মো. জাকিরুল ইসলাম, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ)
গারো পাহাড়ের পাদদেশে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী উপজেলা হালুয়াঘাট। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে ছোট-বড় নদ-নদী, খাল-বিল পানিতে টইটম্বুর থাকে। আর সেই সবের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে ছোট-বড় নানা ধরনের নৌকা। প্রতিবছর এ সময় নিজেদের নৌকা ঠিকঠাক করাসহ নতুন নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেন উপজেলার নৌকার কারিগরেরা। কাজের ফাঁকে ফাঁকে গুনগুন করে গাইছেন ভাটিয়ালি গান।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে আঁকাবাঁকা সড়ক পাড়ি দিয়ে গ্রামের পথ ধরে প্রায় ১২ কিলোমিটার ভেতরে বিলডোরা ইউনিয়নের দাড়িয়াকান্দি গ্রাম। সেখানে ভোর থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নৌকা কারিগরেরা। কেউ কাঠে খটখট শব্দের তালে পেরেক ঠুকছেন, আবার কেউ কাঠ কাটা বা চেরাই নিয়ে ব্যস্ত। কেউ আবার নৌকার তলা তৈরিতে কাঠ বিছিয়ে দিচ্ছন। গুনগুন করে ভাটিয়ালি গান ধরছেন কেউ, সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন বাকিরাও।
কারিগরেরা জানান, একটি মাঝারি আকারের নৌকা তৈরিতে তিন দিন সময় লেগে যায় তাঁদের। আগে নৌকা তৈরির গাছ অল্প টাকায় পাওয়া যাওয়ায় কম টাকায় বিক্রি করতেন তাঁরা। এখন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাঠও তেমন পাওয়া যায় না। এখন রেইনট্রি, জারুল, ইউক্যালিপটাস কাঠের নৌকা তৈরি করি।
শুধু বিলডোরা, দাড়িয়াকান্দা এলাকা নয়; এমন চিত্র দেখা যায় উপজেলার নড়াইল, ধুরাইল, আমতৈল, শাকুয়াই, স্বদেশি এলাকায়ও।
বিলডোরা এলাকার নৌকার কারিগর খাইরুল ইসলাম (৩৮)। আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা হয় তার। খাইরুল ইসলাম জানান, তাঁর বাবা হামিদ মিস্ত্রিও নৌকার কারিগর ছিলেন। এখনো এই এলাকায় হামিদ মিস্ত্রির বেশ নামডাক রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নৌকা তৈরি আমাগো বাপ-দাদার পেশা। আমরা পাঁচ ভাই এই পেশায়। সেই ছোট্টকাল থেকে নৌকা তৈরির কাজে আছি। বর্ষা মৌসুমে চাহিদা বাড়ে নতুন নৌকার, আবার মেরামতেরও। নৌকার আকার ও কাঠভেদে একেকটি নৌকা ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। এতে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১-২ হাজার টাকা থাকে।’
খাইরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এই অঞ্চলে নৌকার অনেক চাহিদা। যাঁরা ধান ও পাট চাষ করেন, তাঁদের নৌকা ছাড়া চলে না। আর বিল, নদী-নালা থেকে মাছ ধরতে জেলেরাও নৌকার অর্ডার দিয়ে থাকেন। আমি বর্ষা মৌসুমে নৌকা বানাই আর বাকি সময় অন্য কাজ করি। এখানকার নৌকা ভালো বেচাবিক্রি হয়।’
সেখানে নৌকা কিনতে এসেছেন হৃদয় আহমেদ লিটন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘এখন নৌকার দাম অনেক বেশি। ৮ হাজার টাকার নিচে নৌকা নাই। নৌকা ছাড়া আমাদের চলে না। আমরা ভাটি এলাকার মানুষ। আমার একটা ফিশারি আছে, ফিশারিতে নৌকা দিয়া যাইতে হয়।’
নৌকার কারিগর, স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নদীবেষ্টিত এই হালুয়াঘাট উপজেলায় রয়েছে কংস, ভোগাই, দর্শা, গাংগিনা, শেওলা, মেনংছড়াসহ বেশ কয়েকটি ছোট-বড় নদী। এ ছাড়া জামবিল, কলমি বিলসহ বেশ কিছু বিল। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যায়। তাই অনেক আগে থেকেই হালুয়াঘাটের মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন ছিল নৌকা। আর নিজেদের প্রয়োজনেই এখানকার মানুষ নৌকা বানানো শিখে নিয়েছিলেন। তৈরির দক্ষতা ও সৌন্দর্যের কারণে এই এলাকার নৌকার আলাদা কদরও রয়েছে। পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা থেকে ক্রেতারা এখানকার বিভিন্ন হাটে আসতেন নৌকা কেনার জন্য। তবে আগের মতো সারা বছর পানি না থাকায় এবং বিভিন্ন নদ-নদী, খাল-বিল দখল করে ভরাট করে ফেলায় এখন শুধু বর্ষা মৌসুমেই নৌকার বিষয়গুলো চোখে পড়ে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে রাস্তাঘাট ছিল না। বর্ষায় নৌকাতেই সবাই চলাচল করত। প্রতি বাড়িতেই একটা করে নৌকা রাখতে হতো। তখন থেকে এলাকায় নৌকা তৈরি হয়।’
বিলডোরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবজাল হোসেন খান বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম এলে আমাদের এখানে বিলডোরা দাড়িয়াকান্দাসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় নৌকা তৈরি শুরু করে কারিগরেরা। এখানকার নিচু অঞ্চলগুলোতে নৌকার খুব চাহিদা আছে। নৌকা তৈরির কারিগরদের কোনো ধরনের সাহায্যের দরকার হলে আমরা তাদের পাশে থাকব।’
গারো পাহাড়ের পাদদেশে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী উপজেলা হালুয়াঘাট। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে ছোট-বড় নদ-নদী, খাল-বিল পানিতে টইটম্বুর থাকে। আর সেই সবের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে ছোট-বড় নানা ধরনের নৌকা। প্রতিবছর এ সময় নিজেদের নৌকা ঠিকঠাক করাসহ নতুন নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেন উপজেলার নৌকার কারিগরেরা। কাজের ফাঁকে ফাঁকে গুনগুন করে গাইছেন ভাটিয়ালি গান।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদর থেকে আঁকাবাঁকা সড়ক পাড়ি দিয়ে গ্রামের পথ ধরে প্রায় ১২ কিলোমিটার ভেতরে বিলডোরা ইউনিয়নের দাড়িয়াকান্দি গ্রাম। সেখানে ভোর থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নৌকা কারিগরেরা। কেউ কাঠে খটখট শব্দের তালে পেরেক ঠুকছেন, আবার কেউ কাঠ কাটা বা চেরাই নিয়ে ব্যস্ত। কেউ আবার নৌকার তলা তৈরিতে কাঠ বিছিয়ে দিচ্ছন। গুনগুন করে ভাটিয়ালি গান ধরছেন কেউ, সঙ্গে সুর মেলাচ্ছেন বাকিরাও।
কারিগরেরা জানান, একটি মাঝারি আকারের নৌকা তৈরিতে তিন দিন সময় লেগে যায় তাঁদের। আগে নৌকা তৈরির গাছ অল্প টাকায় পাওয়া যাওয়ায় কম টাকায় বিক্রি করতেন তাঁরা। এখন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাঠও তেমন পাওয়া যায় না। এখন রেইনট্রি, জারুল, ইউক্যালিপটাস কাঠের নৌকা তৈরি করি।
শুধু বিলডোরা, দাড়িয়াকান্দা এলাকা নয়; এমন চিত্র দেখা যায় উপজেলার নড়াইল, ধুরাইল, আমতৈল, শাকুয়াই, স্বদেশি এলাকায়ও।
বিলডোরা এলাকার নৌকার কারিগর খাইরুল ইসলাম (৩৮)। আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা হয় তার। খাইরুল ইসলাম জানান, তাঁর বাবা হামিদ মিস্ত্রিও নৌকার কারিগর ছিলেন। এখনো এই এলাকায় হামিদ মিস্ত্রির বেশ নামডাক রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নৌকা তৈরি আমাগো বাপ-দাদার পেশা। আমরা পাঁচ ভাই এই পেশায়। সেই ছোট্টকাল থেকে নৌকা তৈরির কাজে আছি। বর্ষা মৌসুমে চাহিদা বাড়ে নতুন নৌকার, আবার মেরামতেরও। নৌকার আকার ও কাঠভেদে একেকটি নৌকা ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। এতে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১-২ হাজার টাকা থাকে।’
খাইরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এই অঞ্চলে নৌকার অনেক চাহিদা। যাঁরা ধান ও পাট চাষ করেন, তাঁদের নৌকা ছাড়া চলে না। আর বিল, নদী-নালা থেকে মাছ ধরতে জেলেরাও নৌকার অর্ডার দিয়ে থাকেন। আমি বর্ষা মৌসুমে নৌকা বানাই আর বাকি সময় অন্য কাজ করি। এখানকার নৌকা ভালো বেচাবিক্রি হয়।’
সেখানে নৌকা কিনতে এসেছেন হৃদয় আহমেদ লিটন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘এখন নৌকার দাম অনেক বেশি। ৮ হাজার টাকার নিচে নৌকা নাই। নৌকা ছাড়া আমাদের চলে না। আমরা ভাটি এলাকার মানুষ। আমার একটা ফিশারি আছে, ফিশারিতে নৌকা দিয়া যাইতে হয়।’
নৌকার কারিগর, স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নদীবেষ্টিত এই হালুয়াঘাট উপজেলায় রয়েছে কংস, ভোগাই, দর্শা, গাংগিনা, শেওলা, মেনংছড়াসহ বেশ কয়েকটি ছোট-বড় নদী। এ ছাড়া জামবিল, কলমি বিলসহ বেশ কিছু বিল। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যায়। তাই অনেক আগে থেকেই হালুয়াঘাটের মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন ছিল নৌকা। আর নিজেদের প্রয়োজনেই এখানকার মানুষ নৌকা বানানো শিখে নিয়েছিলেন। তৈরির দক্ষতা ও সৌন্দর্যের কারণে এই এলাকার নৌকার আলাদা কদরও রয়েছে। পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলা থেকে ক্রেতারা এখানকার বিভিন্ন হাটে আসতেন নৌকা কেনার জন্য। তবে আগের মতো সারা বছর পানি না থাকায় এবং বিভিন্ন নদ-নদী, খাল-বিল দখল করে ভরাট করে ফেলায় এখন শুধু বর্ষা মৌসুমেই নৌকার বিষয়গুলো চোখে পড়ে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আগে রাস্তাঘাট ছিল না। বর্ষায় নৌকাতেই সবাই চলাচল করত। প্রতি বাড়িতেই একটা করে নৌকা রাখতে হতো। তখন থেকে এলাকায় নৌকা তৈরি হয়।’
বিলডোরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবজাল হোসেন খান বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম এলে আমাদের এখানে বিলডোরা দাড়িয়াকান্দাসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় নৌকা তৈরি শুরু করে কারিগরেরা। এখানকার নিচু অঞ্চলগুলোতে নৌকার খুব চাহিদা আছে। নৌকা তৈরির কারিগরদের কোনো ধরনের সাহায্যের দরকার হলে আমরা তাদের পাশে থাকব।’
গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে নোয়াখালীর আটটি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। অব্যাহত বৃষ্টি ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ডুবে যায় জেলার বিভিন্ন সড়ক, মহল্লা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জেলার ১৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেই জলাবদ্ধতা এখনো রয়ে গেছে। এক মাসের বেশি এই জলাবদ্ধতায়
১৯ মিনিট আগেসরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে যে ঠিকাদার সর্বনিম্ন দরে মালপত্র সরবরাহ করবেন, তাকেই কাজ দেওয়ার কথা। তবে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে রাজশাহী আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারে। এখানে সর্বনিম্ন নয়, যাঁরা সর্বোচ্চ দর দিয়েছেন—তাঁদেরই কাজ দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ৯২ লাখ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে।
২৪ মিনিট আগেবিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সম্প্রতি কারাগারে যেতে হয়েছে সাবেক উপাচার্য আব্দুস সাত্তারকে। তবে এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি গত পাঁচ মাসেও কাজ
২৯ মিনিট আগেউড়োজাহাজের অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে দেশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদ শাহ সাইমের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়ার মুরাদপুর গ্রামে। এই গ্রাম, উপজেলা, এমনকি পাশের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের কাছ থেকেও তাঁরা টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন ব্যবসার নামে।
১ ঘণ্টা আগে