি’ আচরণকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আশিষ, আবুল হোসেন, জবেদ আলী জানান, ঘিওর কুস্তা বন্দর গরুহাট-সংলগ্ন রাস্তাটি অনেক দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সাধারণত এই পথে বড় যানবাহন চলাচল করে না। আজ সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ করে সারবোঝাই ট্রাকটি ওই রাস্তায় ঢুকতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মাহাবুব বলেন, দুর্ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। সার ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নদীতে পড়ে যাওয়া সার উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।

এদিকে নদীর স্বল্প পানিতে সার মিশে যাওয়ায় পরিবেশ দূষণ, মাছের ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তহমিনা খাতুন জানান, ট্রাক উদ্ধারের পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেরুর সাবেক এমডিসহ ১০ কর্মকর্তার দণ্ড, বেতন বৃদ্ধি স্থগিত

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড। ছবি: আজকের পত্রিকা
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড। ছবি: আজকের পত্রিকা

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১০ কর্মকর্তাকে গুরু ও লঘুদণ্ড দিয়েছে চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। চিনিকলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের বিষয়ে কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) এ-সংক্রান্ত আদেশের চিঠি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান রশিদুল হাসান স্বাক্ষরিত আদেশ থেকে জানা গেছে, সাবেক এমডিসহ চার কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড হিসেবে আগামী ৩০ জুন ২০২৮ সাল পর্যন্ত তাঁদের বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা হয়েছে। অপর ছয়জনকে লঘুদণ্ড হিসেবে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

চিনিকল সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কেরু চিনিকলে মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণপ্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। ২০২৩ সালের মে মাসে যখন দেশের সব চিনিকলের মৌসুমি শ্রমিক ও কর্মচারীদের স্থায়ীকরণের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়, তখন সারা দেশে একযোগে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেরু চিনিকলে ১৪০ জন শ্রমিক ও কর্মচারী পরীক্ষায় অংশ নেন।

কিন্তু কেরু চিনিকলে মূল অভিযোগ ওঠে স্থায়ীকরণে মেধাভিত্তিক নির্বাচন উপেক্ষা করা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণ না করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের। এ বিষয়ে বঞ্চিত কর্মচারীদের লিখিত অভিযোগ ও মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের সচিব চৌধুরী শহিদুল্লাহ কায়ছার ২০২৩ সালের ১৫ মে এক জরুরি পত্রে কেরু চিনিকলের এমডিকে মৌসুমি শ্রমিকদের স্থায়ীকরণের সব কার্যক্রম অবিলম্বে স্থগিত করার নির্দেশ দেন।

দেশের অন্যান্য চিনিকল এই নির্দেশনা মেনে নিলেও কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষ নির্দেশ অমান্য করে পরীক্ষার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৪০ জনের মধ্যে ১০৪ জনকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে স্থায়ীকরণ সম্পন্ন করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তৎকালীন করপোরেশন চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম ২০২৩ সালের ১৭ মে কেরু চিনিকলের এমডি মোশাররফ হোসেনের কাছে কৈফিয়ত তলব করেন। ঘটনাটি পরে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের পৃথক দুটি তদন্ত কমিটির মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হয়। তদন্ত শেষে ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আদেশপত্র থেকে জানা গেছে, তৎকালীন এমডি মো. মোশাররফ হোসেন, সদর দপ্তরের কর্মকর্তা সাইফুল আলম, কেরু চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. ইউসুফ আলী ও লেবার অফিসার মো. আল আমিনের বিরুদ্ধে করপোরেশন প্রবিধিমালা অনুযায়ী গুরুদণ্ড ও বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা হয়েছে। এই শাস্তি আগামী ৩০ জুন ২০২৮ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

এ ছাড়া ওই আদেশে মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) আব্দুস সাত্তার, মহাব্যবস্থাপক (কারখানা) সুমন কুমার সাহা, মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) আশরাফুল আলম ভূঁইয়া, মহাব্যবস্থাপক (ডিস্টিলারি) রাজিবুল হাসান, ব্যবস্থাপক (খামার) সুমন কুমার ও পরিবহন প্রকৌশলী আবু সাঈদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদেশে আরও বলা হয়, ১৯৮৯ সালের প্রবিধিমালার ৩৮ ধারা অনুযায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনা দায়িত্বে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এই শাস্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি কার্যকর হবে না।

এ বিষয়ে দর্শনা কেরু চিনিকলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। তবে এটি অফিশিয়াল বিষয় হওয়ায় এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আগুনের কালো ধোঁয়ার ভেতর আলো হয়ে উঠলেন শাহীন

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
আগুনের ভেতর থেকে কাপড়ের বস্তা বের করতে গিয়ে ধোঁয়ায় মুখ কালো হয়ে যায় শাহীন শিকদারের। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনের ভেতর থেকে কাপড়ের বস্তা বের করতে গিয়ে ধোঁয়ায় মুখ কালো হয়ে যায় শাহীন শিকদারের। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার, উন্নত পোশাক ও সরকারি নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়ে আগুনের ভেতর ঢুকতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে ফুটপাত থেকে কেনা প্যান্ট, ফুলহাতা গেঞ্জি পরে আর মুখে এক টুকরো কাপড় বেঁধে জ্বলন্ত আগুন ও শ্বাসরুদ্ধকর কালো ধোঁয়ার ভেতরে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন এক সাধারণ যুবক। প্রতিবারই বেরিয়ে আসছিলেন বড় বড় বস্তা, কাপড়ের থান আর ঝুট নিয়ে। সেগুলো নিরাপদ জায়গায় ফেলে আবারও অন্ধকারের ভেতরে মিলিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

এভাবেই গতকাল শনিবার কেরানীগঞ্জের আগানগরে জাবালে নূর টাওয়ারে লাগা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অচেনা ব্যবসায়ীদের মালামাল আগুনের হাত থেকে রক্ষা করছিলেন কেরানীগঞ্জের কদমতলীর শহীদ নগরের বাসিন্দা শাহীন শিকদার।

নিজ জেলা শরীয়তপুরে নদীভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে ছোটবেলাতেই শাহীন আশ্রয় নেন কেরানীগঞ্জের কদমতলীতে। সেখানেই বড় হয়েছেন। ফুটপাতে ছোট ব্যবসা করে কোনোমতে চলে তাঁর ছয় সদস্যের সংসার। নিজের জীবনে অভাব-অনটন থাকলেও মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে কখনো পিছপা হন না তিনি।

গতকাল জাবালে নূর টাওয়ারে আগুন লাগার খবর পেয়ে সকালে ছুটে যান শাহীন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজে হাত লাগান। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক মনে হওয়ায় সকাল ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু দুপুরের পরেও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসার খবর পেয়ে আর ঘরে থাকতে পারেননি। আবার ছুটে যান আগুনের মুখে।

শাহীন শিকদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
শাহীন শিকদার। ছবি: আজকের পত্রিকা

দুপুরের পর আগুন যখন এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন কাপড়ের বস্তা আর থানই আগুন বাড়ার বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আগুনের ভয়াবহতা দেখে শাহীন আর অপেক্ষা করেননি। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে কাপড় বস্তা টেনে বের করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলতে থাকেন। ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে এলে সঙ্গে থাকা অন্য স্বেচ্ছাসেবী ও ফায়ার সার্ভিসের সাহায্য নিয়ে কাজ চালিয়ে যান।

সেদিন কালো কালিতে আচ্ছন্ন তাঁর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন শাহীন। আজ রোববার সকালে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘মানবতার টানেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে নেমেছিলাম। মরব না বাঁচব সেটা তখন মাথায় ছিল না। শুধু মনে হচ্ছিল, আগুন যেন আর না বাড়ে।’

জাবালে নূর টাওয়ারের এক ব্যবসায়ী আসিফ বলেন, ‘এই লোকটির অবদান কখনো ভোলার মতো না। আমরা তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।’ প্রত্যক্ষদর্শী তানাকা ইসলাম বলেন, ‘আজ সবার চাইতে বেশি কাজ করেছে এই মানুষটা।’

বন্ধু নাসির উদ্দীন বলেন, ‘শাহীন এমনই। কোনো স্বার্থ ছাড়া যেকোনো মানবিক কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অহংকার নেই। আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি। কখনো খারাপ ব্যবহার করেনি। এমন বন্ধু পেয়ে আমরা গর্বিত।’

শরীয়তপুরে নদীভাঙনে ভেঙে গেছে শাহীনের শৈশবের বাড়ি। ভাঙেনি স্বপ্ন, ভাঙেনি মানবতা। আগুনের ভেতর দাঁড়িয়ে শাহীন প্রমাণ করেছেন, মানুষ বড় হয় সম্পদে নয় বড় হয় হৃদয়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত