Ajker Patrika

সীমান্তে নিহতের মরদেহ ফেরত পাচ্ছে না স্বজনেরা

নওগাঁ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৪৯
সীমান্তে নিহতের মরদেহ ফেরত পাচ্ছে না স্বজনেরা

নওগাঁর পোরশা সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে শুভাস হত্যার ১৯ মাস পেরিয়েছে। এখনো মরদেহ ফেরত পায়নি তাঁর স্বজনেরা। সম্প্রতি সাপাহার সীমান্তে সালাউদ্দিন নামের আরেক ব্যক্তি হত্যাকাণ্ডেরও ২০ দিন পার হয়ে গেছে, তাঁর মরদেহও পায়নি পরিবার। পরিবারগুলো মরদেহের অপেক্ষায় আছে দিনের পর দিন। সেই সঙ্গে মরদেহ ফেরত না দেওয়ার এই অলিখিত রীতি ভাবিয়ে তুলেছে নওগাঁর সীমান্তে বসবাসকারীদের। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের জুন মাসে পোরশা সীমন্তে হত্যার পর শুভাসের মরদেহ নিয়ে যায় বিএসএফ। হত্যার ১৯ মাস পার হলেও মরদেহ ফেরত পায়নি পরিবার। তিনি পোরশা উপজেলার তুরিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এ ছাড়া গত ৮ জানুয়ারি নওগাঁর সাপাহার সীমান্তে সালাউদ্দিন নামে আরও এক যুবক হত্যার ২০ দিন পেরিয়েছে। তাঁর মরদেহও ফেরত দেয়নি ভারতের সীমান্তরক্ষীরা। নিহত সালাউদ্দিন সাপাহার উপজেলার কৃষ্ণস্বদা গ্রামের আলাউদ্দিন হোসেনের ছেলে। 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের দাবি, পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে তাদের কিছুই জানানো হয়নি। কেউ মারা গেলে তার তথ্য প্রশাসনকে দিতে চায় না পরিবারগুলো। নিহতদের স্বজনেরা বলছেন, শেষবারের জন্য সন্তানদের এক নজর দেখতে চান তাঁরা। কবর দিতে চান নিজ দেশেই।

নিহত শুভাস চন্দ্রের মা বিমলা রানী বলেন, ‘শুভাস হারিয়ে গেছে এত দিন হয়ে গেল। লোকমুখে শুনেছি, তাকে বিএসএফ গুলি করেছে, এখন ভারতের হিমঘরে রাখা আছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষমই ছিল শুভাস। মৃত কিংবা জীবিত যাই হোক, ছেলে বাড়িতে ফিরবে সেই আশায় এখনো আছি।’ 

শুভাসের স্ত্রী কামনা রানী বলেন, ‘বাড়ির পাশের বাজারে শুভাসের একটি চায়ের দোকান ছিল। সেদিন কৃষিকাজের জন্য সীমান্ত এলাকায় গিয়েছিল। কিন্তু বিএসএফ তাকে হত্যা করেছে। মরদেহ ফেরত দেয়নি এখনো। আমরা বিজিবির সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।’ 

এদিকে সাপাহার সীমান্তে বেড়াতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন কৃষ্ণসুধা গ্রামের সালাউদ্দিন। তার মরদেহও ফেরত দেয়নি বিএসএফ।

নিহত সালাউদ্দিনের পরিবারের লোকজনের দাবি, ‘সীমান্তে বেড়াতে গিয়ে হত্যার শিকার হয়েছেন সালাউদ্দিন। লাশ সীমান্ত এলাকায় পড়ে থাকতে দেখে আমরা নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেদিন লাশ নিয়ে আসতে পারিনি। বিজিবি বলেছিল, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ ফেরত দেবে। অথচ ২০ দিন চলে গেলেও এখন লাশ ফেরত পাওয়া যায়নি। বিজিবির সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করা হয়েছে, লাভ হয়নি।’ 

এ বিষয়ে পোরশা নিতপুর বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার মো. ইমতিয়াজ জানান, ‘আমি ছয় মাস হয়েছে নিতপুর ক্যাম্পে এসেছি। শুভাস নামের কারও লাশ ফেরত নেওয়ার জন্য আমাদের এখানে কেউ আসেনি। এ বিষয়ে আমার জানাও নাই। এ ধরনের ঘটনা যদি ঘটেও, অবৈধভাবে প্রবেশের জন্যই ঘটে। পরে মামলা হবে এই ভয়ে পরিবারের লোকজন আমাদের কাছে আসে না।’ 

সাপাহারের হাপানিয়া বিওপির কমান্ডার আব্দুল আজিজ বলেন, ‘এখনো কেউ লাশ হস্তান্তর করেনি। সালাউদ্দিনের লাশ ভারতেই আছে, কোথায় রেখেছে জানি না। তবে লাশ ফেরত দেয়নি। এ বিষয়ে বিএসএফও কিছু জানায়নি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত