Ajker Patrika

কক্ষে তালা, বারান্দায় অফিস করলেন অধ্যক্ষ 

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জুন ২০২৩, ১৯: ০৬
কক্ষে তালা, বারান্দায় অফিস করলেন অধ্যক্ষ 

জামালপুরের সরকারি ইসলামপুর কলেজে কক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় বারান্দায় বসে দাপ্তরিক কাজ করেন নতুন অধ্যক্ষ। অভিযোগ ওঠে কলেজটির উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে কক্ষে তালা ঝুলিয়েছেন। এমন অভিযোগের নিন্দা জানিয়েছেন উপাধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন।

 এ ঘটনায় আজ সোমবার দুপুরে ইসলামপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ভার্চুয়ালে সংবাদ সম্মেলন ডেকে উপাধ্যক্ষ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। 

এর আগের দিন গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে অধ্যক্ষের কক্ষের দরজার তালা খুলে না দেওয়ায় বারান্দায় বসে দাপ্তরিক কাজ করেন কলেজটির নতুন অধ্যক্ষ ড. ছদরুদ্দীন আহমদ। অধ্যক্ষের দাবি, কক্ষের দরজার তালা খুলে না দেওয়ায় বারান্দায় বসে তিনি দাপ্তরিক কাজ করেন। তবে উপাধ্যক্ষ বলেন, সরকারিভাবে অধ্যক্ষ যোগদানের কোনো চিঠি না পাওয়ায় অধ্যক্ষের কক্ষ বন্ধ রাখা হয়েছে। 

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক চিঠিতে জানা গেছে, গত ৬ জুন সরকারি এক প্রজ্ঞাপন দিয়ে টাঙ্গাইলের সখীপুরের সরকারি মুজিব কলেজের অধ্যক্ষ ছদরুদ্দীন আহমদকে সরকারি ইসলামপুর কলেজে সংযুক্ত করা হয়। 

অপর এক চিঠিতে জানা গেছে, গতকাল অধ্যক্ষ ছদরুদ্দীন আহমদের নির্ধারিত কর্মদিবস ছিল। 

গতকাল কলেজ গিয়ে দেখা যায়, অধ্যক্ষ ছদরুদ্দীন আহমদ তাঁর কক্ষের সামনে বারান্দায় ছোট্ট একটি চেয়ারে বসে দাপ্তরিক কাজ পরিচালনা করছেন। অধ্যক্ষের সামনে রাখা টেবিলে শিক্ষকেরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন। এ সময় অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ উভয়ের কক্ষ ছিল তালাবদ্ধ। 

এ খবর চারদিকে চাউর হওয়ায় ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান উপাধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন। 

উপাধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘গত শনিবার ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কলেজের কাজের বিষয়ে কথা হলে তিনি আমাকে ঢাকায় আসতে বলেন। আমি ঢাকায় চলে আসি। আমি বাইরে থাকলে আমার কক্ষ তালাবদ্ধ থাকাটাই স্বাভাবিক। অধ্যক্ষ ইসলামপুরে আছেন কিনা, তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।’ 

উপাধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘অধ্যক্ষ কলেজে গিয়ে আমাকে কল না করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গণমাধ্যম ও সুধী মহলে যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন তা দুঃখজনক। আমি এ সবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’  

কলেজের শিক্ষকেরা জানান, গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) অধ্যক্ষ কলেজে যোগদান করেন। এ সময় তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। তবে কলেজের উপাধ্যক্ষ এ সময় উপস্থিত ছিলেন না। 

ওই কলেজে শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব রাজা বলেন, ‘আমার এক আত্মীয় অসুস্থ থাকায় আমি কর্মস্থলের বাইরে আছি। এ কারণে কোনো কিছু বলতে পারছি না।’

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, প্রায় বিশ বছর ধরে এ কলেজটি চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে। এর আগে সাবেক অধ্যক্ষ সুলতান সালাউদ্দিন আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে তিনি আদালতের নির্দেশে একাধিকবার কলেজে যোগ দিতে এলেও তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছে। 

একাধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অধ্যক্ষ পদে যোগদান না করাতে ছদরুদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে নবাগত অধ্যক্ষ ড. ছদরুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী অধ্যক্ষ হিসাবে কলেজে যোগদান করেছি। অফিস করতে গিয়ে দেখি অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলছে। স্টাফদের কাছে জানতে পারি তালার চাবি নাকি হারিয়েছে। তাই আমি বাধ্য হয়েই বারান্দায় বসে অফিশিয়াল কার্যক্রম পরিচালনা করি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় প্রশাসন ছাড়া অফিস কক্ষের তালা ভাঙতে পারি না। মূলত এ কলেজে আমার যোগদান নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত