Ajker Patrika

মাদারীপুরের রাজৈর

ইতালির পথে নিখোঁজ ১৪ যুবক

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী, মাদারীপুর
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৯: ২৮
মাদারীপুরের রাজৈরের নিখোঁজ যুবকদের ছবি হাতে স্বজনেরা। সম্প্রতি কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাদারীপুরের রাজৈরের নিখোঁজ যুবকদের ছবি হাতে স্বজনেরা। সম্প্রতি কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামে। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বপ্নের দেশ ইতালি। সেখানে গিয়ে নিজেরসহ পরিবারের সব স্বপ্ন পূরণ করবেন। এই আশায় লিবিয়া হয়ে অবৈধভাবে ইউরোপের দেশটিতে যাওয়ার জন্য বের হয়ে নিখোঁজ আছেন মাদারীপুরের রাজৈরের ১৪ যুবক। পাঁচ মাস ধরে তাঁদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা।

নিখোঁজ যুবকেরা হলেন বাজিতপুর ইউনিয়নের চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসীর ছেলে খলিল খালাসী ও সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার।

আরও নিখোঁজ আছেন একই ইউনিয়নের নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতী, শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামীর ছেলে আলী ঘরামী ও পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর বেপারীর ছেলে সালমান বেপারী। সবার বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, এসব যুবক অবৈধভাবে লিবিয়া হয়ে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার জন্য প্রায় এক বছর আগে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর কয়েকটি দেশ ঘুরে লিবিয়ায় যান। সেখানে তাঁরা দালাল ও মাফিয়াদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন। তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় বন্দী করে পরিবারের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়। কখনো মুক্তিপণ আবার কখনো গেম করানোর (সীমান্ত পার) কথা বলে টাকা নেওয়া হয়। পরিবারগুলো চড়া সুদে ঋণ বা জমি বিক্রি করে দালালদের হাতে লাখ লাখ টাকা তুলে দিয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবারগুলো সূত্রে জানা গেছে, বাজিতপুর ইউনিয়নের সাধুর আশ্রম এলাকার বাবুল হাওলাদার এই যুবকদের বিদেশে পাঠানোর সঙ্গে জড়িত। তাঁর সঙ্গে আছেন মেয়ে সোনিয়া আক্তার ও শশী আক্তার এবং স্ত্রী চুন্নু বেগম। টাকা নেওয়ার পর কয়েক মাস আগে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন তাঁরা। তাই এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সদস্যরা জানিয়েছেন, দালাল বাবুল প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা নেন; পরে যুবকদের লিবিয়ায় বন্দী করে নির্যাতন চালিয়ে জনপ্রতি আরও ২৫ থেকে ৪০ লাখ টাকা নেওয়া হয়। এরপর ওই যুবকদের আর কোনো খোঁজ নেই।

নিখোঁজ খলিলের বাবা আজিজ খালাসী বলেন, ‘দালাল বাবুল হাওলাদার জোর করে আমার কাছ থেকে ছেলে খলিলের পাসপোর্ট নেয়। বাবুল বলেছিল, ভালোভাবেই ছেলেকে ইতালি পৌঁছে দেবে। ১৬ লাখ টাকায় চুক্তি করা হয়। অথচ লিবিয়ায় যাওয়ার পর তাকে বন্দী করা হয়। এরপর বাবুলকে ৫ লাখ দেওয়া হয়। এতেও বাবুল ছেলেকে ইতালি নেওয়ার ব্যবস্থা করেনি। ছেলেকে বিক্রি করে দেয় লিবিয়ার মাফিয়াদের কাছে। পরে আরও ১৫ লাখ টাকা দিই। এরপর পাঁচ মাস ধরে ছেলের কোনো খোঁজ নেই। বেঁচে আছি নাকি মরে গেছে—কিছুই জানি না।’

নিখোঁজ সোহেলের স্ত্রী রুনা বেগম বলেন, ‘বাবুল দালাল ও তার পরিবারের লোকজন প্রথমে ১৪, পরে ১২ ও সবশেষ ৫ লাখ টাকা নেয়। লোন করে ও জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েছি। সংসারে আমার তিন মেয়ে আছে। আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি। লোনের টাকা দিতে পারছি না। এই অবস্থায় আমার স্বামীর কোনো খোঁজ নেই। আমরা এখন কী করব জানি না।’

আরেক নিখোঁজ লিটনের বাবা কানাই রায় বলেন, ‘বাবুল এবং তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের হাতে ৫৫ লাখ টাকা দিয়েছি। জমি বিক্রি করেছি, সুদে টাকা এনেছি। এখন সুদের টাকা দিতে পারছি না, জমিও নেই। কী করব? নিঃস্ব হয়ে গেছি। ছেলেরও কোনো খোঁজ নেই।’

এ নিয়ে কথা হলে স্থানীয় জাগো উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ফারজানা আক্তার জানান, মাদারীপুরের একশ্রেণির মানুষদের মধ্যে ইতালি যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে সন্তানদের লিবিয়া হয়ে ইতালি পাঠান। উন্নত জীবনের আশায় তাঁরা এই পথ বেছে নেন। এগুলো বন্ধের ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে; পাশাপাশি দালালদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরেক উন্নয়ন সংস্থা দেশগ্রামের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম বজলুর রহমান বলেন, ‘মাদারীপুরে দেড় যুগের বেশি সময় ধরে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। উন্নত জীবনের আশায় অনেকে নিজ নিজ সন্তানের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছেন। মাদারীপুরের বহু সন্তান লিবিয়ার সমুদ্র ডুবে, দালালদের নির্যাতনে মারা গেছেন। তারপরও যাওয়া বন্ধ হচ্ছে না। এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে; পাশাপাশি দালালদের ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা নিতে হবে।’

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাঈমুল হাছান জানান, নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট থেকে নিখোঁজ ৪ শিশু ঢাকায় খাবার হোটেলে কাজ করছিল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি

‎সিলেট থেকে নিখোঁজ হওয়া চার শিশুকে রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেলে রেলওয়ে কলোনির একটি খাবার হোটেল থেকে এদের উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া শিশুদের বয়স ১২ থেকে ১৩ বছরের মধ্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

‎শাহজাহানপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানার অধিযাচনপত্রের (রিকুইজিশন) ভিত্তিতে শাহজাহানপুর থানার একটি দল গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রেলওয়ে কলোনির একটি হোটেলে অভিযান চালায়। অভিযানে ওই হোটেল থেকে চার শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

‎পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শিশুরা জানিয়েছে তারা সিলেট থেকে ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এসে পথ হারিয়ে ফেলে। এরপর ছয় দিন ধরে বিভিন্ন হোটেলে বয়ের কাজ করছিল।

‎উদ্ধারের পর শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

সিলেট প্রতিনিধি
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের জকিগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন র‍্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ।

গ্রেপ্তার হওয়া ইমরান আহমদ (৩০) জকিগঞ্জ উপজেলার নিদনপুর গ্রামের খছরুজ্জামানের ছেলে।

র‍্যাব-৯ জানায়, সিলেটের জকিগঞ্জ থানার বারহাল এহিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী গত ২৬ জুলাই সকালে জকিগঞ্জ থানাধীন ফারুক মিয়ার পরিত্যক্ত আদিম ব্রিকস ফিল্ডে ঘুরতে যাওয়ার পর আসামিরা গোপনে ভিকটিম এবং তার বন্ধুর ছবি তোলে। আসামিরা ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে বলে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখায় এবং অনৈতিক প্রস্তাব করে। ভিকটিম তাতে রাজি না হলে আসামিরা তাকে ও তার বন্ধুকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে ব্রিকস ফিল্ডের ভেতরে নিয়ে যায়। ভিকটিমের বন্ধু তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে আসামিরা তাকে প্রাণে হত্যার ভয় দেখায় এবং তাকে আটকে রাখে।

পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দলবদ্ধ ধর্ষণ করে এবং ভিকটিমকে ওই বিষয়টি কাউকে বা পুলিশকে না জানানোর জন্য হত্যার হুমকি দেয়।

বিষয়টি ভিকটিম ভয়ে কাউকে জানায়নি। কিন্তু পরে অসুস্থ হয়ে গেলে পরিবারের লোকজনকে জানানোর পর ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করে।

পরবর্তী সময়ে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি ইমরান আহমদকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এর আগে এই মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি শাকের আহমদকে গত ২০ আগস্ট গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ আরও জানান, পরবর্তী আইনিব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেপ্তার আসামিকে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়াও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র‍্যাব-৯-এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা সীমান্ত থেকে কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা সেক্টরের সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ পণ্য জব্দ করেছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান। তিনি জানান, সোমবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত পৃথক অভিযানে কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর ও ব্রাহ্মণপাড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সীমান্তঘেঁষা এলাকা থেকে ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। জব্দ করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৭৯ লাখ ৫২ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে এবং ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় খাদ্যসামগ্রী।

লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পণ্য পাচার প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জব্দ করা পণ্যগুলো আইনিপ্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা, তদন্তে ডিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৯
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ সোমবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে কাজী মুকিতুজ্জামান বাদী হয়ে এই মামলা করেন। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহাদী হাসান জুয়েল জানান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে নিয়ে মন্তব্য করায় এই মামলা করা হয়েছে।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর আসামি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্যক্তিদের সুনাম ক্ষুণ্ন ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।

গত ১ নভেম্বর যুবদল নেতা নয়নকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন,“জুলাই সনদ নিয়ে একটি বড় দল গুন্ডামি করছে, ঢাকা মহানগরের একজন নেতা আছে নয়ন একা যে পরিমাণ চাঁদাবাজি করেছে এবং দুর্নীতি করেছে— এই টাকা দিয়েও বাংলাদেশে একটা গণভোট সম্ভব। আমরা ওনাদেরকে এত দিন জমজমের পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে চেষ্টা করেছি, ওনাদের মাথা ক্লিন হয় নাই, বডিও ক্লিন হয় নাই। এখন আমার মনে হয় ওনাদেরকে বুড়িগঙ্গার পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।”

মামলার আরজিতে বাদী বলেন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্য বাদীর দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে, দলের নেতার নামে কুৎসা রটিয়ে তাঁর মানহানি করেছে। একই সঙ্গে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, যা মানহানিকর অপরাধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত