রঞ্জন কুমার দে, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস জমিজমা জালিয়াতি ও অনিয়মের ‘কারখানায়’ পরিণত হয়েছে। ভুয়া খাজনার রসিদ, বন্ধক রাখা জমির অবৈধ দলিল এবং সরকারি বিদ্যালয়ের নামে দানকৃত জমি বিক্রির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি সাধারণ মানুষ পড়ছেন দীর্ঘমেয়াদি আইনি জটিলতায়।
সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য ডিজিটাল সংস্কার এনেছে। নামজারি, খতিয়ান, খাজনা পরিশোধসহ সবকিছুই এখন অনলাইন পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। প্রতিটি কাগজের সঙ্গে QR কোড যুক্ত থাকে, যা মোবাইল ফোন দিয়ে স্ক্যান করলেই সত্যতা যাচাই করা সম্ভব। অথচ এই প্রযুক্তিগত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে একের পর এক ভুয়া কাগজপত্রে জমি রেজিস্ট্রি হয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয় যাচাই করা একজন সাব-রেজিস্ট্রার বা রেজিস্ট্রি কর্মকর্তার জন্য কঠিন কিছু নয়। তবু তারা দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন নিবন্ধন ম্যানুয়াল ২০১৪-এর ৪২(১) ধারার আশ্রয় নিয়ে।
সাব-রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রেজিস্ট্রি অফিসের দায়িত্ব খারিজ বা মালিকানা যাচাই নয়, আমাদের কাজ দলিল গ্রহণ ও নিবন্ধন সম্পন্ন করা।’
তবে দুর্নীতিবিরোধী বিশ্লেষকদের মতে, এটা দায় এড়ানোর কৌশল। প্রযুক্তি থাকার পরও ইচ্ছাকৃতভাবে যাচাই না করে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত মে মাসে গাড়িদহ ইউনিয়নের শাহনাজ বেগম নামে এক নারী ৩.৫ শতক জমি বিক্রি করেন। দলিলে নামজারি নম্বর থাকলেও সেটি ছিল অন্য ইউনিয়নের এক ব্যক্তির নামে। অর্থাৎ, ভুয়া কেস নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে।
২০২৩ সালে পূবালী ব্যাংকের শেরপুর শাখায় বন্ধক রাখা একটি সম্পত্তিও রেজিস্ট্রি হয়ে যায় স্থানীয় এক ব্যক্তির নামে। জমির মালিক পুলক চন্দ্র দত্ত জানান, একজন দাদন ব্যবসায়ী টাকা দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই নিয়েছিল। পরে তিনি জানতে পারেন, সেই স্ট্যাম্প ব্যবহার করে তার অজান্তেই জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে এবং ভুয়া নামে নামজারিও সম্পন্ন হয়েছে। পরে ব্যাংকের আপত্তির ভিত্তিতে সেই নামজারি বাতিল করা হয়।
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে উপজেলার পাঁচ দেউলী পলাশ মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে। বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম মঞ্জু ১৯৯৭ সালে স্কুলের নামে দানকৃত তিন শতক জমি ২০২০ সালে বিক্রি করে দেন স্থানীয় রোকেয়া বেগমের কাছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা যায়, জমিটি স্কুলের নামে খতিয়ানভুক্ত এবং নিয়মিত খাজনাও পরিশোধ করা হচ্ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ২০২৫ সালের ১৪ জুন উপজেলা শিক্ষা অফিস এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তকারী সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ‘স্কুলের নামে জমি খতিয়ানভুক্ত এবং খাজনা পরিশোধের প্রমাণ রয়েছে। কীভাবে জমি রেজিস্ট্রি হলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত শিক্ষক জমি বিক্রির বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন এবং জমি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
জমির ক্রেতা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমি বৈধভাবে দলিল করেছি। অফিসে জমা দেওয়ার সময় কেউ কিছু বলেনি। এখন বলছে স্কুলের জমি।’
বগুড়া জেলা জজকোর্টের আইনজীবী মাহবুব আলী শাহ্ বলেন, ‘একটা কাগজের QR কোড যাচাই করতে ৩০ সেকেন্ড লাগে। অথচ রেজিস্ট্রি অফিস এসব করে না, কারণ তাদের একাংশ এই জালিয়াতির সুবিধাভোগী। ভূমিসংক্রান্ত অধিকাংশ মামলাই ভুয়া দলিল ও মালিকানা নিয়ে হয়। প্রশাসনে প্রতিটি স্তরে জবাবদিহি নিশ্চিত করা না গেলে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হতেই থাকবে।’
দুর্নীতি দমন কমিশন বগুড়া জেলার উপপরিচালক মাহফুজ ইকবাল বলেন, ‘জমির নিবন্ধন সম্পন্ন করার সময় কাজপত্রের সঠিকতা যাচাই করা একজন কর্মকর্তার প্রাথমিক দায়িত্ব। আমাদের কাছে এ ধরনের অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের জমি বিক্রিসহ সাম্প্রতিক রেজিস্ট্রি অনিয়মের ঘটনায় তদন্ত চলছে। প্রয়োজনে সাব-রেজিস্ট্রারকেও জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস জমিজমা জালিয়াতি ও অনিয়মের ‘কারখানায়’ পরিণত হয়েছে। ভুয়া খাজনার রসিদ, বন্ধক রাখা জমির অবৈধ দলিল এবং সরকারি বিদ্যালয়ের নামে দানকৃত জমি বিক্রির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এতে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি সাধারণ মানুষ পড়ছেন দীর্ঘমেয়াদি আইনি জটিলতায়।
সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য ডিজিটাল সংস্কার এনেছে। নামজারি, খতিয়ান, খাজনা পরিশোধসহ সবকিছুই এখন অনলাইন পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। প্রতিটি কাগজের সঙ্গে QR কোড যুক্ত থাকে, যা মোবাইল ফোন দিয়ে স্ক্যান করলেই সত্যতা যাচাই করা সম্ভব। অথচ এই প্রযুক্তিগত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে একের পর এক ভুয়া কাগজপত্রে জমি রেজিস্ট্রি হয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয় যাচাই করা একজন সাব-রেজিস্ট্রার বা রেজিস্ট্রি কর্মকর্তার জন্য কঠিন কিছু নয়। তবু তারা দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন নিবন্ধন ম্যানুয়াল ২০১৪-এর ৪২(১) ধারার আশ্রয় নিয়ে।
সাব-রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রেজিস্ট্রি অফিসের দায়িত্ব খারিজ বা মালিকানা যাচাই নয়, আমাদের কাজ দলিল গ্রহণ ও নিবন্ধন সম্পন্ন করা।’
তবে দুর্নীতিবিরোধী বিশ্লেষকদের মতে, এটা দায় এড়ানোর কৌশল। প্রযুক্তি থাকার পরও ইচ্ছাকৃতভাবে যাচাই না করে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত মে মাসে গাড়িদহ ইউনিয়নের শাহনাজ বেগম নামে এক নারী ৩.৫ শতক জমি বিক্রি করেন। দলিলে নামজারি নম্বর থাকলেও সেটি ছিল অন্য ইউনিয়নের এক ব্যক্তির নামে। অর্থাৎ, ভুয়া কেস নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে।
২০২৩ সালে পূবালী ব্যাংকের শেরপুর শাখায় বন্ধক রাখা একটি সম্পত্তিও রেজিস্ট্রি হয়ে যায় স্থানীয় এক ব্যক্তির নামে। জমির মালিক পুলক চন্দ্র দত্ত জানান, একজন দাদন ব্যবসায়ী টাকা দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে সই নিয়েছিল। পরে তিনি জানতে পারেন, সেই স্ট্যাম্প ব্যবহার করে তার অজান্তেই জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়েছে এবং ভুয়া নামে নামজারিও সম্পন্ন হয়েছে। পরে ব্যাংকের আপত্তির ভিত্তিতে সেই নামজারি বাতিল করা হয়।
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে উপজেলার পাঁচ দেউলী পলাশ মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে। বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম মঞ্জু ১৯৯৭ সালে স্কুলের নামে দানকৃত তিন শতক জমি ২০২০ সালে বিক্রি করে দেন স্থানীয় রোকেয়া বেগমের কাছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা যায়, জমিটি স্কুলের নামে খতিয়ানভুক্ত এবং নিয়মিত খাজনাও পরিশোধ করা হচ্ছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ২০২৫ সালের ১৪ জুন উপজেলা শিক্ষা অফিস এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তকারী সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ‘স্কুলের নামে জমি খতিয়ানভুক্ত এবং খাজনা পরিশোধের প্রমাণ রয়েছে। কীভাবে জমি রেজিস্ট্রি হলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত শিক্ষক জমি বিক্রির বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন এবং জমি ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
জমির ক্রেতা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমি বৈধভাবে দলিল করেছি। অফিসে জমা দেওয়ার সময় কেউ কিছু বলেনি। এখন বলছে স্কুলের জমি।’
বগুড়া জেলা জজকোর্টের আইনজীবী মাহবুব আলী শাহ্ বলেন, ‘একটা কাগজের QR কোড যাচাই করতে ৩০ সেকেন্ড লাগে। অথচ রেজিস্ট্রি অফিস এসব করে না, কারণ তাদের একাংশ এই জালিয়াতির সুবিধাভোগী। ভূমিসংক্রান্ত অধিকাংশ মামলাই ভুয়া দলিল ও মালিকানা নিয়ে হয়। প্রশাসনে প্রতিটি স্তরে জবাবদিহি নিশ্চিত করা না গেলে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হতেই থাকবে।’
দুর্নীতি দমন কমিশন বগুড়া জেলার উপপরিচালক মাহফুজ ইকবাল বলেন, ‘জমির নিবন্ধন সম্পন্ন করার সময় কাজপত্রের সঠিকতা যাচাই করা একজন কর্মকর্তার প্রাথমিক দায়িত্ব। আমাদের কাছে এ ধরনের অভিযোগ এলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের জমি বিক্রিসহ সাম্প্রতিক রেজিস্ট্রি অনিয়মের ঘটনায় তদন্ত চলছে। প্রয়োজনে সাব-রেজিস্ট্রারকেও জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার পলাশী পূর্বপাড়ার ভ্যানচালক মিজানুর রহমান জ্বর-ব্যথা নিয়ে গিয়েছিলেন পাশের বাসুদেবপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে। সেখানে কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মিতা রাণী দত্ত রোগের কথা শুনেই তাঁকে স্থানীয় পল্লিচিকিৎসক বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
২ ঘণ্টা আগেদীর্ঘদিন সংস্কার না করায় রাজধানীর জুরাইন-দয়াগঞ্জ সড়কটি বেহাল হয়ে পড়েছে। সড়কের গেন্ডারিয়া রেলস্টেশনের সামনের অংশে অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এসব খানাখন্দ কোথাও কোথাও এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত গভীর। বৃষ্টির পানি জমে সেসব গর্ত পুকুরের রূপ ধারণ করেছে।
২ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। এই নির্বাচনের মাত্র এক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্র রাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখায় ক্যাম্পাসে সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে বিরোধ আরও বেড়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেরাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার বিভিন্ন দোকান ও গুদামে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ১০০টি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের ব্যবহৃত কুখ্যাত ‘সামুরাই’ চাপাতি ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র।
৫ ঘণ্টা আগে