Ajker Patrika

এসএমএস পেয়েও টিকা না পেয়ে হট্টগোল

প্রতিনিধি, রাজশাহী
এসএমএস পেয়েও টিকা না পেয়ে হট্টগোল

আগের রাতে বৃষ্টি হয়েছে। টিকা কেন্দ্রের সামনে পানি জমেছে। সেই পানিতে আজ বুধবার ভোর ৬টা থেকে টিকা নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন কয়েক’শো নারী-পুরুষ। রাজশাহী সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে এসএমএস পেয়ে তাঁরা করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিতে এসেছেন। অথচ আগের দিনই রাজশাহী শহরের চার কেন্দ্রে প্রথম ডোজের টিকা ফুরিয়ে গেছে। তাই আজ বুধবার যারা টিকা নিতে গিয়েও পাননি, তাঁরা হট্টগোল করেছেন। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়ে পুলিশ। 

রাজশাহী সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে সকাল ৮টা থেকে টিকা প্রয়োগ শুরু হয়। কিন্তু ভোর ৬টা থেকেই মানুষ টিকা কেন্দ্রে চলে যান। কলেজের প্রধান ফটকের সামনে প্রায় দু’ঘণ্টা তাঁরা পানিতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেও টিকা না থাকার বিষয়টি তখন জানানো হয়নি। সকাল ৮টার পর কেন্দ্রের গেট খুলে দেওয়া হয়। এরপর ভেতরে ঢুকে তাঁরা পুলিশের কাছে জানতে পারেন যে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হবে না। এ সময় তাঁরা হট্টগোল শুরু করেন। 

একজন পুলিশ সদস্য হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দিচ্ছিলেন, প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হবে না। শুধু দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। এ সময় প্রথম ডোজ নিতে আসা লোকজন ওই পুলিশ সদস্যকে ঘিরে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি ওই পুলিশ সদস্যকে বললেন, ‘আমরা তো টিকা নিতে চাচ্ছিলাম না। আপনারাই বললেন টিকা নেন। এখন টিকা নেই কেন?’ আরেক নারী বললেন, ‘প্রতিদিনই টিভিতে দেখছি টিকা আসছে। এত টিকা যাচ্ছে কোথায়? রাজশাহীর মানুষ কি মানুষ নয়? কেন এখানে টিকা থাকবে না?’ ওই পুলিশ সদস্য বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন দ্রুতই টিকা আসবে। কিন্তু কিছুতেই কেউ শান্ত হচ্ছিলেন না। 

নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সব দোষ যেন পুলিশের! সব ক্ষোভও পুলিশের ওপর। মানুষকে বুঝতে হবে টিকা আমাদের হাতের জিনিস না। টিকা আসলেই তাঁরা পাবেন। দু-এক দিনের মধ্যে টিকা আসবেও। এমন একটা সময় আসবে যখন কে টিকা নেয়নি তা বাড়ি বাড়ি খুঁজে বের করা হবে। এরপর টিকা দেওয়া হবে।’ 

সবার এমন ক্ষুব্ধ থাকার কারণ জানা গেল কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে। প্রত্যেকেই জানান, বুধবার তাঁদের প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার দিন। মোবাইলে এসএমএস দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার তাঁরা এই এসএমএস পেয়েছেন। সে অনুযায়ী নির্ধারিত দিনে শহরের নানা প্রান্ত থেকে তাঁরা এসেছিলেন। দীর্ঘ সময় পানিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এতে তাঁদের ভোগান্তি হয়েছে। টিকা দেওয়ার তারিখ যেমন এসএমএস করে জানানো হয়েছে, তেমনি দেওয়া হবে না এটাও এসএমএস দিয়ে জানালে তাঁরা আসতেন না। তাহলে দুর্ভোগ হতো না। 

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, ‘টিকা কেন্দ্রে লোকজন হট্টগোল করেছে, এটা আমিও দেখেছি। কিন্তু এত মানুষকে তো আবার এসএমএস দিয়ে জানানো সম্ভব নয়। আর বিষয়টা সিটি করপোরেশনের ব্যাপার। তাঁরা এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবে।’ 

 বক্তব্য নেওয়ার জন্য সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগমকে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ধরেননি। তাই বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত