Ajker Patrika

রাবিতে পোষ্য কোটা: ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে’ স্লোগানে উপাচার্যের গাড়িতে কয়েন নিক্ষেপ

রাবি প্রতিনিধি  
কয়েন ছুড়ে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কয়েন ছুড়ে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে’ স্লোগান দিয়ে উপাচার্যের গাড়িতে কয়েন ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রশাসন ভবন-১-এর সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভর্তি কমিটির সভায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য শর্তসাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় (পোষ্য কোটা) ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এর পর থেকেই বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা পুনর্বহালের ঘোষণার পরপরই উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরে রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলমান ছিল। এতে নতুন বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জোহা চত্বরে এক সমাবেশ করেন তাঁরা ৷ এক ঘণ্টার বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তাঁদের কর্মসূচি স্থগিত করেন।

এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম কাফনের কাপড় পরে এককভাবে আমরণ অনশনে বসেন। পরে আরও আটজন শিক্ষার্থী একাত্মতা প্রকাশ করে অনশনে যোগ দেন। তাঁরা হলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সজিবুর রহমান, সমাজকর্ম বিভাগের আরিফ আলভি, আবু রাহাদ ও সৈয়দ ইসপাহানী, ফলিত গণিত বিভাগের তৌফিকুল ইসলাম, আরবি বিভাগের রমজানুল মোবারক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নাজমুল হক আশিক এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের রেদোয়ান আহমেদ রিফাত।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে সাড়ে ৫টা থেকে তাঁদের আন্দোলন শুরু হয়। আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা অনশন ভাঙাতে এসে ব্যর্থ হয়ে ফিয়ে যান। পরে বেলা ১টার দিকে বৃষ্টিতে ভিজে অনশন কর্মসূচি পালন করার সময় দুজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানা যায়। তাঁরা হলেন, আরবি বিভাগের রমজানুল মোবারক ও সমাজকর্ম বিভাগের সৈয়দ ইসপাহানী। তাঁদের রাবি মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

এ দিন বেলা আড়াইটার দিকে প্রশাসন ভবন-১-এর সামনে টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরবর্তী সময়ে উপাচার্য তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে এলে উপাচার্যের গাড়িতে কয়েন ছুড়ে মারেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে’ স্লোগান দিতে থাকেন।

অনশনরত শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মৃত্যু পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাব। কাফনের কাপড় গায়ে দিয়ে এখানে বসেছি। এই অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল না হলে আমরা এক ফোঁটা পানিও মুখে নেব না।’

সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘রাকসুর আমেজে আবারও পোষ্য কোটা ফিরিয়ে এনে রাকসু বানচালের অপচেষ্টা চলছে। তাঁরা মূলত রাকসুকে জিম্মি করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘পোষ্য কোটাসংক্রান্ত একটা মামলা হাইকোর্টে তালিকাভুক্ত হয়েছে। আমাদের ইতিমধ্যে উকিল নোটিশের উত্তরও দিতে হয়েছে। এটাও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। আমরা তো আইনের বাইরে যেতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় সচল রাখার জন্যই সব মিলিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা ১০ শর্তে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত