Ajker Patrika

তীব্র দাবদাহে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আমের গুটি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, ২১: ১৯
তীব্র দাবদাহে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আমের গুটি

চলতি বছরকে আমের ভালো ফলনের বছর হিসেবে ঘোষণা করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি বিভাগ। মৌসুমের শুরুতে গাছে গাছে প্রচুর পরিমাণে মুকুলও আসতে দেখা যায়। প্রায় ৯০ শতাংশ গাছে এসেছে আমের গুটি। কিন্তু টানা দাবদাহে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। পানি না পেয়ে সেগুলো ঝরে পড়ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। এ নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলার আমচাষিরা। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর আমগাছে অধিক পরিমাণে মুকুল হয়েছিল। সে মুকুল থেকে গাছে প্রচুর পরিমাণে গুটিও আসে। কিন্তু গাছে এখন আম টেকানো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান তাঁরা। 

জেলার বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে নিয়ে জানা যায়, ফজলি, আশ্বিনা, খিরসাপাতি, লক্ষণভোগ, আম্রপালি, বারি-৪, গোপালভোগসহ সব গাছেই প্রচুর পরিমাণে মুকুল থেকে গুটি ধরেছিল। কিন্তু টানা দাবদাহ ও পানির অভাবে গাছ থেকে ঝরে যাচ্ছে আম। এতে আমের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে চাষিদের। 

গাছ থেকে ঝরে পড়া আমের গুটি পড়ে আছেসদর উপজেলার ফিল্টের হাটের কৃষক আকবর আলী বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার গাছে মুকুল ভালো এসেছিল। এরপরও গুটিও ছিল তুলনামূলক ভালো। কিন্তু টানা দাবদাহ চলায় কিছু গাছ থেকে আমের গুটি ঝরে পড়ছে। 

পলসা এলাকার আমচাষি নাইমুল হক বলেন, ‘এখন আম টিকিয়ে রাখতে গাছে প্রচুর পরিমাণে পানি দিতে হচ্ছে। তবে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ঠিকমতো পানিও মিলছে না। চাহিদামতো পানি না দিতে পারলে গাছের আম টেকানো মুশকিল হয়ে পড়ছে।’ 

আশরাফুল হক নামে আরেক চাষি বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ায় ইঞ্জিনচালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে গাছে পানি দিতে হচ্ছে। এত বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হচ্ছে। আবার সব ধরনের কীটনাশকের দামও বেড়েছে। এমন চলতে থাকলে আমের ব্যবসা চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়বে।’ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, ‘প্রচণ্ড তাপের কারণে মাটিতে পানি শোষণ করে নিচ্ছে। এতে গাছের গোড়া পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। ফলে কিছু গাছের আমের গুটি ঝরে পড়ছে।’ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার একটি বাগানে দেখা যায় গাছেই পচে যাওয়া আমের গুটিচাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক পলাশ সরকার বলেন, ‘জেলায় এমন অনেক আমবাগানে রয়েছে, যেসব বাগানে সেচ দেওয়ার সুবিধা নেই। এতে কিছু আম ঝরে যাচ্ছে। তবে এখনো আমাদের আশা, চলতি বছর আমের উৎপাদন অনেক বেশি হবে। গুটি ঝরা বন্ধ করতে সেচের ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে বলা হচ্ছে।’ 

উল্লেখ্য, চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার টন। গত বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছিল। 

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদন হয় ৩ লাখ ২৫ হাজার টন। ২০২১ সালে জেলায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমি থেকে আড়াই লাখ টন এবং ২০২০ সালে ৩৩ হাজার হেক্টর জমি থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার টন আম উৎপাদন হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত