Ajker Patrika

 ২২ দিনে হাতির আক্রমণে ৬ জনের প্রাণহানি, সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ মে ২০২৩, ১৫: ৫৫
 ২২ দিনে হাতির আক্রমণে ৬ জনের প্রাণহানি, সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক

ময়মনসিংহ বিভাগের দুই জেলায় ২২ দিনের ব্যবধানে হাতির আক্রমণে ছয়জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। এদিকে হাতির আক্রমণে প্রাণহানিসহ ফসল ও ঘরবাড়ি রক্ষায় নির্ঘুম রাত পার করছেন সীমান্ত এলাকার মানুষ। তবে পরিবেশবাদীরা বলছেন, বনাঞ্চল রক্ষা না করলে হাতি-মানবের দ্বন্দ্ব আরও বাড়বে। 

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ২ মে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্তের কান্দাপাড়া গ্রামে ফসল রক্ষা করতে গিয়ে বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণ দিতে হয় পল্লি চিকিৎসক ইদ্রিস আলীকে (৫০)। এর আগে ২২ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের দিন একই উপজেলায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মারা যান কৃষক ফরজুল ইসলাম (৩০)। কৃষক ফরজুলের মৃত্যুর চার দিন আগে পাশের উপজেলা ধোবাউড়ায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে প্রাণ যায় শিশু সুমন আহমেদের (১২)। ১৯ এপ্রিল উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের রাণীপুর গ্রামে সে মারা যায়। 

এদিকে ১৪ এপ্রিল শেরপুর জেলার শ্রীবরদীর সিংগাবরুনা ইউনিয়নের বালিঝুরি রেঞ্জের মালাকোচা বিটে বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণ হারান আব্দুল করিম (২৮)। একই উপজেলার মালাকুচা এলাকায় ১ মে প্রাণ যায় আব্দুল হামিদের (৫৫)। 

শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর মধুটিলা ইকো পার্কসংলগ্ন কালাপানি এলাকায় বোরো খেতে ২৫ এপ্রিল হাতির আক্রমণে গুরুতর আহত হন বিজয় সাংমা (৫২)। জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ এপ্রিল রাতে মারা যান তিনি। সর্বশেষ গত ৬ মে ঝিনাইগাতী উপজেলার পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামের কৃষক নুহু মিয়ার বৈদ্যুতিক ফাঁদে এক হাতির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বন বিভাগ ওই কৃষককে আসামি করে একটি মামলাও করে। 

হালুয়াঘাটের গাজীরভিটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘গত কয়েক দিনে আমার ইউনিয়নে হাতির আক্রমণে দুজন প্রাণ হারিয়েছেন। আমরা এলাকাবাসী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এভাবে আর কত দিন চলবে হাতি-মানবের দ্বন্দ্ব? সরকার দ্রুত সীমান্ত এলাকায় ফাঁদ বসিয়ে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেবে এটাই আমার দাবি।’ 

একই উপজেলার ভুুবনকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান সুরুজ মিয়া বলেন, এ ইউনিয়নে হাতি তাড়ানোর ফাঁদে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সীমান্ত এলাকার মানুষ হাতির ভয়ে নির্ঘুম রাত পার করছে। অনেকে নিজ বাড়ি ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছেন। 

সুরুজ মিয়া আরও বলেন, সন্ধ্যার পরেই ৩০ থেকে ৩৫টি হাতি একসঙ্গে পাহাড় থেকে নেমে খাবারের সন্ধানে ফসল নষ্ট করে। ফসল রক্ষা করতে গেলেই মানুষের ওপর চড়াও হয় হাতির পাল। বন বিভাগ পরিকল্পনা অনুযায়ী উদ্যোগ না নিলে কোনোভাবেই মানুষ ও জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারবে না। 

ময়মনসিংহ বন বিভাগের গোপালপুর বিট (হালুয়াঘাট ও নালিতাবাড়ী বিটের অংশ) কর্মকর্তা মাজাহারুল হক জানান, হাতি ঠেকাতে তাঁর অংশে ইতিমধ্যে দুই কিলোমিটার সৌরবিদ্যুতের ফাঁদ বসিয়েছেন। আরও কিছু কাজ চলছে। অন্তত ২৫ কিলোমিটার ফাঁদ বসানো হলে অনেকটাই হাতি প্রবেশ বন্ধ করা যাবে বলেও জানান তিনি। 

হাতি-মানবের দ্বন্দ্বে প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে ময়মনসিংহ পরিবেশ রক্ষা উন্নয়ন আন্দোলনের সভাপতি অধ্যক্ষ ড. শাহাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, উভয় (ভারত ও বাংলাদেশের) দেশের সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। বনায়ন বাড়াতে হবে। একসময় প্রচুর বনাঞ্চল ছিল। মানবজাতি সেগুলো ধ্বংস করার কারণে খাবার না পেয়ে হাতির পাল লোকালয়ে চলে আসছে। মানুষের ফসল ও ঘরবাড়ির ক্ষতি করছে। মানুষও পাল্টা হাতির ওপর চড়া হওয়ায় হাতি-মানবের দ্বন্দ্বে উভয়েই মারা যাচ্ছে। 

ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ২০১৪ থেকে ২০২৩ সালের দীর্ঘ ৯ বছরে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় হাতির আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে ৩৫ জন। এই সময়ের মধ্যে মানুষের হামলাসহ নানা কারণে ৩০টি হাতিও মারা গেছে। ২ হাজারের অধিক হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে আরও ২ হাজার। সরকার ৯ বছরে প্রায় ৬৯ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। 

এই বন কর্মকর্তা আরও বলেন, চার জেলার ১৬০ কিলোমিটারের মতো সীমান্ত রয়েছে। এসব সীমান্তের করিডর দিয়ে ভারতের মেঘালয় থেকে শতাধিক বন্য হাতি বর্তমানে বাংলাদেশে প্রবেশরত। হাতির প্রবেশ বন্ধে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্তে ১৩ কিলোমিটারব্যাপী সৌরবিদ্যুতের ফাঁদ নির্মাণ করা হয়েছিল। 

আর্থিক সংকটের কারণে সংস্কার না করায় সৌরবিদ্যুতের ফাঁদ নষ্ট হয়ে পড়েছে। নতুনভাবে সেখানে আাট কিলোমিটার সৌরবিদ্যুতের ফাঁদ নির্মাণের কাজ চলমান। গোপালপুরে দুই কিলোমিটার সৌরবিদ্যুতের ফাঁদ নির্মাণ করা হয়েছে। আরও ২৫ কিলোমিটার সৌরবিদ্যুতের ফাঁদ নির্মাণের পাশাপাশি সীমান্তে কাঁটাযুক্ত গাছ লাগানোর প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এসব বাস্তবায়িত হলেই বন্য হাতির আক্রমণ অনেকটাই কমে আসবে বলেও জানান এই বন কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎মোহাম্মদপুরে ইউল্যাব শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৮
তানহা বিনতে বাশার
তানহা বিনতে বাশার

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকায় একটি বাসা থেকে তানহা বিনতে বাশার নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বিকেলে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তানহা কুমিল্লার রেসকোর্স এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। পড়াশোনা করতেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসে (ইউল্যাব)।

আজ ‎মঙ্গলবার রাতে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. রফিক আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বিকেলে নবীনগর হাউজিং এলাকার একটি বাসা থেকে তানহা নামের ইউল্যাবের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর লাশের সুরতহাল করে আজ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিেকল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

‎এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।‎

‎এদিকে তানহার সঙ্গে ইউল্যাবের অপর এক শিক্ষার্থীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেছে তাঁর সহপাঠী ও পরিবার। তাঁদের দুজনের সম্পর্কের টানাপোড়নের মাঝেই তানহার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ‎

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজীপুরে তিনটি পত্রিকার প্রকাশনা সনদ বাতিল

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে তিনটি পত্রিকার প্রকাশনা সনদ বাতিল

গাজীপুরের তিনটি পত্রিকার প্রকাশনা সনদ (ডিক্লারেশন) বাতিল করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের নির্দেশের আলোকে ডিক্লারেশন বাতিল করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাফিসা আরেফিন। ডিক্লারেশন বাতিল হওয়া পত্রিকাগুলো হলো দৈনিক জনসংবাদ, দৈনিক আজকের গাজীপুর ও দৈনিক বাস্তব চিত্র।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পত্রিকা তিনটির ডিক্লারেশন বাতিলের জন্য গত ১৭ সেপ্টেম্বর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (নিবন্ধন) ডায়ানা ইসলাম সীমা স্বাক্ষরিত পৃথক স্মারকে তিনটি চিঠি গাজীপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়।

চিঠিগুলোতে একই কারণ উল্লেখ করে বলা হয়, ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধীকরণ) আইন, ১৯৭৩ অনুযায়ী সংবাদপত্র প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই অধিদপ্তরে চার কপি জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু গাজীপুর জেলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জনসংবাদ, দৈনিক আজকের গাজীপুর ও দৈনিক বাস্তব চিত্র পত্রিকা জানুয়ারি ২০২৪ থেকে আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত এই অধিদপ্তরে কোনো সংখ্যা জমা দেয়নি। এতে প্রতীয়মান হয় যে পত্রিকাগুলো প্রকাশিত হচ্ছে না।

তাই ১৯৭৩ সালের ছাপাখানা ও প্রকাশনা (ঘোষণা ও নিবন্ধীকরণ) আইন মোতাবেক ঘোষণাপত্র বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

চিঠি তিনটি গত ২২ সেপ্টেম্বর গাজীপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কার্যালয়ে পৌঁছায়। পরে গাজীপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চিঠির আদেশ বাস্তবায়ন করেন বলে গতকাল সোমবার রাতে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, পত্রিকাগুলোর প্রকাশনা সনদ (ডিক্লারেশন) বাতিল করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের কোনো হাত ছিল না। জেলা প্রশাসন শুধু তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের নির্দেশের বাস্তবায়ন করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরিশালে অপসো স্যালাইন ফার্মার অচলাবস্থা কাটেনি, কাল মালিক-শ্রমিক বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
চাকরি ফেরতের দাবিতে আজ মঙ্গলবার বরিশাল নগরের বগুড়া সড়কে অপসো স্যালাইন ফার্মার কারখানার সামনে শ্রমিকদের অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাকরি ফেরতের দাবিতে আজ মঙ্গলবার বরিশাল নগরের বগুড়া সড়কে অপসো স্যালাইন ফার্মার কারখানার সামনে শ্রমিকদের অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাকরি ফেরতের দাবিতে শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে বরিশালের অপসো স্যালাইন ফার্মা লিমিটেডে শুরু হওয়া অচলাবস্থা কাটেনি। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের দেওয়া ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম আজ মঙ্গলবার বিকেলে শেষ হয়। সমস্যা সমাধানে এ সময়ের মধ্যে মালিকপক্ষ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তবে আগামীকাল বুধবার বরিশাল শ্রম অধিদপ্তর মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা ডেকেছে।

৫৭০ জন শ্রমিক চাকরিচ্যুত করায় গত ২৯ অক্টোবর থেকে শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করছেন। তাঁরা চাকরি ফেরত চান। নগরের বগুড়া সড়কে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে শ্রমিকেরা শনিবার থেকে অবস্থান নেন। বাম গণতান্ত্রিক জোট ও মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন সেখানে গিয়ে শ্রমিকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

আজ বিকেলে শ্রমিকেরা বগুড়া সড়ক থেকে মিছিল নিয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে অপসোনিন গ্রুপের প্রধান কারখানার সামনে যান। সেখানে অন্য কারখানার শ্রমিকদের নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

অপসো স্যালাইন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব মিয়া জানান, কাল বুধবার শ্রম অধিদপ্তরের সভায় সমঝোতা না হলে সব কারখানায় কর্মবিরতি ও মহাসড়ক অবরোধের মতো কঠিন কর্মসূচিতে যাবেন।

বাসদ নেত্রী ডা. মনিষা চক্রবর্তী বলেন, আগামীকাল শ্রমিক প্রতিনিধি ও মালিক প্রতিনিধিদের বরিশাল শ্রম অধিদপ্তরের কার্যালয়ে সভা ডাকা হয়েছে। সভায় সমঝোতা না হলে শ্রমিকেরা কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন।

ট্রেড ইউনিয়ন নেতা তুষার বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে মালিকের লোকজন। এ জন্য সতর্ক থাকতে হবে। বুধবার শ্রম অধিদপ্তরে ৫৭০ জন শ্রমিকের ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে।’ তিনি শ্রম অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনিরুজ্জামানকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘আমরা চাই না মহাসড়ক অচল করে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলতে।’

অপসো স্যালাইন কারখানায় কর্মরত স্টুরিপ্যাক (সিরিঞ্জ ও স্যালাইন সেট প্রস্তুতকারক) শাখার ৫৭০ জন শ্রমিককে গত বুধবার চাকরিচ্যুতির চিঠি দেয় কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাসিনার মন্ত্রীর বাড়িতে একটি করে হাড় কবর দিলেও ১০০ বাড়ি ফাঁকা: সারজিস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
তেঁতুলিয়ায় রাজনৈতিক সভায় এনসিপি নেতা সারজিস আলম। ছবি: সংগৃহীত
তেঁতুলিয়ায় রাজনৈতিক সভায় এনসিপি নেতা সারজিস আলম। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর দুর্নীতির কথা বলতে গিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘শেখ হাসিনার ভূমিমন্ত্রীর ৩৬০টা বাড়ি কানাডায়। একটা মানুষের শরীরের হাড় হইল ২০৬টা। মরার পর হাড়গুলো আলাদা করে যদি একটা বাড়িতে একটা কবর হিসাবে রাখে, তাও ১০০টা বাড়ি পড়ে থাকবে। এ রকম করেই জনগণের টাকার লুটপাট করেছে।’

আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় এক রাজনৈতিক সভায় এনসিপি নেতা এসব কথা বলেন।

সভায় জুলাই সনদ নিয়ে সারজিস বলেন, ‘প্রায় ৩০-৪০ বছর আগে একবার গণভোট হয়েছিল। আবার সামনে গণভোট হবে। যে নিয়ম-কানুনগুলোর কারণে শেখ হাসিনা ধীরে ধীরে একজন স্বৈরাচার হয়ে উঠেছে, সেই নিয়ম-কানুনগুলোর পরিবর্তন দরকার আছে না নাই? এই জুলাই সনদ হলো সেই সনদ, যেখানে লেখা আছে—কোন পরিবর্তনগুলো হলে জনগণের সঙ্গে সরকারের ক্ষমতার একটি ভারসাম্য তৈরি হবে। কোন পরিবর্তনগুলো হলে আগামীতে কোনো সরকার আর স্বৈরাচারের সরকার হয়ে উঠতে পারবে না। কোন পরিবর্তনগুলো হলে আগামীর নেতার পা খালি আকাশে বেরাবেনি, মাটিতেও পড়বে। আমরা যে দলেরই হই না কেন, এই বাংলাদেশের জনগণের আগে, দেশের আগে কিংবা নিজের জীবনের নাগরিক সুবিধার আগে, কিংবা এগুলোর ঊর্ধ্বে কখনো দল হতে পারে না। দেশের চেয়ে কখনো দল বড় হতে পারে না।’

সভায় দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এনসিপি নেতা বলেন, এই দেশে ১৮-২০ কোটি মানুষের অধিকারের চেয়ে কখনো একটা দল বড় হতে পারে না। তাই অনুরোধ, আমরা যে দলেরই হই না কেন, গণভোটের দিন ওই জুলাই সনদে আমরা যেন জুলাই সনদের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিই।

সভায় স্থানীয় এনসিপি নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাল মিষ্টি বিতরণে বারণ করেছিলেন, আজ মনোনয়ন স্থগিত—কে এই কামাল জামান

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

প্রতীক পেল এনসিপি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও আমজনগণ

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত