Ajker Patrika

ছাত্রাবাসে গাঁজার গাছ: ছাত্রলীগ নেতার সংশ্লিষ্টতার তদন্তে উপজেলা আওয়ামী লীগ

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ জুন ২০২৩, ১৬: ৪৮
ছাত্রাবাসে গাঁজার গাছ: ছাত্রলীগ নেতার সংশ্লিষ্টতার তদন্তে উপজেলা আওয়ামী লীগ

জামালপুরের ইসলামপুরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ছাত্রাবাস থেকে গাঁজার গাছ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় দুজন শিক্ষার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মো. আলহাজ মিয়া নামে এক ছাত্রলীগ নেতার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে, তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। 

অভিযুক্ত মো. আলহাজ মিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাঁর মদদে আইএইচটির ছাত্রাবাসে মাদক বিস্তারসহ ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে লিখিত আবেদন করেছেন ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই শিক্ষার্থী। যার প্রেক্ষিতে ওই কমিটি গঠন করা হয়। 

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে দলীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সভা ডেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সালাম তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটির অনুমোদন করেন। 

কমিটির সদস্যরা হলেন—উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার জাকিউল হক, প্রচার সম্পাদক সেখ মো. হারুন অর রশীদ হারুন এবং সহপ্রচার সম্পাদক জিয়াউল হক জুয়েল। 

উল্লেখ্য, গত ২ জুন দিবাগত গভীর রাতে থানা-পুলিশ ও জামালপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের যৌথ অভিযানে আইএইচটির ছাত্রাবাস থেকে ১টি মোটরসাইকেলসহ মাদক গ্রহণের সরঞ্জাম,৭টি মদের খালি বোতল এবং টবের মধ্যে রোপণকৃত একটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে জামালপুর মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসআই মোস্তাফিজুর রহমান ইসলামপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। 

এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলহাজ মিয়া জড়িত থাকাসহ তাঁর রোষানল থেকে মুক্তি চেয়ে দায়েমূল ইসলাম জীবন মিয়া এবং রিদোয়ান আল রাফি নামে আইএইচটির দুই শিক্ষার্থী গত রোববার রাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, জেলা ছাত্রলীগ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন। তবে শুরু থেকেই আনীত অভিযোগ ‘ষড়যন্ত্রের অংশ’ বলে দাবি করে আসছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আলহাজ মিয়া। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হক বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ নেতা আলহাজ মিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়া পর দলের সাংগঠনিক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

এর আগে আইএইচটির সহকারী পরিচালক ডাক্তার মোহাম্মদ রবিউল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি অনুমোদন দিয়েছে আইএইচটির কর্তৃপক্ষ। 

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—প্রভাষক ডাক্তার শাহ মো. মোখলেছুর রহমান, প্রভাষক ডাক্তার মালিহা মালবিকা মিমু, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মো. ছানোয়ার হোসেন এবং মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফার্মেসি) মো. রবিউল ইসলাম। 

আইএইচটির অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার সাহা বলেন, ‘ছাত্রাবাসের কক্ষ থেকে মাদক গ্রহণের সরঞ্জামসহ মদের খালি বোতল এবং টবের মধ্যে রোপণকৃত একটি ছোট্ট গাঁজা গাছ উদ্ধার করেছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

তদন্ত কমিটির সদস্য প্রভাষক শাহ মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমরা তদন্তকাজ শুরু করেছি। তদন্ত শেষে কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জামা দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত