Ajker Patrika

ভারতীয় নাগরিককে বাড়ি ফেরালেন বাংলার ‘বজরঙ্গি ভাইজান’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আর সালাইন ও তাঁর ভাই ফয়সাল হোসেনের সঙ্গে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ শামসুল হুদা। রোববার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আর সালাইন ও তাঁর ভাই ফয়সাল হোসেনের সঙ্গে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ শামসুল হুদা। রোববার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গ্রেপ্তার হওয়ার দুই মাস পর আদালত সাজা দিয়েছিলেন ১৫ দিন। অর্থাৎ রায় ঘোষণার দেড় মাস আগেই সাজা খাটা শেষ হয়েছিল ভারতীয় নাগরিক আর সালাইন হোসেনের। কিন্তু আইনি জটিলতায় বাড়ি ফেরা হচ্ছিল না তাঁর। কারাগারে ছিলেন আরও প্রায় সাড়ে চার মাস। অবশেষে আজ রোববার সালাইন বাড়ি ফিরলেন ‘বাংলাদেশের বজরঙ্গি ভাইজানের’ সহযোগিতায়।

যুবক আর সালাইনের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে। তাঁর বাবার নাম মৃত হামিদ হোসাইন। তিনি ছিলেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে। আজ তাঁকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরানো হয়। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আমান উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত বছরের ২৯ জুলাই আর সালাইন রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পুলিশ তাঁর নামে একটি মামলা করে পরদিন কারাগারে পাঠায়। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর আদালত অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। বন্দীর হাজতবাস বিবেচনায় গত বছরের ১৪ ডিসেম্বরেই তাঁর সাজাভোগের মেয়াদ শেষ হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় হাইকমিশনের অনুমোদনের পর আঁচ তাঁকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। কারা কর্মকর্তা, বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করে।

আর সালাইন হোসেনের বিষয়টি গত ২২ ফেব্রুয়ারি জানতে পারেন ‘বাংলাদেশের বজরঙ্গি ভাইজান’ খ্যাত ঢাকার সাংবাদিক শামসুল হুদা। তিনি দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটকে থাকা বিদেশি নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরাতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছেন। আর সালাইনকে ফেরাতেও ঢাকায় বিভিন্ন দপ্তরে ছোটাছুটি করেন তিনি। আজ প্রত্যর্পণের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলে ঢাকা থেকে তিনি রাজশাহী ছুটে আসেন। কারাগারের সামনে থেকে আর সালাইনকে নিয়ে কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যান সোনামসজিদ স্থলবন্দরেও। ভারত থেকে সেখানে এসেছিলেন আর সালাইনের ভাই ফয়সাল হোসেন। তিনি ভাইকে বুঝে নিয়ে বাড়ি রওনা দেন। আর সোনামসজিদ থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন বজরঙ্গি ভাইজান।

ফেরার পথে মোবাইলে ফোনে তিনি জানালেন, গত বছরের শেষের দিকে দার্জিলিং থেকে কাজের খোঁজে বেঙ্গালুরু যান আর সালাইন। সেখানে কিছুদিন শেফ হিসেবে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। কিছুদিন পর ভালো কাজের আশায় পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় আসেন। সেখানে কিছুদিন কাজ করে বন্ধুর পরামর্শে বাংলাদেশে রেস্তোরাঁয় কাজ করার উদ্দেশ্যে অবৈধভাবেই এই দেশে প্রবেশ করেন। তারপর প্রায় ছয় মাস ধরে কাজ করছিলেন ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয়। কিন্তু জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের অস্থির সময় তিনি আতঙ্কিত হয়ে দেশে ফেরার উদ্দেশে রাজশাহী সীমান্তের দিকে রওনা হন। ওই সময় সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে তিনি নিজেই থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তীকালে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

শামসুল হুদা জানান, মেয়াদি সাজায় শেষ হলেও বিভিন্ন আইনি জটিলতায় তার ভারতে ফেরাটা আটকে গিয়েছিল। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জানতে পারেন, আর সালাইনের ভাই ফয়সাল হোসেন রাজশাহীতে অবস্থান করছেন ভাইয়ের মামলা নিষ্পত্তির জন্য। ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টি জেনে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যাবাসন বিষয়ক চিঠি ও ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। অবশেষে গত ২১ এপ্রিল ছাড়পত্র পাওয়া যায়। এরপর সব প্রক্রিয়া শেষে আর সালাইনকে তাঁর ভাইয়ের কাছে তুলে দিয়ে এলেন। তিনি এখন খুশিমনে ঢাকায় ফিরে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

পাকিস্তানে হামলায় ভারত কি ‘ব্রহ্মস’ ছুড়েছিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত