Ajker Patrika

নোয়াখালীতে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরেছে লক্ষাধিক মানুষ, এখনো পানিবন্দী ১৮ লাখ 

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫: ০৯
নোয়াখালীতে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরেছে লক্ষাধিক মানুষ, এখনো পানিবন্দী ১৮ লাখ 

নোয়াখালীর আট উপজেলা ও সাত পৌরসভার বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। ধীরগতিতে পানি নামায় দীর্ঘ হচ্ছে বন্যার সময়কাল। ফলে ভোগান্তি বাড়ছে মানুষের। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। এদিকে গতকাল সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে কয়েক দফা বৃষ্টিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। 

সোমবার সকাল ৯টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলায় বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ২৫ মিলিমিটার। ফলে কিছু এলাকায় সামান্য পানি বেড়েছে। তবে মঙ্গলবার ভোর থেকে জেলায় রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশ রয়েছে। 

জেলা প্রশাসকের তথ্যমতে, জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে প্রায় ১ লাখ মানুষ বাড়ি ফিরে গেছে। এখনো ১ হাজার ৬৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ২ লাখ মানুষ রয়েছে। বন্যাকবলিত নিচু এলাকায় এখনো পানিবন্দী ১৭ লাখ ৮৭ হাজার ৩০০ জন। বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। বন্যাকবলিতদের সহায়তায় ৩০ লাখ নগদ অর্থ ও ৮১ মেট্রিকটন চাল মজুত আছে। তবে শুকনো খাবার, শিশুখাদ্য ও গোখাদ্যের কোনো মজুত নেই। 

বন্যা কমিটি এলাকার লোকজন জানান, গত কয়েক দিনে জেলার কাঁচা-পাকা বিভিন্ন উঁচু সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। পানি নামার পরপরই সড়কগুলোতে ক্ষতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। কাঁচা সড়কগুলো থেকে মাটি নেমে যাওয়ায় সেগুলো কয়েক ফুট নিচের দিকে নেমে গেছে। এ ছাড়া কাঁচা ঘরগুলোর নিচ থেকে পড়ে গেছে মাটি, ফলে যেকোনো মুহূর্তে এগুলো ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। 

এদিকে জেলায় বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, বন্যাকবলিত আটটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৭০ জন ডায়রিয়া রোগী। সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে ৯ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সালিস বৈঠকে উপস্থিত থাকার জেরে ছুরিকাঘাতে নিহত ১

­­­নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁ সদর উপজেলায় জমি নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে অনুষ্ঠিত সালিস বৈঠকে উপস্থিত থাকায় প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে গোলাম হোসেন (৫২) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের সুনলিয়া মালঞ্চি গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত গোলাম হোসেন মালঞ্চি গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের ছেলে।

নিহত ব্যক্তির চাচাতো ভাই নয়ন ইসলাম জানান, মালঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা হারুনুর রশিদ ও আজাদ নামের দুই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। কিছুদিন আগে দুই পক্ষ একজন আইনজীবীর কাছে সালিস বৈঠকে বসে। সেখানে গোলাম হোসেন (নিহত) উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি আজাদের পক্ষে বক্তব্য দেন।

নয়ন ইসলাম বলেন, ওই ঘটনার জেরে বুধবার রাতে হারুনুর রশিদের সঙ্গে গোলাম হোসেনের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হারুনের ছেলে অন্তর এসে গোলাম হোসেনকে ছুরিকাঘাত করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। মরদেহ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

নুরে আলম সিদ্দিকী আরও বলেন, এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মামলা দায়ের হলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘বিগত সময়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পুলিশকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে’

নোয়াখালী প্রতিনিধি
আজ সকালে নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (ডেভেলপমেন্ট) সরদার নূরুল আমিন বিপিএম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (ডেভেলপমেন্ট) সরদার নূরুল আমিন বিপিএম। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (ডেভেলপমেন্ট) সরদার নূরুল আমিন বিপিএম বলেছেন, ‘যেকোনো রাষ্ট্রব্যবস্থায় পুলিশ বাহিনী একটি অপরিহার্য অঙ্গ। এটি সর্বদা সরকারের দৃশ্যমান প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত। আমরা অতীতে দেখেছি, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থ উদ্ধারে পুলিশকে অনৈতিক ও অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে। এর ফলস্বরূপ পুলিশের কার্যক্রমের প্রতি মানুষের মধ্যে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল। যার প্রতিচ্ছবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দৃশ্যমান হয়েছে। এ অভ্যুত্থান এটাই প্রমাণ করে যে জনমতের বিপক্ষে গিয়ে কখনো টিকে থাকা যায় না।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে ৫২তম টিআরসি ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার নোয়াখালীর কমান্ড্যান্ট ডিআইজি মো. হায়দার আলী খান বিপিএম-সেবা।

সরদার নূরুল আমিন আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি একটি দেশের উন্নয়নের প্রধান নিয়ামক। স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলার অভাবে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সর্বোপরি জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। তাই বর্তমান সরকার পুলিশকে একটি জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। যার জন্য পুলিশে ব্যাপক সংস্কারে কাজ করছে সরকার। আমরা আমাদের অতীতের ত্রুটিগুলো নিরূপণের চেষ্টা করছি।’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা কুচকাওয়াজ, প্যারেডসহ বিভিন্ন ডিসপ্লে পরিদর্শন ও পুরস্কার বিতরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এস আলমের লোকজনও এখন নমিনেশন পাচ্ছে: কর্নেল অলি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
গতকাল রাতে বরমা কলেজ মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন এলডিপি সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (বীর বিক্রম)। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাতে বরমা কলেজ মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন এলডিপি সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (বীর বিক্রম)। ছবি: আজকের পত্রিকা

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (বীর বিক্রম) বলেছেন, ‘হাসিনা বাংলাদেশটাকে শেষ করে দিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনো হাসিনার লোকজন সক্রিয় রয়েছে। কেউ এস আলমের মাধ্যমে, কেউ অন্যভাবে। ইদানীং শুনতেছি, এস আলমের লোকজনকেও নমিনেশন দেওয়া হচ্ছে। এটা আমার কথা না, জনগণের কথা। আমিও তাদের সঙ্গে একমত।’ গতকাল বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে চন্দনাইশ উপজেলা গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দলের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে স্থানীয় বরমা কলেজ মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ আরও বলেন, ‘দেশের অবস্থা ভালো না। সবকিছুর দাম হু হু করে বাড়ছে। কারণ, হাসিনা বাংলাদেশে কিছুই রাখে নাই। ১৩৪ বিলিয়ন ডলার লুট করে নিয়ে গেছে। এ টাকা যদি বাংলাদেশে থাকত, তাহলে দেশ আজ পৃথিবীর অন্যতম ধনী দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে। কিছুই রাখে নাই। সব নিয়ে গেছে হাসিনা।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে অলি আহমদ বলেন, ‘আপনি হেলাফেলা করে দেশ পরিচালনা করলে হবে না। লটারি মন্ত্রীদেরকে নিয়ে আপনি দেশ চালাতে পারবেন না। এ রকম লটারি মন্ত্রী দিয়ে একটা দেশ পরিচালনা করা যায়, তা আমার ৬০ বছরের জীবনে আমি শুনি নাই।’ তিনি তাচ্ছিল্য করে বলেন, ‘অবশ্য লটারি মন্ত্রী দিয়ে দেশ পরিচালনার জন্য তিনি আরেকটা নোবেল পুরস্কারও পেতে পারেন। কারণ, তিনি এর আগে মাইক্রোক্রেডিটের জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন। সাধারণ মানুষ এখন অসহায়।’

কর্নেল অলি বলেন, ‘দেশের অবস্থা ভালো না। রক্তপাত হচ্ছে। বিএনপির নমিনেশন নিয়েও গোলাগুলি হয়েছে, মারামারি হয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশ একটা অশান্ত পরিবেশের মধ্যে আছে। বিভিন্ন কারণে এই অশান্ত পরিবেশ। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখল, তদবির ইত্যাদি নানামাত্রিক সমস্যায় মানুষ এখন কাহিল। এগুলো সমাধান হওয়া দরকার। গরিবদের ওপর জুলুম করা চলবে না। সরকারের দায়িত্ব এগুলোর সমাধান করা।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দল চন্দনাইশ উপজেলার সভাপতি জসিম উদ্দীন। সাধারণ সম্পাদক মো. মোরশেদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি শিল্পপতি এম এয়াকুব আলী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে বিএনপি নেতার গণসংযোগে গুলির ঘটনা দুই সন্ত্রাসীর বিরোধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ২৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে বিএনপির নির্বাচনী গণসংযোগে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে সরোয়ার হোসেন বাবলা (৪৩) নিহতের ঘটনাটি রাজনৈতিক কারণে ঘটেনি। দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারের পুরোনো বিরোধের জেরে ঘটেছে বলে দাবি পুলিশের। আর নিহত ব্যক্তির পরিবারের দাবি, দীর্ঘ পরিকল্পনা করে বাবলাকে হত্যা করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ জানান, হামলায় টার্গেট ছিলেন বাবলা। চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলার উদ্দেশ্য ছিল না।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবং চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগের সময় এই গুলিবর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। এ সময় এরশাদ উল্লাহ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে প্রচারপত্র বিলি করছিলেন। হঠাৎ এক যুবক কর্মীদের ভিড়ে ঢুকে খুব কাছ থেকে বাবলার ঘাড়ে গুলি করে। পরপর সাত-আটটি গুলিতে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন বাবলা।

গুলিতে আহত হন এরশাদ উল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক ইরফানুল হক (শান্ত), বিএনপি কর্মী আমিনুল হক ও মুর্তজা হক। তাঁদের নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালটির চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ইরফানুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া এরশাদ উল্লাহর পেটে ছররা গুলি লাগে, তবে তিনি শঙ্কামুক্ত।

গতকাল রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, হামলার টার্গেট ছিলেন বাবলা। তাঁর সঙ্গে বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই দ্বন্দ্ব থেকেই হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত।

পুলিশ জানায়, বাবলার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যা ও চুরি-ডাকাতিসহ ১৫টি মামলা রয়েছে। তিনি একাধিকবার জেল খেটেছেন। গত মার্চেও বাকলিয়া এক্সেস রোডে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়, তখন দুজন নিহত হন।

দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরোধে ঘটনাটি ঘটলেও নির্বাচনের আগে এমন সন্ত্রাসী হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মনে করছে পুলিশ। এসব কথা জানিয়ে সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ‘সামনে বিএনপি-জামায়াতসহ যেকোনো দল জনসভা বা গণসংযোগের অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে জানাতে হবে। আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেব।’

হাসিব আজিজ আরও বলেন, হামলার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জড়িত সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। হামলাকারীদের শনাক্তে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বাবলা এক মাস আগে বিয়ে করেছিলেন। বিয়েতে বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহসহ কয়েকজন স্থানীয় নেতা ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে তিনি বিএনপির কর্মসূচিতে সক্রিয় হতে শুরু করেন।

স্থানীয় ব্যক্তিদের মতে, বাবলা রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় এলাকায় প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে যুক্ত ছিলেন।

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘ঘটনাটি রাজনৈতিক নয় বলে আমরা নিশ্চিত। এটি বাবলা ও ছোট সাজ্জাদ গ্রুপের বিরোধেরই পরিণতি। জড়িতদের শনাক্তে একাধিক টিম কাজ করছে।’

বাবলার পরিবারের সদস্যদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। এ জন্য বহুবার বাবলাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল।

নিহত বাবলার ভাই আজিজ হোসেন দাবি করেন, ‘ছোট সাজ্জাদের লোকজনই পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। অনেক দিন ধরেই ওরা হুমকি দিচ্ছিল—“যা খেয়ে নে, সময় খুব কম।” আমরা ভেবেছিলাম এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে কোনো বিপদ হবে না, কিন্তু ওরা সুযোগ নিয়েছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গুলি চালানো যুবকেরা গণসংযোগে আসা কর্মীদের সঙ্গেই মিশে ছিল। তারা একটি মাইক্রোবাসে করে এসে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

তবে বিএনপির দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে দলীয় কোনো সম্পর্ক নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণসংযোগে শত শত মানুষ অংশ নিয়েছিল। বাবলার সঙ্গে অন্য সন্ত্রাসী দলের বিরোধের জেরেই হামলা হয়েছে। সরকারপক্ষ এই ঘটনাকে রাজনৈতিক রং দিতে চাইলে তা হবে দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত