Ajker Patrika

বিএনপি নেতা বাচ্চুর গুলি ছোড়ার ভিডিও ভাইরাল

নাটোর প্রতিনিধি
বিএনপি নেতা বাচ্চুর গুলি ছোড়ার ভিডিও ভাইরাল

নাটোরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম বাচ্চুর গুলি ছোড়ার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি ছোড়েন তিনি। বাচ্চু জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক। তবে একটি লাইসেন্স করা রিভলবার থাকার কথা স্বীকার করলেও শনিবার গুলি ছোড়েননি বলে দাবি করেন তিনি।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা শহরের আলাইপুরের জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের গেট লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করছে। বিপরীতে বিএনপি কার্যালয়ের গেটে দাঁড়িয়ে রিভলবার থেকে গুলি ছুড়ছেন শহিদুল ইসলাম বাচ্চু। এ সময় তাঁকে কয়েকজন বিএনপি কর্মী গুলি ছোড়া থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও তিনি গুলি ছুড়েই চলেন। একপর্যায়ে যুবলীগ নেতা সৈয়দ মোজাম্মেল আলী ইটের টুকরো ছুড়ে মারলে কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে ঢুকে যান ফিরোজ বাচ্চু। 

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক বাচ্চু বিনা উসকানিতে পুলিশের সামনে অস্ত্র বের করে গুলি করেন। তাঁকে পুলিশ নিবৃত্ত করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁকে নিবৃত্ত করে। তিনি আরও গুলি করার সুযোগ পেলে হতাহতের ঘটনা বেড়ে যেত। বিএনপির কর্মীরাও তাঁকে থামাতে পারছিলেন না। এ অবস্থায় বাচ্চুর বাইরে থাকা আওয়ামী লীগের জন্য হুমকি। তাঁকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, ‘আমার পিস্তলটি লাইসেন্স করা ও সম্পূর্ণ বৈধ অস্ত্র। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি বারবার আওয়ামী লীগের হামলার শিকার হয়েছি। আত্মরক্ষার্থে আমি সঙ্গে অস্ত্র রাখি। আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনে অস্ত্র ব্যবহার করা অপরাধ না। তবে শনিবারের সংঘর্ষে আমি গুলি ছুড়িনি।’

নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী বলেন, বিএনপির নেতার অস্ত্রটি বৈধ কিনা বা কী কারণে তিনি গুলি ছুড়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে ভূমি উপমন্ত্রী হন বিএনপির বর্তমান রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। সে সময় বাচ্চু ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তখন বাচ্চু ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী।

সে সময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঠিকাদারি, নিয়োগসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন শহিদুল ইসলাম বাচ্চু। বাচ্চুর পর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হন ব্যবসায়ী নেতা আমিনুল হক। ওই কমিটিতে সহসভাপতির দায়িত্ব পান বাচ্চু। ধীরে ধীরে দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব হারিয়ে দলে নিষ্ক্রিয় হন তিনি।

২০১২ সালের ২৬ অক্টোবর গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে শহিদুল ইসলাম বাচ্চুকে বহিষ্কার করে বিএনপি। ওই বছরের ১২ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ১৮ জনসহ ২১ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেন শহিদুল ইসলাম বাচ্চু। পাঁচ বছর পর ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাচ্চুর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এরপর তাঁকে জেলা বিএনপির সহসভাপতি পদ দেন বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।

২০১৯ সালে বিএনপির কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলে বাচ্চু সদস্যপদ পান। ২০২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের মৃত্যু হলে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান শহিদুল ইসলাম বাচ্চু।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত