Ajker Patrika

মানুষের সঙ্গ ছাড়া ঘুমাতে পারে না এই ছাগল! 

প্রতিনিধি, লালপুর (নাটোর)
মানুষের সঙ্গ ছাড়া ঘুমাতে পারে না এই ছাগল! 

মানুষের সঙ্গ ছাড়া বিছানায় ঘুমায় না ‘বরাত’। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গ ছাড়া সে এক মুহূর্ত থাকে না। এমন বিচিত্র স্বভাবের এক ছাগলের খোঁজ মিলেছে নাটোরের লালপুরের মিল্কিপাড়া গ্রামে। 

আজ বুধবার মিল্কিপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর ছেলে মনোয়ার হোসেন মানার সঙ্গে একই বিছানায় শুয়ে আছে ছাগল। ‘বরাত’ বলে ডাক দিতেই সাড়া দেয় ছাগলটি। কী বলা হচ্ছে তা শোনার আগ্রহ। অচেনা মানুষের ডাকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। 

ছাগল মালিক মো. মনোয়ার হোসেন মানা (৩০) বলেন, ২০১১ সালে শবে বরাতের দিন জন্মগ্রহণ করায় ছাগলটির নাম রাখা হয় ‘বরাত’। এক বছর বয়সে সাদা-কালো রঙের ছাগলটিকে পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকায় কেনেন। তখন ওজন ছিল ১২ কেজি। দুই বছর আগেও ওজন ছিল ৭৫ কেজি। বয়সের ভারে খাওয়া-দাওয়া কমে গেছে। এখন ওজন ৬৫ কেজির ওপরে। 

ছাগলটি বাড়িতে আনার পরে তার প্রতি মায়া জন্মে মানার। একই বিছানায় তার সঙ্গে ঘুমাতে শুরু করেন। বাড়ির একজন সদস্যের মতো তাঁর সঙ্গে আচরণ করেন। ১০ বছর ধরে তার সঙ্গে সখ্য। 

ছাগলটি সম্পর্কে তিনি বলেন, অত্যন্ত বিনয়ী শান্ত স্বভাবের। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছাড়া সে থাকতে পারে না। তিনি না থাকলে পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমায়। প্রস্রাব-পায়খানার সময় বিছানা থেকে নেমে বাইরে যায়। খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। গোসলের সময় একাই বাথরুমে চলে যায়। তখন সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে সুন্দরভাবে গোসল করিয়ে দেন।  খাবার ব্যাপারে খুবই সচেতন। অতিরিক্ত খাবার খায় না। স্বাভাবিক খাবার ছাড়াও সব ধরনের ফল-মূল খেতে ভালোবাসে। প্রত্যেক বেলায় একসঙ্গে ভাত-রুটিও খায়। মাছ-মাংস জাতীয় খাবারের হাতের কোনো কিছু মুখে তুলে না। 

কথা হচ্ছে ছাগল বরাতের সাথে, মনে হয় সে যেন সব বুঝতে পারছে। ছবি বুধবার (১১ আগস্ট ২০২১) তোলামানা প্রাণী হত্যার বিপক্ষে। পরিবারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েক বার ছাগলটিকে কোরবানির কথা বলা হয়। কিন্তু তিনি রাজি হননি। মানুষ হিসেবে পরিবারের সবার যে রকম বাঁচার অধিকার আছে, তেমনি ছাগলটিরও সে অধিকার আছে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ছাগলটি মারা গেলে মানুষের মতো করে কবর দেবেন। 

মানা বলেন, গত ১০ বছরে ছাগলটির তেমন কোনো অসুখ-বিসুখ হয়নি। বয়সের কারণে পায়ে রগের সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন চলাফেরা করতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করছেন। কয়েকবার আমাশা সমস্যা দেখা দেওয়ায় চিকিৎসা করে ভালো হয়ে যায়। 

মানার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ বলেন, ছাগলটিকে নিজের সন্তানের মতোই লালন-পালন করেন। পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে তাকে গণ্য করা হয়। পরিবারের সবাই এটির প্রতি যত্নশীল। কৌতূহলী অনেক মানুষ একে দেখতে বাড়িতে আসেন। 

লালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শুমারি খাতুন বলেন, এটি ব্যতিক্রম স্বভাবের একটি ছাগল। এমন ছাগল সচরাচর দেখা যায় না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টা না যেতেই কাশ্মীরে বিস্ফোরণ!

বিশ্বে প্রথম পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়ানোর পথে কি পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ

লঞ্চের ওপর তরুণীকে প্রকাশ্যে পেটাচ্ছিলেন যুবক, ভিডিও ভাইরাল

ভারতের সেনাপ্রধানের ক্ষমতা বাড়াল কেন্দ্রীয় সরকার

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত