Ajker Patrika

কাজ শেষ না করে পালিয়েছে ঠিকাদার, তিনটি সড়কে ভোগান্তিতে জনজীবন

মাসুদ পারভেজ রুবেল, ডিমলা (নীলফামারী)
ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী থেকে ডিমলার বাবুরহাট পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কের দুর্দশা চোখে পড়ার মতো।
ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী থেকে ডিমলার বাবুরহাট পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কের দুর্দশা চোখে পড়ার মতো।

নীলফামারীর ডিমলা ও ডোমার উপজেলার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংস্কারকাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে পালিয়ে যাওয়ায় রাস্তাগুলো এখন ধুলা, কাদা আর বড় বড় গর্তে ভরা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে হাজারো মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও গর্ভবতী নারীদের জন্য এই অবস্থা আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী থেকে ডিমলার বাবুরহাট পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার সড়কের দুর্দশা চোখে পড়ার মতো। চার বছর আগে এই সড়কের সংস্কারকাজ শুরু হলেও সেটি মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তা খোঁড়া হলেও পরে কাজ আর এগোয়নি। ইটের খোয়া মাটির সঙ্গে মিশে গিয়ে এখন পুরো সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। প্রতিদিন এই রাস্তায় ঘটছে ছোট-বড় নানা দুর্ঘটনা।

পাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘চার বছর ধরে আমরা ধুলো আর কাদার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। ঠিকাদার কাজ ফেলে গেলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ডোমার ও ডিমলা উপজেলার হাজারো মানুষ চলাচল করে। শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষ, কৃষি পণ্যবাহী ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহনকে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে। প্রায়ই মালবাহী গাড়ি গর্তে আটকে গিয়ে উল্টে যায়, যা নিয়মিত দুর্ঘটনার কারণ।

পথচারী রহিমা বেগম বলেন, ‘এই রাস্তায় পড়ে গিয়ে অনেক মানুষ আহত হয়। গর্ভবতী মায়েদের হাসপাতালে নিতে ভ্যান বা অ্যাম্বুলেন্সও গর্তে আটকে যায়।’

স্থানীয় বাসিন্দা আলম মিয়া বলেন, ‘কয়েক মাস আগে একটি অটো উল্টে গিয়ে একজন মারা যান। এর পরও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।’

. ইটের খোয়া মাটির সঙ্গে মিশে গিয়ে এখন পুরো সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা
. ইটের খোয়া মাটির সঙ্গে মিশে গিয়ে এখন পুরো সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। ছবি: আজকের পত্রিকা

ডোমার জিসি থেকে আমবাড়ী আলসিয়া বাজার হয়ে বসুনিয়া হাট পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কের অবস্থাও একই রকম। কাজ শুরু না করেই ঠিকাদার সরে যাওয়ায় তিনটি ইউনিয়নের মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন পার করছে।

কলেজ শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রাস্তার বেহাল দশার কারণে সময়মতো কলেজে যেতে পারি না। বর্ষায় অবস্থা আরও খারাপ হয়। দ্রুত কাজ শুরু না হলে আমরা শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করব।’

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক তিনটি সংস্কারের কাজ পায় ঝিনাইদহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইউনিক কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। ২০২১ সালের জুনে কাজ শুরু করে চার মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পের প্রায় ৩০ শতাংশ টাকা তুলে নিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়।

এ বিষয়ে ডোমার উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফিরোজ আলম বলেন, আগের ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত