Ajker Patrika

২১ বছর পর বন্ধুদের আড্ডা-খুনসুটিতে ফিরে এল হারানো শৈশব

কামারখন্দ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৩, ২২: ০৩
২১ বছর পর বন্ধুদের আড্ডা-খুনসুটিতে ফিরে এল হারানো শৈশব

সকাল ৯টা মেঘাচ্ছন্ন আকাশ মুষলধারে বৃষ্টি। ঐতিহ্যবাহী রসুলপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের বারান্দায় বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। তাঁদের কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ গৃহিণী আবার কেউ সরকারি চাকরিজীবী। প্রায় ২১ বছর পর একে অন্যের সঙ্গে দেখা। তাই হাসি, গান আর আড্ডায় তাঁরা যেন ফিরে যান সেই স্কুলজীবনে। 

আজ রোববার সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রসুলপুর আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ে প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন ওই প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা স্কুলজীবন শেষ করেছে ২০০২ সালের দিকে। এরপর কাজের ব্যস্ততায় আর বন্ধুদের দেখা হয়নি। 

স্ত্রী সুমাইয়া ইসলাম ও সন্তান র‍াইয়ানকে নিয়ে স্কুলের পুনর্মিলন অনুষ্ঠানে এসেছেন তানভীর রহমান হীরা। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেট্রোরেলের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। স্কুলজীবনের বন্ধুদের কাছে পেয়ে তিনি আজকের পত্রিকা বললেন, ‘একসঙ্গে পুরোনো বন্ধুদের দেখে খুব ভালো লাগছে। সবার সঙ্গে আড্ডা দিয়ে মন ভরে গেল। কিছুক্ষণের জন্য আমরা আবার সেই পুরোনো দিনে ফিরে গেছি।’ 

স্মৃতি ধরে রাখতে অনেকেই সেলফি তুলে আনন্দে মাতেনসকাল থেকে এমনই আড্ডা, স্মৃতিচারণা ও নানা অনুষ্ঠানে সারা দিন উৎসবমুখর ছিল স্কুল ক্যাম্পাস। স্কুল ক্যাম্পাস সেজেছে বর্ণিল সাজে। 

মোছা. মাকসুদা খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেই কবেকার কথা। আমাদের সেই আড্ডার মাঠ, গল্পের কথাগুলো মনে পড়ে গেল। আজ অনেক বন্ধুকে পেয়েছি। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আবার একত্রিত হতে পারব, তা কখনো চিন্তা করিনি। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা তানভীর, সাজ্জাদ রহমান, স্বদেব চন্দ্র সূত্রধর, সোহাগ, জাহাঙ্গীরসহ যাঁরা এমন একটি সুন্দর দিন উপহার দিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না। তবে এ রকম অনুষ্ঠান যাতে ভবিষ্যতে হয় সেই প্রত্যাশা করি।’ 

কোম্পানি সেক্রেটারি ও হেড অব ব্যাংকিংয়ের সাজ্জাদ রহমান ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট স্বদেব চন্দ্র সূত্রধরের কাছে অনুভূতি জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, ‘এ অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। ফেসবুকে মোটামুটি সবার সঙ্গে যোগাযোগ হয়, কিন্তু সময়ের অভাবে আমরা বন্ধুরা কেউ সরাসরি এক হতে পারিনি। পুনর্মিলনীতে সেই সুযোগটা পেয়েছি, এতে আমার ভালো লাগছে দীর্ঘ ২১ বছর পরে সবাই এক হয়েছি।’ 

সাবেক ও বর্তমান ২২ জন শিক্ষককে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়নওগাঁ জেলায় পুলিশের এএসআই পদে কর্মরত রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি উপেক্ষা করে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা ও আড্ডা দেওয়ার পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আসতে পেরে তাঁর খুবই ভালো লাগছে। 

স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ সরকার মো. ফজলুল করিমের সভাপতিত্বে সকাল ১০টায় স্কুল মাঠে বানানো মঞ্চে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভা শুরু হয়। 

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আহছানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর মো. মিজানুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম ও ডিজিএম পল্লী বিদ্যুতের বিপ্লব কুমার, সাবেক ও বর্তমান ২২ জন শিক্ষকদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। 

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ছাকমান আলী, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমি সুপারভাইজার আনন্দ কুমার মণ্ডল প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত