বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বেলা দেড়টার দিকে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের একটি ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তারুজ্জামান সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকে নাহিদ নিখোঁজ ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু পায়নি।
রোববার দুপুরে এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি বিদ্যালয়সংলগ্ন ডোবায় শিশুটির মরদেহ ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। নাহিদ ওই এলাকার নিজাম মৃধা ও সালমা বেগম দম্পতির ছেলে।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বেলা দেড়টার দিকে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের একটি ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তারুজ্জামান সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকে নাহিদ নিখোঁজ ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু পায়নি।
রোববার দুপুরে এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি বিদ্যালয়সংলগ্ন ডোবায় শিশুটির মরদেহ ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। নাহিদ ওই এলাকার নিজাম মৃধা ও সালমা বেগম দম্পতির ছেলে।
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বেলা দেড়টার দিকে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের একটি ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তারুজ্জামান সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকে নাহিদ নিখোঁজ ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু পায়নি।
রোববার দুপুরে এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি বিদ্যালয়সংলগ্ন ডোবায় শিশুটির মরদেহ ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। নাহিদ ওই এলাকার নিজাম মৃধা ও সালমা বেগম দম্পতির ছেলে।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বেলা দেড়টার দিকে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশের একটি ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তারুজ্জামান সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকে নাহিদ নিখোঁজ ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। কিন্তু পায়নি।
রোববার দুপুরে এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি বিদ্যালয়সংলগ্ন ডোবায় শিশুটির মরদেহ ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। নাহিদ ওই এলাকার নিজাম মৃধা ও সালমা বেগম দম্পতির ছেলে।
বাগেরহাটের মোংলা ও খুলনার দাকোপ উপজেলার ১০ হাজারের বেশি শ্রমিককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে দুটি নদী পার হয়ে প্রতিদিন কর্মস্থল মোংলা ইপিজেড ও মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে আসা-যাওয়া করতে হয়। এসব কর্মজীবী মানুষকে পারাপারে ট্রলারচালক ও মালিক সমিতি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
১ সেকেন্ড আগেসুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি ও কৃষিজমি থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, ৮৬ কোটি টাকার আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং ঐতিহ্যবাহী অদ্বৈত মন্দিরের মতো স্থাপনা।
৪ মিনিট আগেচট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সারিবদ্ধ আটটি কফিন। প্রতিটিতে শায়িত একেকজন প্রবাসী। কিছুদিন আগেই তাঁরা হাসিমুখে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। সন্তানের কপালে চুমু দিয়ে, স্ত্রীকে সন্তানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। মা-বাবার কাছে আরজি ছিল, ‘নিজের খেয়াল রেখো।’ কিন্তু আজ তাঁরা নিথর।
৭ মিনিট আগেদেশের রাজনীতিতে রাজধানী-লাগোয়া শিল্পনগরী গাজীপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে পুরো জেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষণার আগেই গাজীপুরের মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের
১০ মিনিট আগেসুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট)
বাগেরহাটের মোংলা ও খুলনার দাকোপ উপজেলার ১০ হাজারের বেশি শ্রমিককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে দুটি নদী পার হয়ে প্রতিদিন কর্মস্থল মোংলা ইপিজেড ও মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে আসা-যাওয়া করতে হয়। এসব কর্মজীবী মানুষকে পারাপারে ট্রলারচালক ও মালিক সমিতি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ও মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোংলা ইপিজেডে বর্তমানে চলমান কারখানার সংখ্যা ৩০টি। আবার মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে ২০টির বেশি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় মোংলা উপজেলা এবং খুলনার দাকোপ উপজেলার ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক ও কর্মচারী কাজ করেন। দাকোপের শ্রমিকদের শিল্পাঞ্চলে আসার জন্য পশুর নদ এবং মোংলার শ্রমিকদের আসার জন্য মোংলা নদী পার হতে হয়। যাত্রী পারাপারের জন্য মোংলায় একটি ট্রলার ঘাট এবং দাকোপে পশুর নদের তীরে তিনটি ট্রলার ঘাট রয়েছে। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় এই দুটি নদীতে ট্রলারগুলো অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে পারাপার করে। যাত্রীরাও সঠিক সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছানোর জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে পার হন।
গত শনিবার সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা মোংলা ট্রলার ঘাটে অবস্থান করে দুই হাজারের বেশি শ্রমিক-কর্মচারীকে মোংলা নদী পার হতে দেখা যায়। সব ট্রলারেই অতিরিক্ত বোঝাই। জায়গা না থাকলেও অনেক পুরুষ শ্রমিক সাইকেল নিয়ে ট্রলারে উঠে যাচ্ছেন। সবার মধ্যেই চরম ব্যস্ততা। ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার সময়ও কেউ প্রতিবাদ করছেন না; বরং আগে ট্রলারে ওঠার জন্য হুড়াহুড়ি করছেন। ট্রলারচালকেরাও বেশি আয়ের লোভে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করছেন।
এভাবে ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করার কারণে ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব ঘাট থেকে পশুর নদ পার হয়ে মোংলা হোলসিম ঘাটে আসার সময় যাত্রীবাহী একটি ট্রলার ডুবে যায়। এতে দাকোপ উপজেলার বাজুয়া গ্রামের সুন্দর বিশ্বাস (৫৫) নামের একজনের মৃত্যু হয়।
মোংলার শেহালাবুনিয়া এলাকার নাসিমা, জাহানারা; মিঠাখালী গ্রামের হনুফা, পারভীন; চাঁদপাই গ্রামের সেলিনা ও সানজিদা বলেন, ‘সকালে কারখানায় যাওয়ার সময় ও ফেরার সময় নৌকায় উঠতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে অনেকে নদীতেও পড়ে যায়। তা ছাড়া নৌকাডুবির ঝুঁকিও থাকে। এভাবে ঝুঁকি থাকলেও আমাদের নদী পার হয়ে নির্ধারিত সময়েই কারখানায় পৌঁছাতে হয়। তা না হলে কারখানায় অনুপস্থিত দেখিয়ে বেতন কেটে নেওয়া হয়। আমরা তো পেটের দায়েই কারখানায় কাজ করি। প্রশাসন বা আমাদের মালিকপক্ষ যদি নদী পারাপারের জন্য বেশি ট্রলারের ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে এ সমস্যা আর থাকত না।’
বাইসাইকেল নিয়ে ট্রলারে ওঠা জয়খা গ্রামের শ্যামল, তপন চাপড়া গ্রামের মিঠুন ও কৃষ্ণ বলেন, ‘মোংলা নদীতে কোনো সেতু নেই। এই নদী পার হওয়ার জন্য একটিমাত্র ফেরি রয়েছে। সেটি আবার ভাটার সময় চলে না। আবার কোনো পরিবহন পারাপারের জন্য না এলে ফেরি ছাড়েও না। ফলে নদী পারাপারে আমাদের একমাত্র উপায় হলো এই ট্রলার। তার সংখ্যাও আবার হাতে গোনা। আর সকালে নির্ধারিত সময়ের আগে কর্মস্থলে যাওয়ার চাপের কারণে আমাদের এভাবে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হয়। ট্রলারমালিক সমিতি যদি এখানে পর্যাপ্তসংখ্যক ট্রলারের ব্যবস্থা রাখত, তাহলে এ সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হতো।’ তাঁরা অভিযোগ করেন, প্রশাসন ও ট্রলারমালিক সমিতি এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। অনেক বছর ধরে এ রকম অবস্থা চলে এলেও, এখনো এ সমস্যা সমাধানে কোনো ব্যবস্থা কেউ নেয়নি।
মোংলা বন্দর যন্ত্রচালিত মাঝিমাল্লা সংঘের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সকালে ১ ঘণ্টা এবং সন্ধ্যায় ১ ঘণ্টা মোংলা ইপিজেড ও বন্দরের শিল্পাঞ্চলে কর্মরত শ্রমিকদের পারাপারের জন্য ঘাটে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। তখন আমরা প্রতি ট্রলারে ৪০-৪৫ জন যাত্রী পারাপার করি। দিনের অন্যান্য সময় প্রতি ট্রলারে ২০ জনের বেশি যাত্রী কোনো ট্রলারে উঠানো হয় না। আমাদের ট্রলারের সংখ্যা ২২টি এবং প্রতিটিতে ৭০-৭৫ জন যাত্রী পারাপার করা যায়। যাত্রী পারাপারের চাপ কমানোর জন্য তিন মাস পরপর আমরা একটি নতুন ট্রলার নদীতে নামাই। আর সকালে এবং সন্ধ্যায় শ্রমিক পারাপারের সময় আমাদের সমিতির নেতা-কর্মীরা দায়িত্ব পালন করেন, যাতে ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী না ওঠে।’ তাঁর দাবি, সকালে যাত্রীরা নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত হয়ে ট্রলারে উঠে যান। তখন যাত্রীরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। যেটা আসলেই ঝুঁকিপূর্ণ।
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং পৌর প্রশাসক শারমিন আক্তার সুমি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। যাত্রী পারাপারের সঠিক নিয়ম ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই আমরা মাঝিমাল্লা সংঘের নেতাসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে বসব।’
বাগেরহাটের মোংলা ও খুলনার দাকোপ উপজেলার ১০ হাজারের বেশি শ্রমিককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে দুটি নদী পার হয়ে প্রতিদিন কর্মস্থল মোংলা ইপিজেড ও মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে আসা-যাওয়া করতে হয়। এসব কর্মজীবী মানুষকে পারাপারে ট্রলারচালক ও মালিক সমিতি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) ও মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোংলা ইপিজেডে বর্তমানে চলমান কারখানার সংখ্যা ৩০টি। আবার মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে ২০টির বেশি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় মোংলা উপজেলা এবং খুলনার দাকোপ উপজেলার ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক ও কর্মচারী কাজ করেন। দাকোপের শ্রমিকদের শিল্পাঞ্চলে আসার জন্য পশুর নদ এবং মোংলার শ্রমিকদের আসার জন্য মোংলা নদী পার হতে হয়। যাত্রী পারাপারের জন্য মোংলায় একটি ট্রলার ঘাট এবং দাকোপে পশুর নদের তীরে তিনটি ট্রলার ঘাট রয়েছে। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় এই দুটি নদীতে ট্রলারগুলো অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে পারাপার করে। যাত্রীরাও সঠিক সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছানোর জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে পার হন।
গত শনিবার সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা মোংলা ট্রলার ঘাটে অবস্থান করে দুই হাজারের বেশি শ্রমিক-কর্মচারীকে মোংলা নদী পার হতে দেখা যায়। সব ট্রলারেই অতিরিক্ত বোঝাই। জায়গা না থাকলেও অনেক পুরুষ শ্রমিক সাইকেল নিয়ে ট্রলারে উঠে যাচ্ছেন। সবার মধ্যেই চরম ব্যস্ততা। ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠার সময়ও কেউ প্রতিবাদ করছেন না; বরং আগে ট্রলারে ওঠার জন্য হুড়াহুড়ি করছেন। ট্রলারচালকেরাও বেশি আয়ের লোভে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার করছেন।
এভাবে ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করার কারণে ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বর খুলনার দাকোপ উপজেলার লাউডোব ঘাট থেকে পশুর নদ পার হয়ে মোংলা হোলসিম ঘাটে আসার সময় যাত্রীবাহী একটি ট্রলার ডুবে যায়। এতে দাকোপ উপজেলার বাজুয়া গ্রামের সুন্দর বিশ্বাস (৫৫) নামের একজনের মৃত্যু হয়।
মোংলার শেহালাবুনিয়া এলাকার নাসিমা, জাহানারা; মিঠাখালী গ্রামের হনুফা, পারভীন; চাঁদপাই গ্রামের সেলিনা ও সানজিদা বলেন, ‘সকালে কারখানায় যাওয়ার সময় ও ফেরার সময় নৌকায় উঠতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে অনেকে নদীতেও পড়ে যায়। তা ছাড়া নৌকাডুবির ঝুঁকিও থাকে। এভাবে ঝুঁকি থাকলেও আমাদের নদী পার হয়ে নির্ধারিত সময়েই কারখানায় পৌঁছাতে হয়। তা না হলে কারখানায় অনুপস্থিত দেখিয়ে বেতন কেটে নেওয়া হয়। আমরা তো পেটের দায়েই কারখানায় কাজ করি। প্রশাসন বা আমাদের মালিকপক্ষ যদি নদী পারাপারের জন্য বেশি ট্রলারের ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে এ সমস্যা আর থাকত না।’
বাইসাইকেল নিয়ে ট্রলারে ওঠা জয়খা গ্রামের শ্যামল, তপন চাপড়া গ্রামের মিঠুন ও কৃষ্ণ বলেন, ‘মোংলা নদীতে কোনো সেতু নেই। এই নদী পার হওয়ার জন্য একটিমাত্র ফেরি রয়েছে। সেটি আবার ভাটার সময় চলে না। আবার কোনো পরিবহন পারাপারের জন্য না এলে ফেরি ছাড়েও না। ফলে নদী পারাপারে আমাদের একমাত্র উপায় হলো এই ট্রলার। তার সংখ্যাও আবার হাতে গোনা। আর সকালে নির্ধারিত সময়ের আগে কর্মস্থলে যাওয়ার চাপের কারণে আমাদের এভাবে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হয়। ট্রলারমালিক সমিতি যদি এখানে পর্যাপ্তসংখ্যক ট্রলারের ব্যবস্থা রাখত, তাহলে এ সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হতো।’ তাঁরা অভিযোগ করেন, প্রশাসন ও ট্রলারমালিক সমিতি এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। অনেক বছর ধরে এ রকম অবস্থা চলে এলেও, এখনো এ সমস্যা সমাধানে কোনো ব্যবস্থা কেউ নেয়নি।
মোংলা বন্দর যন্ত্রচালিত মাঝিমাল্লা সংঘের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সকালে ১ ঘণ্টা এবং সন্ধ্যায় ১ ঘণ্টা মোংলা ইপিজেড ও বন্দরের শিল্পাঞ্চলে কর্মরত শ্রমিকদের পারাপারের জন্য ঘাটে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। তখন আমরা প্রতি ট্রলারে ৪০-৪৫ জন যাত্রী পারাপার করি। দিনের অন্যান্য সময় প্রতি ট্রলারে ২০ জনের বেশি যাত্রী কোনো ট্রলারে উঠানো হয় না। আমাদের ট্রলারের সংখ্যা ২২টি এবং প্রতিটিতে ৭০-৭৫ জন যাত্রী পারাপার করা যায়। যাত্রী পারাপারের চাপ কমানোর জন্য তিন মাস পরপর আমরা একটি নতুন ট্রলার নদীতে নামাই। আর সকালে এবং সন্ধ্যায় শ্রমিক পারাপারের সময় আমাদের সমিতির নেতা-কর্মীরা দায়িত্ব পালন করেন, যাতে ট্রলারে অতিরিক্ত যাত্রী না ওঠে।’ তাঁর দাবি, সকালে যাত্রীরা নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত হয়ে ট্রলারে উঠে যান। তখন যাত্রীরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না। যেটা আসলেই ঝুঁকিপূর্ণ।
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং পৌর প্রশাসক শারমিন আক্তার সুমি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। যাত্রী পারাপারের সঠিক নিয়ম ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই আমরা মাঝিমাল্লা সংঘের নেতাসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে বসব।’
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেসুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি ও কৃষিজমি থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, ৮৬ কোটি টাকার আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং ঐতিহ্যবাহী অদ্বৈত মন্দিরের মতো স্থাপনা।
৪ মিনিট আগেচট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সারিবদ্ধ আটটি কফিন। প্রতিটিতে শায়িত একেকজন প্রবাসী। কিছুদিন আগেই তাঁরা হাসিমুখে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। সন্তানের কপালে চুমু দিয়ে, স্ত্রীকে সন্তানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। মা-বাবার কাছে আরজি ছিল, ‘নিজের খেয়াল রেখো।’ কিন্তু আজ তাঁরা নিথর।
৭ মিনিট আগেদেশের রাজনীতিতে রাজধানী-লাগোয়া শিল্পনগরী গাজীপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে পুরো জেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষণার আগেই গাজীপুরের মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের
১০ মিনিট আগেবিশ্বজিত রায়, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি ও কৃষিজমি থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, ৮৬ কোটি টাকার আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং ঐতিহ্যবাহী অদ্বৈত মন্দিরের মতো স্থাপনা। দীর্ঘদিন ধরে ইজারাদার এবং বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লোকজন মিলে এই নদীতে লুটপাট চালিয়েছে। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপি নেতাদের মিত্র হিসেবে পেয়েছেন ইজারাদারেরা। বিশেষ করে সম্প্রতি (৭-১১ অক্টোবর) প্রায় শতকোটি টাকার বালু লুটের ঘটনায় স্থানীয়রা হতভম্ব।
যাদুকাটা নদীর উৎপত্তি ভারতের মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড়ে। তাহিরপুর উপজেলার বারেকটিলা ও লাউড়গড়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা এই নদী একসময় ছিল মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৫৭ মিটার প্রশস্ত। কিন্তু বছরের পর বছর অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে এর গড় প্রস্থ এখন এক কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। ইজারাদার ও স্থানীয় রাজনীতিকদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাংশের বিরুদ্ধেও এই লুটপাটে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ১৪ অক্টোবর তাহিরপুর থানায় বালুমহাল ও বালু ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা করেন ইজারাদারের লোকজন। যদিও এটিকে লোকদেখানো বলছেন স্থানীয়রা। একই দিন থানার এসআই পংকজ দাশ বাদী হয়ে আরও চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ১৬ অক্টোবর সুনামগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাইমিনুল হক ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন। এই মামলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় প্রভাবশালীদের নাম উঠে এসেছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আফতাব উদ্দিন, তাঁর ভাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রাকাব উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বজিৎ সরকার এবং নদীর তীরসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মোশাহিদ আলম ওরফে রানু মেম্বার। রানু মেম্বার এর আগেও একই অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এ ছাড়া অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের আব্দুল কাইয়ুম খেলু মাস্টার, খাজা মাঈন উদ্দিন, আবু বক্কর, বিএনপির রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা গোলাপ মাহমুদের চাচাতো ভাই শিপন, শোভন, শাহান, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
জানা যায়, এই লুটপাটের অগ্রভাগে ছিলেন খেলু মাস্টার ও খাজা মাঈন উদ্দিন। যদিও প্রথমে তারাই বালু সরানোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে প্রভাবশালীদের সঙ্গে সমঝোতা করে তাঁরাও বালু লুটে শামিল হন।
স্থানীয় পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী আবুল হোসেন বলেন, এখন প্রশাসনের অবস্থা ‘ঠেলার নাম বাবাজি’। নোটিশ দেওয়া, বাঁশের বেড়া দেওয়া; সবই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা। পুলিশ, বিজিবি, প্রশাসন সবাই জানে কারা এসবের পেছনে রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ইজারাদারের খেয়াল-খুশিতেই সব চলছে।
যাদুকাটা-১ ও যাদুকাটা-২ বালুমহাল নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলার পর গত ১৯ আগস্ট আদালত শ্রমিকদের স্বার্থে এবং যান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া বালু উত্তোলনের শর্তে ইজারার পক্ষে রায় দেন। এরপর জেলা প্রশাসন ১০০ কোটি ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বালুমহাল ইজারা দেয়। কিন্তু ইজারার শর্ত মানা হয়নি। শ্যালো ইঞ্জিন ও ড্রেজারের মাধ্যমে নদীর বুক ও তীরবর্তী এলাকা ধ্বংস করা হচ্ছে।
গত ২৬ আগস্ট জেলা প্রশাসন ফেসবুকে বালু লুটের আশঙ্কা প্রকাশ করে সতর্ক করলেও তা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। নিরীহ শ্রমিকেরা জেল-জরিমানার শিকার হলেও মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। স্থানীয়রা জানান, হাজার হাজার নৌকা নদীর তীরে ঢুকে পাড় কাটছে। ইজারাদার ও প্রভাবশালীরা প্রতি ফুটে ২০ টাকা এবং রয়্যালটি হিসেবে ২৫ টাকা আদায় করছেন।
ইজারাদার শাহ রুবেল আহমদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা বালু লুট ঠেকাতে পুলিশ ক্যাম্পের আবেদন করেছি। নদীর তীরে বাঁশের বেড়া দিচ্ছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, যাদুকাটা যেন এখন তীরহারা এক প্রশস্ত নদী। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে হাওর-বাঁওড়, চর, ছড়া, শিমুলবাগান, বিজিবি ক্যাম্প, ঘাগটিয়া, লাউড়েরগড়, গড়কাটিসহ ১৫-২০টি গ্রাম বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে।
২০০১ সাল থেকে পাড় কাটা শুরু হলেও ২০২১ সালে বালুমহাল ইজারার পর এটি মহোৎসবে পরিণত হয়। ভূমিমালিকেরা জমি রক্ষা করতে না পেরে বাধ্য হয়ে বালুখেকোদের কাছে জমি বিক্রি করছেন, কেউবা বিনামূল্যে ছেড়ে দিচ্ছেন। তাহিরপুর থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘নদীর পাড় কাটার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আইনি কার্যক্রম চলছে। পরিবেশ এখন শান্ত।’
সুনামগঞ্জ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জাকারিয়া কাদির বলেন, গভীর রাতে অবৈধ বালু উত্তোলন ঠেকানো তাঁদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘ইজারাদারকে শোকজ করা হয়েছে। এভাবে চললে ইজারা বাতিল হবে।’
সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি ও কৃষিজমি থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, ৮৬ কোটি টাকার আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং ঐতিহ্যবাহী অদ্বৈত মন্দিরের মতো স্থাপনা। দীর্ঘদিন ধরে ইজারাদার এবং বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লোকজন মিলে এই নদীতে লুটপাট চালিয়েছে। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপি নেতাদের মিত্র হিসেবে পেয়েছেন ইজারাদারেরা। বিশেষ করে সম্প্রতি (৭-১১ অক্টোবর) প্রায় শতকোটি টাকার বালু লুটের ঘটনায় স্থানীয়রা হতভম্ব।
যাদুকাটা নদীর উৎপত্তি ভারতের মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড়ে। তাহিরপুর উপজেলার বারেকটিলা ও লাউড়গড়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা এই নদী একসময় ছিল মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ৫৭ মিটার প্রশস্ত। কিন্তু বছরের পর বছর অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে এর গড় প্রস্থ এখন এক কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। ইজারাদার ও স্থানীয় রাজনীতিকদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাংশের বিরুদ্ধেও এই লুটপাটে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ১৪ অক্টোবর তাহিরপুর থানায় বালুমহাল ও বালু ব্যবস্থাপনা আইনে মামলা করেন ইজারাদারের লোকজন। যদিও এটিকে লোকদেখানো বলছেন স্থানীয়রা। একই দিন থানার এসআই পংকজ দাশ বাদী হয়ে আরও চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ১৬ অক্টোবর সুনামগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাইমিনুল হক ৩৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন। এই মামলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় প্রভাবশালীদের নাম উঠে এসেছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আফতাব উদ্দিন, তাঁর ভাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রাকাব উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বজিৎ সরকার এবং নদীর তীরসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মোশাহিদ আলম ওরফে রানু মেম্বার। রানু মেম্বার এর আগেও একই অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এ ছাড়া অভিযুক্তের তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের আব্দুল কাইয়ুম খেলু মাস্টার, খাজা মাঈন উদ্দিন, আবু বক্কর, বিএনপির রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা গোলাপ মাহমুদের চাচাতো ভাই শিপন, শোভন, শাহান, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
জানা যায়, এই লুটপাটের অগ্রভাগে ছিলেন খেলু মাস্টার ও খাজা মাঈন উদ্দিন। যদিও প্রথমে তারাই বালু সরানোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে প্রভাবশালীদের সঙ্গে সমঝোতা করে তাঁরাও বালু লুটে শামিল হন।
স্থানীয় পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী আবুল হোসেন বলেন, এখন প্রশাসনের অবস্থা ‘ঠেলার নাম বাবাজি’। নোটিশ দেওয়া, বাঁশের বেড়া দেওয়া; সবই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা। পুলিশ, বিজিবি, প্রশাসন সবাই জানে কারা এসবের পেছনে রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ইজারাদারের খেয়াল-খুশিতেই সব চলছে।
যাদুকাটা-১ ও যাদুকাটা-২ বালুমহাল নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলার পর গত ১৯ আগস্ট আদালত শ্রমিকদের স্বার্থে এবং যান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া বালু উত্তোলনের শর্তে ইজারার পক্ষে রায় দেন। এরপর জেলা প্রশাসন ১০০ কোটি ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকায় বালুমহাল ইজারা দেয়। কিন্তু ইজারার শর্ত মানা হয়নি। শ্যালো ইঞ্জিন ও ড্রেজারের মাধ্যমে নদীর বুক ও তীরবর্তী এলাকা ধ্বংস করা হচ্ছে।
গত ২৬ আগস্ট জেলা প্রশাসন ফেসবুকে বালু লুটের আশঙ্কা প্রকাশ করে সতর্ক করলেও তা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। নিরীহ শ্রমিকেরা জেল-জরিমানার শিকার হলেও মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। স্থানীয়রা জানান, হাজার হাজার নৌকা নদীর তীরে ঢুকে পাড় কাটছে। ইজারাদার ও প্রভাবশালীরা প্রতি ফুটে ২০ টাকা এবং রয়্যালটি হিসেবে ২৫ টাকা আদায় করছেন।
ইজারাদার শাহ রুবেল আহমদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা বালু লুট ঠেকাতে পুলিশ ক্যাম্পের আবেদন করেছি। নদীর তীরে বাঁশের বেড়া দিচ্ছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, যাদুকাটা যেন এখন তীরহারা এক প্রশস্ত নদী। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে হাওর-বাঁওড়, চর, ছড়া, শিমুলবাগান, বিজিবি ক্যাম্প, ঘাগটিয়া, লাউড়েরগড়, গড়কাটিসহ ১৫-২০টি গ্রাম বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে।
২০০১ সাল থেকে পাড় কাটা শুরু হলেও ২০২১ সালে বালুমহাল ইজারার পর এটি মহোৎসবে পরিণত হয়। ভূমিমালিকেরা জমি রক্ষা করতে না পেরে বাধ্য হয়ে বালুখেকোদের কাছে জমি বিক্রি করছেন, কেউবা বিনামূল্যে ছেড়ে দিচ্ছেন। তাহিরপুর থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘নদীর পাড় কাটার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আইনি কার্যক্রম চলছে। পরিবেশ এখন শান্ত।’
সুনামগঞ্জ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জাকারিয়া কাদির বলেন, গভীর রাতে অবৈধ বালু উত্তোলন ঠেকানো তাঁদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘ইজারাদারকে শোকজ করা হয়েছে। এভাবে চললে ইজারা বাতিল হবে।’
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেবাগেরহাটের মোংলা ও খুলনার দাকোপ উপজেলার ১০ হাজারের বেশি শ্রমিককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে দুটি নদী পার হয়ে প্রতিদিন কর্মস্থল মোংলা ইপিজেড ও মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে আসা-যাওয়া করতে হয়। এসব কর্মজীবী মানুষকে পারাপারে ট্রলারচালক ও মালিক সমিতি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
১ সেকেন্ড আগেচট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সারিবদ্ধ আটটি কফিন। প্রতিটিতে শায়িত একেকজন প্রবাসী। কিছুদিন আগেই তাঁরা হাসিমুখে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। সন্তানের কপালে চুমু দিয়ে, স্ত্রীকে সন্তানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। মা-বাবার কাছে আরজি ছিল, ‘নিজের খেয়াল রেখো।’ কিন্তু আজ তাঁরা নিথর।
৭ মিনিট আগেদেশের রাজনীতিতে রাজধানী-লাগোয়া শিল্পনগরী গাজীপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে পুরো জেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষণার আগেই গাজীপুরের মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের
১০ মিনিট আগেওমানে সড়ক দুর্ঘটনা
সবুর শুভ, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সারিবদ্ধ আটটি কফিন। প্রতিটিতে শায়িত একেকজন প্রবাসী। কিছুদিন আগেই তাঁরা হাসিমুখে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। সন্তানের কপালে চুমু দিয়ে, স্ত্রীকে সন্তানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। মা-বাবার কাছে আরজি ছিল, ‘নিজের খেয়াল রেখো।’ কিন্তু আজ তাঁরা নিথর। গত শনিবার রাত ৮টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় তাঁদের মরদেহ। রাত ৯টা ২০ মিনিটে স্বজনদের কাছে কফিনগুলো হস্তান্তর করা হয়।
৮ অক্টোবর ওমানের ধুকুম প্রদেশের সিদরা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন আট প্রবাসী। তাঁদের মধ্যে সাতজনই সন্দ্বীপের, একজন রাউজানের। পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে অর্থনৈতিক সচ্ছলতার স্বপ্ন নিয়ে রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে পরিশ্রম করতেন। কথা ছিল উপহারভর্তি ব্যাগ নিয়ে দেশে ফিরবেন। কিন্তু ফিরলেন কফিনে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন আমিন মাঝি (৫০), মো. সাহাবুদ্দিন (২৮), মো. বাবলু (২৮), মো. রকি (২৭), মো. আরজু (২৬), মো. জুয়েল (২৮), মোশারফ হোসেন রনি (২৬) ও মো. আলাউদ্দিন। প্রথম সাতজন সন্দ্বীপের, আলাউদ্দিন রাউজানের। সবার পরিবারে বুকফাটা আর্তনাদ। সারিকাইত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মো. আরজুর বাড়ির পথে দূর থেকেই শোনা যায় কান্নার রোল। আরজুর তিন বছরের মেয়ে আনিসাকে নিয়ে বিলাপ করতে করতে আনিসার দাদা শহীদুল্লাহ বলছিলেন, ‘ও এখন কাকে বাবা ডাকবে?’
একই এলাকার মো. বাবলুর দুই সন্তান। চার বছরের ছেলে ও তিন বছরের মেয়ে। সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় তাঁর স্ত্রী। মো. সাহাবুদ্দিনের ১৪ মাসের মেয়ে, মো. রকির চার মাসের ছেলে নুর ইয়ামীন। রকির বাবা ইব্রাহীম জানান, দুর্ঘটনার আগে ভিডিও কলে রকি ছেলের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ইয়ামীন বাবার ডাক আর শুনবে না।
গতকাল সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে সন্দ্বীপের এনাম নাহার মোড়সংলগ্ন পূর্ব সন্দ্বীপ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সাত প্রবাসীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই জানাজায় চোখের পানিতে সাত রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে শেষ বিদায় জানায় এলাকাবাসী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মংচিংনু মারমা বলেন, রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আকস্মিক মৃত্যুতে সন্দ্বীপবাসী শোকাহত। এই শোক প্রকাশের কোনো ভাষা নেই। এই আর্তনাদের কোনো উত্তর নেই।
সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের সভাপতি অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান জানান, সাহাবুদ্দিন ও বাবলু ছিলেন এক আত্মা। একসঙ্গে পড়াশোনা, বেড়ে ওঠা। গত ২১ সেপ্টেম্বর একই ফ্লাইটে ওমানে গিয়েছিলেন। দুর্ঘটনাও তাঁদের আলাদা করতে পারেনি।
দুর্ঘটনার এক দিন আগে ফেসবুকে সন্দ্বীপে লাশবাহী স্পিডবোট চালুর খবর দিয়েছিলেন আমিন মাঝি। কিন্তু নিয়তির পরিহাস, তাঁরই লাশ বহন করে এল সেই স্পিডবোট। তাঁর বাবা আলী কব্বর জানান, মেয়ের বিয়ে দিতে দেশে ফেরার কথা ছিল আমিনের। কিন্তু এলেন লাশ হয়ে।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সারিবদ্ধ আটটি কফিন। প্রতিটিতে শায়িত একেকজন প্রবাসী। কিছুদিন আগেই তাঁরা হাসিমুখে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। সন্তানের কপালে চুমু দিয়ে, স্ত্রীকে সন্তানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। মা-বাবার কাছে আরজি ছিল, ‘নিজের খেয়াল রেখো।’ কিন্তু আজ তাঁরা নিথর। গত শনিবার রাত ৮টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় তাঁদের মরদেহ। রাত ৯টা ২০ মিনিটে স্বজনদের কাছে কফিনগুলো হস্তান্তর করা হয়।
৮ অক্টোবর ওমানের ধুকুম প্রদেশের সিদরা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন আট প্রবাসী। তাঁদের মধ্যে সাতজনই সন্দ্বীপের, একজন রাউজানের। পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে অর্থনৈতিক সচ্ছলতার স্বপ্ন নিয়ে রোদে পুড়ে, ঘামে ভিজে পরিশ্রম করতেন। কথা ছিল উপহারভর্তি ব্যাগ নিয়ে দেশে ফিরবেন। কিন্তু ফিরলেন কফিনে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন আমিন মাঝি (৫০), মো. সাহাবুদ্দিন (২৮), মো. বাবলু (২৮), মো. রকি (২৭), মো. আরজু (২৬), মো. জুয়েল (২৮), মোশারফ হোসেন রনি (২৬) ও মো. আলাউদ্দিন। প্রথম সাতজন সন্দ্বীপের, আলাউদ্দিন রাউজানের। সবার পরিবারে বুকফাটা আর্তনাদ। সারিকাইত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মো. আরজুর বাড়ির পথে দূর থেকেই শোনা যায় কান্নার রোল। আরজুর তিন বছরের মেয়ে আনিসাকে নিয়ে বিলাপ করতে করতে আনিসার দাদা শহীদুল্লাহ বলছিলেন, ‘ও এখন কাকে বাবা ডাকবে?’
একই এলাকার মো. বাবলুর দুই সন্তান। চার বছরের ছেলে ও তিন বছরের মেয়ে। সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় তাঁর স্ত্রী। মো. সাহাবুদ্দিনের ১৪ মাসের মেয়ে, মো. রকির চার মাসের ছেলে নুর ইয়ামীন। রকির বাবা ইব্রাহীম জানান, দুর্ঘটনার আগে ভিডিও কলে রকি ছেলের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ইয়ামীন বাবার ডাক আর শুনবে না।
গতকাল সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে সন্দ্বীপের এনাম নাহার মোড়সংলগ্ন পূর্ব সন্দ্বীপ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সাত প্রবাসীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই জানাজায় চোখের পানিতে সাত রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে শেষ বিদায় জানায় এলাকাবাসী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মংচিংনু মারমা বলেন, রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আকস্মিক মৃত্যুতে সন্দ্বীপবাসী শোকাহত। এই শোক প্রকাশের কোনো ভাষা নেই। এই আর্তনাদের কোনো উত্তর নেই।
সন্দ্বীপ নাগরিক সমাজের সভাপতি অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান জানান, সাহাবুদ্দিন ও বাবলু ছিলেন এক আত্মা। একসঙ্গে পড়াশোনা, বেড়ে ওঠা। গত ২১ সেপ্টেম্বর একই ফ্লাইটে ওমানে গিয়েছিলেন। দুর্ঘটনাও তাঁদের আলাদা করতে পারেনি।
দুর্ঘটনার এক দিন আগে ফেসবুকে সন্দ্বীপে লাশবাহী স্পিডবোট চালুর খবর দিয়েছিলেন আমিন মাঝি। কিন্তু নিয়তির পরিহাস, তাঁরই লাশ বহন করে এল সেই স্পিডবোট। তাঁর বাবা আলী কব্বর জানান, মেয়ের বিয়ে দিতে দেশে ফেরার কথা ছিল আমিনের। কিন্তু এলেন লাশ হয়ে।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেবাগেরহাটের মোংলা ও খুলনার দাকোপ উপজেলার ১০ হাজারের বেশি শ্রমিককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে দুটি নদী পার হয়ে প্রতিদিন কর্মস্থল মোংলা ইপিজেড ও মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে আসা-যাওয়া করতে হয়। এসব কর্মজীবী মানুষকে পারাপারে ট্রলারচালক ও মালিক সমিতি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
১ সেকেন্ড আগেসুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি ও কৃষিজমি থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, ৮৬ কোটি টাকার আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং ঐতিহ্যবাহী অদ্বৈত মন্দিরের মতো স্থাপনা।
৪ মিনিট আগেদেশের রাজনীতিতে রাজধানী-লাগোয়া শিল্পনগরী গাজীপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে পুরো জেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষণার আগেই গাজীপুরের মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের
১০ মিনিট আগেত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, গাজীপুর
দেশের রাজনীতিতে রাজধানী-লাগোয়া শিল্পনগরী গাজীপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে পুরো জেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষণার আগেই গাজীপুরের মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।
শহর থেকে গ্রাম—সবখানে দেখা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার আর মিছিলের প্রতিযোগিতা। চলছে প্রচারপত্র বিতরণ, উঠান বৈঠক, সমাবেশ-পথসভা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক প্রচারও জমজমাট।
সীমানা পুর্নির্ধারণের পর জেলায় সংসদীয় আসন বেড়ে হয়েছে ছয়টি। আসন বাড়ানোয় সম্ভাব্য প্রার্থী ও ভোটারদেরও আগ্রহ বেড়েছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বিএনপি চারটি আসনে প্রার্থী ঠিক করেছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ছয়টি আসনেই একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সেসব সম্ভাব্য প্রার্থী দাঁড়িপাল্লা নিয়ে এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পাঁচটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে হাতপাখা প্রতীকে প্রচার শুরু করেছে। আর পাঁচ আসনে এনসিপির সম্ভাব্য একক প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন। মাঠে রয়েছেন গণঅধিকারের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও।
গাজীপুর-১ আসন
কালিয়াকৈর উপজেলা এবং মহানগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড (কোনাবাড়ী থানা) এলাকা নিয়ে গঠিত। আসনটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো পুনর্গঠন করা হয়েছে। আসনটি শ্রীপুরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রথমবার এটিকে শ্রীপুর থেকে আলাদা করে মহানগরীর কোনাবাড়ী ও কাশিমপুর থানার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এবার এখান থেকে কোনাবাড়ী থানা কেটে নিয়ে গাজীপুর-২-এ যুক্ত করা হয়েছে।
এই আসনে বিএনপি থেকে চারজন নতুন মুখ মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁদের কেউই আগে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেননি। তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ুন কবির খান, কালিয়াকৈর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী।
এখানে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত প্রার্থী মানারাত ট্রাস্টি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সচিব মু. শাহ আলম বকশী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জি এম রুহুল আমিন নিজ প্রতীক নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছেন।
সাইয়্যেদুল আলম বাবুল বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে সংগঠন ধরে রেখেছি। এবার মনোনয়ন পেলে কালিয়াকৈরের উন্নয়নে নিজেকে নিবেদন করব।’
শাহ আলম বকশী বলেন, ‘আমি এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ, চাঁদাবাজি বন্ধ করব এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করব।’
গাজীপুর-২ আসন
এই আসনটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। আসনটি বর্তমানে মহানগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৬ নম্বর এবং ১৩ নম্বর থেকে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড (মহানগরীর সদর মেট্রো থানা, বাসন, গাছা ও কাশিমপুর থানা) ও গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
এই আসন শ্রমিক-অধ্যুষিত ও সবচেয়ে আলোচিত। এখানে বিএনপি থেকে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা সবাই জাতীয় নির্বাচনে নতুন মুখ। তবে ভোটারদের কাছে সুপরিচিত। তাঁরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাজহারুল আলম, মহানগর বিএনপির সভাপতি মো. শওকত হোসেন সরকার, এই আসনের সাবেক এমপি, প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের সন্তান ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনি।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য মুহাম্মদ হোসেন আলী। ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা এম এ হানিফ সরকার। এখানে গণঅধিকার পরিষদ থেকে লড়বেন দলের জেলা আহ্বায়ক পাঠান আজহার।
এম মঞ্জুরুল করিম রনি বলেন, ‘আমি পাড়ায় পাড়ায় মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। দলের ৩১ দফার প্রচার, সভা-সমাবেশ করছি। বিএনপি ও আমার বাবার ভালোবাসায় মানুষ উজ্জীবিত। আশা করি, সবাই আমার পাশে থাকবেন।’
ডা. মাজহারুল বলেন, ‘চাঁদাবাজি-দখলবাজিমুক্ত সমাজ গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে মাঠে নেমেছি।’
গাজীপুর-৩ আসন
আসনটি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা, গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাওয়াল গড় ও পিরুজালী ইউনিয়ন এবং গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত। আসনটি কালিয়াকৈর থেকে আলাদা হওয়ার পর শ্রীপুর থেকে জাতীয় নির্বাচনে কেউ বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি।
এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সবুজ।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন জেলা আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম। এখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন। এনসিপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন মেজর (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুন।
ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। দল মনোনয়ন দিলে এবং নির্বাচিত হলে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত এলাকা গড়বেন।
গাজীপুর-৪ আসন
আসনটি কাপাসিয়া উপজেলা এলাকা নিয়ে গঠিত। এই আসন এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত। কারণ এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ। গত ১১ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাপাসিয়ায় এক স্মরণসভায় রিয়াজুল হান্নানকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন।
এখানে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগ করছেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী। এখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন মাওলানা কাজীম উদ্দীন এবং এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আলী নাছের খান।
রিয়াজুল হান্নান বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য অনেকবার মিথ্যা মামলা-হামলার শিকার হয়েছি, গ্রেপ্তার হয়েছি। আমি বাবার আদর্শ নিয়ে কাজ করছি।’
সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, ‘মানুষ আর দুঃশাসন-অনিয়ম দেখতে চায় না। বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছি। কাপাসিয়ার মানুষ জামায়াতকেই বেছে নেবে বলে আশা করছি।’
গাজীপুর-৫ আসন
আসনটি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪০, ৪১ এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা নিয়ে গঠিত। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হক মিলন। তিনি এর আগেও এখান থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এই আসনে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর শাখার নায়েবে আমির ও কালীগঞ্জ ফোরামের সভাপতি খায়রুল হাসান। তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরার সদস্য। তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগ করছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। এ ছাড়া এনসিপির পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন এম এম শোয়াইব।
ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘আমি উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। কালীগঞ্জবাসী আমাকে আগেও যেভাবে ভালোবেসেছেন, এবারও তেমন সাড়া দিচ্ছেন।’
গাজীপুর-৬ আসন
আসনটি নতুন। জনসংখ্যার অনুপাত বিবেচনায় সম্প্রতি এটি বাড়ানো হয়েছে। আসনটি গাজীপুর মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩৯ নম্বর এবং ৪৩ নম্বর থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড (টঙ্গী পূর্ব ও টঙ্গী পশ্চিম থানা এবং পুবাইল থানা) এলাকা নিয়ে গঠিত।
এখানে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, শ্রমিকনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং টঙ্গী পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এখানে বিএনপির অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন জাতীয় শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহাম্মেদ সুমন ও সাধারণ সম্পাদক গাজী সালাউদ্দিন।
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী দলের তুরস্ক শাখার সভাপতি ড. হাফিজুর রহমান। এখানে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হতে পারেন আব্দুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী এম এ হানিফ সরকার। এনসিপির একক প্রার্থী হতে পারেন নাবীল ইউসুফ।
হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘গাজীপুর-৬ বিএনপির দুর্গ হবে। ৩১ দফার বাস্তবায়ন ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষাই আমার লক্ষ্য।’
নাবীল ইউসুফ বলেন, ‘গাজীপুর-৬-কে আমি একটি মডেল আসন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই—যেখানে থাকবে আধুনিক অবকাঠামো, মাদকমুক্ত সমাজ ও নিরাপদ শহর।’
দেশের রাজনীতিতে রাজধানী-লাগোয়া শিল্পনগরী গাজীপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে পুরো জেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষণার আগেই গাজীপুরের মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।
শহর থেকে গ্রাম—সবখানে দেখা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার আর মিছিলের প্রতিযোগিতা। চলছে প্রচারপত্র বিতরণ, উঠান বৈঠক, সমাবেশ-পথসভা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক প্রচারও জমজমাট।
সীমানা পুর্নির্ধারণের পর জেলায় সংসদীয় আসন বেড়ে হয়েছে ছয়টি। আসন বাড়ানোয় সম্ভাব্য প্রার্থী ও ভোটারদেরও আগ্রহ বেড়েছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বিএনপি চারটি আসনে প্রার্থী ঠিক করেছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ছয়টি আসনেই একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সেসব সম্ভাব্য প্রার্থী দাঁড়িপাল্লা নিয়ে এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পাঁচটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে হাতপাখা প্রতীকে প্রচার শুরু করেছে। আর পাঁচ আসনে এনসিপির সম্ভাব্য একক প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন। মাঠে রয়েছেন গণঅধিকারের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও।
গাজীপুর-১ আসন
কালিয়াকৈর উপজেলা এবং মহানগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড (কোনাবাড়ী থানা) এলাকা নিয়ে গঠিত। আসনটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো পুনর্গঠন করা হয়েছে। আসনটি শ্রীপুরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রথমবার এটিকে শ্রীপুর থেকে আলাদা করে মহানগরীর কোনাবাড়ী ও কাশিমপুর থানার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এবার এখান থেকে কোনাবাড়ী থানা কেটে নিয়ে গাজীপুর-২-এ যুক্ত করা হয়েছে।
এই আসনে বিএনপি থেকে চারজন নতুন মুখ মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁদের কেউই আগে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেননি। তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ুন কবির খান, কালিয়াকৈর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী।
এখানে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত প্রার্থী মানারাত ট্রাস্টি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সচিব মু. শাহ আলম বকশী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জি এম রুহুল আমিন নিজ প্রতীক নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছেন।
সাইয়্যেদুল আলম বাবুল বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে সংগঠন ধরে রেখেছি। এবার মনোনয়ন পেলে কালিয়াকৈরের উন্নয়নে নিজেকে নিবেদন করব।’
শাহ আলম বকশী বলেন, ‘আমি এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ, চাঁদাবাজি বন্ধ করব এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করব।’
গাজীপুর-২ আসন
এই আসনটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। আসনটি বর্তমানে মহানগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৬ নম্বর এবং ১৩ নম্বর থেকে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড (মহানগরীর সদর মেট্রো থানা, বাসন, গাছা ও কাশিমপুর থানা) ও গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
এই আসন শ্রমিক-অধ্যুষিত ও সবচেয়ে আলোচিত। এখানে বিএনপি থেকে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা সবাই জাতীয় নির্বাচনে নতুন মুখ। তবে ভোটারদের কাছে সুপরিচিত। তাঁরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাজহারুল আলম, মহানগর বিএনপির সভাপতি মো. শওকত হোসেন সরকার, এই আসনের সাবেক এমপি, প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের সন্তান ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনি।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য মুহাম্মদ হোসেন আলী। ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা এম এ হানিফ সরকার। এখানে গণঅধিকার পরিষদ থেকে লড়বেন দলের জেলা আহ্বায়ক পাঠান আজহার।
এম মঞ্জুরুল করিম রনি বলেন, ‘আমি পাড়ায় পাড়ায় মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। দলের ৩১ দফার প্রচার, সভা-সমাবেশ করছি। বিএনপি ও আমার বাবার ভালোবাসায় মানুষ উজ্জীবিত। আশা করি, সবাই আমার পাশে থাকবেন।’
ডা. মাজহারুল বলেন, ‘চাঁদাবাজি-দখলবাজিমুক্ত সমাজ গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে মাঠে নেমেছি।’
গাজীপুর-৩ আসন
আসনটি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা, গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাওয়াল গড় ও পিরুজালী ইউনিয়ন এবং গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত। আসনটি কালিয়াকৈর থেকে আলাদা হওয়ার পর শ্রীপুর থেকে জাতীয় নির্বাচনে কেউ বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি।
এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সবুজ।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন জেলা আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম। এখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন। এনসিপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন মেজর (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুন।
ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। দল মনোনয়ন দিলে এবং নির্বাচিত হলে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত এলাকা গড়বেন।
গাজীপুর-৪ আসন
আসনটি কাপাসিয়া উপজেলা এলাকা নিয়ে গঠিত। এই আসন এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত। কারণ এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ। গত ১১ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাপাসিয়ায় এক স্মরণসভায় রিয়াজুল হান্নানকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন।
এখানে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগ করছেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী। এখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন মাওলানা কাজীম উদ্দীন এবং এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আলী নাছের খান।
রিয়াজুল হান্নান বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য অনেকবার মিথ্যা মামলা-হামলার শিকার হয়েছি, গ্রেপ্তার হয়েছি। আমি বাবার আদর্শ নিয়ে কাজ করছি।’
সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, ‘মানুষ আর দুঃশাসন-অনিয়ম দেখতে চায় না। বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছি। কাপাসিয়ার মানুষ জামায়াতকেই বেছে নেবে বলে আশা করছি।’
গাজীপুর-৫ আসন
আসনটি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪০, ৪১ এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা নিয়ে গঠিত। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হক মিলন। তিনি এর আগেও এখান থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এই আসনে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর শাখার নায়েবে আমির ও কালীগঞ্জ ফোরামের সভাপতি খায়রুল হাসান। তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরার সদস্য। তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগ করছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। এ ছাড়া এনসিপির পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন এম এম শোয়াইব।
ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘আমি উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। কালীগঞ্জবাসী আমাকে আগেও যেভাবে ভালোবেসেছেন, এবারও তেমন সাড়া দিচ্ছেন।’
গাজীপুর-৬ আসন
আসনটি নতুন। জনসংখ্যার অনুপাত বিবেচনায় সম্প্রতি এটি বাড়ানো হয়েছে। আসনটি গাজীপুর মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩৯ নম্বর এবং ৪৩ নম্বর থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড (টঙ্গী পূর্ব ও টঙ্গী পশ্চিম থানা এবং পুবাইল থানা) এলাকা নিয়ে গঠিত।
এখানে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, শ্রমিকনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং টঙ্গী পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এখানে বিএনপির অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন জাতীয় শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহাম্মেদ সুমন ও সাধারণ সম্পাদক গাজী সালাউদ্দিন।
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী দলের তুরস্ক শাখার সভাপতি ড. হাফিজুর রহমান। এখানে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হতে পারেন আব্দুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী এম এ হানিফ সরকার। এনসিপির একক প্রার্থী হতে পারেন নাবীল ইউসুফ।
হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘গাজীপুর-৬ বিএনপির দুর্গ হবে। ৩১ দফার বাস্তবায়ন ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষাই আমার লক্ষ্য।’
নাবীল ইউসুফ বলেন, ‘গাজীপুর-৬-কে আমি একটি মডেল আসন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই—যেখানে থাকবে আধুনিক অবকাঠামো, মাদকমুক্ত সমাজ ও নিরাপদ শহর।’
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের উত্তর পাকডাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদের (৭) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেবাগেরহাটের মোংলা ও খুলনার দাকোপ উপজেলার ১০ হাজারের বেশি শ্রমিককে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে দুটি নদী পার হয়ে প্রতিদিন কর্মস্থল মোংলা ইপিজেড ও মোংলা বন্দর শিল্পাঞ্চলে আসা-যাওয়া করতে হয়। এসব কর্মজীবী মানুষকে পারাপারে ট্রলারচালক ও মালিক সমিতি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
১ সেকেন্ড আগেসুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে রয়েছে নদীর তীরবর্তী বসতবাড়ি ও কৃষিজমি থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, ৮৬ কোটি টাকার আরেফিন-অদ্বৈত মৈত্রী সেতু এবং ঐতিহ্যবাহী অদ্বৈত মন্দিরের মতো স্থাপনা।
৪ মিনিট আগেচট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সারিবদ্ধ আটটি কফিন। প্রতিটিতে শায়িত একেকজন প্রবাসী। কিছুদিন আগেই তাঁরা হাসিমুখে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। সন্তানের কপালে চুমু দিয়ে, স্ত্রীকে সন্তানের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন। মা-বাবার কাছে আরজি ছিল, ‘নিজের খেয়াল রেখো।’ কিন্তু আজ তাঁরা নিথর।
৭ মিনিট আগে